এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Tuesday, February 9, 2010
মজা, না মজাক, নাকি মজারু?
কাল ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দেখছিলাম, খালেদা জিয়ার আমন্ত্রণে দেশের বাঘা-বাঘা সম্পাদক সাহেব এসেছেন। তাঁরা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন আবদার, বক্তব্য রাখছেন।
কেউ বলছেন, ম্যাডাম সংসদের চেয়ার আপনাকে ডাকছে। কেউ-বা বলছিলেন, দেশটা আপনারা দু-জন নারী মিলে চালাচ্ছেন আপনাদের দায়িত্ব অনেক। ইত্যাদি ইত্যাদি।
ম্যাডাম সবার কথা শুনছিলেন। ঝিম মেরে রইলেন। প্রশ্নগুলোর ধারে-কাছেও গেলেন না। যথারীতি বিরোধীদলের কুৎসা গাওয়া শুরু করলেন। তখন আর দম ফেললেন না, এক শ্বাসে বলতেই থাকলেন!
আজ দৈনিক পত্রিকায় দেখছি (প্রথম আলো), খালেদা জিয়া বলেছেন, "সময়মতো সংসদে যাব। এখনই সব বললে তো মজা থাকবে না।"
বেশ-বেশ! সংসদে যাওয়া এটা তাহলে মজার কিছু, নাকি মজাক? আর সময়মতো বলতে আপনি কি বলতে চাইছেন? কবে সময় হবে? প্রায় ৩৬৫ দিন তো চলে গেল- নাকি আপনাদের বছর হয় হাজার দিনে?
সংসদে না যাওয়ার কারণ কী! ওয়াল্লা, চেয়ার ইস্যু! সংসদে কি বসতে দিচ্ছে না, দাঁড়িয়ে থাকতে হয়? আমার তো মনে হয় দাঁড়িয়ে থাকতে হলেও সংসদে যাওয়া প্রয়োজন। এতে অন্তত দেশের আপামর জনতা আপনাদের সঙ্গে থাকত।
খালেদা জিয়া আরও বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, আমাদের ছেলেমেয়েরা থাকতে পারছে না। ভি.সিকে বলেও কাজ হয় না। তিনি তো দলীয় লোক।"
হাসি থামানো কঠিন হয়ে পড়ে। দলীয় লোক? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভিসি দলীয় লোক ছিলেন না? এ-ও এই দেশের দূর্ভাগ্য শিক্ষকরা পর্যন্ত নীল-সাদা-গোলাপি দলের আড়ালে দলবাজি করেন। যখন যে সরকার আসেন সেই সরকারের ভাষায় কথা বলা শুরু করেন- মেরুদন্ড হয়ে যায় জেলির মত। পিতাসম শিক্ষকদের কেন কোন দলের চামচা হতে হবে এটা আমার বোধগম্য হয় না! এই দেশে দলবাজি ব্যতীত কোথাও দাঁড়াবার জায়গা নাই।
এই দেশের সব কিছুই অন্য রকম। দেশটা চালাচ্ছেন দু-জন নারী, ঘুরেফিরে! জামাতের মতো কট্টর একটা দলেরও এই নিয়ে উচ্চবাচ্য নাই! দেশের আপামর মোল্লাদের কথাও এখানে চলে আসে।
আজ একটা দৈনিকে দেখলাম, একটা রাস্তায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে রেখেছে, "এই রাস্তা দিয়া মহিলাদের হাঁটা নিষেধ।" এমন একটা দেশের সবগুলো চাকা বনবন করে ঘোরাচ্ছেন দু-জন মহিলা, ভাবা যায়?
আমার ছোট্ট একটা প্রশ্ন ছিল, এই যে আপনারা সংসদে যাচ্ছেন না আপনারা কি সংসদ সদস্য হিসাবে ভাতা, সুযোগ-সুবিধাগুলো নেয়া বন্ধ রেখেছেন? সংসদে না গেলে তো এগুলো আপনাদের প্রাপ্য না।
এই দেশের রাজনীতিবিদদের দেশের জন্য কেমন মায়া এটার খানিকটা নমুনা পাওয়া যাবে এখানে। স্রেফ অপচয়! আমাদের ভিক্ষা না করে উপায় কী!
*ছবি স্বত্ব: সংরক্ষিত
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment