তখনকার পাকিস্তান আর্মির এক বিস্ময়কর কমান্ডো মেজর আবু তাহের। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে, তিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
বাংলা একাডেমীর দলিলপত্রের সূত্রমতে, লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু তাহের বলেন: জুলাই মাসের ২৫ তারিখ বাংলাদেশের পথে ভারতে রওয়ানা হই। আমার সঙ্গে ছিলেন মেজর জিয়াউদ্দিন, ক্যাপ্টেন পাটোয়ারী, মেজর মঞ্ছুর ও তার স্ত্রী ছেলেমেয়ে এবং ব্যাটম্যান।
২৭শে জুলাই দিল্লী এবং আগস্ট মাসের মাসের প্রথম সপ্তাহে মুজিবনগর পৌঁছাই। আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম, এ, জি ওসমানী আমাকে ১১ নং সেক্টরের দায়িত্ব দেন।
১৫ আগস্ট আমি মাত্র ১৫০জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে সন্ধ্যার দিকে কামালপুরে পাক আর্মির শক্ত ঘাটি আক্রমণ করি। আমাদের অস্ত্র বলতে তখন ছিল কেবলমাত্র কয়েকটা এল এম জি, রাইফেল এবং কিছু স্টেনগান! যুদ্ধ চলে ২ ঘন্টা। আমাদের আক্রমণে পাক আর্মির ১৫/১৬ জন নিহত হয়, আর আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আহত হয় ১৫ জন।
১১ নং সেক্টরের কমান্ড এবং দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি লক্ষ করলাম, মুক্তিযোদ্ধারা বিশৃঙ্খল এবং বিপর্যস্ত , হতাশ। আমি দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের জন্য বাহিনীকে পুনর্গঠিত করা শুরু করলাম। সম্মুখসমর বাদ দিয়ে গেরিলা পদ্ধতিতে আক্রমণ চালাবার নির্দেশ দিলাম।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমার সেক্টরে প্রায় ২০ হাজারের মত মুক্তিযোদ্ধা কাজ করছিলেন। …এখানে একটি মুক্তিবাহিনী ট্রেনিং ক্যাম্প খুলি এবং ট্রেনিং দেয়া শুরু করি। নভেম্বর মাস পর্যন্ত সবার হাতে অস্ত্র না গেলেও ১০ হাজারের মতো মুক্তিযোদ্ধা প্রশিকক্ষণপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।
…আমার হেডকোয়ার্টারে কেবলমাত্র সাধারণ কৃষকদের নিয়ে আলাদা ট্রেনিং ক্যাম্প খুলি। এইসব সাধারণ কৃষক পরবর্তীতে যুদ্ধেক্ষেত্রে যে কোন সামরিক ট্রেইন্ড সৈনিকের চাইতেও বেশী দক্ষতা প্রদর্শন করেছিলেন। এর কারণ সম্ভবত এই জন্য- ওইসব অধিকাংশ কৃষক ছিলেন পাক আর্মির দ্বারা অত্যাচারিত। তাঁরা পুড়ছিলেন প্রতিহিংসার আগুনে।
…১৩ নভেম্বর, ৫টি কোম্পানী নিয়ে ভোর ৩টায় কামালপুরে আমাদের তীব্র আক্রমনে পাকসেনাদের ১ জন মেজরসহ ২টি কোম্পানী আমরা পুরাপুরি নিচিহৃ করে দেই।
আমরা জয়ের আনন্দে অধীর। তখন সকাল ৯টা। গুলির আঘাতে আমি গুরুতররূপে আহত হই। আমার ১টি পা নষ্ট হয়ে যায় ।
আমার অনুপস্থিতিতে স্কোয়াড্রন লীডার হামিদুল্লাহ সেক্টরের দায়িত্ব হাতে নেন।
(সূত্র: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬৪০-৬৫৭)
*কর্নেল তাহের সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যাবে এই সাইটে: http://www.col-taher.com/
**তাহেরকে নিয়ে আরও কিছু লেখা। কর্ণেল তাহের তোমাকে কি স্পর্শ করতে পারি: http://www.ali-mahmed.com/2009/01/blog-post_8805.html
বাংলা একাডেমীর দলিলপত্রের সূত্রমতে, লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু তাহের বলেন: জুলাই মাসের ২৫ তারিখ বাংলাদেশের পথে ভারতে রওয়ানা হই। আমার সঙ্গে ছিলেন মেজর জিয়াউদ্দিন, ক্যাপ্টেন পাটোয়ারী, মেজর মঞ্ছুর ও তার স্ত্রী ছেলেমেয়ে এবং ব্যাটম্যান।
২৭শে জুলাই দিল্লী এবং আগস্ট মাসের মাসের প্রথম সপ্তাহে মুজিবনগর পৌঁছাই। আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম, এ, জি ওসমানী আমাকে ১১ নং সেক্টরের দায়িত্ব দেন।
১৫ আগস্ট আমি মাত্র ১৫০জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে সন্ধ্যার দিকে কামালপুরে পাক আর্মির শক্ত ঘাটি আক্রমণ করি। আমাদের অস্ত্র বলতে তখন ছিল কেবলমাত্র কয়েকটা এল এম জি, রাইফেল এবং কিছু স্টেনগান! যুদ্ধ চলে ২ ঘন্টা। আমাদের আক্রমণে পাক আর্মির ১৫/১৬ জন নিহত হয়, আর আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আহত হয় ১৫ জন।
১১ নং সেক্টরের কমান্ড এবং দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি লক্ষ করলাম, মুক্তিযোদ্ধারা বিশৃঙ্খল এবং বিপর্যস্ত , হতাশ। আমি দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের জন্য বাহিনীকে পুনর্গঠিত করা শুরু করলাম। সম্মুখসমর বাদ দিয়ে গেরিলা পদ্ধতিতে আক্রমণ চালাবার নির্দেশ দিলাম।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমার সেক্টরে প্রায় ২০ হাজারের মত মুক্তিযোদ্ধা কাজ করছিলেন। …এখানে একটি মুক্তিবাহিনী ট্রেনিং ক্যাম্প খুলি এবং ট্রেনিং দেয়া শুরু করি। নভেম্বর মাস পর্যন্ত সবার হাতে অস্ত্র না গেলেও ১০ হাজারের মতো মুক্তিযোদ্ধা প্রশিকক্ষণপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।
…আমার হেডকোয়ার্টারে কেবলমাত্র সাধারণ কৃষকদের নিয়ে আলাদা ট্রেনিং ক্যাম্প খুলি। এইসব সাধারণ কৃষক পরবর্তীতে যুদ্ধেক্ষেত্রে যে কোন সামরিক ট্রেইন্ড সৈনিকের চাইতেও বেশী দক্ষতা প্রদর্শন করেছিলেন। এর কারণ সম্ভবত এই জন্য- ওইসব অধিকাংশ কৃষক ছিলেন পাক আর্মির দ্বারা অত্যাচারিত। তাঁরা পুড়ছিলেন প্রতিহিংসার আগুনে।
…১৩ নভেম্বর, ৫টি কোম্পানী নিয়ে ভোর ৩টায় কামালপুরে আমাদের তীব্র আক্রমনে পাকসেনাদের ১ জন মেজরসহ ২টি কোম্পানী আমরা পুরাপুরি নিচিহৃ করে দেই।
আমরা জয়ের আনন্দে অধীর। তখন সকাল ৯টা। গুলির আঘাতে আমি গুরুতররূপে আহত হই। আমার ১টি পা নষ্ট হয়ে যায় ।
আমার অনুপস্থিতিতে স্কোয়াড্রন লীডার হামিদুল্লাহ সেক্টরের দায়িত্ব হাতে নেন।
(সূত্র: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬৪০-৬৫৭)
*কর্নেল তাহের সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যাবে এই সাইটে: http://www.col-taher.com/
**তাহেরকে নিয়ে আরও কিছু লেখা। কর্ণেল তাহের তোমাকে কি স্পর্শ করতে পারি: http://www.ali-mahmed.com/2009/01/blog-post_8805.html
2 comments:
কর্নেল তাহেরের সাইটটা এখন আর নেই।কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
কী সর্বনাশ, তাই তো! কিছুই তো দেখা যাচ্ছে না অথচ আমি কিন্তু অনেকবার ওই সাইটটা ভিজিট করেছি...। অবশ্য এটা বেশ আগের কথা।
তীব্র কষ্ট পাক খেয়ে উঠে। আমি জানি না মূল বিষয় কি, কেন দেখা যাচ্ছে না? কেউ কি ইচ্ছা করে এমনটা করেছে। এ অন্যায়-এ অন্যায়।
কী লাভ হবে এতে? তাহেরের মত আগুনমানুষেরা বেঁচে থাকবেন আমাদের মাঝে।
ধন্যবাদ আপনাকে দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য...@rdbangla
Post a Comment