একটা কাঠগড়ায় ক-জন দাঁড়াবার ব্যবস্থা থাকে? ১০, ১৫ জন? কিন্তু একটা কাঠগড়ায় যখন ১৫ কোটি মানুষকে দাঁড়াতে হয় তখন সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে! ভেঙ্গে পড়ে সভ্যতা, আদালত সবকিছু।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায়, ধর্ষককে সম্পূর্ণ ছাড় দিয়ে ধর্ষণের শিকার মেয়েকে প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত করা হয়েছে। (প্রথম আলো, ০৮.০৬.০৯)
অথচ এই ধর্ষক ধর্ষণকালে গ্রামবাসীর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে। তারপরও সমাজপতি নামের এ গ্রহের সবচেয়ে কুৎসিত বেশ্যার ঘরে জন্ম নেয়া মানুষগুলো প্রকাশ্যে এই মেয়েটিকে বেত্রাঘাত করতে তাঁর ভাইকে বাধ্য করে।
সোয়াতে একটি কিশোরীকে বেত মারার খবর পৃথিবীময় আলোড়ন হয়। এই খবরটা প্রথম আলো প্রথম পাতায় কেন ছাপালো না এই নিয়ে কালি খরচ করতে ইচ্ছা করছে না (মতান্তরে কীবোর্ড চাপাচাপি)। এমন একটা খবরে রিপোর্টারের নামও দেয়নি। লেখা হয়েছে, রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি। কয়লা কখনও সাদা হয় না- প্রথম আলো সবাইকে বদলাবে, নিজেকে ব্যতীত!
আইনের লোকজনের কথা বলিহারি! সলঙ্গা থানার ওসি সাহেব বলেছেন, "এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করা হলে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে"।
বাহ, বেশ! অনেকটা এমন- ধর্ষণ করার যন্ত্রপাতি নিয়ে সবাই ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাই বলে তো সবাইকে আটকাতে পারি না।
আচ্ছা, এটার মানে কী! প্রকাশ্যে রাস্তায় একজনকে কুপিয়ে ১৪৯ (বাংলাদেশে ১৪৮ টুকরা করার রেকর্ড আছে) টুকরা করে ফেললেও পুলিশ কিছুই বলবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করবে না। ভাল-ভাল, জানা থাকল।
সুপ্রীমকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অসংখ্য সুয়োমটো রুল জারী করেছেন। এমন একটা ঘটনা তাঁরা পারেন না স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটা রুল জারি করতে। তাহলে আমরা ১৫ কোটি মানুষ কাঠগড়ায় দাড়াবার লজ্জা থেকে বেঁচে যেতাম।
এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Tuesday, June 9, 2009
কাঠগড়ায় ১৫ কোটি মানুষ!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment