এক দেশে একটা দেশ ছিল। অসম্ভব সুন্দর সেই দেশটার নাম আখুরাদেশ। কিটি সেই দেশে বাস করে। কিটি বাবাকে চোখে দেখেনি, মাও মরে গেলেন! মা কাল মারা গেলেন- মা’র কথা মনে পড়তেই কিটি’র মনে হলো কষ্টে বুকটা ফেটে যাবে। কী কষ্ট, কী কষ্ট! কিটি ফিসফিস করে বলল: মা-অমা!
দৈত্য কিটির মাকে ওর চোখের সামনে মেরে ফেলল, কিটি কিচ্ছু করতে পারল না। কিটি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল: হে পরম করুণাময়, হে মহা প্রভু, এত অল্প ক্ষমতা দিয়ে কেন পাঠালে? যে সন্তান তার মাকে রক্ষা করতে পারে না তার বেঁচে থাকার কোন অধিকার নাই। ধিক ধিক! দশ লাখবার ধিক!
কিটি মন খারাপ করা গলায় বলল, ‘এই ছোত দৈত্য, ছোত দৈত্য!’
বুক্কা বালিশের সঙ্গে মারামারি খেলা খেলছিল, মেরে মেরে চ্যাপ্টা বালিশটাকে প্রায় গোল বানিয়ে ফেলেছে! বালিশটাকে মার থামিয়ে রাগী গলায় বুক্কা বলল, ‘এই মশার বাচ্চা, মশা। কাছে আয়, আয় বলছি; ধরে দেব একটা থাপ্পড়। ফাজিল কোথাকার। আমরা হচ্ছি সৃষ্টির সেরা জীব আর ফাজিলটা বলে কিনা দাঁত বের করে, হেই ছোত ধৈত্য-ছোত ধৈত্য! হুশ মশা, হুশ!’
কিটি কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘আমার না মা মরে গেছে।’
বুক্কা দুঃখিত গলায় বলল, ‘আমি সরি, খুব সরি কিন্তু মানুষকে দৈত্য বলতে তোমায় কে শিখিয়েছে, কী বিশ্রি শোনায়।’
কিটি কান্না ভুলে বলল, ‘আমার টিচার। তিনি একজন মহান টিচার।’
বুক্কা চোখ গোল করে বলল, ‘ওরি বাবা, তোমাদের আবার স্কুলও আছে?’
কিটি অহঙ্কারী গলায় বলল, ‘আমি এগারো দাগের ছাত্র। চৌদ্দ হাজার চারশ সেকেন্ড ক্লাশ করেছি।’
বুক্কা অবাক, ‘এটা আবার কি হিসাব!’
কিটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘আমাদের আয়ু তো খুব কম, তাই আমরা প্রতি সেকেন্ডের হিসাব রাখি।’
বুক্কা বলল, ‘তোমার বয়স কত?’
‘ছিয়াশী হাজার চারশ সেকেন্ড!’
বুক্কা প্রায় ফোকলা মুখে ফিক ফিক করে হাসল।
কিটি অবাক হয়ে বলল, ‘এতো হেসো না, নিজের দাঁত পড়ে পা কাটবে! আমার যে এত বয়স এটা কি তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না? আসলে আমাকে না বাচ্চা বাচ্চা দেখায়।’
বুকিন হাসি গোপন করে বলল, ‘না-না, বিশ্বাস করব না কেন।’
কিটি পিঁ পিঁ করে বলল, ‘না, তুমি বিশ্বাস করনি!’
বুক্কার মুখে একটা নতুন একটা দাঁত ঠেলে বেরিয়ে আসার প্রাণপণ চেষ্টা করছে। জিহ্বা দিয়ে সেই দাঁতটা ছুঁয়ে বুক্কা বলল, ‘এই দেখ আমার দাঁত ছুঁয়ে বলছি।’
কিটি হতভম্ব হয়ে বলল, ‘কী আশ্চর্য, এই সামান্য কারণে তুমি মিথ্যা বলছ! আমার মহান টিচার বলেন, সব সময় সত্য কথা বলতে হয়!’
বুক্কা লজ্জিত হয়ে বলল, ‘তিনি আর কি বলেন?’
কিটি হঠাৎ ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল, ‘আমার না মা মরে গেছে।’
বুক্কা দুঃখিত গলায় বলল, ‘প্লিজ কিটি, কেঁদো না। কাউকে কাঁদতে দেখলে আমার না ভারী কান্না পায়। চোখ-টোখ ধুয়ে আসো। ফ্রেস লাগবে।’
কিটি বেসিনের টিপটিপ করে পড়া পানি থেকে চোখ ভাল করে ধুয়ে আসল, ‘বুক্কা, টিচার না আমাকে আমাদের জাতীয় সংগীত শিখিয়েছেন। শুনবে?
অনেকক্ষণ পিঁ পিঁ শব্দ হলো। কিটির চোখ মুখ অন্যরকম, চোখ ছলছলে!
বুক্কা নরম গলায় বলল, ‘সরি, আমি তোমাদের জাতীয় সংগীতটা বুঝতে পারিনি।’
‘আমি গাইলাম, আমার সোনার আখুরা, আমি তোমায় ভালবাসি-ই-ই-ই। ...আমার সোনার আখুরা, আমি তোমার জন্য মরতে পারি-ই-ই-ই।’
বুক্কা স্তম্ভিত- হতভম্ব! ‘কী বলছ কিটি, সত্যি সত্যি তোমরা দেশের জন্য মরে যেতে রাজী আছ?’
কিটি অহংকারী গলায় বলর, ‘অবশ্যই। একশ বার। এই দেশ আমাকে খাবার দিয়েছে। থাকার জায়গা দিয়েছে, ছোট্ট বুকটা ভরে নিঃশ্বাস নেই, আমরা মশারা নিজেদের ভাষায় কথা বলি। আহা, আমার মা-টা যদি দেশের জন্য মারা যেত। আমি হতাম শহীদ মা’র সন্তান।’
বুক্কা বলল, ‘কিটি, তোমার মাকে কে মেরেছে?’
কিটি থেমে থেমে বলল, ‘তোমার বাবা। তোমার বাবা একজন নিষ্ঠুর প্রকৃতির মানুষ। জানো, আমার মা কিন্তু তোমার বাবার কোন ক্ষতি করেননি, কিচ্ছু করেননি।’
বুক্কা দুর্দান্ত বেগে মাথা এপাশ ওপাশ করে বলল, ‘না, না, না। আমার বাবা অসম্ভব ভাল মানুষ। তোমরা আমাদের সব রক্ত খেয়ে ফেলবে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব!’
কিটি মিনমিন করে বলল, ‘বুকিন, তোমাদের শরীরে কত্তো রক্ত। রক্তের সাগর। প্রায় চার হাজার মিলি লিটার। তোমাদের শরীরের ওজনের ৭ ভাগ রক্ত! আমরা কতটুকু আর রক্ত খাই। বড় জোর এক চুমুক, না, এক চুমুকও তো না!’
বুক্কা গম্ভীর হয়ে বলল, ‘কিটি, তোমরা তো শুধু রক্তই খাও না, কঠিন সব রোগও ছড়াও। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া আরও কিসব ভয়ঙ্কর রোগ।’
কিটি কিছুক্ষণ ঝিম মেরে থেকে বলল, ‘তোমরা কি ভাল দৈত্য- সরি, ভালমানুষ? গরু ছাগল, হাঁস-মুরগী হেনতেন কি খাও না? আমরা আরেকটু নাদুসনুদুস হলে কচকচ করে আমাদেরকেও ভাজি করে খেয়ে ফেলতে!’
বুক্কা অনেকক্ষণ মাথা চুলকে বলল, ‘আমাদের এসব খেতে হয়, এটাই নিয়ম।’
কিটি পিনপিন করে ছোট্ট পাখা নেড়ে বলল, ‘আমাদেরকেও রক্ত খেতে হয়, এটাই নিয়ম।’
বুক্কা হাল ছেড়ে দিল, ‘আচ্ছা বাবা, সমান সমান। কিন্তু তোমরা, তোমাদের জন্ম আবর্জনায়। ছি, ছি, ছি- ছি!’
কিটি এবার হড়বড় করে বলল, ‘আচ্ছা! নোংরা-আবর্জনা তোমাদের দু’চোখের বিষ। তোমার পেটের ভেতর কী, কী নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ। বলব?’
বুক্কা হাত তুলে সমর্পনের ভঙ্গি, ‘ইস, না-না-না। বলো না প্লিজ!’
কিটি পিহিহি পিহিহি করে হাসতে লাগল!
বুক্কা বলল,‘আচ্ছা কিটি, তুমি অনেক জান, না?’
কিটি মন খারাপ করা ভঙ্গিতে বলল, ‘ছাই জানি, বাংলাদেশ নামের মহাবিশ্বটার কতটুকুই বা জানি! আমার এই আয়ু নিয়ে রেলের গতিতে রেরগাড়িতে ভ্রমন করলেও বাংলাদেশ নামের মহাবিশ্বটার পুরোটা ঘুরে শেষ করতে পারব না। আহা, কী ছোট আমাদের জীবন! এত অল্প আয়ু দিয়ে কেন পাঠানো হয়েছে কে জানে। কিছুই তো দেখা হলো না!’
বুক্কা এবার কাতর গলায় বলল, ‘যাই হোক, কিটি, দোহাই তোমার আমার বাবাকে ক্ষমা করে দাও। বাবার কৃতকর্মের জন্য, আমি নতজানু হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি।’
কিটি বলল, ‘বাহ, বেশ তো, ইচ্ছা হলেই তোমরা আমার মাকে মেরে ফেলবে, ইচ্ছা হলেই আমার কাছ থেকে আমার দেশ ছিনিয়ে নেবে- এক সময় বলবে ভুল হয়েছে, বাহ বেশ তো...!’
বুক্কা হাহাকার করে বলল, ‘কিটি, আমার বাবাকে ক্ষমা করে দাও, বদলে তুমি তোমাদের লাখ লাখ মশা নিয়ে আসো। আমার শরীর থেকে শেষ বিন্দু রক্তও শুষে নাও, তবুও আমার বাবাকে ক্ষমা করো...দোহাই লাগে তোমার!’
কিটি বুক ভেঙ্গে কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘তোমরা সৃষ্টির সেরা জীব, এতে কোন সন্দেহ নাই- তোমরা পারো না এমন কিছু নাই! যাও, আমি শুধু তোমার জন্য, তোমার বাবাকে ক্ষমা করলাম! কিন্তু আমি নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না!’
*কিটি মাস্ট ডাই, ২: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_9693.html
দৈত্য কিটির মাকে ওর চোখের সামনে মেরে ফেলল, কিটি কিচ্ছু করতে পারল না। কিটি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল: হে পরম করুণাময়, হে মহা প্রভু, এত অল্প ক্ষমতা দিয়ে কেন পাঠালে? যে সন্তান তার মাকে রক্ষা করতে পারে না তার বেঁচে থাকার কোন অধিকার নাই। ধিক ধিক! দশ লাখবার ধিক!
কিটি মন খারাপ করা গলায় বলল, ‘এই ছোত দৈত্য, ছোত দৈত্য!’
বুক্কা বালিশের সঙ্গে মারামারি খেলা খেলছিল, মেরে মেরে চ্যাপ্টা বালিশটাকে প্রায় গোল বানিয়ে ফেলেছে! বালিশটাকে মার থামিয়ে রাগী গলায় বুক্কা বলল, ‘এই মশার বাচ্চা, মশা। কাছে আয়, আয় বলছি; ধরে দেব একটা থাপ্পড়। ফাজিল কোথাকার। আমরা হচ্ছি সৃষ্টির সেরা জীব আর ফাজিলটা বলে কিনা দাঁত বের করে, হেই ছোত ধৈত্য-ছোত ধৈত্য! হুশ মশা, হুশ!’
কিটি কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘আমার না মা মরে গেছে।’
বুক্কা দুঃখিত গলায় বলল, ‘আমি সরি, খুব সরি কিন্তু মানুষকে দৈত্য বলতে তোমায় কে শিখিয়েছে, কী বিশ্রি শোনায়।’
কিটি কান্না ভুলে বলল, ‘আমার টিচার। তিনি একজন মহান টিচার।’
বুক্কা চোখ গোল করে বলল, ‘ওরি বাবা, তোমাদের আবার স্কুলও আছে?’
কিটি অহঙ্কারী গলায় বলল, ‘আমি এগারো দাগের ছাত্র। চৌদ্দ হাজার চারশ সেকেন্ড ক্লাশ করেছি।’
বুক্কা অবাক, ‘এটা আবার কি হিসাব!’
কিটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘আমাদের আয়ু তো খুব কম, তাই আমরা প্রতি সেকেন্ডের হিসাব রাখি।’
বুক্কা বলল, ‘তোমার বয়স কত?’
‘ছিয়াশী হাজার চারশ সেকেন্ড!’
বুক্কা প্রায় ফোকলা মুখে ফিক ফিক করে হাসল।
কিটি অবাক হয়ে বলল, ‘এতো হেসো না, নিজের দাঁত পড়ে পা কাটবে! আমার যে এত বয়স এটা কি তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না? আসলে আমাকে না বাচ্চা বাচ্চা দেখায়।’
বুকিন হাসি গোপন করে বলল, ‘না-না, বিশ্বাস করব না কেন।’
কিটি পিঁ পিঁ করে বলল, ‘না, তুমি বিশ্বাস করনি!’
বুক্কার মুখে একটা নতুন একটা দাঁত ঠেলে বেরিয়ে আসার প্রাণপণ চেষ্টা করছে। জিহ্বা দিয়ে সেই দাঁতটা ছুঁয়ে বুক্কা বলল, ‘এই দেখ আমার দাঁত ছুঁয়ে বলছি।’
কিটি হতভম্ব হয়ে বলল, ‘কী আশ্চর্য, এই সামান্য কারণে তুমি মিথ্যা বলছ! আমার মহান টিচার বলেন, সব সময় সত্য কথা বলতে হয়!’
বুক্কা লজ্জিত হয়ে বলল, ‘তিনি আর কি বলেন?’
কিটি হঠাৎ ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল, ‘আমার না মা মরে গেছে।’
বুক্কা দুঃখিত গলায় বলল, ‘প্লিজ কিটি, কেঁদো না। কাউকে কাঁদতে দেখলে আমার না ভারী কান্না পায়। চোখ-টোখ ধুয়ে আসো। ফ্রেস লাগবে।’
কিটি বেসিনের টিপটিপ করে পড়া পানি থেকে চোখ ভাল করে ধুয়ে আসল, ‘বুক্কা, টিচার না আমাকে আমাদের জাতীয় সংগীত শিখিয়েছেন। শুনবে?
অনেকক্ষণ পিঁ পিঁ শব্দ হলো। কিটির চোখ মুখ অন্যরকম, চোখ ছলছলে!
বুক্কা নরম গলায় বলল, ‘সরি, আমি তোমাদের জাতীয় সংগীতটা বুঝতে পারিনি।’
‘আমি গাইলাম, আমার সোনার আখুরা, আমি তোমায় ভালবাসি-ই-ই-ই। ...আমার সোনার আখুরা, আমি তোমার জন্য মরতে পারি-ই-ই-ই।’
বুক্কা স্তম্ভিত- হতভম্ব! ‘কী বলছ কিটি, সত্যি সত্যি তোমরা দেশের জন্য মরে যেতে রাজী আছ?’
কিটি অহংকারী গলায় বলর, ‘অবশ্যই। একশ বার। এই দেশ আমাকে খাবার দিয়েছে। থাকার জায়গা দিয়েছে, ছোট্ট বুকটা ভরে নিঃশ্বাস নেই, আমরা মশারা নিজেদের ভাষায় কথা বলি। আহা, আমার মা-টা যদি দেশের জন্য মারা যেত। আমি হতাম শহীদ মা’র সন্তান।’
বুক্কা বলল, ‘কিটি, তোমার মাকে কে মেরেছে?’
কিটি থেমে থেমে বলল, ‘তোমার বাবা। তোমার বাবা একজন নিষ্ঠুর প্রকৃতির মানুষ। জানো, আমার মা কিন্তু তোমার বাবার কোন ক্ষতি করেননি, কিচ্ছু করেননি।’
বুক্কা দুর্দান্ত বেগে মাথা এপাশ ওপাশ করে বলল, ‘না, না, না। আমার বাবা অসম্ভব ভাল মানুষ। তোমরা আমাদের সব রক্ত খেয়ে ফেলবে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব!’
কিটি মিনমিন করে বলল, ‘বুকিন, তোমাদের শরীরে কত্তো রক্ত। রক্তের সাগর। প্রায় চার হাজার মিলি লিটার। তোমাদের শরীরের ওজনের ৭ ভাগ রক্ত! আমরা কতটুকু আর রক্ত খাই। বড় জোর এক চুমুক, না, এক চুমুকও তো না!’
বুক্কা গম্ভীর হয়ে বলল, ‘কিটি, তোমরা তো শুধু রক্তই খাও না, কঠিন সব রোগও ছড়াও। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া আরও কিসব ভয়ঙ্কর রোগ।’
কিটি কিছুক্ষণ ঝিম মেরে থেকে বলল, ‘তোমরা কি ভাল দৈত্য- সরি, ভালমানুষ? গরু ছাগল, হাঁস-মুরগী হেনতেন কি খাও না? আমরা আরেকটু নাদুসনুদুস হলে কচকচ করে আমাদেরকেও ভাজি করে খেয়ে ফেলতে!’
বুক্কা অনেকক্ষণ মাথা চুলকে বলল, ‘আমাদের এসব খেতে হয়, এটাই নিয়ম।’
কিটি পিনপিন করে ছোট্ট পাখা নেড়ে বলল, ‘আমাদেরকেও রক্ত খেতে হয়, এটাই নিয়ম।’
বুক্কা হাল ছেড়ে দিল, ‘আচ্ছা বাবা, সমান সমান। কিন্তু তোমরা, তোমাদের জন্ম আবর্জনায়। ছি, ছি, ছি- ছি!’
কিটি এবার হড়বড় করে বলল, ‘আচ্ছা! নোংরা-আবর্জনা তোমাদের দু’চোখের বিষ। তোমার পেটের ভেতর কী, কী নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ। বলব?’
বুক্কা হাত তুলে সমর্পনের ভঙ্গি, ‘ইস, না-না-না। বলো না প্লিজ!’
কিটি পিহিহি পিহিহি করে হাসতে লাগল!
বুক্কা বলল,‘আচ্ছা কিটি, তুমি অনেক জান, না?’
কিটি মন খারাপ করা ভঙ্গিতে বলল, ‘ছাই জানি, বাংলাদেশ নামের মহাবিশ্বটার কতটুকুই বা জানি! আমার এই আয়ু নিয়ে রেলের গতিতে রেরগাড়িতে ভ্রমন করলেও বাংলাদেশ নামের মহাবিশ্বটার পুরোটা ঘুরে শেষ করতে পারব না। আহা, কী ছোট আমাদের জীবন! এত অল্প আয়ু দিয়ে কেন পাঠানো হয়েছে কে জানে। কিছুই তো দেখা হলো না!’
বুক্কা এবার কাতর গলায় বলল, ‘যাই হোক, কিটি, দোহাই তোমার আমার বাবাকে ক্ষমা করে দাও। বাবার কৃতকর্মের জন্য, আমি নতজানু হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি।’
কিটি বলল, ‘বাহ, বেশ তো, ইচ্ছা হলেই তোমরা আমার মাকে মেরে ফেলবে, ইচ্ছা হলেই আমার কাছ থেকে আমার দেশ ছিনিয়ে নেবে- এক সময় বলবে ভুল হয়েছে, বাহ বেশ তো...!’
বুক্কা হাহাকার করে বলল, ‘কিটি, আমার বাবাকে ক্ষমা করে দাও, বদলে তুমি তোমাদের লাখ লাখ মশা নিয়ে আসো। আমার শরীর থেকে শেষ বিন্দু রক্তও শুষে নাও, তবুও আমার বাবাকে ক্ষমা করো...দোহাই লাগে তোমার!’
কিটি বুক ভেঙ্গে কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘তোমরা সৃষ্টির সেরা জীব, এতে কোন সন্দেহ নাই- তোমরা পারো না এমন কিছু নাই! যাও, আমি শুধু তোমার জন্য, তোমার বাবাকে ক্ষমা করলাম! কিন্তু আমি নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না!’
*কিটি মাস্ট ডাই, ২: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_9693.html
2 comments:
osadaron ekta lekha!!! porer porbita touchi
Post a Comment