(এই মহোদয়ের কেবল টুপির ওজনই ১০ টন)
শাহাদুজ্জামানের 'বীভৎস মজা' পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। মানুষটা কেবল সুলেখকই নন, শব্দের যাদুকরও বটে। শব্দ নিয়ে জাগলিং করার এক কারিগর!
একজন মানুষের সঙ্গে হাত মেলালে যেমন তার শরিরের জোর সম্বন্ধে আঁচ সম্ভব তেমনি একজন লেখকের একটা লেখা পড়ে তাঁর লেখার শক্তি অনুমান করা সম্ভব।
প্রতিদিন পত্রিকা নিয়ম করে পড়া হয় এটা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না। কখনও চার-পাঁচ দিনের পত্রিকা একবারে পড়া হয়। দেরিতে হলেও প্রথম আলোতে পড়লাম, শাহাদুজ্জামানের লেখা 'ধ্বংস'। কেউ কেউ একজন মানুষের একপেট আবর্জনাটাও অনুমান করে ফেলেন, শাহাদুজ্জামান সেই অল্প মানুষদের একজন। ঢাকা মুখ থুবড়ে পড়বে, সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঢাকা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি লিখেছেন,
"ইস্টার দ্বীপের গল্প পড়তে পড়তে...এই মহামান্য রাজধানীকে নজরানা দিতে সারা দেশের মানুষ এসে জড়ো হয়েছে এই ঘেরাটোপে। শুনি শহরের পানির স্তর নেমে গেছে মরু অঞ্চলের মতো, নিঃশেষ হয়ে গেছে শহরকে আলোকিত করার ক্ষমতা।...আমরা কি ক্রমেই একটা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছি?"
কোন এক লেখায় আমি লিখেছিলাম, "আমরা সব লাটিম বনবন করে ঘুরাচ্ছি ঢাকাকে কেন্দ্র করে! এটা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। ঢাকার উপর থেকে যত দ্রুত সম্ভব চাপ কমানো অতি আবশ্যক। এখান থেকে সরাতে হবে ক্যান্টনমেন্ট, সরকারি যত আপিস। তারচেয়ে জরুরি হচ্ছে কল-কারখানাগুলো সরানো। সরানো মানে নতুন করে হতে না দেয়া, সরিয়ে নিতে লোভ দেখানো। জোর করে তো এটা করা যাবে না। এ জন্য মোটা মাথা থেকে চিকন বুদ্ধি প্রসব করতে হবে। যেসব উদ্যোক্তা ঢাকার বাইরে রংপুর, খুলনায় শিল্প-প্রতিষ্ঠান করবেন তাদের জন্য থাকবে ট্যাক্সসহ অন্যান্য কর দেয়ার বেলায় বিরাট ছাড়। এবং রাষ্ট্রীয় বিশেষ সম্মান থাকবে এদের জন্য। আমার ধারণা, এরা প্রয়োজনে বায়ারকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ওই বায়ার লাফাতে লাফাতে রাজি হবে। না-হওয়ার কোন কারণ দেখি না। এই বায়ার মহোদয় শত-শত বার প্লেনে চড়েছেন কিন্তু হয়তো-বা হেলিকপ্টারে কখনও চড়া হয়নি। তিনি বিমলানন্দে দেশে গিয়ে গল্প করবেন, 'হেই ম্যান, গেসিলাম বেংলাদেশে... ইমাজিন, হোল হেলিকাপ্টার হামার জইন্যে।"
যাই হোক, ইস্টার দ্বীপ নিয়ে আমি যে অল্প পড়াশুনা করেছি এতে মনে হয়েছে, 'ধ্বংস' লেখাটায় বেশ কিছু তথ্যগত ভুল আছে। সঙ্গত কারণেই লাইন বাই লাইন ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়াটায় আমি যেতে চাচ্ছি না। আমার মূল বক্তব্য অন্যখানে।
একটা উদাহরণ দেই, শাহাদুজ্জামান লিখেছেন, "...সাগরের দিকে মুখ করা নতজানু অসংখ্য মূর্তিগুলো...।"
উইকি বলছে, 'Ahu Akivi, one of the few inland ahu, with the only moai facing the ocean.'
শাহাদুজ্জামান লিখেছেন, "...সেই পেরুরই কোন পথভোলা নৌকা গিয়ে ভেড়ে এই দ্বীপে।...তারা থেকে যায় সেখানে।"
উইকি বলছে, 'The island was populated by Polynesians who navigated in canoes or catamarans from the Marquises islands (3200 km away) or Tuamotou islands (Mangareva, 2600 km away) or Pitcairn (2000 km away).'
খুঁজলে এমন আরও পাওয়া যাবে।
তিনি এই লেখার এক জায়গায় উল্লেখ করেছেন, লেখক জেরাড ডায়মন্ডের 'কলাপস' বইয়ের কথা। আমার ধারণা, তিনি কেবল 'কলাপস' এই বইটার কথাই বলতে চাননি। চেয়েছিলেন জেরাড ডায়মন্ডের 'কলাপস' বইয়ের জের টেনে উদাহরণটা দিতে, কেমন করে একটা জনপদের মৃত্যু হয়। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে তিনি এই বইটার উদ্ধৃতিই কেবল দিয়েছেন। পাঠক হিসাবে তখন বিভ্রান্ত-বিভ্রান্ত লাগে।
আমার এও মনে হচ্ছে, তিনি উদাহরণ দিতে, ঢাকার সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে অজান্তেই, অহেতুক ঐতিহাসিকরূপে অবতীর্ন হয়ে গেছেন। যার আদৌ প্রয়োজন ছিল বলে আমি মনে করি না। খুব প্রয়োজন হলে, সোর্স উল্লেখ করে লাইন বাই লাইন দিতে পারতেন। স্মৃতি থেকে লিখে থাকলে কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়াই সমীচীন ছিল।
এখনকার লেখকগণ বিস্মৃত না হলেই নিজের মঙ্গল করবেন, আগের সেই দিন আর নাই, পূর্বের সেই পাঠকও নাই। পূর্বে পাঠককে যেসব তথ্য পেতে দিনের পর দিন, মাস, বছর, মায় যুগ লাগত। এখন এক কাপ কফি নিয়ে নেট ঘাটলে প্রয়োজনীয় উপাত্ত হাতের মুঠোয় চলে আসে। ৫ মিনিটেরও কম সময়ে একজন কারও লেখার ভুল ধরিয়ে দিতে পারেন।
আমি অন-লাইনে লিখতে গিয়ে সর্বদা ভয়ে কাঠ হয়ে থাকি। এইরে, কী যে ভুল করে বসলাম...তার উপর ঈশ্বর আমাকে উপুড় করে দিয়েছেন কুখ্যাত স্মৃতিশক্তি। যে বানান হাজারবার লিখেছি সেটা নিয়েও প্রায়শ কস্তাকস্তি করতে হয়। তো, রাগি পাঠক দিল বুঝি...।
বিজ্ঞানের শিক্ষক হয়েও হুমায়ূন আহমেদ জিরো পাওয়ারের ডীম লাইটের কথা অনেক বইয়ে লিখেছেন। তিনি হয়তো জিরো পাওয়ারের ডীম লাইট জ্বালিয়ে আরামে ঘুমান কিন্তু পাঠক বেচারার জিরো পাওয়ারের অন্ধকারে ঘুম আসে না- বিজ্ঞানের শিক্ষক হয়েও হুমায়ূন আহমেদ কী জানেন না জিরো ওয়াটের লাইট জ্বলবে না! আগামীতেও হয়তো তিনি কোন একটা বইয়ে জিরো ওয়াটের প্রসঙ্গটা লিখবেন কারণ তাঁর এই ভুল সংশোধন করে দেয়ার সুযোগ তাঁর কপালে জোটেনি!
একজন লেখক পশ্চাদপদ গ্রাম বোঝাতে গিয়ে অহরহ গন্ডগ্রাম লিখে থাকেন। এর ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। এঁদের থামাবার কেউ নেই। লেখক মহোদয়গণ ক্লান্তিহীন লিখেই যাচ্ছেন!
অনেক লেখক ও প্রথম শ্রেণীর পত্রিকাগুলো হামেশাই লেখে, হন্ডা নিয়ে কয়েকজন যুবক...। যুবকরা সবাই মোটর সাইকেল বলতে কেবল হন্ডাই চালায়, কেউ আর সুজুকি, কাওয়াসাকি চালাতে আগ্রহ বোধ করে না। আফসোস!
কার ব্যতীত সব গাড়ি জীপ, কানে লাগিয়ে গান শোনার সব যন্ত্র ওয়াকম্যান। গাড়ির ইঞ্জিনের সব তেল মবিল। কী আর করা, কপাল! ছাপার অক্ষরেরর সব কিছুই আমাদের হজম করতে হয়!
লেখকরা যখন ভুল উদাহরণ, উপাত্ত দেন তখন তার লেখার মান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
*সমস্ত তথ্য-উপাত্ত, ছবি উল্লেখ করে ২ মে, ২০০৯ প্রথম আলোতে মেইল করেছিলাম। দু-লাইন প্রতিবাদ ছাপানো দূরের কথা এরা আজ অবধি ওই মেইলের উত্তর দিয়ে ভব্য হওয়ার অভব্যতা দেখাননি। আমি সম্ভবত একটু কঠিন করে বলে ফেলেছি। এমনও তো হতে পারে ডিজিটাল মেইলে গিট্টু লেগে গেছে। অফিসের সবাই গিট্টু খোলায় ব্যস্ত! মাত্র কয়েক মাস হলো। এখনও আশায়-আশায় আছি। হয়তো কবুতরের পায়ে বেঁধে টেলিগ্রামের বদলে 'কবুতরগ্রাম' পাঠাবে। অবশ্য রান্তায় কোন পেটুক কবুতরটাকে ধরে খেয়ে ফেললে এর দায়িত্ব মতি সাহেবের উপর বর্তাবে না।
**অন্য একটা লেখার প্রসঙ্গ ধরে শাহাদুজ্জামানের এই ভুলটার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করে, আরিফ জেবতিক তাকে মেইল করলে, শাহাদুজ্জামান মেইল করে এই উত্তর দেন। যদিও তার মেইলের সব অংশের সঙ্গে আমি একমত না কিন্তু প্রবাসে ব্যস্ততার মাঝেও তিনি যে চটজললদি মেইলের প্রতিউত্তর দিয়েছেন এইজন্য টুপি খুলে তাঁকে সালাম। প্রথম আলো কী এখান থেকে কিছু শিখল, কে জানে! কেউ কেউ কখনও শেখে না...।
আরিফ জেবতিককে ধন্যবাদ জানিয়ে, শাহাদুজ্জামানের মেইলটা হুবহু এখানে তুলে দিচ্ছি:
Dear Arif,
Thanks a lot for sending me this write up by Himu.
I spent some time reading about Easter Island some years back, including Diamond and other authors. I remember that some authors differ with Diamond’s version of Ester Island and have different information and interpretations. So the write up was not based only on my reading of Diamond.
My aim of this article was not to give an historical account of Easter Island rather to draw our attention to Dhaka that is nearly facing a collapse. I took Easter Island as a reference.
The main point was as raised by many authors that the reason behind the island’s collapsed was the destruction of ecosystem.
However, I have written this peace from my memory as I am travelling now in UK and didn’t have the references in hand. I must acknowledge that there would probably be some information gap in my write up.
Thanks a lot to Himu for making me aware of those.
Can you please share this mail with Himu and others.
Thanks,
Shahaduz Zaman
------------------------------------------------------
এখানে উইকি থেকে কিছু তথ্য দিয়ে দিচ্ছি:
The name "Easter Island" was given by the island's first recorded European visitor, the Dutch explorer Jacob Roggeveen, who encountered it on Easter Sunday 1722, while searching for Davis or David's island and named it Paasch-Eyland (18th century Dutch for "Easter Island"). The island's official Spanish name, Isla de Pascua, is also Spanish for "Easter Island".
The first recorded European contact with the island was on April 5 (Easter Sunday) 1722 when Dutch navigator Jacob Roggeveen visited the island for a week and estimated there were 2,000 to 3,000 inhabitants on the island.
Easter Island is one of the world's most isolated inhabited islands. It is 3,510 km (2,180 mi) west of continental Chile at its nearest point (between Lota and Lebu) and 2,075 km (1,289 mi) east of Pitcairn (Sala y Gómez, 415 kilometres to the east, is closer but uninhabited).
There are several hypotheses about the "original" Polynesian name for Easter Island, including Te pito o te henua, or "The Navel of the World" due to its isolation. Legends claim that the island was first named as Te pito o te kainga a Hau Maka, or the "Little piece of land of Hau Maka". Another name, Mata-ki-Te-rangi, means "Eyes that talk to the sky."
The large stone statues, or moai, for which Easter Island is world-famous, were carved during a relatively short and intense burst of creative and productive megalithic activity. A total of 887 monolithic stone statues have been inventoried on the island and in museum collections. Although often identified as "Easter Island heads", the statues are actually complete torsos, the figures kneeling on bent knees with their hands over their stomach. Some upright moai have become buried up to their necks by shifting soils.
The statues' production and transportation is considered a remarkable intellectual, creative, and physical feat.The tallest moai erected, called Paro, was almost 10 metres (33 ft) high and weighed 75 tonnes; the heaviest erected was a shorter but squatter moai at Ahu Tongariki, weighing 86 tons; and one unfinished sculpture, if completed, would have been approximately 21 metres (69 ft) tall with a weight of about 270 tons.
The period when the statues were produced remains disputed, with estimates ranging from 400 CE to 1500–1700 CE. Almost all (95%) moai were carved out of distinctive, compressed, easily worked volcanic ash or tuff found at a single site inside the extinct volcano Rano Raraku. The native islanders who carved them used only stone hand chisels, mainly basalt toki, which still lie in place all over the quarry. The stone chisels were re-sharpened by chipping off a new edge when dulled. The volcanic stone the moai were carved from was first wetted to soften it before sculpting began, then again periodically during the process. While many teams worked on different statues at the same time, a single moai would take a team of five or six men approximately one year to complete. Each statue represents a deceased long-ear chief or important person.
Contemporary to the arrival of the first settlers of Hawaii, 300-400 CE was published as a date for initial settlement of Easter Island. Although some scholars argue for initial settlement of 700-800 CE, there is an on-going study by archaeologists Terry Hunt and Carl Lipo that states: “Radiocarbon dates for the earliest stratigraphic layers at Anakena, Easter Island, and analysis of previous radiocarbon dates imply that the island was colonized late, about 1200 CE. Significant ecological impacts and major cultural investments in monumental architecture and statuary thus began soon after initial settlement.”
"Jared Diamond dismisses past climate change as a dominant factor on the island's deforestation in his book Collapse which presents an extensive look into the collapse of the ancient Easter Islanders. Diamond argues that the disappearance of the island's trees seems to coincide with a decline of its civilization around the 17th and 18th century.
Midden contents show a sudden drop in quantities of fish and bird bones as the islanders lost the means to construct fishing vessels and the birds lost their nesting sites. Soil erosion due to lack of trees is apparent in some places. Sediment samples document that up to half of the native plants had become extinct and that the vegetation of the island was drastically altered. Chickens and rats became leading items of diet and there are contested hints that cannibalism occurred, based on human remains associated with cooking sites, especially in caves.
In his article "From Genocide to Ecocide: The Rape of Rapa Nui", Benny Peiser notes evidence of self-sufficiency on Easter Island when Europeans first arrived. Although stressed, the island may still have had some (small) trees, mainly toromiro. Cornelis Bouman, Jakob Roggeveen's captain, stated in his log book, "... of yams, bananas and small coconut palms we saw little and no other trees or crops." According to Carl Friedrich Behrens, Roggeveen's officer, "The natives presented palm branches as peace offerings. Their houses were set up on wooden stakes, daubed over with luting and covered with palm leaves,"
*ছবিসূত্র:
1. Source: Chilean Navy. Public Domain. ( http://www.armada.cl/p4_armada/site/artic/20040914/pags/20040914100315.html
2. http://www.ianandwendy.com/OtherTrips/SouthPacific/Easter-Island/index.htm
Author: Ian Sewell
শাহাদুজ্জামানের 'বীভৎস মজা' পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। মানুষটা কেবল সুলেখকই নন, শব্দের যাদুকরও বটে। শব্দ নিয়ে জাগলিং করার এক কারিগর!
একজন মানুষের সঙ্গে হাত মেলালে যেমন তার শরিরের জোর সম্বন্ধে আঁচ সম্ভব তেমনি একজন লেখকের একটা লেখা পড়ে তাঁর লেখার শক্তি অনুমান করা সম্ভব।
প্রতিদিন পত্রিকা নিয়ম করে পড়া হয় এটা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না। কখনও চার-পাঁচ দিনের পত্রিকা একবারে পড়া হয়। দেরিতে হলেও প্রথম আলোতে পড়লাম, শাহাদুজ্জামানের লেখা 'ধ্বংস'। কেউ কেউ একজন মানুষের একপেট আবর্জনাটাও অনুমান করে ফেলেন, শাহাদুজ্জামান সেই অল্প মানুষদের একজন। ঢাকা মুখ থুবড়ে পড়বে, সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঢাকা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি লিখেছেন,
"ইস্টার দ্বীপের গল্প পড়তে পড়তে...এই মহামান্য রাজধানীকে নজরানা দিতে সারা দেশের মানুষ এসে জড়ো হয়েছে এই ঘেরাটোপে। শুনি শহরের পানির স্তর নেমে গেছে মরু অঞ্চলের মতো, নিঃশেষ হয়ে গেছে শহরকে আলোকিত করার ক্ষমতা।...আমরা কি ক্রমেই একটা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছি?"
কোন এক লেখায় আমি লিখেছিলাম, "আমরা সব লাটিম বনবন করে ঘুরাচ্ছি ঢাকাকে কেন্দ্র করে! এটা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। ঢাকার উপর থেকে যত দ্রুত সম্ভব চাপ কমানো অতি আবশ্যক। এখান থেকে সরাতে হবে ক্যান্টনমেন্ট, সরকারি যত আপিস। তারচেয়ে জরুরি হচ্ছে কল-কারখানাগুলো সরানো। সরানো মানে নতুন করে হতে না দেয়া, সরিয়ে নিতে লোভ দেখানো। জোর করে তো এটা করা যাবে না। এ জন্য মোটা মাথা থেকে চিকন বুদ্ধি প্রসব করতে হবে। যেসব উদ্যোক্তা ঢাকার বাইরে রংপুর, খুলনায় শিল্প-প্রতিষ্ঠান করবেন তাদের জন্য থাকবে ট্যাক্সসহ অন্যান্য কর দেয়ার বেলায় বিরাট ছাড়। এবং রাষ্ট্রীয় বিশেষ সম্মান থাকবে এদের জন্য। আমার ধারণা, এরা প্রয়োজনে বায়ারকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ওই বায়ার লাফাতে লাফাতে রাজি হবে। না-হওয়ার কোন কারণ দেখি না। এই বায়ার মহোদয় শত-শত বার প্লেনে চড়েছেন কিন্তু হয়তো-বা হেলিকপ্টারে কখনও চড়া হয়নি। তিনি বিমলানন্দে দেশে গিয়ে গল্প করবেন, 'হেই ম্যান, গেসিলাম বেংলাদেশে... ইমাজিন, হোল হেলিকাপ্টার হামার জইন্যে।"
যাই হোক, ইস্টার দ্বীপ নিয়ে আমি যে অল্প পড়াশুনা করেছি এতে মনে হয়েছে, 'ধ্বংস' লেখাটায় বেশ কিছু তথ্যগত ভুল আছে। সঙ্গত কারণেই লাইন বাই লাইন ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়াটায় আমি যেতে চাচ্ছি না। আমার মূল বক্তব্য অন্যখানে।
একটা উদাহরণ দেই, শাহাদুজ্জামান লিখেছেন, "...সাগরের দিকে মুখ করা নতজানু অসংখ্য মূর্তিগুলো...।"
উইকি বলছে, 'Ahu Akivi, one of the few inland ahu, with the only moai facing the ocean.'
শাহাদুজ্জামান লিখেছেন, "...সেই পেরুরই কোন পথভোলা নৌকা গিয়ে ভেড়ে এই দ্বীপে।...তারা থেকে যায় সেখানে।"
উইকি বলছে, 'The island was populated by Polynesians who navigated in canoes or catamarans from the Marquises islands (3200 km away) or Tuamotou islands (Mangareva, 2600 km away) or Pitcairn (2000 km away).'
খুঁজলে এমন আরও পাওয়া যাবে।
তিনি এই লেখার এক জায়গায় উল্লেখ করেছেন, লেখক জেরাড ডায়মন্ডের 'কলাপস' বইয়ের কথা। আমার ধারণা, তিনি কেবল 'কলাপস' এই বইটার কথাই বলতে চাননি। চেয়েছিলেন জেরাড ডায়মন্ডের 'কলাপস' বইয়ের জের টেনে উদাহরণটা দিতে, কেমন করে একটা জনপদের মৃত্যু হয়। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে তিনি এই বইটার উদ্ধৃতিই কেবল দিয়েছেন। পাঠক হিসাবে তখন বিভ্রান্ত-বিভ্রান্ত লাগে।
আমার এও মনে হচ্ছে, তিনি উদাহরণ দিতে, ঢাকার সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে অজান্তেই, অহেতুক ঐতিহাসিকরূপে অবতীর্ন হয়ে গেছেন। যার আদৌ প্রয়োজন ছিল বলে আমি মনে করি না। খুব প্রয়োজন হলে, সোর্স উল্লেখ করে লাইন বাই লাইন দিতে পারতেন। স্মৃতি থেকে লিখে থাকলে কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়াই সমীচীন ছিল।
এখনকার লেখকগণ বিস্মৃত না হলেই নিজের মঙ্গল করবেন, আগের সেই দিন আর নাই, পূর্বের সেই পাঠকও নাই। পূর্বে পাঠককে যেসব তথ্য পেতে দিনের পর দিন, মাস, বছর, মায় যুগ লাগত। এখন এক কাপ কফি নিয়ে নেট ঘাটলে প্রয়োজনীয় উপাত্ত হাতের মুঠোয় চলে আসে। ৫ মিনিটেরও কম সময়ে একজন কারও লেখার ভুল ধরিয়ে দিতে পারেন।
আমি অন-লাইনে লিখতে গিয়ে সর্বদা ভয়ে কাঠ হয়ে থাকি। এইরে, কী যে ভুল করে বসলাম...তার উপর ঈশ্বর আমাকে উপুড় করে দিয়েছেন কুখ্যাত স্মৃতিশক্তি। যে বানান হাজারবার লিখেছি সেটা নিয়েও প্রায়শ কস্তাকস্তি করতে হয়। তো, রাগি পাঠক দিল বুঝি...।
বিজ্ঞানের শিক্ষক হয়েও হুমায়ূন আহমেদ জিরো পাওয়ারের ডীম লাইটের কথা অনেক বইয়ে লিখেছেন। তিনি হয়তো জিরো পাওয়ারের ডীম লাইট জ্বালিয়ে আরামে ঘুমান কিন্তু পাঠক বেচারার জিরো পাওয়ারের অন্ধকারে ঘুম আসে না- বিজ্ঞানের শিক্ষক হয়েও হুমায়ূন আহমেদ কী জানেন না জিরো ওয়াটের লাইট জ্বলবে না! আগামীতেও হয়তো তিনি কোন একটা বইয়ে জিরো ওয়াটের প্রসঙ্গটা লিখবেন কারণ তাঁর এই ভুল সংশোধন করে দেয়ার সুযোগ তাঁর কপালে জোটেনি!
একজন লেখক পশ্চাদপদ গ্রাম বোঝাতে গিয়ে অহরহ গন্ডগ্রাম লিখে থাকেন। এর ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। এঁদের থামাবার কেউ নেই। লেখক মহোদয়গণ ক্লান্তিহীন লিখেই যাচ্ছেন!
অনেক লেখক ও প্রথম শ্রেণীর পত্রিকাগুলো হামেশাই লেখে, হন্ডা নিয়ে কয়েকজন যুবক...। যুবকরা সবাই মোটর সাইকেল বলতে কেবল হন্ডাই চালায়, কেউ আর সুজুকি, কাওয়াসাকি চালাতে আগ্রহ বোধ করে না। আফসোস!
কার ব্যতীত সব গাড়ি জীপ, কানে লাগিয়ে গান শোনার সব যন্ত্র ওয়াকম্যান। গাড়ির ইঞ্জিনের সব তেল মবিল। কী আর করা, কপাল! ছাপার অক্ষরেরর সব কিছুই আমাদের হজম করতে হয়!
লেখকরা যখন ভুল উদাহরণ, উপাত্ত দেন তখন তার লেখার মান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
*সমস্ত তথ্য-উপাত্ত, ছবি উল্লেখ করে ২ মে, ২০০৯ প্রথম আলোতে মেইল করেছিলাম। দু-লাইন প্রতিবাদ ছাপানো দূরের কথা এরা আজ অবধি ওই মেইলের উত্তর দিয়ে ভব্য হওয়ার অভব্যতা দেখাননি। আমি সম্ভবত একটু কঠিন করে বলে ফেলেছি। এমনও তো হতে পারে ডিজিটাল মেইলে গিট্টু লেগে গেছে। অফিসের সবাই গিট্টু খোলায় ব্যস্ত! মাত্র কয়েক মাস হলো। এখনও আশায়-আশায় আছি। হয়তো কবুতরের পায়ে বেঁধে টেলিগ্রামের বদলে 'কবুতরগ্রাম' পাঠাবে। অবশ্য রান্তায় কোন পেটুক কবুতরটাকে ধরে খেয়ে ফেললে এর দায়িত্ব মতি সাহেবের উপর বর্তাবে না।
**অন্য একটা লেখার প্রসঙ্গ ধরে শাহাদুজ্জামানের এই ভুলটার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করে, আরিফ জেবতিক তাকে মেইল করলে, শাহাদুজ্জামান মেইল করে এই উত্তর দেন। যদিও তার মেইলের সব অংশের সঙ্গে আমি একমত না কিন্তু প্রবাসে ব্যস্ততার মাঝেও তিনি যে চটজললদি মেইলের প্রতিউত্তর দিয়েছেন এইজন্য টুপি খুলে তাঁকে সালাম। প্রথম আলো কী এখান থেকে কিছু শিখল, কে জানে! কেউ কেউ কখনও শেখে না...।
আরিফ জেবতিককে ধন্যবাদ জানিয়ে, শাহাদুজ্জামানের মেইলটা হুবহু এখানে তুলে দিচ্ছি:
Dear Arif,
Thanks a lot for sending me this write up by Himu.
I spent some time reading about Easter Island some years back, including Diamond and other authors. I remember that some authors differ with Diamond’s version of Ester Island and have different information and interpretations. So the write up was not based only on my reading of Diamond.
My aim of this article was not to give an historical account of Easter Island rather to draw our attention to Dhaka that is nearly facing a collapse. I took Easter Island as a reference.
The main point was as raised by many authors that the reason behind the island’s collapsed was the destruction of ecosystem.
However, I have written this peace from my memory as I am travelling now in UK and didn’t have the references in hand. I must acknowledge that there would probably be some information gap in my write up.
Thanks a lot to Himu for making me aware of those.
Can you please share this mail with Himu and others.
Thanks,
Shahaduz Zaman
------------------------------------------------------
এখানে উইকি থেকে কিছু তথ্য দিয়ে দিচ্ছি:
The name "Easter Island" was given by the island's first recorded European visitor, the Dutch explorer Jacob Roggeveen, who encountered it on Easter Sunday 1722, while searching for Davis or David's island and named it Paasch-Eyland (18th century Dutch for "Easter Island"). The island's official Spanish name, Isla de Pascua, is also Spanish for "Easter Island".
The first recorded European contact with the island was on April 5 (Easter Sunday) 1722 when Dutch navigator Jacob Roggeveen visited the island for a week and estimated there were 2,000 to 3,000 inhabitants on the island.
Easter Island is one of the world's most isolated inhabited islands. It is 3,510 km (2,180 mi) west of continental Chile at its nearest point (between Lota and Lebu) and 2,075 km (1,289 mi) east of Pitcairn (Sala y Gómez, 415 kilometres to the east, is closer but uninhabited).
There are several hypotheses about the "original" Polynesian name for Easter Island, including Te pito o te henua, or "The Navel of the World" due to its isolation. Legends claim that the island was first named as Te pito o te kainga a Hau Maka, or the "Little piece of land of Hau Maka". Another name, Mata-ki-Te-rangi, means "Eyes that talk to the sky."
The large stone statues, or moai, for which Easter Island is world-famous, were carved during a relatively short and intense burst of creative and productive megalithic activity. A total of 887 monolithic stone statues have been inventoried on the island and in museum collections. Although often identified as "Easter Island heads", the statues are actually complete torsos, the figures kneeling on bent knees with their hands over their stomach. Some upright moai have become buried up to their necks by shifting soils.
The statues' production and transportation is considered a remarkable intellectual, creative, and physical feat.The tallest moai erected, called Paro, was almost 10 metres (33 ft) high and weighed 75 tonnes; the heaviest erected was a shorter but squatter moai at Ahu Tongariki, weighing 86 tons; and one unfinished sculpture, if completed, would have been approximately 21 metres (69 ft) tall with a weight of about 270 tons.
The period when the statues were produced remains disputed, with estimates ranging from 400 CE to 1500–1700 CE. Almost all (95%) moai were carved out of distinctive, compressed, easily worked volcanic ash or tuff found at a single site inside the extinct volcano Rano Raraku. The native islanders who carved them used only stone hand chisels, mainly basalt toki, which still lie in place all over the quarry. The stone chisels were re-sharpened by chipping off a new edge when dulled. The volcanic stone the moai were carved from was first wetted to soften it before sculpting began, then again periodically during the process. While many teams worked on different statues at the same time, a single moai would take a team of five or six men approximately one year to complete. Each statue represents a deceased long-ear chief or important person.
Contemporary to the arrival of the first settlers of Hawaii, 300-400 CE was published as a date for initial settlement of Easter Island. Although some scholars argue for initial settlement of 700-800 CE, there is an on-going study by archaeologists Terry Hunt and Carl Lipo that states: “Radiocarbon dates for the earliest stratigraphic layers at Anakena, Easter Island, and analysis of previous radiocarbon dates imply that the island was colonized late, about 1200 CE. Significant ecological impacts and major cultural investments in monumental architecture and statuary thus began soon after initial settlement.”
"Jared Diamond dismisses past climate change as a dominant factor on the island's deforestation in his book Collapse which presents an extensive look into the collapse of the ancient Easter Islanders. Diamond argues that the disappearance of the island's trees seems to coincide with a decline of its civilization around the 17th and 18th century.
Midden contents show a sudden drop in quantities of fish and bird bones as the islanders lost the means to construct fishing vessels and the birds lost their nesting sites. Soil erosion due to lack of trees is apparent in some places. Sediment samples document that up to half of the native plants had become extinct and that the vegetation of the island was drastically altered. Chickens and rats became leading items of diet and there are contested hints that cannibalism occurred, based on human remains associated with cooking sites, especially in caves.
In his article "From Genocide to Ecocide: The Rape of Rapa Nui", Benny Peiser notes evidence of self-sufficiency on Easter Island when Europeans first arrived. Although stressed, the island may still have had some (small) trees, mainly toromiro. Cornelis Bouman, Jakob Roggeveen's captain, stated in his log book, "... of yams, bananas and small coconut palms we saw little and no other trees or crops." According to Carl Friedrich Behrens, Roggeveen's officer, "The natives presented palm branches as peace offerings. Their houses were set up on wooden stakes, daubed over with luting and covered with palm leaves,"
*ছবিসূত্র:
1. Source: Chilean Navy. Public Domain. ( http://www.armada.cl/p4_armada/site/artic/20040914/pags/20040914100315.html
2. http://www.ianandwendy.com/OtherTrips/SouthPacific/Easter-Island/index.htm
Author: Ian Sewell
**VirtualTour -এ কারও আগ্রহ থাকলে ঘুরে আসতে পারেন: http://www.airpano.com/360Degree-VirtualTour.php?3D=Easter-Island
1 comment:
found your site on del.icio.us today and really liked it.. i bookmarked it and will be back to check it out some more later
Post a Comment