মাধবী রবি দাস।
বয়স আনুমানিক দশ। এঁরা হরিজন (গান্ধীজীর প্রদত্ত নাম)। বাবা ছিলেন চর্মকার। অবশ্য চর্মকার ছিলেন মি. বাটাও। সহজ ভাষায় মুচি। বাবার নাম সুরেশ রবি দাস। বাবা মারা যান যখন এই মেয়েটির বয়স আনুমানিক এক।
মাধবী ক্লাশ থ্রি-তে পড়ত। পড়া বন্ধ। মার কল্যাণে কায়ক্লেশে সংসার চলে। মাধবী পড়ে রাধানগর ফ্রি প্রাইমারী স্কুলে (এই স্কুলে আমি নিজেও পড়েছি, এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এখনো ফ্রিতে পড়াশোনার সুযোগ আছে বলে।)।
এখন তার স্কুল ড্রেস নেই, খাতা-কলম নেই। আমাদের ভাষায় কারণটা খুব তুচ্ছ। এর সমাধানও খুব জটিল কিছু না। আজ স্কুল ড্রেস এবং খাতা-কলমের সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
একজন সহৃদয় ভদ্রমহিলা একে পড়া দেখিয়ে দেয়ার দায়িত্বও নিয়েছেন। মাধবী দীর্ঘ সময় স্কুলে না যাওয়ার কারণে পড়ায় অনেক পিছিয়ে পড়েছে। তাকে আলাদা করে পড়া দেখিয়ে দেয়াটা জরুরী।
আমি গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি, মাধবী চকচকে স্কুল ড্রেস পরে নতুন বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। এ গ্রহে এরচেয়ে চমৎকার দৃশ্য আর কী হতে পারে! সে তার পিছিয়ে যাওয়া পড়া ভদ্রমহিলার কাছ থেকে বুঝে নিচ্ছে।
মাধবীকে নিয়ে আমার আরও কিছু ভাবনা আছে। আমার ফতুয়ায় হাতের সেলাইয়ের কাজ দেখে একজন পেছনে লেগে গেলেন। তাকেও এমন হাতের সেলাইয়ের কাজ করে দিতে হবে। যতই আমি বলি, এটা আমরা নিজেরাই বাসায় করি কিন্তু কে শোনে কার কথা।
মাধবী আগ্রহী হলে তাকে সুই-সুতার কাজটা ধরিয়ে দিতে হবে। এতে ভবিষ্যতে তার নিজের খরচ সে নিজেই বহন করতে পারবে।
মাধবীকে এই সব করতেই হবে কারণ সে স্বপ্নের কারখানার [১] একজন। এমনটা না করলে আমার পরাজয়। নিজেকে পরাজিত দেখতে ভালো লাগে না।
*স্বপ্ন: http://tinyurl.com/3y7bpz3
সহায়ক লিংক:
১. স্বপ্নের কারখানা: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_16.html
২. আপডেট: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_18.html
No comments:
Post a Comment