জুইশ কমিউনিটি বা ইহুদি সম্প্রদায়ের ইতিহাস প্রায় ৩০০০ বছর পুরনো। ইহুদি ধর্ম মূল ধর্মগুলোর প্রাচীনতম। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলিদের আদিবাস ছিল, তবে তারা এখন তাদের জায়গা বলে যেটা দাবি করছে তা নিয়ে জোর বিতর্ক আছে।
মোজেস বা মুসা নবী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই সম্প্রদায়ের সুখের সময় ছিল খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ বছর আগে ডেভিড বা সম্রাট দাউদের সময়। ডেভিডের সময় সলোমন বা সোলেইমানের সময়েও ইহুদিদের সোনালি সময়। কিন্তু সলোমনের মৃত্যুর পর ইহুদি জাতি ২ ভাগে ভাগ হয়ে যায়। অ্যাসিরিয়ানদের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলে ইহুদিরা ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়ে।
ইজিপশিয়ান ফারাওদের সময় থেকে শুরু করে জার্মানির হিটলার পর্যন্ত তাদের বিতাড়িত হতে হয়েছে বিভিন্ন দেশ থেকে। মুলত ইহুদিদের সঙ্গে চরম সম্পর্ক খারাপ ছিল খ্রীস্টানদের। খ্রীস্টানদের অনেকে ইহুদিদের যিশুর হত্যাকারি বলে মনে করত। ইহুদিদেরকে অভিশপ্ত জাতি মনে করত। ইহুদিদের দেখা হতো নিচু চোখে। ইহুদিদের জীবনটা হয়ে পড়ে যাযাবরের মত, কেবল এখান থেকে সেখানে তাড়া খেয়ে বেড়ানো। তারা পরিশ্রমের কাজের চেয়ে বেছে নিত কম পরিশ্রমের মাথা খাটাবার সূক্ষ-বুদ্ধির কাজ।
ইউরোপে এদের সম্বন্ধে কেমন ধারণা ছিল এটা বোঝা যাবে ছোট্ট একটা উদাহরণ দিয়ে। শেক্সপিয়ারের 'শাইলক' ইহুদি চরিত্রটি, যে এমন নির্মম টাকা আদায়ের জন্য গায়ের মাংস কেটে নিতেও পিছ-পা হয় না। বা নিকোলাই গোগলের 'তারাস বুলবা' উপন্যাসের ইহুদি চরিত্র ইয়ানকেল।
মুসলমানদের সঙ্গে তাদের ছিল সুসম্পর্ক। সম্পর্কের অবনতি হয় অনেক পরে। ইউরোপে তাড়া খেয়ে এরা অবশেষে মিডল-ইস্টে ঢোকা শুরু করে। এখানে ইউরোপিয়ানদের সূক্ষ চাল ছিল; যেহেতু এরা ইহুদিদের পছন্দ করত না তাই তারা চাচ্ছিল এই বোঝা মুসলমানদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে। আর ইহুদিরাও চাচ্ছিল হাজার-হাজার বছরের যাযাবরের জীবনের অবসান।
জুইশ কমিউনিটির বা ইহুদিদের লোকসংখ্যা মাত্র দেড় কোটি। এরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পৃথিবীময়। তাই তো আইনস্টাইন বলেছিলেন, There are no German Jews, There are no Russian Jews, There are no American Jews ...There are in fact only Jews.
আসলেই এরা পৃথিবীর যেখানেই থাকুক- এদের একতা, ভিশন নিয়ে কারও কোন দ্বিমত নেই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম স্বপ্ন দেখেছে ইসরাইল নামের স্বপ্নভূমি, যে কোন মূল্যে। ৩০০০ হাজার বছর আগে মিডলইস্টের কোন এক জায়গায় তাদের জন্মভূমি ছিল এই যুক্তিতে গায়ের জোরে দখল নেয়াটা এদের পক্ষেই সম্ভব।
এই বিষয়ে ইউরোপিয়ানদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নিয়ে ইয়াসির আরাফাতের স্পষ্ট বাক্য ছিল,'ইসরাইলীদের জন্য আপনাদের এতো দরদ থাকলে ইউরোপ, আমেরিকায় আপনাদের বিস্তীর্ণ ভূমি রয়েছে, আপনারা ওখান থেকে জমির ব্যবস্থা করে দিন। দয়া করে আমাদের জমি দিতে বলবেন না, শত-শত বছর ধরে আমরা এখানে বসবাস করে আসছি'।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যে গণহারে ইহুদি নিধন শুরু হয় বা বিভিন্ন সময়ে খ্রীস্টানরা এদের উপর যে অত্যাচার করেছে, সেই অত্যাচার এরা এখন কয়েক গুণ ফিরিয়ে দিচ্ছে। ভাগ্যের রসিকতা সেই রোষ, দানবীয় আচরণের সম্মুখীন হতে হচ্ছে মুসলমানদের।
এরা কেমন দানব হয়ে উঠেছে এর একটা উদাহরণ হতে পারে এটা। ১১০ ফিলিস্তানিকে একটা ভবনে আটকে রেখে বোমা মেরে প্রায় সবাইকে মেরে ফেলে, এতে অন্তত ৩০জন শিশু, নারি ছিলেন।
(গড থেকে আল্লাহ আবার একটু ঘুমকাতুরে বেশি। নাকে জয়তুনের তেল দিয়ে ঘুমানোটা ভারী আরামপ্রদ তাঁর জন্যে। এতে সমস্যা নাই কিন্তু 'ইচ্ছা-মৃত্যুর' অপসন থাকলে বেশ হত। ইচ্ছা-মৃত্যুর ব্যবস্থা থাকলে আমি মৃত্যু কামনা করতাম এক্ষণ, এই মুহূর্তে, নির্বিকারচিত্তে।)
*ছবিসূত্র: ইন্টারনেট, সোর্স, বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
No comments:
Post a Comment