এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Friday, June 29, 2007
হরতাল নাকি গণতন্ত্রের ঢাল!
হরতাল নিয়ে আমি আরও লিখব, ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত- নাথিং গনা স্টপ মী! হরতালে আমার নিজেকে মানুষ বলে মনে হয় না। আমার কাছে মনে হয়- একটি পাখির কাছ থেকে গোটা আকাশটা ছিনিয়ে, ছোট্ট একটা খাঁচায় আটকে ফেলা! তার কানের কাছে অশুভ মন্ত্র অনবরত পড়তে থাকা। তুমি স্বাধীন, তুমি মুক্ত- উড়ে বেড়াও ডানা মেলে; ডানা তোমার ছিড়তে থাকুক একেক করে!
হরতাল প্রসঙ্গে এ দেশের সেরা সন্তান বা শক্তিশালী মানুষদের প্রতি আমার সীমাহীন রাগ আছে। এঁরা কী তুচ্ছ বিষয় নিয়েই না হইচই করেন অথচ হরতাল নিয়ে গা করেননি! কয়েকটা উদাহরণ দেই:
১. হুমায়ূন আহমেদ, এমন খুব কম বিষয় আছে, যেটা নিয়ে লেখেননি কিন্তু হরতাল নিয়ে তার কোন উপন্যাস নাই, বই নাই, নাটক নাই। অথচ মানুষটার কী বিপুল শক্তি! তাঁর লেখালেখির গভীরতা নিয়ে সংশয় আছে কি নাই, সেই বিতর্কে আমি যাব না । কিন্ত তাঁর আছে লক্ষ-লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করার যাদু কিন্ত তিনি এ নিয়ে টুঁ-শব্দও করেননি!
অথচ হরতাল নিয়ে গোটা একটা বই লিখল কিনা আমার মত 'তেলিবেলি' একজন মানুষ! লাভ কী, তেলিবেলি কলমচির বই ক-জন পড়ে?
২. শফিক রেহমান। যুবকদের প্রভাবিত করার যাদুদন্ড ছিল একদা তার হাতে। তার দিনের পর দিন কলামে লিখলেন, ‘হরতাল তো আইন করে বন্ধ করা যাবে না’।
কী বালখিল্য কথা- যেন ওহী নাজিল হয়েছে, এটা পরিবর্তন করা যাবে না! হায় দল, হায় দলবাজি! কেমন করে একজন মানুষের গ্রে-মেটার 'হলুদ-মেটার' বানিয়ে দেয়! অথচ তিনি চিঠি লিখে বলেছিলেন, আমরা হরতালের বিপক্ষে ছিলাম, আছি।
৩. আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ, ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। যিনি নির্ভীক, স্পষ্টবাদী হিসাবে সুপরিচিত। তিনি একটা কলামে লিখলেন, 'শিক্ষা বিভাগকে হরতালের আওতার বাইরে রাখা হউক'।
উত্তম-উত্তম, তা ছাত্ররা কি গাধার পিঠে চড়ে চলাফেরা করবে? শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে ঢাকা থেকে একজন ছাত্রী যখন সিলেট যাবে, সে কি এম্বুলেন্স নিয়ে যাবে, নাকি পালকিতে চড়ে?
প্রকারান্তরে জাফর ইকবাল স্বীকার করে নিলেন, হরতাল হউক অসুবিধা নাই কিন্ত শিক্ষা বিভাগকে ছাড় দেয়া হউক। তিনি শিক্ষক বলেই সম্ভবত এমনটা চিন্তা করেছেন।
এমন বড় মাপের মানুষ যখন ছোট্ট একটা গন্ডিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েন, তখন আমাদের দীর্ঘশ্বাস ফেলা ব্যতীত কিছুই করার থাকে না! আফসোস, এঁরা তাঁদের বিপুল শক্তির কী অপচয়ই করছেন! লেজার গান দিয়ে চড়ুই পাখি শিকার...!
*ছবিঋণ: সানাউল হক, জনকন্ঠ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
2 comments:
প্রিয় শুভ ভাই,
... খুঁজতে খুঁজতে আপনাকে ব্লগ স্পটে পেয়ে যাবো ভাবিনি। সামহোয়্যারে আপনার লেখা অনেক মিস করি.... কেমন আছেন?
ত্রিভুজ,
ধন্যবাদ আপনাকে, কষ্ট করে আমাকে খুঁজে বের করার জন্য। আমিও আপনাদেরকে মিস করি।
Post a Comment