এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Friday, June 29, 2007
আর কতটা রক্ত দিলে শেষ হবে হরতাল?
আগেও বলেছিলাম, আমাদের দেশে এখন, হরতালের নামের এই কুৎসিত, গা ঘিনঘিনে প্রাণীটার জন্ম পৃথিবীর সবচেয়ে জঘণ্য বেশ্যার গর্ভে।
এটা একটা দানব! এমন দানব যে তার মাকে খেয়ে ফেলে, আমরা তো কোন ছার!
গণতন্ত্রের নামে হরতাল নামের এই অসভ্য কান্ডটির আমাদের খুব প্রয়োজন, না? এই যে দেশ অচল করে দেয়া হয়, ক্ষতিটা কার হবে, আমাদের! যে সব সম্পদ বিনস্ট হবে, এটা কাদের, আমাদের! যারা মারা যাবেন, তারা কারা, আমাদেরই কেউ! তাহলে কাদের জন্য হরতাল?
এই যে এতগুলো হরতাল দেয়া হয়েছিল; এতো প্রাণ, সম্পদের অপচয় হলো, লাভ কী হলো? বিএপি তো তার পাঁচ বছরের টার্ম প্রায় শেষ করে ফেলল! নেতাদের কোন সমস্যা নাই, এদের সন্তানরা থাকে দেশের বাইরে, হরতাল ডাক দিয়ে বিদেশ চলে গেলেই হয়! শেখ হাসিনা ঠিক এই কাজটিই করেছেন!
একটা ছবি আছে, হরতালে কিছু নেতা নেত্রী রাজপথে বসে শশা খাচ্ছেন, দেখলেই মনটা অন্য রকম হয়ে যায়- আহা, আমাদের নেতাদের কী ত্যাগ! এদের মধ্যে শুধু একজন তালু ছোলার কথা বলি, তিনি ৫০০০ ডলার দামের স্যুট গায়ে দেন!
হরতালের নামে ১৪ কোটি মানুষকে একটা বিশাল কারাগারে আটকে ফেলা হয়। এ গ্রহের সবচেয়ে বড়ো কারাগার!
যারা প্রবাসে থাকেন- তাদের নিশ্চয়ই কিঞ্চিত অভিজ্ঞতা হয়েছে। তারপরও কল্পনা করুন, আপনি দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরছেন, লম্বা জার্নি- এয়ারপোর্টে আটকা পড়ে আছেন। বাড়িতে আপনার সব প্রিয়মানুষরা অপেক্ষা করছে কবে তারা আপনাকে স্পর্শ করবে! আপনার তখনকার অনুভূতি কেমন হবে?
এবার কিছু তথ্য আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করা যাক:
১. গত ১৮ মে ০৫ বুধবার আওয়ামী লীগ হরতাল আহ্বান করেন, দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল। কিন্তু জলিলের প্রতিষ্ঠান মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে শেরাটনে। আবদুল জলিল সেদিন হরতাল ভেঙ্গে গাড়িতে চড়ে হোটেল শেরাটনে এসে সেই সভায় যোগদান করেন। এবং ব্যাংকটির অন্যতম ডিরেক্টর সাবের হোসেন চৌও যোগ দেন। তারা সেদিন হরতালের সমর্থনে বের হওয়া কোন মিছিল বা সমাবেশে অংশগ্রহন করেননি।
(দৈনিক সংবাদ/ ২. ১৮ মে ০৫ )
২. আওয়ামী লীগের সকাল সন্ধা হরতাল পালিত হয়। এই হরতালের সময় এইচ এস সি , ফাজিল, আলিম, কামিল পরীক্ষা চলছিল। পরে নেতারা বলেন, দেশে যে পরীক্ষা চলছে এটা নাকি তারা জানতেন না!
ন্যাতা বটে!
৩. 'আমরা ভালোবাসা দিবস ও ভালোবাসার প্রকাশকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগের জন্যই আন্দোলন করছি। ১৪ ফেব্রুয়ারী ভালোবাসা দিবসে হরতাল হয়ে তো সুবিধাই হলো'।
(মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, যা যা দিন)
*এই পোস্টের সঙ্গে যে ছবিটা এটা স্কুটার চালক আমির হোসেনের। যাকে হরতালে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার অপরাধে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল, তাঁর সমস্ত গা ঝলসে যায়। তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে এক সময় হাল ছেড়ে মারা যান!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment