কত বছর, কত বছর হবে? দশ, এগারো, বারো, তেরো, পনের বছর? এত বছরের মধ্যে কেবল এবারই একুশের বইমেলায় যাওয়া হল না। আমি স্পষ্ট মানষচক্ষে দেখতে পাচ্ছি, অনেকের কপালে ভাঁজ পড়ছে এটা ভেবে, ব্যাটা বলতে চাইছে কী, ৩ টাকার কলমচীর বিরহে বইমেলা মুখ কালো করে রেখেছিল নাকি?
নারে বাহে, কারও কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি হয়নি কিন্তু না যাওয়া বেদনার দগদগে ক্ষতটা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছি। জানি না কবে নাগাদ এটা বয়ে বেড়াব, হয়তো আমৃত্যু?
এবারের মেলায় অনেকে অনেক মাস্তি করলেন, এইসব রসালো কাহিনি পড়ে ঠান্ডা শ্বাস ফেলা ব্যতীত আমার কিই-বা করার ছিল!
আমার সুহৃদদের অনেকেই তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, অনেকে ব্যক্তিগত অপমান হিসাবে ধরে নিয়েছেন।
একজন সুহৃদকে ফোন করলাম, মেলায় কেমন মাস্তি করছেন, মহতরাম?
তিনি আলাদা গাম্ভির্য এনে বললেন, ব্যস্ত আছি, পরে ফোন করব।
ফেব্রুয়ারি গেল, জুলাই গেল মহতরম আর ফোন করেননি। মহতরাম ফোনের অপেক্ষায় থেকে থেকে ক্লান্ত হয়ে গেছি।
এক মহতরমা রাগের চোটে ফোন নাম্বারই বদলে ফেলেছেন। হায়রে বালসুলভ আচরণ- আমর চেয়েও অপক্ক!
সচরাচর আমরা হাসিই দেখি, দেখতে পছন্দ করি। আহা, আমি তো ফটো না যে হাসিমুখের ছবি দিব্যি ঝুলতে থাকবে, যদ্দিন আপনি চাইবেন।
যান্ত্রিক এ সময়ে হাসির পেছনের বিমর্ষতা দেখার অবকাশ কোথায়? আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা কত দ্রুত নাগরিক হতে পারি, জাতে উঠতে হবে যে।
আপনারা কেবল নিজেদেরটাই দেখলেন হে…আমি শ্লা কি করি, রঙ্গ করি?
বইমেলায় আমার এককানা কিতাব বাহির হইয়াছিল- আমার বুঝি ইচ্ছা করেনি বইখানার মুখদর্শন করতে। উমম, নিজের আনকোরা বইয়ের গন্ধটা কেমন? আমার তো মনে হয় বিস্মৃত হয়ে আসা ভূমিষ্ঠ শিশুর গায়ের গন্ধ। বাহে, কোন পিতাকে জিজ্ঞেস করিয়েন, নিজের সন্তানকে ছুতেঁ না পারা রঙ্গ, কেমন রঙ্গ…।
No comments:
Post a Comment