ছফার জবানীতে শুনুন: (এটা ছফার নিজস্ব মত):
"শেখ মুজিবর রহমান প্রথমে আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, রাষ্ট্রদূত হওয়ার জন্য। কিন্ত তিনি যখন বললেন, শর্ত আছে।
আমি (ছফা) বলেছিলাম, শর্ত ছফার জন্য নয়, আপনি অন্য কাউকে দেখুন।
শেখ মুজিবর রহমান আমার উপর প্রচন্ড রুষ্ট হয়েছিলেন। কিন্ত জেলে দেয়ার সাহস পাননি। পরে শেখ মুজিবর রহমান আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা হওয়ার জন্য জন্য।
আমি (ছফা): বলেছিলাম সম্ভব নয়। আমাকে ধারণ করার মতো শক্তি আপনার সরকার বা আপনার প্রশাসনের নেই।
এরপর আবুল ফজলকে এই অফার দিলে তিনি আনন্দের সঙ্গে রাজি হন। আবুল ফজল শেখ সাহেবের কেনা গোলাম হয়ে যান। উপদেষ্টা হওয়ার পর শেখ সাহেবকে খুশী করা ছাড়া তাঁর আর কোন পথ অবশিষ্ট ছিল না।
এরপর আমীন জানতে চান: আচ্ছা, আপনি শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু বলেন না কেন?
ছফা: আমি তোমার বাবাকে বাবা ডাকতে যাব কোন দুঃখে? তোমার বাবাকে পৃথিবীর সমস্ত লোক বাবা ডাকলেও আমি ডাকবো না, তাঁকে অনেকে জাতির পিতা বলে থাকেন, আমি বলি না, একই কারণ। মুক্তিযুদ্ধ আমার মা।
আমীন: তা হলে পিতা কে?
ছফা: সময়। সময়ের দাবি এবং পাকিস্তানীদের কার্যকলাপ। ৪৭ এর পর হতে দেশের উদরে জন্ম যন্ত্রণা শুরু হয়েছে, যা ১৯৭১ এর মার্চে প্রসব বেদনায় প্রদীপ্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটিয়েছে।"
*লেখাটা নেয়া হয়েছে 'আহমদ ছফার চোখে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী', লেখক: মোহাম্মদ আমীন থেকে। মোহাম্মদ আমীন দীর্ঘ ১১ বছর ছফার সহচর্যে ছিলেন। অনেক ক-টা বছর একই বাড়িতে ছফার সঙ্গে থাকতেন।)
**ছফার ঠোঁটকাটা স্বভাবের জন্য অনেক দাম দিতে হয়েছিল। তাঁকে বড় অবহেলায় দাফন করা হয়েছিল!
অনুমান করলে দোষ হবে না, এতে তাঁর কিছুই যায় আসেনি। ভাগ্যিস, তিনি বেঁচে নেই, নইলে ঠোঁট গোল করে বলতেন, বুদ্ধিজীবীদের...-এ আমি মুতিও না! হায়, আমরা এ প্রজন্ম জানিই না বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা বের করেছিলেন আহমদ ছফা!
বাংলা একাডেমির পুরষ্কার পাওয়ার জন্য যেখানে লেখকদের লালা ঝরে পা ভিজে যায় সেখানে তাঁকে যেন পুরস্কারটা না-দেয়া হয় এই নিয়ে হইচই বাঁধিয়ে দিয়েছিলেন!
আফসোস, ছফার মত মানুষ যে দেশে জন্মান সেই দেশ ধন্য হয়, নাকি মানুষটা, এটা বলা মুশকিল! উন্নত দেশে জন্মালে তিনি যে নোবেল পেতেন এতে আমার কোন সন্দেহ নাই!
"শেখ মুজিবর রহমান প্রথমে আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, রাষ্ট্রদূত হওয়ার জন্য। কিন্ত তিনি যখন বললেন, শর্ত আছে।
আমি (ছফা) বলেছিলাম, শর্ত ছফার জন্য নয়, আপনি অন্য কাউকে দেখুন।
শেখ মুজিবর রহমান আমার উপর প্রচন্ড রুষ্ট হয়েছিলেন। কিন্ত জেলে দেয়ার সাহস পাননি। পরে শেখ মুজিবর রহমান আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা হওয়ার জন্য জন্য।
আমি (ছফা): বলেছিলাম সম্ভব নয়। আমাকে ধারণ করার মতো শক্তি আপনার সরকার বা আপনার প্রশাসনের নেই।
এরপর আবুল ফজলকে এই অফার দিলে তিনি আনন্দের সঙ্গে রাজি হন। আবুল ফজল শেখ সাহেবের কেনা গোলাম হয়ে যান। উপদেষ্টা হওয়ার পর শেখ সাহেবকে খুশী করা ছাড়া তাঁর আর কোন পথ অবশিষ্ট ছিল না।
এরপর আমীন জানতে চান: আচ্ছা, আপনি শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু বলেন না কেন?
ছফা: আমি তোমার বাবাকে বাবা ডাকতে যাব কোন দুঃখে? তোমার বাবাকে পৃথিবীর সমস্ত লোক বাবা ডাকলেও আমি ডাকবো না, তাঁকে অনেকে জাতির পিতা বলে থাকেন, আমি বলি না, একই কারণ। মুক্তিযুদ্ধ আমার মা।
আমীন: তা হলে পিতা কে?
ছফা: সময়। সময়ের দাবি এবং পাকিস্তানীদের কার্যকলাপ। ৪৭ এর পর হতে দেশের উদরে জন্ম যন্ত্রণা শুরু হয়েছে, যা ১৯৭১ এর মার্চে প্রসব বেদনায় প্রদীপ্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটিয়েছে।"
*লেখাটা নেয়া হয়েছে 'আহমদ ছফার চোখে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী', লেখক: মোহাম্মদ আমীন থেকে। মোহাম্মদ আমীন দীর্ঘ ১১ বছর ছফার সহচর্যে ছিলেন। অনেক ক-টা বছর একই বাড়িতে ছফার সঙ্গে থাকতেন।)
**ছফার ঠোঁটকাটা স্বভাবের জন্য অনেক দাম দিতে হয়েছিল। তাঁকে বড় অবহেলায় দাফন করা হয়েছিল!
অনুমান করলে দোষ হবে না, এতে তাঁর কিছুই যায় আসেনি। ভাগ্যিস, তিনি বেঁচে নেই, নইলে ঠোঁট গোল করে বলতেন, বুদ্ধিজীবীদের...-এ আমি মুতিও না! হায়, আমরা এ প্রজন্ম জানিই না বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা বের করেছিলেন আহমদ ছফা!
বাংলা একাডেমির পুরষ্কার পাওয়ার জন্য যেখানে লেখকদের লালা ঝরে পা ভিজে যায় সেখানে তাঁকে যেন পুরস্কারটা না-দেয়া হয় এই নিয়ে হইচই বাঁধিয়ে দিয়েছিলেন!
আফসোস, ছফার মত মানুষ যে দেশে জন্মান সেই দেশ ধন্য হয়, নাকি মানুষটা, এটা বলা মুশকিল! উন্নত দেশে জন্মালে তিনি যে নোবেল পেতেন এতে আমার কোন সন্দেহ নাই!
4 comments:
আহমদ ছফা আমার অসম্ভব প্রিয় মানুষদের একজন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে বলা তাঁর কথাগুলো পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারি না। নিজেকে মহামানব বানানের এই যে তাঁর মোলায়েম প্রচেষ্টা, এটা কতোটুকু সত্যি? বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় কি তিনি কথাগুলো বলেছিলেন?
মোসতাকিম রাহী,
উহুঁ, আমার মনে হয় না, এটায় আহমদ ছফার অতিশয়োক্তি ছিল। মানুষটাই ছিলেনই এমন- সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে দ্বিধা করতেন না।
আর হুমায়ূন আহমেদের ঘটনাটা হুমায়ূন আহমেদ তাঁর স্মৃতিচারণে স্বীকার করেছেন।
হুমায়ূন আহমেদের ঘটনাটি আমি জানি, সেটার কথা আমি বলি নি। রাষ্ট্রদূত এবং শিক্ষা উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাবে যা বলেছেন বলে জানান সেটার কথা বলেছি। যা-হোক, মোদ্দা কথা হচ্ছে, ছফাকে ছাড়া আমাদের চলবে না। আবার এটাও ঠিক, যাচাই না করে তাঁর সব কথা আমরা বিশ্বাস করবে না। আপনার নতুন লেখার অপেক্ষায়...
আপনার প্রশ্নটা যথার্থ।
কিন্তু এটা মোহাম্মদ আমীনের বই থেকে নেয়া। এটা প্রকাশের পর কোন প্রসঙ্গ নিয়ে দ্বিমত, বা বিতর্ক হয়েছিল বলে শুনিনি।
তাছাড়া, আহমদ ছফার নিজের বই রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক প্রবন্ধেও তিনি জনাব, শেখ মুজিবর রহমানকে নিয়ে লিখেছেন, যা এই বইয়ের অনেক প্রসঙ্গের সঙ্গে মিলে যায়।
Post a Comment