পূর্বের পোস্টে [১] আমি লিখেছিলাম, ইশকুলটার বেশ কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। একটা ইশকুল ঘরের প্রয়োজন ছিল কারণ বৃষ্টি এলেই পড়া পন্ড হত। বাচ্চাদের পোশাকের সমস্যাও ছিল। এই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়েছে। ইশকুলের জন্য একটা ঘর পাওয়া গেছে। যদিও এই ঘরটায় আলো-বাতাসের সমস্যা আছে, তবুও ইশকুলের জন্য একটা নির্ধারিত ঘর তো হলো। আশা করছি, কালকের মধ্যে আলো-বাতাসের সমস্যার সমাধান হবে।
বাচ্চাদের পোশাকের সমস্যারও সমাধান হয়েছে। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, আলাদা কাপড়ের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু পরে এটা বাদ দেয়া হয়েছে। এরচেয়ে অনেক ভালো হয় এদের ইশকুল ড্রেস হলে। তাই করা হয়েছে।
ইশকুলের ড্রেস পরে সারি বেঁধে বাচ্চারা ইশকুলে যাচ্ছে এ দৃশ্যটা একবার আমার মাথায় এমন আটকে গিয়েছিল যে তখন মনে হচ্ছিল, এই গ্রহে এরচেয়ে চমৎকার দৃশ্য আর নাই!
আর এখন এই বাচ্চাদের তো কথাই নেই। অবশ্য বাচ্চাদের চেয়ে এদের মাদের আনন্দ কম এ কথা জোর দিয়ে বলতে পারি না।
আলী মাহমেদ নামটা নিয়ে অনেকে খুব সমস্যা বোধ করেন। সাধারণ মানুষ কোন ছার, জ্ঞানী মিডিয়ারও কেউ কেউ এটাকে আলীম আহমেদ বানিয়ে দেন, তো কেউ আলী আহমেদ, কেউ-বা আলী মাহমুদ।
কেউ কেউ আবার ভুরু জোড়া দিয়ে বলেন, এইটা আবার একটা নাম হইল! তাঁদের সদয় অবগতির জন্য বলি, দয়া করে ইংরাজিতে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখবেন বিভিন্ন দেশে কত আলী মাহমেদ আছে।
প্রসঙ্গটা এই কারণে বললাম, এই হরিজন পল্লীতে সবচেয়ে শিক্ষিত ছেলেটার নাম হচ্ছে, আকাশ বাসপোর। বাসপোর? বাসপোর কি নাম, বাওয়া? নামটাকে নিয়ে মিডিয়া যে কী খেলা খেলত এই নিয়ে বড়ো চিন্তায় আছি।
যাগ গে, এই আকাশ বাসপোর, পিতা প্রদীপ বাসপোর। এ প্রথম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছিল। বৃত্তি পেয়েছিল ক্লাশ ফাইভে। আমার খানিকটা অবিশ্বাস ছিল কিন্তু আজই তার সনদগুলো হাতে পেলাম।
এখন এ পড়ছে ক্লাশ এইটে, তার বোন ক্লাশ ফাইভে। তার প্রবল আশা, ক্লাশ এইটেও সে বৃত্তি পাবে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ওর বাবা নাই। আর্থিক সমস্যার কারণে পড়া চালিয়ে যেতে তার সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যারও একটা সমাধান করা হয়েছে।
*এই সব সমস্যা নিয়ে আমি চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পড়শী ফাউন্ডেশন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডাক্তার, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভদ্র মহিলা। তাঁদের প্রতি আমার অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
**এখন আমার জন্য সবচেয়ে বড়ো যে সমস্যা সেটা হচ্ছে, আজও লক্ষ করলাম, বেশ কটা বাচ্চার শরীর খারাপ থাকায় এরা অনুপস্থিত। ডাক্তার পাচ্ছি না। অনীক নামের একটা বাচ্চার চোখ দেখলাম হলুদ। এটাকে ধরে নিয়ে টেস্ট করে অবশ্য গুরুতর কিছু পাওয়া যায়নি। বিলরুবিন ২.৭। এইচবিএস নেগেটিভ। আপাতত এর বিশ্রাম।
এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন এমন একজন জুনিয়র বন্ধুকে গতকাল ডাক্তারের সমস্যার কথা বলায় সে বলছিল, দেখি, ডাক্তার একটা মেয়ে খুঁজছি বিয়ে করার জন্য। বুদ্ধিটা মন্দ না। :)
***আরেকটা কাজ অচিরেই শুরু করব। 'স্মল ক্রেডিট'। 'মাইক্রো ক্রেডিট' এটা বললে আমাদের ইউনূস সাহেব [২] আবার আপত্তি জানাতে পারেন তাঁর বিরাট আবিষ্কার ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে বলে।
'স্মল ক্রেডিট' হচ্ছে খুব সাধারণ একটা ভাবনা। ছোট্ট একটা কাজ। অনেক মহিলা আছেন যাদের খুব স্বল্প পুঁজি হলে গোটা পরিবারটা দাঁড়িয়ে যায়। এঁরা অনেকে মোয়া বানান, ঠোঙ্গা বানান, সমুসা বানান (এটা এখন গাড়িতে হরদম বিক্রি হয়)।
এঁদেরকে যে স্বল্প পুজিটা দেয়া হবে সেটা (এঁদের সঙ্গে আলোচনা করে) প্রতি মাসে অল্প অল্প করে টাকাটা এঁরা পরিশোধ করবেন। এবং অবশ্যই আমাদের মহান ইউনূস সাহেব, স্যার ফজলে আবেদের [৩] মতো চড়া সুদে না।
বিনা সুদে।
সহায়ক লিংক:
১. ইশকুল: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_1768.html
২. লাইফ-এচিভমেন্ট-সেক্রিফাইস: http://www.ali-mahmed.com/2008/07/blog-post_3333.html
৩. লাশ-পদক-বানিজ্য: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_23.html
বাচ্চাদের পোশাকের সমস্যারও সমাধান হয়েছে। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, আলাদা কাপড়ের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু পরে এটা বাদ দেয়া হয়েছে। এরচেয়ে অনেক ভালো হয় এদের ইশকুল ড্রেস হলে। তাই করা হয়েছে।
ইশকুলের ড্রেস পরে সারি বেঁধে বাচ্চারা ইশকুলে যাচ্ছে এ দৃশ্যটা একবার আমার মাথায় এমন আটকে গিয়েছিল যে তখন মনে হচ্ছিল, এই গ্রহে এরচেয়ে চমৎকার দৃশ্য আর নাই!
আর এখন এই বাচ্চাদের তো কথাই নেই। অবশ্য বাচ্চাদের চেয়ে এদের মাদের আনন্দ কম এ কথা জোর দিয়ে বলতে পারি না।
আলী মাহমেদ নামটা নিয়ে অনেকে খুব সমস্যা বোধ করেন। সাধারণ মানুষ কোন ছার, জ্ঞানী মিডিয়ারও কেউ কেউ এটাকে আলীম আহমেদ বানিয়ে দেন, তো কেউ আলী আহমেদ, কেউ-বা আলী মাহমুদ।
কেউ কেউ আবার ভুরু জোড়া দিয়ে বলেন, এইটা আবার একটা নাম হইল! তাঁদের সদয় অবগতির জন্য বলি, দয়া করে ইংরাজিতে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখবেন বিভিন্ন দেশে কত আলী মাহমেদ আছে।
প্রসঙ্গটা এই কারণে বললাম, এই হরিজন পল্লীতে সবচেয়ে শিক্ষিত ছেলেটার নাম হচ্ছে, আকাশ বাসপোর। বাসপোর? বাসপোর কি নাম, বাওয়া? নামটাকে নিয়ে মিডিয়া যে কী খেলা খেলত এই নিয়ে বড়ো চিন্তায় আছি।
যাগ গে, এই আকাশ বাসপোর, পিতা প্রদীপ বাসপোর। এ প্রথম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছিল। বৃত্তি পেয়েছিল ক্লাশ ফাইভে। আমার খানিকটা অবিশ্বাস ছিল কিন্তু আজই তার সনদগুলো হাতে পেলাম।
এখন এ পড়ছে ক্লাশ এইটে, তার বোন ক্লাশ ফাইভে। তার প্রবল আশা, ক্লাশ এইটেও সে বৃত্তি পাবে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ওর বাবা নাই। আর্থিক সমস্যার কারণে পড়া চালিয়ে যেতে তার সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যারও একটা সমাধান করা হয়েছে।
*এই সব সমস্যা নিয়ে আমি চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পড়শী ফাউন্ডেশন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডাক্তার, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভদ্র মহিলা। তাঁদের প্রতি আমার অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
**এখন আমার জন্য সবচেয়ে বড়ো যে সমস্যা সেটা হচ্ছে, আজও লক্ষ করলাম, বেশ কটা বাচ্চার শরীর খারাপ থাকায় এরা অনুপস্থিত। ডাক্তার পাচ্ছি না। অনীক নামের একটা বাচ্চার চোখ দেখলাম হলুদ। এটাকে ধরে নিয়ে টেস্ট করে অবশ্য গুরুতর কিছু পাওয়া যায়নি। বিলরুবিন ২.৭। এইচবিএস নেগেটিভ। আপাতত এর বিশ্রাম।
এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন এমন একজন জুনিয়র বন্ধুকে গতকাল ডাক্তারের সমস্যার কথা বলায় সে বলছিল, দেখি, ডাক্তার একটা মেয়ে খুঁজছি বিয়ে করার জন্য। বুদ্ধিটা মন্দ না। :)
***আরেকটা কাজ অচিরেই শুরু করব। 'স্মল ক্রেডিট'। 'মাইক্রো ক্রেডিট' এটা বললে আমাদের ইউনূস সাহেব [২] আবার আপত্তি জানাতে পারেন তাঁর বিরাট আবিষ্কার ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে বলে।
'স্মল ক্রেডিট' হচ্ছে খুব সাধারণ একটা ভাবনা। ছোট্ট একটা কাজ। অনেক মহিলা আছেন যাদের খুব স্বল্প পুঁজি হলে গোটা পরিবারটা দাঁড়িয়ে যায়। এঁরা অনেকে মোয়া বানান, ঠোঙ্গা বানান, সমুসা বানান (এটা এখন গাড়িতে হরদম বিক্রি হয়)।
এঁদেরকে যে স্বল্প পুজিটা দেয়া হবে সেটা (এঁদের সঙ্গে আলোচনা করে) প্রতি মাসে অল্প অল্প করে টাকাটা এঁরা পরিশোধ করবেন। এবং অবশ্যই আমাদের মহান ইউনূস সাহেব, স্যার ফজলে আবেদের [৩] মতো চড়া সুদে না।
বিনা সুদে।
সহায়ক লিংক:
১. ইশকুল: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_1768.html
২. লাইফ-এচিভমেন্ট-সেক্রিফাইস: http://www.ali-mahmed.com/2008/07/blog-post_3333.html
৩. লাশ-পদক-বানিজ্য: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_23.html
2 comments:
আপনি কি দৈনিক আমার দেশে আপনাকে নিয়ে রিপোটটা দেখেছেন?
এরা যে ছবি এদের বলে ছাপিয়েছে এটা এখান থেকে নেয়া হয়েছে। আমার দেশের রিপোটটা দেখুন http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/07/31/36761
রিপোর্টটা দেখেছি।
"এরা যে ছবি এদের বলে ছাপিয়েছে এটা এখান থেকে নেয়া হয়েছে।"
আমাদের উন্নতির (!) মূল রহস্য হচ্ছে, আমরা শর্ট-কাট রাস্তাটা খুঁজে পেয়ে গেছি। পরিশ্রম করতে আগ্রহ বোধ করি না। @রাশেদ
Post a Comment