দ্বিতীয় ছবিটা হচ্ছে, ভোরের কাগজের। ১৯৯২ সাল, মার্চের।
ইতিমধ্যে ১৭ বছর চলে গেছে। কাগজ হয়েছে চকচকে! পত্রিকার সার্কুলেশনের পাশাপাশি বেড়েছে জেল্লা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খবরের দৈন্যতা!
তত্কালিন ভোরের কাগজ এবং আজকের প্রথম আলোর সম্পাদক মহোদয় একই ব্যক্তি। জনাব মতিউর রহমান। তাই কী ভাবনাটাও একই!
তাই তো, এইসব খবর ছাপিয়ে পত্রিকায় স্পেস কোথায়!
এই দুইটা ছবিই প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছিল। প্রথম পাতায় ছাপাবার মত খবরই বটে! অবশ্য দুইটার মূল খবর দুই রকম, একটা হচ্ছে অন্যকে অপদস্ত করার জন্য, অন্যটা বৃষ্টির জন্য।
কিন্তু শিরোনাম এবং ঘটনা একই। বিয়েটা ব্যাঙের! ব্যাঙ বিবাহ করেছে। অবশ্য বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। এই যেমন, মোহরানা কত ছিল? ব্যাঙ ভাইয়া কী পরে বিবাহ করেছিলেন, শেরোয়ানি নাকি লুঙ্গি? বাসর রাতে কোন কোম্পানির জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রি ব্যবহার করেছিলেন? বা ব্যাঙ ভাইয়া ব্যাঙানি ভাবিকে বাসররাতে কী বলে সম্বোধন করেছিলেন? ইত্যাদি ইত্যাদি...।
আচ্ছা, বর্ষাকালে যেন বৃষ্টি না হয় এ জন্য আমি সাপের বিবাহ দেব। এই নিউজটা কী মতিউর রহমান ছাপাবেন? শিরোনামটা হবে 'সাপের বিবাহ, যৌতুকবিহীন'...। সম্মতি থাকলে বলেন, সাপ ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলি। যন্ত্রণার কী শেষ আছে, এরপর কথা বলতে হবে মহিলা সাপের সঙ্গে...।
ব্রিটেনের পত্রিকা 'দি সান'। ৯২ সালেই এর প্রচারসংখ্যা ছিল ৩৫ লক্ষ। এই পত্রিকাটি এক অভিনব সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। এক মেধাবি গ্রাজুয়েটকে ১ দিনের জন্য ওই পত্রিকার সম্পাদক বানানো হয়েছিল। ওইদিন ১ দিনের সম্পাদকের নির্দেশনায় পত্রিকাটি বের হয়। 'দি সান' পত্রিকার স্বত্বাধিকারি প্রতিষ্ঠান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের একজন নির্বাহি গাস ফিশার বলেছিলেন, 'দি সানের বার্তাকক্ষে নতুন সম্পাদকের ভাবনা, দক্ষতা থেকে আমরা শিখতে চাইছি'।
দি সানের মত আমাদের মতিউর রহমান সাহেবও এমন একটা পদ্ধতি প্রয়োগ করে শিখতে চাইতে পারেন। তবে তিনি যদি পণ করে থাকেন, তাঁর শেখার আর কিছু নাই তাহলে আমাদেরও বলার কিছু নাই।
এরা এখন সব বদলে দেয়ার পণ করেছেন। জনে-জনে ক্ষণে-ক্ষণে শপথ করাচ্ছেন। কিন্তু নিজেদের শপথের কথা ভুলেও উচ্চারণ করছেন না। এদের ধারণা এদের সম্ভবত বদলাবার কিছু নাই- সরাসরি আকাশ থেকে নেবে এসেছেন! বদলে দেয়ার কথা বলে যত কস্তাকস্তি করা হোক কেউ কেউ কখনও বদলায় না। বদলাতে পারে না! আসলে কারও কারও বদলাবার সদিচ্ছাটাই থাকে না!
No comments:
Post a Comment