(আজকাল আমার মস্তিষ্ক নামের হার্ডডিস্ক সম্ভবত গার্বেজ দিয়ে ভরে গেছে নইলে ২১ ফেব্রুয়ারি দাউদ হায়দারের জন্মদিন এটা ভুলে গেলাম কেমন করে!)
অ অভাগা কবি,
অ অভাগা কবি,
ফি বছর তোমার জন্মদিনে লিখব এতোটা সময় কোথায়, বলো? এবার ঠিক ঠিক ২১ ফেব্রুয়ারিতেই বইমেলায় গিয়েছিলাম, বুঝলে। দেখলে কবি, আমার মত '৩ টাকা দামের কলমবাজ' বইমেলায় যেতে পারে, আমার পাশ দিয়ে যে দু-জন বয়স্ক মানুষ উর্দুতে বাতচিত করতে করতে হেঁটে যান, তারাও পারে!
না কবি, তারা হিন্দিতে কথা বলছিলেন না, উর্দুতে কথা বলছিলেন। হিন্দি উর্দুর ফারাকটা আমি বুঝি। না-না, এই নিয়ে আমি হাঙ্গামা করতে চাচ্ছি না। কোনো পাকিস্তানি এসে মেলায় যেতে পারবে না এমন কোনো আইন তো নাই। কই, বানিজ্যমেলায় কি পাকিস্তানি স্টল থাকে না, থাকে? তারা কি আর বাংলাতে কথা বলে? বলে না, তাহলে! আর যে দুজন মানুষ হেঁটে গেলেন তাদের মধ্যে একজন যে কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ না তাই বা বলি কেমন করে? এটা জোর দিয়ে বলতে পারিনা, আমি সবার মুখ মুখস্ত করে বসে আছি বুঝি!
কবি, তুমি বিশ্বাস করবে না, পরমাণু কেন্দ্রের পাশটায় আমি একটা কুকুরও দেখেছিলাম। আহা, বইমেলায় এতো লোকজন, কুকুরের বুঝি কৌতুহল থাকতে নেই! দেখো দিকি কান্ড, বইমেলায় ফাঁকতালে কুকুরও ঢুকে পড়তে পারে! আমরা বইমেলায় নিয়ম ভেঙ্গে সিগারেট টানতে পারি, কামসূত্র কিনতে পারি। কারও কিসসু বলার নাই!
কতজনকে দেখলাম, বইমেলার ধুলো নিয়ে কী রাগ! কবি, মেলায় ধুলোর জন্য কেবল এদের একজনের দেয়া গালি এখানে লিখে দিলে যে দু-চারজন পাঠক এখনও এখানে ঝুলে আছেন, এরা ভোঁতা দা নিয়ে আমায় তাড়া করবেন! এমনিতেই আজকাল লোকজন বলে, আমার নাকি মুখ খারাপ হয়ে গেছে। কী করব, বলো, কিছু কাজ-কারবার দেখলে মেজাজ ঠিক রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কবি, আমি চোখ বুজে বলে দিতে পারি, বইমেলার এই ধুলো মাখার জন্য তুমি তোমার একটা হাত হারাতে দ্বিধা করবে না। বাড়িয়ে বললাম বলে তুমি হা-হা করে হাসছ বুঝি। আচ্ছা, বেশ, তুমি বুকে হাত দিয়ে বলো, শপথ করে বলো তোমার কলমের নামে, কি চোখ নামিয়ে নিলে যে বড়ো? কবি, চশমাটা মোছে, তোমার চোখে জল!
জানো কবি, তোমাকে নিয়ে যে ভাববে আমাদের সুশীলদের সেই সময়টা কোথায়? কত বড়ো-বড়ো কাজ আমাদের সুশীলদের। ভাষা, গণতন্ত্র কত্তো-কত্তো কাজ! তুমি তো দেশে থাকো না, বুঝবে কেমন করে! কোনো একটা সুযোগ পেলেই পাজামা পরে এরা স্টেজে উঠে যান। ফেব্রুয়ারি মাস, এদের দম ফেলার অবকাশ আছে বুঝি, পাগল!
এবারই দেখো না, ভাষার জন্য একেকজনের কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে যাচ্ছিল! মতি ভাইয়ারা ৩০ মিনিটে ... কাঁপাচ্ছে। টক-শো তে একেকজনের কী কান্না! বিজ্ঞাপনে বিনম্র শ্রদ্ধায় শ্রদ্ধা দেখাতে দেখাতে প্রাণ যায় না কিন্তু পাতলুন খুলে যায়। শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চেহারা দেখাবার জন্য প্রয়োজনে আমরা শহীদ মিনার খুবলে ফেলব।
আরে, তুমি জানো না কবি, বাংলার জন্য আমরা কতটা কাতর। রাষ্ট্রীয় ৭৫০টি আইনের মধ্যে ৯৭টি বাংলায়, বাকী সব ইংরাজিতে! কী যে দরদ আমাদের নিজের ভাষার জন্য। ভাষা-ভাষা বলে আমরা মুখে ফেনা তুলে ফেলি...।
তুমি কিচ্ছু জানো না, এই দেশের প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন বলো বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এঁরা এখনও বাংলা ভাষাটাই শুদ্ধরূপে বলতে পারেন না! এই নিয়ে কিন্তু আমাদের কোনো লাজ নাই।
কবি, তুমি বিশ্বাস করবে না, পরমাণু কেন্দ্রের পাশটায় আমি একটা কুকুরও দেখেছিলাম। আহা, বইমেলায় এতো লোকজন, কুকুরের বুঝি কৌতুহল থাকতে নেই! দেখো দিকি কান্ড, বইমেলায় ফাঁকতালে কুকুরও ঢুকে পড়তে পারে! আমরা বইমেলায় নিয়ম ভেঙ্গে সিগারেট টানতে পারি, কামসূত্র কিনতে পারি। কারও কিসসু বলার নাই!
কতজনকে দেখলাম, বইমেলার ধুলো নিয়ে কী রাগ! কবি, মেলায় ধুলোর জন্য কেবল এদের একজনের দেয়া গালি এখানে লিখে দিলে যে দু-চারজন পাঠক এখনও এখানে ঝুলে আছেন, এরা ভোঁতা দা নিয়ে আমায় তাড়া করবেন! এমনিতেই আজকাল লোকজন বলে, আমার নাকি মুখ খারাপ হয়ে গেছে। কী করব, বলো, কিছু কাজ-কারবার দেখলে মেজাজ ঠিক রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কবি, আমি চোখ বুজে বলে দিতে পারি, বইমেলার এই ধুলো মাখার জন্য তুমি তোমার একটা হাত হারাতে দ্বিধা করবে না। বাড়িয়ে বললাম বলে তুমি হা-হা করে হাসছ বুঝি। আচ্ছা, বেশ, তুমি বুকে হাত দিয়ে বলো, শপথ করে বলো তোমার কলমের নামে, কি চোখ নামিয়ে নিলে যে বড়ো? কবি, চশমাটা মোছে, তোমার চোখে জল!
জানো কবি, তোমাকে নিয়ে যে ভাববে আমাদের সুশীলদের সেই সময়টা কোথায়? কত বড়ো-বড়ো কাজ আমাদের সুশীলদের। ভাষা, গণতন্ত্র কত্তো-কত্তো কাজ! তুমি তো দেশে থাকো না, বুঝবে কেমন করে! কোনো একটা সুযোগ পেলেই পাজামা পরে এরা স্টেজে উঠে যান। ফেব্রুয়ারি মাস, এদের দম ফেলার অবকাশ আছে বুঝি, পাগল!
এবারই দেখো না, ভাষার জন্য একেকজনের কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে যাচ্ছিল! মতি ভাইয়ারা ৩০ মিনিটে ... কাঁপাচ্ছে। টক-শো তে একেকজনের কী কান্না! বিজ্ঞাপনে বিনম্র শ্রদ্ধায় শ্রদ্ধা দেখাতে দেখাতে প্রাণ যায় না কিন্তু পাতলুন খুলে যায়। শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চেহারা দেখাবার জন্য প্রয়োজনে আমরা শহীদ মিনার খুবলে ফেলব।
আরে, তুমি জানো না কবি, বাংলার জন্য আমরা কতটা কাতর। রাষ্ট্রীয় ৭৫০টি আইনের মধ্যে ৯৭টি বাংলায়, বাকী সব ইংরাজিতে! কী যে দরদ আমাদের নিজের ভাষার জন্য। ভাষা-ভাষা বলে আমরা মুখে ফেনা তুলে ফেলি...।
তুমি কিচ্ছু জানো না, এই দেশের প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন বলো বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এঁরা এখনও বাংলা ভাষাটাই শুদ্ধরূপে বলতে পারেন না! এই নিয়ে কিন্তু আমাদের কোনো লাজ নাই।
আচ্ছা কবি, যাদের নিয়ে কবিতা লেখার অপরাধে তোমায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে একজন, সেই মানুষটারই না সহিষ্ণুতার শেষ নাই! অথচ সেই মানুষটার অনুসারীরাই এমন অসহিষ্ণু হলো কেমন করে! আমি কি মনে করিয়ে দেব? *
তোমার প্রতি এমন অন্যায়, এত বড়ো শাস্তি! একজন তার মার-দেশমার শরীর স্পর্শ করতে পারবে না, তাঁকে ধরে কেঁদে বুকটা হালকা করতে পারবে না? স্বজনদের ছুঁয়ে কাঁদতে পারবে না এরচেয়ে যে গুলি করে মেরে ফেলা অনেক শ্রেয়। তোমাকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে এর বদলে আমি হেমলকের পেয়ালা চাইতাম।
ও কবি, তুমি নাকি এখনও বাংলায় কথা বলো, বাংলায় লেখো, বাংলায় স্বপ্ন দেখো, সত্যি নাকি, সত্যি? আহা, বাংলাটা ভুলতে পারোনি বুঝি? তুমি এই কবিতাগুলো কী দিয়ে লেখো, কালির বদলে রক্ত?
ও কবি, তুমি নাকি এখনও বাংলায় কথা বলো, বাংলায় লেখো, বাংলায় স্বপ্ন দেখো, সত্যি নাকি, সত্যি? আহা, বাংলাটা ভুলতে পারোনি বুঝি? তুমি এই কবিতাগুলো কী দিয়ে লেখো, কালির বদলে রক্ত?
"এত দিনে স্মৃতিতে ধুলো জমেছে, মনের ভেতর জমিয়েরাখা ছবি মলিন হয়ে এসেছে, কিন্তু প্রতিক্ষার অবসান হয়নি।
কেটে গেল তিরিশ বছর
এখনো নির্বাসনে।...।" (দাউদ হায়দার)
আমি বলি কি, কবি: "যে হাত পদ স্পর্শ করে, সে হাত চোখ খুবলে নেয়ারও শক্তি রাখে..."। কবি, অনেক তো হলো তবলার ঠুকঠাক, আসো এইবার গলা ছেড়ে গান গাই।
বুঝলে, মানুষ মানুষই, কচ্ছপ না। আর কত-আর কত প্রহর, কেটে গেছে ৩৬টা বছর! দেশমা, তোমার জন্য আর কতোটা কাল অপেক্ষা করবে? এইসব পুতুপুতু কবিতা লেখা ছাড়ো, কবি। সব সময় পুরুষ হয়ে লাভ নাই, কখনও কাপুরুষ হওয়ার প্রয়োজনও দেখা দেয়। কেউ মারা যায় বিছানায়; গু-মুতে মাখামাখি হয়ে তো কেউ যুদ্ধে- পার্থক্য কী!
আচ্ছা, তুমি যেখানে থাকো ওখানে বাংলাদেশ হাই-কমিশনারের অফিস নেই? আছে? থাকলে, ওটার সামনে গিয়ে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দাও। বিশ্ব জানুক আমরা কেমন নগ্ন জাতি! ছোট-ছোট বাচ্চারাও দেখুক, আমাদের দেশ- এই রাষ্ট্র নামের নগ্ন পিতা এক চিলতে কাপড়ের জন্য কেমন ছোটাছুটি করছে। তুমি একটু চোখ বন্ধ করে কল্পনা করো তো কী ভয়ানক এক দৃশ্য!
বুঝলে, মানুষ মানুষই, কচ্ছপ না। আর কত-আর কত প্রহর, কেটে গেছে ৩৬টা বছর! দেশমা, তোমার জন্য আর কতোটা কাল অপেক্ষা করবে? এইসব পুতুপুতু কবিতা লেখা ছাড়ো, কবি। সব সময় পুরুষ হয়ে লাভ নাই, কখনও কাপুরুষ হওয়ার প্রয়োজনও দেখা দেয়। কেউ মারা যায় বিছানায়; গু-মুতে মাখামাখি হয়ে তো কেউ যুদ্ধে- পার্থক্য কী!
আচ্ছা, তুমি যেখানে থাকো ওখানে বাংলাদেশ হাই-কমিশনারের অফিস নেই? আছে? থাকলে, ওটার সামনে গিয়ে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দাও। বিশ্ব জানুক আমরা কেমন নগ্ন জাতি! ছোট-ছোট বাচ্চারাও দেখুক, আমাদের দেশ- এই রাষ্ট্র নামের নগ্ন পিতা এক চিলতে কাপড়ের জন্য কেমন ছোটাছুটি করছে। তুমি একটু চোখ বন্ধ করে কল্পনা করো তো কী ভয়ানক এক দৃশ্য!
কী, সাহসে কুলাচ্ছে না, কবি? হা হা হা। যে হাত কবিতা লিখতে পারে সেই হাত বুঝি নিজের গলা চেপে ধরতে পারে না, না?
* "আবু
হোরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন, এক বদু (বেদুইন) নবী (সাঃ)-এর মসজিদে
আসিয়া এক কোনে বসিয়া প্রস্রাব করিতে লাগিল। সকলেই বদুকে ধমক দিতে আরম্ভ
করিলে নবী (সাঃ) তাহাদিগকে নিষেধ করিলেন এবং বলিলেন, এই অবস্থায় তাহাকে
বাধা দিও না।
বদুর প্রস্রাব করা শেষ হইলে তিনি তাহাকে নিকটে ডাকিয়া বুঝাইয়া দিলেন, মসজিদ পবিত্র স্থান, এখানে মল-মূত্র ত্যাগ করা সমীচীন নহে।
তাহার পর সাহাবীগণকে আদেশ করিলেন, পানি আনিয়া জায়গাটি পরিস্কার করো। তোমরা (মুসলিম জাতি) পৃথিবীর প্রতি আদর্শরূপে আবির্ভূত হইয়াছ, কর্কশ ব্যবহারেরর জন্য নহে।" (বোখারী শরীফ)
বদুর প্রস্রাব করা শেষ হইলে তিনি তাহাকে নিকটে ডাকিয়া বুঝাইয়া দিলেন, মসজিদ পবিত্র স্থান, এখানে মল-মূত্র ত্যাগ করা সমীচীন নহে।
তাহার পর সাহাবীগণকে আদেশ করিলেন, পানি আনিয়া জায়গাটি পরিস্কার করো। তোমরা (মুসলিম জাতি) পৃথিবীর প্রতি আদর্শরূপে আবির্ভূত হইয়াছ, কর্কশ ব্যবহারেরর জন্য নহে।" (বোখারী শরীফ)
**www.newsagency24.com চোরের এক আস্তানার নাম: https://www.facebook.com/ali.mahmed1971/posts/10151517933607335?notif_t=like
**দাউদ হায়দার, তোমার কাছে চিঠি, আবারও: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_20.html
ছবি সূত্র: গুগল। অনেক চেষ্টা করেও যিনি ছবিটা উঠিয়েছেন তার নাম পেলাম না। অজানা মানুষটার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
2 comments:
ঋদয়কে স্পর্শ করে গেছে।
আপনার মন্তব্যও আমাকে স্পর্শ করে। ধন্যবাদ। @আসাদ আব্দুল্লাহ
Post a Comment