'আফগানিস্তানে একচুয়ালি কী হচ্ছে, এটা আপনিও চোখে দেখছেন না, আমিও দেখছিনা, শুধু মিডিয়ার মাধ্যমে খন্ডচিত্র আমাদের কাছে যেটুকু আসে তাই নিয়ে আমাদের ধারণা।'
এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
'আফগানিস্তানে একচুয়ালি কী হচ্ছে, এটা আপনিও চোখে দেখছেন না, আমিও দেখছিনা, শুধু মিডিয়ার মাধ্যমে খন্ডচিত্র আমাদের কাছে যেটুকু আসে তাই নিয়ে আমাদের ধারণা।'
এই খবরটা আপাতত দৃষ্টিতে খুবই সাধারণ মনে হবে। কারণ এটা তো এখন হরহামেশা হচ্ছে। আওয়ামীলীগের লোকজনকে বিভিন্ন মামলা দেওয়া হচ্ছে। এমনিতে অনেক মামলা বা মামলার মেরিট নিয়ে আমরা বিরক্ত [১]!
কিন্তু, এই যে ডা. আবু সাইদকে আজ আমরা এই অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি অনেকে বলেন আন্দোলনের সময় ডা. সাঈদ আহতদের চিকিৎসা দেননি! কেবল এমন না, তিনি আপ্রাণ চেষ্টাও করেছেন আহতরা যেন অন্যত্রও চিকিৎসা নিতে না-পারে। এ সত্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডা. সাঈদের নিজের মেডিকেল কলেজ আছে বিধায় তিনি এখানকার মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কঠিন ভাষায় নিবৃতও করেছেন যে ছাত্র-জনতা আন্দোলনে কেউ কোন প্রকার সম্পৃক্ত হলে তাকে এই মেডিকেল কলেজে পড়তে দেওয়া হবে না।
যাই হোক, এটা হালের কথা। এই সবই ডা. সাঈদের বর্তমান কর্মকান্ড। কালে-কালে তিনি মহিরুহ হয়ে উঠেছেন। একজন আবাসিক চিকিৎসক থেকে হয়েছিলেন সিভিল সার্জন। এরপর একটা মেডিকেল কলেজে গড়ে তুলেছেন। হাজার-হাজার ভাবী চিকিৎসকের মা-বাপ। চিকিৎসক সমিতির নেতা, ভূতপূর্ব রাজনৈতিক দলের পান্ডা। কিন্তু আমি ২০২৪ সালের কথা বলছি না, বলছি ২০০৪ সালের কথা। তখন ডা. সাঈদ এই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই একজন চিকিৎসক ছিলেন, আরএমও বা আবাসিক চিকিৎসক।
বাচ্চাটার নাম হাইড করে দেওয়া হলো। |
ওই ছোট্ট বাচ্চাটার বাবার চোখের জল মিশে গেল নর্দমায়-তিতাস নদীতে। এই কান্না চোখে দেখা যায় না, অসহ্য একটা দৃশ্য ছিল [২]। কিন্তু অক্ষমতা ব্যতীত তখন করার কিছুই ছিল না। আদালত কাগজ -ডকুমেন্ট খোঁজে। সেই কাগজই হয়ে গিয়েছিল কলাপাতা- আদালতে মামলা খারিজ!
ওই বাবাটা একটা বাচ্চার মত কাঁদতে-কাঁদতে বলছিলেন, 'আমি আল্লার কাছে বিচার দিলাম-আমি আল্লার কাছে বিচার দিলাম'। তখন যে কী অসহায়ই না লাগছিল। আমি যেন এক নগ্ন মানুষ! ২০ বছর পূর্বে এখনকার মত এতটা পচে যাইনি বলেই হয়তো তখন আমার মরে যেতে ইচ্ছা করছিল!
এই ডা. সাইদদের মত কিছু পশুর কারণে আইন চলে এঁকেবেঁকে। তো, এই করে করে ডা. সাঈদ তার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। কী ক্ষমতার দবদবা! কিন্তু একটু চোখ বন্ধ করলে আমার কেবল মনে হতো যেন একটা বাচ্চার সতীত্বের উপর দাঁড়িয়ে আছে গোটা মেডিকেল কলেজটা!
অনেকে বলবেন আজ এটা লেখার কী মানে? আহা, প্রকৃতির শোধ বলে কথা, ফিরে আসে বারবার। চোখ ভরে দেখি কেবল! প্রকৃতি, সে তো আর আমাদের মত অধৈর্য না! এরিমধ্যে চলে গেছে ২০ বছর কিন্তু তাতে তার কী আসে যায়। তার অপেক্ষা করতে কোন ক্লান্তি নেই। ডা. সাঈদ নামের মানুষ-গাছটাকে বড় হয়ে একটা মহিরুহ হতে দিয়েছে, তারপর ...।
সহায়ক সূত্র:
আইনজীবী জেড আই খান পান্না সফল হননি, হলে সর্বনাশ হয়ে যেত! তিনি খুন করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু ভিকটিম বেঁচে গেছে! নইলে আবারও সর্বনাশ হয়ে যেত।
আইনজীবী পান্নার বিরুদ্ধে 'হত্যাচেষ্টার মামলা' হয়েছে। ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আহাদুল ইসলাম নামের একজনকে গুলি এবং মারধর শুরু করেন ১৮০ জন দুষ্কৃতিকারী। অবশ্য এরমধ্যে কে গুলি করেছেন আর কে মারধরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তা এখনও জানা যায়নি! ক্রমশ জানা যাবে। তদন্তসাপেক্ষে পরে এটাও হয়তো প্রমাণিত হবে যে ১৮০ জন একসঙ্গে গুলি করেননি! করলে তো আর আহাদুল বেঁচে থাকতেন না। ১৮০টা গুলি খাওয়ার পর এই জগতে কে বেঁচেছে!
তো এই ১৮০ জন আসামীর মধ্যে জেড আই খান পান্না আছেন ৯৪ নম্বরে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। কারণ এই ভদ্রলোকের আছে অকল্পনীয় সংগ্রামী এক জীবন। তিনি যে ৭১ সালে লড়েছেন কেবল তাই না তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ করে জেলও খেটেছেন। কর্নেল তাহেরের সঙ্গে জেলে ছিলেন [১]। এমন একজন মানুষ কোন-একটা হত্যা চেষ্টায় সরাসরি গুলি করেননি এটা আমি মানতে পারছি না। তাঁকে ১ নং আসামী দেওয়াটাই সমীচীন ছিল।
মামলাটি করেছেন আহাদুল ইসলামের বাবা মো. বাকের। এই বিষয়ে খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাউদ হায়দার বলেন:
"আহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন, আমরা মামলা নিয়েছি। মামলাটি তদন্ত করে দেখা হবে যে এর সত্যতা রয়েছে কি না।" (ডেইলি স্টার, অক্টোবর ২০, ২০২৪)
আরেকটা কথা। মামলা বাদীও কিন্তু মারাত্মক চৌকশ একজন মানুষ! এই মামলায় এক দুই জন না, ১৮০ জনকে আসামি করেছেন! এবং জেড আই খান পান্না, বিজিবির বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এই সমস্ত নাম ঠিক-ঠিক মনে করে মামলাটা করেছেন। এ এক বিস্ময়, মহা বিস্ময়!
যাই হোক, এখন জানলাম বাদী পান্না সাহেবের নাম 'ভুলে-ভালে' দিয়েছেন বলে প্রত্যাহার করতে চাচ্ছেন। তাতে এখন আর কিছু যায় আসে না! আমাদের মত আমজনতার লাউ-কদুর পার্থক্য না-জানার কারণ নেই, নিয়মিত বাজারে যেতে হয় যে।
এভাবে আসলে কফিনে পেরেক ঠোকা হয়েই যায়। এই সব করে-করে পুলিশকে আবারও শেখানো হচ্ছে কেমন করে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে কায়দা মত নাম ঢুকিয়ে দিতে হয়। বিচারক মহোদয়দেরও ভাল করে শেখানো হচ্ছে কাকে জামিন দেওয়া যাবে, কাকে দেওয়া যাবে না। কোন মামলার মেরিট আছে কোন মামলার নাই!
ভাল, ভাল তো! 'পরিবর্তনের হাওয়া' উড়িয় যায় দমকা হাওয়ায়। বিচারক মানিককে দেওয়া হয় ৫৪ ধারার মামলা [২], সাকিবকে দেওয়া হয় হত্যা মামলা। কী আজব!
ধরে নিলাম, মানিক, সাকিবদের মত পাজিদেরকে শায়েস্তা করা প্রয়োজন, তাই বলে এই সমস্ত মামলা! মানিকের বিরুদ্ধে অর্থ লোপাট, ১৪ লাখ টাকা সরকারী বাড়ি ভাড়া না-দেওয়া, মানি লন্ডারিং, টক-শোতে রাজাকারের বাচ্চা বলা এমন কত মামলাই তো দেওয়া সম্ভব। আর কিছু না-পেলে বিনা অনুমতিতে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছেন যেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তেমনি সাকিবকে ধরার আর কী কোন উপায় নেই? জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকা। শুনেছিলাম কুমিরের খামার চালাতো। তা কুমিরকে ঠিক মত খেতে দেয় কিনা, নাকি কুমিরকে মুড়ি খাইয়ে দিন পার করাচ্ছে। বা সাকিব আমেরিকায় বাড়ি কিনেছে। ভাল কথা, অতি উত্তম! তা বাংলাদেশ ব্যাংক কী টাকা নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে? এই অনুমতিপত্র আমরা দেখতে চাই।
আফসোস, বড়ই আফসোস! শত বছরে এমন একটা সুযোগ আসে। শেখ হাসিনা যেভাবে জাঁকিয়ে বসেছিল আমার তো মনে হয় না কেউ এই কথাটা বিশ্বাস করত স্বাভাবিক মৃত্যু ব্যতীত তাকে এভাবে হটিয়ে দেওয়া সম্ভব। অন্তত আগস্টের ৫ তারিখের পূর্বে। অথচ আমরা কী অবলীলায়ই না এই অসাধারণ সুযোগ হাতছাড়া করার জন্য মুখিয়ে আছি।
আমরা আসলে ঠিক কী যে চাচ্ছি উপরওয়ালাও জানেন কিনা কে জানে! আওয়ামীলীগ ওরফে হাসিনা দীর্ঘ সময় ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। কোথাও-না-কোথাও, কেউ-না-কেউ, কোন-না-কোন প্রকারে ক্ষমতার বলয়ের স্পর্শে এসেছে। এখন সবাইকে হরেদরে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করলে তো ভারী মুশকিল! হাসিনার সময়ে যে-সমস্ত গাছ জন্ম নিয়েছে সব কেটে ফেলার পূর্বে এত কুড়ালের ব্যবস্থা করা যেমন প্রয়োজন তেমনি কেটে ফেলা গাছ রাখার জায়গাও...।
আহারে-আহারে, এই সমস্ত বাচ্চাদের বলিদান কী অবলীলায়ই না উবে যাচ্ছে! এই বাচ্চাটার একটা হাত নেই:
এক হাত গেছে তো তো কী হয়েছে দেশ চাইলে আরেক হাত দিবো।
এমন কতশত গল্প! এই ছেলেটার কথা একটু চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো। সেই সময়টার কথা। যখন ডাক্তার তাকে অবচেতন করার ওষুধ না-দিয়ে পায়ের হাড়ে ড্রিল করছিল:
* অন্তবর্তীকালীন সরকার এখন জানাচ্ছেন এই মামলার পেছনে তাঁদের কারও হাত নেই। জেনে ভাল লাগছে। ভাল লাগার শেষ থাকবে না এই মামলায় যাদের হাত আছে তাদের খুঁজে বের করলে। যে ওসি সাহেব মামলাটা নিয়েছেন তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান, এখুনি...।
সহায়ক সূত্র:
সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ধামড়া-ধামড়া বুদ্ধিমান মানুষদেরকে স্রেফ হাফ-প্যান্টপরা খোকা বানিয়ে দিচ্ছে। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি কোন খোকা না-আবার 'ইয়েখানা' থেকে পকেটে করে খানিকটা ইয়ে নিয়ে এসে আমাদেরকে বলে বসে: দেখবা, এক খাবলা নিয়া আসলাম।
আরজ আলী মাতুব্বরের এই বইটি অনেক আগে পড়েছিলাম। ওখানে দেবরাজ ইন্দ্রকে নিয়ে একটা প্রসঙ্গ আছে। এটা এখানেই আমি প্রথম জানতে পাই! কোন-এক কারণে যখন বইটা আবারও পড়ছি তখন একটা ছোট্ট খটকা লেগেছে তিনি যে এটার উল্লেখ করলেন এর সূত্র কি? অন্য প্রসঙ্গে দিলেও তিনি এটায় কোন প্রকার রেফারেন্স দেননি! দেয়াটা অবশ্য প্রয়োজন ছিল।
ওয়ালিদ ইসলাম |
হেনরিক ইবসেনের 'রোজমারশোম'-এ অতি অল্প চরিত্র:
1. JOHANNES ROSMER, owner of Rosmersholm, a retired minister.
2. REBECCA WEST, companion of the late Mrs. Rosmer and still living at Rosmersholm.
3. RECTOR KROLL, ROSMER's brother-in-law.
4. ULRIC BRENDEL.
5. PETER MORTENSGÅRD.
6. MRS. HELSETH, housekeeper at Rosmersholm.
লেখক: Badsha Khaled Apu https://www.facebook.com/khaled.h.apu (লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত)
"'ইউ-এস বাংলার' চেয়ে বিমানের টিকেট ছয় হাজার টাকা বেশী দিয়ে কেনার পর যখন ফ্লাইট পাঁচ ঘন্টা ডিলে হয় এবং চোখের সামনে দিয়ে 'ইউ-এস বাংলার' যাত্রীরা ঢং-ঢাং করতে করতে চলে যায় (তারা স্বাভাবিক ভাবেই যাচ্ছিল, আমার কাছে ঢং ঢাং লাগছিল আর কি!) তখন মেজাজ যতটুকু খারাপ হবার কথা, আমার মেজাজ ঠিক ততটুকুই খারাপ হয়েছে।
মামুনুর রশীদ 'রুচির দুর্ভিক্ষ' নিয়ে যে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা চালু ভাষায় 'ভাইরাল' হয়ে গেছে। এই যে ভাইরাল জিনিসটা বাজারে চালু হলো এটাও এক প্রকারের রুচির দুর্ভিক্ষ!
এ সত্য, আমার সমস্ত জীবনে অন-লাইন মিডিয়ার মিলিয়ন-মিলিয়ন শব্দের মধ্যে প্রিন্ট মিডিয়ায় লক্ষ-লক্ষ শব্দ ছাপা হয়েছে কিন্তু এখনও আমি নিজেকে লেখক বলে দাবী করি না। কারণ যে জিনিস আমার না তা আমি দাবী করব কেমন করে! কে লেখক কে লেখক না এটা ঠিক করেন পাঠক। পাঠককে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নাই কারণ একজন পরিণত পাঠক তাঁর গ্রে-মেটার ফ্লাওয়ার ভাসে রেখে কোন লেখকের লেখা পাঠ করতে বসেন না। এরা একেকটা ক্ষুরধার ব্রেন...!
মেঘে মেঘে বেলা বয়ে যায়- বুকের গভীর থেকে বেদনা পাক খেয়ে উঠে, আহারে-আহারে, জাগতিক সব বেদনা এক পাশে সরিয়ে কেবল তিনটা কাজ করলাম না কেন?! পড়া-পড়া আর পড়া, এই...! দেখো দিকি কান্ড, হাজার-লক্ষ বই এখনও পড়ার বাকী- কিছুই তো পড়ার সুযোগ হল না। মানুষের জন্য ৩০০-৪০০ বছর কচ্ছপের আয়ু পাওয়াটা ভয়াবহ এক ব্যাপার কিন্তু বই পড়া কেবল এই একটা কারণে সেই ভয়াবহ ব্যাপারটাই এক তুলতুলে আরাম হয়ে যায়!
লেখক: আনসারি তৌফিক
" রকমারি’র প্রতিষ্ঠাতা, বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী, এসএসসি ও এইচএসসি-তে ঢাকা বোর্ডে স্ট্যান্ড করা ছাত্র, মাহমুদুল হাসান সোহাগ সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি দীর্ঘদিন নাস্তিক ছিলেন। তারপর নাস্তিক থেকে এখন আস্তিক হয়েছেন। ব্যক্তি-মানুষের স্বাধীন চিন্তা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দৃষ্টান্ত হিসেবে খুবই চমৎকার ব্যাপার এটি। কে আস্তিক হবে, নাস্তিক হবে, সেটি তার তার ব্যক্তি বিবেচনা।
লেখক: Anupam Shaikat Shanto (https://www.facebook.com/anupam.shanto)
"আমাদের হরেক রকম টিভি চ্যানেল আমাদের সাফ জয়ী কন্যাদের লাইন দিয়ে ডাকছে। সাক্ষাৎকার নিচ্ছে। সেখানে এই বাচ্চামেয়েদের হরেক কিসিমের প্রশ্ন করছে। সবচেয়ে বেশি কিম্ভুত প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে সানজিদা। তার কিছু নমুনা:
বৃটেনের রানি মারা গেছেন। মারা যাওয়ার সময় লুট করে নিয়ে যাওয়া কোহিনুর তার মাথায় ছিল কিনা সেটা জানা যায়নি। জানা গেলে ভাল হত। কারণ কোন জাঁকালো অনুষ্ঠানে রাজমুকুটে সগর্বে এটা পরা হয়। বিদায়অনুষ্ঠানেও চোরের মার গলায় চুরির জিনিস থাকাটাই সমীচীন!
"...'ভালবাসার সুখ দুঃখ'...বইটি নিয়ে ক্রেজ সৃষ্টি হলো। এমনও দিন গেছে, আমাকে পুলিশ দিয়ে পাহারায় রাখতে হয়েছে। ...হাজার হাজার পাঠক লাইন দিয়ে বইটি কিনত। ...এমনকি ওই বইয়ের জন্য মেলায় মারামারি পর্যন্ত হয়েছে।...।"
আমি আমার সমস্ত জীবনে হাজার-হাজার বই পড়েছি যা অনেকের কাছে ঈর্ষনীয়। জ্ঞান অর্জন-টর্জন বুঝি না ক্ষিধা লাগলে যেমন খাবারের প্রয়োজন তেমনি অন্য-এক ক্ষিধার জন্য বই! কিন্তু এক বেদনা পাক খেয়ে উঠে এখনও এই গ্রহের লক্ষ-কোটি বই পড়া হয়নি অথচ মেঘে-মেঘে বেলা বয়ে যায়, মাঠে-মাঠে খেলা শেষ হয়ে যায়। সময় নাই রে, পাগলা- সময় নাই! কেবল এই একটা জায়গায় এসে মনে হয় কচ্ছপের মত দীর্ঘ বছর বাঁচলে মন্দ হত না।
চা-বাগানে গেছি ম্যানেজার সাহেবের আমন্ত্রণে। সাহেব কাকে বলে সেদিন দেখলাম। ম্যানেজার সাহেব তার সেলফোনটা খোঁজ করামাত্র বাংলোর কাজের লোক সেলফোনটা নিয়ে এসেছে পিরিচে করে! নত চোখে, বড় তমিজের সঙ্গে। আর বাংলো? বারান্দাটা হচ্ছে ছোটখাটো ফুটবল খেলার মাঠ। আমার সঙ্গে ফৌজি একজন ছিলেন তিনি আবার গলফ খেলার জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন। আমার মত আনাড়ির শেখার জন্য বারান্দায় খেলতে খুব একটা সমস্যা হচ্ছিল না। ডাইনিং টেবিলে ত্রিশ-বত্রিশ জন অনায়াসে খেতে পারবেন। তাও আবার দুইটা!
বিভিন্ন পদের 'ল্যাকক' দেখি আর মুগ্ধ হই! ল্যাকক হওয়ার তরিকার শেষ নেই- আহারে, আহারে। এক জীবনে কত কিছু করতে হয়। অসম্ভব জনপ্রিয় লেখককেও সাক্ষাৎকারে বলতে হয়, আমি নিজের আনন্দের জন্য লিখি। তা বেশ তো, দেওয়ালে পা তুলে দিয়ে পায়ের সঙ্গে যুক্ত রেখে পেট ভাসিয়ে নিজের লেখা নিজে পড়লে হয়। তা না, বইমেলায় শত-শত ছোকরা-ছুকরিকে বাদ্যসহ নাচানাচি করাতে হয়। কী কষ্ট-কী কষ্ট! কষ্ট করে লেখো আবার ইয়েদের মত ইয়েটা মেলে দাও।
লেখক: Arifuzzaman Tuhin (লেখকের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত)
"গত ২৫ জুলাই সমকাল রিপোর্টটিতে বলেছে, বিদ্যুৎ না কিনেই সরকারের খরচ ৯০ হাজার কোটি টাকা। গত নয় বছরে রেন্টাল ও আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ৯০ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। সমকালের বক্তব্য, এই ৯০ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে সরকার কোনো বিদ্যুৎ কেনেনি।
Moin Akter নাকি ২০১১ সালে মারা গেছেন। কে বলে মইন আক্তাররা মারা যান এরা কেবল পারফর্ম করা বন্ধ করে দেন! কেন? তাঁর খুশি! ২০১১, ২০২১, ২০৩১...এঁদের মৃত্যু নেই। মৃত্যু এদের গা ছুঁয়ে বলার সাহস পায় না, পাগল রে, তোকে ছুঁয়ে দিলাম।
"ইন্টারনেটের হাফ-কুকড ট্রুথের জমানায় অনেক জিনিস ভাইরাল হয়, যা মূলত: পুরো সত্য জানলে অন্য অর্থ দাঁড়ায়। যেমন একটা হচ্ছে, বাবা দিবসে হুমায়ুন আহমেদের নামে। 'পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই'। শুরুর দিকে কয়েক বছর বেদবাক্যের মতো এই উক্তি ওঁর নামে চালানো হয়েছে।
২০১৬ সালে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইনের খরচ ধরা হয়েছিল ৬৫০০ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের তারিখ দেওয়া ছিল ২০২০ সালের জুন মাস। এখন ২০২২ সালের জুন মাস। অনায়াসে ২ বছর চলে গেছে কিন্তু এই কাজ এখনও চলমান। কবে নাগাদ শেষ হবে এটা আমরা প্রজাতন্ত্রের ট্যাক্সপেয়িরা জানি না বটে কিন্তু প্রজাতন্ত্রের বেতনভুক্ত কর্মচারিরা বিলক্ষণ জানবেন এমনটা আশা করাটা দোষের না। তবে অতীব আশার বিষয় হচ্ছে, আমাদের জীবদ্দশায় এর শেষ দেখে যেতে পারলেই আমরা খুশি!
ঘটনাটা ভারতের দিল্লির। দিল্লির প্রতি আমার অন্য রকম মুগ্ধতা আছে। ওখানকার পুরনো স্থাপনা এক পাশে সরিয়ে রাখলেও উঠে আসে ক্যারিশম্যাটিক কেজরিওয়ালের কথা। এই আলোচনা অন্য কোন দিন।
বাংলাদেশ এখন পারমাণবিক অস্ত্র এটম বোমার অধিকারী। যারা পদ্মা সেতু নিয়ে লাফাচ্ছেন তারা এ সম্বন্ধে 'বে-খবর'! আমি পাশ্ববর্তী দেশগুলোর আতংক উপভোগ করছি। এরা এখন বুঝবে কত ধানে, না-না-না কত চালে কত ধান হয়! আমি আমাদের দেশের সরকারকে জোর অনুরোধ করব এঁরা অন্তত এখন যেন মাথা ঠান্ডা রাখেন কারণ ক্ষমতার একটা উত্তাপ আছে তাও আবার এটম বোমার মত একটা বড় পোটলা। পাশ্ববর্তী দেশগুলোর ভুলটুল যেন এখন ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা হয়। বড় ভাই সুলভ...।
হালে ৩০০০ বছর পুরনো মিশরের মমির গলার স্বর কেমন হতে পারে এর একটা নমুনা দাঁড় করিয়েছেন বিজ্ঞানিরা:
লেখক: Shawkat Ali
কিছু-কিছু মানুষ দেখে মনে হয়, আহা...। পায়ে লাগু। আ মিন পা ধরে সালাম করি।
যেমন ধরা যাক, এই ভিডিওটি। এই ১৩ বছরের বাচ্চাটাটা... ভুল বললাম, আগুনের গোলাটা যে প্রকারে আগুন ধরিয়ে দিল এই আগুন চোখে দেখাও এক অমায়িক সুখ! দেখো দিকি কান্ড কেমন করে আবার বুক ঠুকে বলছে, আমি চামার:
বেচারা শরীর! লাইনচ্যুত হল। একটা অস্ত্রাঘাত যার চালু নাম অপারেশনের প্রয়োজন হল। এখন কেউ যদি রসিকতা করেও বলে, 'কী মাঝি, ডরাইছ'? আমি সপাটে বলব, হ, ডরাইছি।
একজন জ্ঞানি মানুষ নাকি মৃতের জন্য শোক করেন না। একজন জ্ঞানি মানুষের কাছে মৃত্যু নাকি কেবল খোলস ত্যাগ করা। হবে হয়তো! আমি জ্ঞানি নই বলেই এ নিয়ম আমার বেলায় খাটে না। তাই আমি আমার মৃত মার জন্য হাহাকার করি, আপাতত জীবিত নিজের জন্য ভয় পাই।
প্রত্যেক ছবির পেছনে একটা গল্প থাকে। আমার একটা লেখা ছিল, 'ছবির পেছনে গল্প' [১]। অসম্ভব স্রোতের মাঝে নৌকায় করে ছবি উঠাবার চেষ্টা করছিলাম। তাও কী ক্যামেরা- ক্যামেরা নামের কলন্ক! ৩.২ মেগা-পিক্সেলের এন-৭৩ টাইপের মোবাইল ফোন (কিন্তু এটা দিয়েই কিছু ছবি উঠিয়েছি, ভয়ংকর সুন্দর [২])। সঙ্গে মিডিয়ার কিছু লোকজন ছিলেন। ওদের সঙ্গে আবার কামানসম ক্যামেরা। এরা সব বাদ দিয়ে আমার ছবি নিয়ে কখন কস্তাকস্তি করছিলেন টেরটিও পাইনি।
পাকিস্তানের এই নাগরিক যিনি ১৯৭১-কে খুব কাছ থেকে দেখেছেন কারণ তখন তিনি পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীতে ছিলেন। এই মানুষটার বক্তব্য পরিষ্কার। তিনি হাতে ধরে-ধরে পাকিস্তানের ভুল, ভয়াবহ অন্যায়গুলো আমাদের চোখের সামনে নিয়ে এসেছেন। এখন পর্যন্ত পাকিস্তান তার ভুল, ভয়াবহ অন্যায়গুলোর জন্য ক্ষমা চায়নি বা এই দেশের যে বিপুল আর্থিক ক্ষতি করেছে সেই আলাপেও যাওয়ার আগ্রহ দেখায়নি।
আমার কয়েক হাজার লেখালেখির মধ্যে ডাক্তারের কালো-কালো হাত নিয়ে যে-সমস্ত লেখা লিখেছি তার সংখ্যা জিরো পয়েন্ট ব্লা-ব্লা হবে কি না সন্দেহ। অন্য পেশার লোকজনকে নিয়ে লেখলে সমস্যা নাই কিন্তু ডাক্তারকে লিখলে ডাক্তার স্যাররা ভারী 'নাগ' করেন। নাক দিয়ে ধোঁয়া বের হয়। পারলে সাদা-সাদা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে ফেলেন। বড় চিত্র-বিচিত্র! এমনিতে আমার খুব ভাল বন্ধুদের অনেকেই আবার ডাক্তার।
এমনিতে দারাজ আমার খুব পছন্দের একটা প্রতিষ্ঠান কারণ আমার মত বেকুব টাইপের লোকজন যারা বোকার মত মূল স্রোতের উল্টোদিকে সাঁতরায় মানে গ্রাম-গ্রাম মফঃস্বল টাইপের জায়গায় থাকে তাদের জন্য এই অনলাইন বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি ভারী কাজের। শহরে যারা চট করে একটা জিনিস হাতের নাগালে পেয়ে যান সেটা আমাদের জন্য বড় একটা সমস্যা।
আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বপ্রাচীন জাতি হচ্ছে ম্রো-রা! এবং এঁরা বান্দরবান জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি। আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর পূর্বে ম্রোরা পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকে। ব্রিটিশ আমল থেকে আমরা যারা এই দেশে বাস করে আদিমানুষের তকমা লাগিয়ে রাখি এদের বাস তারও অনেক পূর্বের!
কালে-কালে আমরা নাকি সভ্য হয়েছি। এই সমস্ত কেতাবি কথা বাদ দিয়ে আমি আমার কথা বলি। কীসের সভ্য, কীসের সভ্যতা!? আমি জানি না এই সব গালভরা কথার আদৌ কোন মানে রাখে কিনা! কেবল মোটাদাগের কথাটা জানি, আমরা কেবল গু-ভরা ভান্ড যেটা প্রকৃতি চামড়া দিয়ে মুড়িয়ে রাখে সেটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উৎস যে দুইটা মুখ সামনে এবং পেছনে ওগুলো ঢেকে রাখা শিখেছি। ব্যস...। নাঙ্গাপাঙ্গা থেকে গাছের বাকল, লতাপাতা এরপর ক্রমশ বিভিন্ন চকচকে পোশাক নামের আচ্ছাদন!
আমাদের দেশের মিডিয়া খুব আগ্রহ নিয়ে এই সমস্ত প্রতিবেদনগুলো করে- যেমন সাকিব আমেরিকায় ঘাস কাটছে। অতি উত্তম। সাকিব ঘাস কাটতে পারে এই নিয়ে আমরা বঙ্গাল উল্লসিত। কারণ আমরা জানতাম না যে সাকিব ঘাস কাটতে জানে এবং আগে জানলে অন্যদের কথা জানি না আমার বাগানের ঘাসটা কাটিয়ে নিতাম। অবশ্যই ঘন্টা হিসাবে পে করতাম।
লেখক: সানজিদা সেতু
"এরা এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বড়জোর ১৮ বছর বয়স। গ্রুপ খুলে পরিকল্পনা করছে তাদেরই ব্যাচমেটকে ৪৬৫ জন মিলে ধর্ষণ করার! শতাব্দী রায় কি করেছে? মেয়েটা অটোপ্রোমোশানের মতো অযৌক্তিক একটা আদেশের বিরুদ্ধে রিট করেছে। সে পরীক্ষা দিতে চায়।
There is no joy in 'His' mind. But what a huge power 'He' has! What is not - immortality, infinite time, infinite power. But even after him there is no joy in His mind. It just seems to fit in the shell of the capsule. No problem, you have to decide 100 years-thousands of years-millions of years. You will go to a 'temporary sleep' in his language - that sleep will be broken in time. But this is to lose oneself to oneself. No one has to explain but how to keep an eye on yourself?
আমার হাবিজাবি কাজের একটা অংশ হলো স্টেশনে একটা চক্কর লাগানো। বিচিত্র-সব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি মানুষের সীমাহীন কষ্ট কাছ থেকে দেখার বিরল এক সুযোগ। অসহায় মানুষের এক ভরসাস্থল হচ্ছে এই স্টেশনগুলো। কারণ এখানে শুয়ে-বসে থাকলে তেমন সমস্যা নেই। রাতে ঘুমালেও সচরাচর কেউ কিছু বলে না। তবে এর ব্যত্যয়ও আছে। সেটা পরে বলছি।
আমি আমার লেখালেখির জীবনে সম্ভবত লক্ষ-লক্ষ শব্দ লিখেছি কিন্তু আজকের পূর্বে ধর্ষণ শব্দটা পারতপক্ষে লিখতে চাইনি। লিখতে ইচ্ছা হয়নি। লিখেছি হয়তো এভাবে চরম শারীরিক নির্যাতন বা অন্য কোন প্রকার শব্দ-বাক্য। আমি সব সময় আমার পাঠককে আমার চেয়ে বুদ্ধিমান মনে করে এসেছি। তাই ধর্ষণ লিখে বা পাতার-পর-পাতা ধর্ষণের বর্ণনা দিয়ে এঁদের বুদ্ধিকে খাটো করার কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনি।
1. "You depraved yourselves before another Gods and serve them but you know that you will perish."
2. "If you obey the commands of the Lord, you will be blessed. And if you don't obey the commands of your God and follow other Gods, you will be cursed."
১৯৭১ সালের ২৯ আগষ্ট পাকিস্তানি আর্মিদের হাতে গ্রেপ্তার হন ঢাকা কাঁপানো ২ নম্বর সেক্টরের অন্যতম গেরিলা বদিউল আলম বদি, বীর বিক্রম। তারপর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন গেরিলা আবদুস সামাদ। সামাদের স্বীকারোক্তিতে গ্রেপ্তার হন আলতাফ মাহমুদসহ গেরিলা দলের অনেকে। বদির গ্রেপ্তার হওয়া নিয়ে অনেকে অনেক রকমের গল্প বলার চেষ্টা করেন। প্রকৃত ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন প্রখ্যাত গেরিলা হাবিবুল আলম বীর প্রতীক। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলাম ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে।