এই পোড়া দেশে লেখালেখি করে ভাতের পয়সা দূরের কথা, রুটিও মিলবে কিনা সন্দেহ! ঘাস, হাওয়া খেয়ে তো আর দিন চলে না। আশেপাশের সবাই ধাঁ করে বড়ো হয়ে যাচ্ছে! আমিই শালার যেই কে সেই রয়ে গেলাম- যেই লাউ সেই কদু!
এই দেশে কেমন কেমন করে যেন একটা বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে, যারা লেখালেখি করেন এরা অন্য ভুবন থেকে আসেন। এদের কিছু না খেলেও চলে- কপকপ করে চাঁদের আলো খেলেই চলে। এরা লেংটি পড়ে দেশউদ্ধার করবেন।
মার খাওয়ার পর এবার ঠিক করেছি নতুন একটা ব্যবসায় নামব। কি যে ব্যবসা করব, আগামাথা পাচ্ছি না! এমন একটা ব্যবসায় হাত দেব যেন নতুন কিছু একটা হয়, অনায়াসে পয়সা আসে!
দেখি, মার্কেট রিসার্চ কী রেজাল্ট দেয়!
আচ্ছা, আপনারা যারা প্রবাসে থাকেন, তারা কি আমাকে একটু সহায়তা করতে পারেন? না-না, টাকা-পয়সা দিতে হবে না, আইডিয়া দিয়ে। আপনারা তো হিল্লী দিল্লী চষে বেড়ান, আপনাদের তো অনেক বুদ্ধি! আপনারা দেশ থেকে যাওয়ার সময় হাবিজাবি অনেক কিছুই তো নিয়ে যান, যার যেটা ভাল লাগে বা দেশ থেকে প্রিয় মানুষরা যা গছিয়ে দেন।
আমি এইসব প্রডাক্ট বেচবো না। আমি বেচবো স্বপ্ন। কিন্তু ঝামেলা আছে। সারা রাত স্বপ্ন দেখি অথচ বিজ্ঞানীরা বলেন, এটা আসলে কয়েক সেকেন্ডের মামলা। ইস, বললেই হলো, বিজ্ঞানী হয়েছেন বলে মাথা কিনে নিয়েছেন! আরও ঝামেলা আছে। স্বপ্ন তো আর লাড্ডু না, প্যাকেট করে বেচে ফেললাম!
আমি এটার ফরম্যাটটা একটু বদলে ফেলব। আমি মিনারেল মাটি বেচবো। একদম ধান ক্ষেত থেকে নিয়ে আসা মাটি। এক প্যাকেটে এই দেশের এক মুঠো মাটি!
প্রবাসে যারা থাকেন, বুকে হাত দিয়ে বলুন তো এই জিনিসটা কি আছে আপনাদের কাছে- থাকলে সর্বনাশ, আমার ব্যবসা লাটে উঠবে!
আচ্ছা, কেমন হবে বলেন তো। আপনারা যারা প্রবাসে থাকেন, চকচকে একটা কাঁচের জারে দেশের একমুঠো রেখে দিলেন। ওই দেশের কেউ এসে যখন খা খি খু, চ্যাং চু চু, মুশি মুশি করে কিচিরমিচির করে জানতে চাইবে, জিনিসটা কি! তখন আপনি অহংকারী হাসি হেসে বলবেন, এটা আমার দেশের মাটি!
অথবা ধরুন, আপনার মনটা ভারী বিষণ্ন, আপনি জাস্ট কাঁচের জারটা খুলে একটু পানি ছিটিয়ে দিলেন, মাটির সোঁদা গন্ধে বুকটা ভরে গেল! বা ধরুন, কোন শিশুর জন্ম হলো, খানিকটা মাটি তার মাথায় মাখিয়ে দিলেন!
কি বলেন, বাডি, এই ব্যবসাটা কেমন হয়! চলবে না, নাকি লাটে উঠবে? আচ্ছা, এই ব্যবসাটা করলে কেমন হয়?
No comments:
Post a Comment