Search

Sunday, September 20, 2015

হর্ষ-বিষাদ, বিষাদ-হর্ষ!

এই শিশুটির [১] কোনও গতি করতে পারছিলাম না। দিন গড়ায় কিন্তু কোন গতি হয় না। গতির চাকা যে চারকোনা। না-হওয়ার তো কোনও কারণ নেই অল্প কয়েকটা উদাহরণ দেই।
উদাহরণ এক: এই দেশের অসম্ভব প্রভাবশালী পত্রিকার এক সাংবাদিক ভাইজানকে শিশুটির বিষদ জানিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা, জেলা শহরে শিশুদের রাখা হয় এমন কোনও সরকারী ব্যবস্থার খোঁজ দিতে পারেন? আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে তিনি বললেন, আমার জানা নাই। আহা-আহা, সাংবাদিক সাহেবের স্কন্ধে কত্তো-কত্তো ‘লিউজ’ এই অতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় কোথায়?
উদাহরণ দুই: এক ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দুঁদে সাংবাদিক মহোদয়কে এমন কোনও খোঁজের কথা বলার পর তিনি বললেন, আচ্ছা জেনে জানাব। আজও আমি অপেক্ষায় আছি।

শোনো কথা, অপেক্ষায় অপেক্ষায় এভাবে কী চলে? আমার তো আবার অকাজের শেষ নেই। বাহে, আমি তো আর অন্য গ্রহ থেকে আসিনি। রাত তিনটায় যখন কোনও শিশু বলে, ‘আমার হাগা ধরছে, হাগুম’ তখন সকালের অপেক্ষায় কোনও শিশুর হাগা-মুতা থামিয়ে রাখা চলে না। আর খানিকটা সাহস সঞ্চয় করতে পারলেই আমার পক্ষে শিশুটিকে ফেলে দেওয়াটা কোনও বিষয় ছিল না।

সবই অন্ধকার বিষাদের গল্প- কোথাও কী কোনও আলো নেই! আলো থাকে, থাকতে হয়; না-থেকে আলো বেচারার কোনও উপায় নেই। খুব একটা স্বচ্ছল নন এমনই এক পরিবারের দু-সন্তানের জননী গভীর মমতায় শিশুটির হাত ধরে আমাকে বলেন, ‘এই বাচ্চাটার দায়িত্ব আমাকে দেবেন? কোনও সমস্যা হবে না আমার দুই বাচ্চার সাথে এও বড়ো হবে’।
ঝাপসা হয়ে আসা অতি সাদামাটা এই মহিলার দিকে আমি তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলাম এটা কী কোনও রসিকতা নাকি এটা একটা খেলা মনে করছেন। ২৪ ঘন্টা না-পেরুতেই এসে বলবেন, জল্লা-জল্লা, এই খেলা আর খেলব না!

আহা, কেমন করেই বা ভরসা হবে? ইনি তো আর আমাদের মত দু-পাতা ‘ন্যাকাপড়া’ জানা মানুষ না যে পাতার-পর-পাতা দস্তয়োভস্কি মায়াকভস্কি পড়ে উচু-উচু ভাবনা ধার করে তলতলে হয়ে আছেন। বা নিদেনপক্ষে এঁর একটা এফবি একাউন্টও নেই যে আমাদের মত ‘দেশ-দশউদ্ধার’ করে গণতন্ত্র-মায়াতন্ত্রে হাবুডুবু খেয়ে ভুস করে ভেসে উঠে এমন একটা কান্ড করে ফেলবেন!

শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার পর এঁর বাসায় গিয়ে শিশুটির ঢলঢলে মুখ দেখে চোখ জুড়ায়। কিন্তু কোনও অনুরোধেই ছবি উঠাবার অনুমতি পাওয়া গেল না। আমি যতই বোঝাই এটা আমাদের সবারই জানা প্রয়োজন। এঁর এক রা, এটা আর এমন কী! আমি খানিকটা ঘুরিয়ে বলি শিশুটির একটা স্মৃতির জন্য নাহয়…। তিনি সদয় শর্ত জুড়ে দেন, আচ্ছা কিন্তু কোথাও ছবিটি দেওয়া যাবে না। হায়, নি-মোরাদ আমি দুর্দান্ত লোভ সামলাই কেমন করে? বড়ো অনিচ্ছায় ছবিটি এখানে জুড়ে দিলাম কিন্তু সঙ্গত কারণেই অচেনা আকারে।

সহায়ক সূত্র: ১. একজন দুর্বল মানুষ: http://www.ali-mahmed.com/2015/09/blog-post.html 


No comments: