এমনিতে আমি কখনও কোন লেখার ছাঁদ মাথায় রাখি না। ৩ টাকা দামের কলমবাজ, আমার এই ক্ষমতাটাই নাই আসলে। বিশ্বাস করি কলমের উপর (এখন কলম বললে ভুল বলা, হালের কীবোর্ড)। কলম যেমন টেনে নিয়ে যায়, আমি অসহায় দর্শক কেবল। এটা আমার কাছেও অবিশ্বাস্য মনে হয় কিন্তু বিষয়টা সত্য। কোথায় থেকে কি হয়ে যায় অমি জানি না! এটা সম্ভবত লেখালেখির মস্ত দুর্বলতা। তাই হয়তো আমার লেখা আর লেখা থাকে না। এ নিয়ে লম্বা লম্বা শ্বাস ফেলা ব্যতীত আজ আর কিছুই বলার নাই আমার।
কিন্তু ভবিতব্য কে জানে! পূর্বে যেটা হয়নি এবার সবগুলো একবারে ঘটতে শুরু করল। এক লাইনও লেখা হচ্ছিল না। লিখতে না পারা কষ্টটা কেমন? উম-ম, এমন কি, যেমন কিছু অসহ্য বেদনা সহ্য হয় না? প্রকৃত লেখকরা নাকি জাগতিক যাবতীয় বেদনাকে বদলদাবা করে লেখার পর লেখা লিখে যান। লেখক নই বলেই এখনও এই দুর্লভ গুণ করায়ত্ত করতে পারিনি।
অবশ্য আমি নিজেকে লেখক বলার দুঃসাহসই করি না। নিজেকে বলি লেখার, একজন রাজমিস্ত্রি যেমন একের পর এক ইট সাজিয়ে একটা কাঠামো গড়ে তোলেন, আমিও তেমনি একের পর এক শব্দের ইট সাজিয়ে একটা কাঠামো গড়ে তোলার অপচেষ্টা করি। সহৃদয় পাঠক যখন ছুঁয়ে দেন নড়বড়ে কাঠামোটাকে, আলোর ছটায় ঝলমল হয়ে উঠে- শিশুর কলরবে মুখরিত একটা পড়ো বাড়ি!
তো, শত চেষ্টা করেও খোদেজাকে নিয়ে লেখা আর হয়ে উঠে, ভাবনায় পরতের পর পরত একরাশ ধুলো জমে কেবল! আমার ব্যক্তিগত অসহনীয় জটিলতার কারণে সব কেমন এলোমেলো হয়ে চোখের সামনে ঝপ করে নেমে এলো একগাদা দুঃস্বপ্ন। একজন নিঃসঙ্গ শেরপা, ৬৫০ কোটি মানুষের মাঝে থেকেও একা। হা ঈশ্বর, কোথায় যাই, কার কাছে লুকাই?
প্রায়শ মনে হত এমন, এই বিশাল গ্রহের কোথাও কি এক চিলতে জায়গা নেই যেখানে আমি আত্মগোপন করতে পারি? কখনও তো নিজেকে মানুষ বলেই মনে হত না; যেন ভাঙ্গাচোরা-বাতিল একটা অবয়ব!
ওয়েব সাইটে লেখালেখি করার কারণে অনেকেরই সঙ্গেই যোগাযোগ হত। আমার যে দু-চারজন হৃদয়বান পাঠক আছেন এরা রাগারাগি করতেন, লিখতে তাড়া দিতেন। এঁদের কেমন করে বলি, লিখতে পারছি না! কিছু বেদনা আছে যা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করা যায় না। অবশ্য কেউ কেউ কঠিন ভঙ্গিতেও বলতেন, তোমার আদিখ্যেতা দেখে বাঁচি না, তুমি ছাইপাশ না লিখলেই কী! আসলেই তো, কার কি দায় পড়েছে লেখার পেছনের মানুষটাকে নিয়ে ভাবার। এর ব্যত্যয় হবে কেন! আমি নির্বোধের মত বুঝতে না চাইলে কার কী আসে যায়!
লেখা গেল চুলায়। কই আমি আর কই লেখালেখি, মোরা দু-ভুবনের বাসিন্দা! লেখার ইচ্ছাটাই উবে গেল। হাল ছেড়ে দেয়া ভঙ্গি- কি হবে লিখে, কি হয় লিখে! ইত্যাদি ইত্যাদি।
বেলা বয়ে যায়। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পান্ডুলিপি জমা দেয়ার কথা অথচ কিছুই লেখা হয়নি।
এর সঙ্গে যোগ হল, খোদেজার যন্ত্রণা। কেমন একটা ঘোরের মধ্যে থাকি। মনে হয় এমন, খোদেজা আমাকে তাড়া করে লেখার জন্য: এই মানু, আমাকে নিয়া লেখবা না। এই যাহ, বললেই হল আর কী! একে নিয়ে লেখার ক্ষমতা আমার কই! হায়, আমার দু-হাত ভরা খোদেজার দেয়া শিউলি, আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে টুপটুপ করে ঝরে যায় যে! খোদেজা মনে করিয়ে দেয় বলেই নিজেকে খানিকটা মানুষ-মানুষ বলে ভ্রম হয়, ফিরে দাঁড়াতে বড় সাধ জাগে!
আফসোস, খোদেজা ভুল মানুষকে বেছে নেয়। আমার মত আধা-নাগরিক একজন মানুষের কাছে খোদেজার জগতটা সম্পূর্ণ অপরিচিত, ভাসা ভাসা জেনে কেবল লেখার অপচেষ্টা করা।
বইয়ের নাম খোদেজা দেখে আমার এক প্রিয়মানুষ বিরক্তি প্রকাশ করলেন, জোর অনুরোধ নামটা বদলে দেয়ার জন্য। নামটা নাকি সস্তা উপন্যাসের মত হয়ে গেছে। হায়, খোদেজা নামটা, খোদেজাদের নিয়ে লিখলে বুঝি সস্তা উপন্যাস হয়ে যায়! আসলে আমাদের কাছে খোদেজারা বড় সস্তা!
যে কথাটা তখন বলতে পারিনি, আমি যেমন খোদেজার নিয়তি বদলে দিতে পারি না তেমনি খোদেজা নামটাও বদলাবার ক্ষমতা আমার নাই। এবং খোদেজাকেও নিয়ে লেখার ক্ষমতাটাও। তবুও নিজের চোখে তাকাতে চেষ্টাটা করা, সবিরাম... ।
এর সঙ্গে যোগ হল, খোদেজার যন্ত্রণা। কেমন একটা ঘোরের মধ্যে থাকি। মনে হয় এমন, খোদেজা আমাকে তাড়া করে লেখার জন্য: এই মানু, আমাকে নিয়া লেখবা না। এই যাহ, বললেই হল আর কী! একে নিয়ে লেখার ক্ষমতা আমার কই! হায়, আমার দু-হাত ভরা খোদেজার দেয়া শিউলি, আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে টুপটুপ করে ঝরে যায় যে! খোদেজা মনে করিয়ে দেয় বলেই নিজেকে খানিকটা মানুষ-মানুষ বলে ভ্রম হয়, ফিরে দাঁড়াতে বড় সাধ জাগে!
আফসোস, খোদেজা ভুল মানুষকে বেছে নেয়। আমার মত আধা-নাগরিক একজন মানুষের কাছে খোদেজার জগতটা সম্পূর্ণ অপরিচিত, ভাসা ভাসা জেনে কেবল লেখার অপচেষ্টা করা।
বইয়ের নাম খোদেজা দেখে আমার এক প্রিয়মানুষ বিরক্তি প্রকাশ করলেন, জোর অনুরোধ নামটা বদলে দেয়ার জন্য। নামটা নাকি সস্তা উপন্যাসের মত হয়ে গেছে। হায়, খোদেজা নামটা, খোদেজাদের নিয়ে লিখলে বুঝি সস্তা উপন্যাস হয়ে যায়! আসলে আমাদের কাছে খোদেজারা বড় সস্তা!
যে কথাটা তখন বলতে পারিনি, আমি যেমন খোদেজার নিয়তি বদলে দিতে পারি না তেমনি খোদেজা নামটাও বদলাবার ক্ষমতা আমার নাই। এবং খোদেজাকেও নিয়ে লেখার ক্ষমতাটাও। তবুও নিজের চোখে তাকাতে চেষ্টাটা করা, সবিরাম... ।
3 comments:
এ তাড়না কিসের?
পাঠকের মমতার !
নাকি লেখকের দায়বদ্ধতার !!
বেদনার নীল রাত পেরিয়ে সকাল হোক, এ কামনাই করি।
এ তাড়না কিসের?
শিমুল, জানি নারে ভাইয়া, জানলে বেশ হত...।
Post a Comment