এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Sunday, August 3, 2008
গাধু, গাধার মত এইটা কী করলি!
(না ভান-না মান, কেবলই অভিমান)
গাদুরা।
তোকে তো গাধুই ডাকতাম, নাকি? তোকে আরেকটা নামে ডাকতাম ‘তিন ঠেইঙ্গা’। ওরে, তোর তিন ঠেইঙ্গাটা রাখা আছে আমার বৈঠকখানায়- আয় না একদিন, দেখে যা।
কি রে, তোর কী জানা আছে আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস? মার্কিন কংগ্রেস নাকি ১৯৩৫ সালে আইন করে আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস ঘোষণা করে। চিন্তা কর, বন্ধুত্বের জন্যও নাকি আইন লাগে।
এইসব জানিস না, না? ছ্যা! দেখ দেখি কান্ড, এটা আমি প্রায়শ ভুলে যাই আমি তো আবার তোর থেকে ২ পাতা বেশি পড়েছি। এটা ফলাও করে তোকে, লোকজনকে না বললে শান্তি লাগে না, বুঝলি। আমি যে কী ‘শিকখিত’ হয়েছি এটা জনে জনে না জানালে চলবে কেন, বল! বুঝিস না কেন দুনিয়াটাই এমন...।
তুই যে আমায় ‘চার চইখ্যা’ ডাকতি আমার এটা ভাল লাগত না, বুঝলি। আরে, চশমা চোখে দিলে দুয়ে দুয়ে তো চার চোখই হবে- এটা আবার ঘটা করে বলাবলির কী আছে! চশমা চোখে কী আর সাধে দিতাম, সেই ছোটবেলা থেকেই তো চোখ গেছে। গেলে কী আর করা! ওই সময় এ বয়সের ক-টা ছেলেই বা চশমা পরে, লজ্জা করত না বুঝি আমার? ইচ্ছা করে তুই এই কান্ডটা করবি, চার চইখ্যা ডাকবি আর আমি আনন্দে লাফাব, পাগল!
ইয়ে, তোর কি ওই পাগলা স্যারটার কথা মনে আছে, আছাদ আলি স্যার। আমাদের বাসায় যার কাছে আমরা প্রাইভেট পড়তাম। প্রাইমারীতে পড়ার সময় যেবার তোর বুকে নাগরাপরা পা তুলে দিলেন। আরেকবার পেয়ারা গাছের পাতাসহ ডাল ভেঙ্গে তোকে মারছিলেন আর তুই হি হি করে হাসছিলি। পরে তুই গোমর ফাঁস করে দিলি, পাতাভর্তি ডালটার কারণে তুই নাকি কোন ব্যথাই পাচ্ছিলি না।
জানিস, আজ না আমার আলাভোলা বাবাটার কথা মনে পড়ছে বড্ডো। মানুষটা আমাকে শৈশবে ওই শিক্ষাটা দিয়েছিলেন বলেই না আজ আমার এই হা-হুতাশ নাই, কেন শৈশবের বন্ধুদের মধ্যে কেউ মন্ত্রীর ছেলে, সচিবের ছেলে নাই।
দেখলাম তো আজকালকার বন্ধুত্ব! সর্দি ঝাড়ার মত একজন অন্যজনকে ভুলে যায়! কী অবলীলায় একজন অন্যজনের হাত ছেড়ে দেয়। আসলে আমাদের এত সময় কই!
যাগ-গে, তোর সঙ্গে ডাং-গুলি খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, মাঞ্জা দেয়া সুতা...ঘ্যাচ ঘ্যাচ ঘ্যাচ। ডাং-গুলি ...আহা, কী খেলা- এড়ি, দুড়ি, তেলকা...! ডাং-গুলিতে তোর অসাধারণ দখল আমার ভাল লাগত না, বুঝলি? ভাল লাগার কী কোন কারণ ছিল? তোর কাছে নিয়মিত হারতাম। খেলার নিয়মানুযায়ি এক লালে কেনা যেত আস্ত একটা গোদাম, দুই লালে নদি। তুই তিতাস নদিটাও কিনে ফেলতি, এইটা কোন দেশের বিচার!
আর আমি, হারুয়া পার্টি? গুমগুম করে পিঠে পড়ত তোর কিল। ইশ-শ, কী জোরেই না মারতি! তখন জোর প্রতিজ্ঞা করতাম, শোধ নোব একদিন। ঠিক গদাম করে মারব একটা।
অনেক বছর পরে তোকে কিন্তু ওইদিন ঠিকই মারতাম। তুই শ্লা, আমায় গালি দিলি কেন? শ্লা, আমাকে আপনি আপনি করে বলছিলি কেন রে, তুই থেকে আপনি? কুতুয়া রে!
গাধু, গাধার মত তুই যে মরে গেলি পচাই খেতে খেতে এটা কী একটা কাজের কাজ হল?!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment