ঘটনাস্থল কুমিল্লা। কুমিল্লা টাউন হল। বস্ত্রমেলায় একটা স্টল দিয়েছিলেন চীনা এক দম্পত্তি। মিস্টার থা এবং তাঁর স্ত্রী ইয়েনগি। কিছু বখাটে যুবক ইয়েনগিকে উত্যক্ত করলে তাঁর স্বামী প্রতিবাদ করতে গেলে, মিস্টার থা'র মাথা ফাটিয়ে ফেলা হয়। দরদর করে রক্তে তার সমস্ত শরীর ভিজে যায়।
এই পর্যন্ত এটা একটা ঘটনা। কিন্তু মিস্টার থা এই মেলার আয়েজকদের কাছে কোন ধরনের সাহায্য পাননি। পুলিশের ডিআইও ওয়ান যেটা বলেন এরপর কথা চলে না! তিনি বলেছেন, "এটি ছোট ঘটনা, বিষয়টা আমরা দেখছি।"
এটা ছোট ঘটনা তো বটেই! অন্তত আমি নিশ্চিত, এই চীনা দম্পত্তি দেশে ফিরে আমাদের এমন সুনাম করবেন, ব্যবসায়িক দ্বার উম্মোচনের কথা বলবেন; প্লেন বোঝাই করে চীনারা সব দলে দলে এই দেশে ভিড় করবে। প্লেনে বসার টিকেট না পেলেও কে জানে, দাঁড়িয়েও চলে আসতে পারে।
আমার জানা মতে, এইসব পুলিশ নামের অফিসারদের সারদা পুলিশ একাডেমিতে ট্রেনিং দেয়া হয়। আমার খুব জানার ইচ্ছা, ওখানে কী কেবল ঘোড়ায় চড়া শেখানো হয়?
সমাজপতিরা বিচারের নামে বাবাকে দিয়ে ছেলের চোখ উঠাতে বাধ্য করে। ঈশ্বর, কোন সভ্য দেশে এমনটা সম্ভব? এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিউদ্দিন প্রথম আলোর কাছে বলেন, "ঘটনাটা শুনেছি। আমার কাছে ছেলের বাবা এসেছিলেন। আমি তাঁকে বলেছি আগে চিকিৎসা করান। তারপর অভিযোগ দিয়েন।"
ভাল-ভাল! এই অফিসারের মনে দেখি অ-নে-ক মায়া! চোখের চিকিৎসা যখন শেষ হবে তখন পর্যন্ত দোষীরা বসে বসে ছা ফুটাবে।
আমাদের দেশের পুলিশ মহোদয়দের মনে কী মায়া এটা বোঝার জন্য এই ক্লিপিংসটাই যথেষ্ট। প্রকাশ্যে কোন দায়িত্বশীল মানুষ এমন একটা বেদনার ঘটনা নিয়ে এমন কুশ্রাব্য-কুৎসিত কথা বলতে পারেন এটা আমার কল্পনাতেও আসে না। আজ কেবল মনে হচ্ছে, সাদাত হাসান মান্টোর কথা "একশত জন...মারা গেলে একজন পুলিশম্যানের জন্ম হয়"।
এটা দেখে আমার কেবল মনে হচ্ছিল পুলিশ নামের এই মানুষটা অন্য গ্রহ থেকে এসেছেন। তাকে কেউ জন্ম দেয়নি, তিনি কাউকে জন্ম দেননি। তাই হবে! নইলে এই বাচ্চাগুলোর কষ্টটা তার চোখে ধরা পড়েনি।
কে জানে, একদিন দেখব এই অফিসারের শাস্তি দূরের কথা প্রমোশন দেয়া হয়েছে। সম্ভব, এই দেশে সবই সম্ভব...।
*ঋণ: ইউটিউবের এই ক্লিপিংসটা নেয়া হয়েছে: http://www.konfusias.blogspot.com থেকে
No comments:
Post a Comment