জ্বিনদের বাদশা সভাসদদের নিয়ে সিংহাসনে বসে আছেন। সিংহাসন মানে আগুনের গোলা আর কী! বাদশার মন বিশেষ ভালো নেই। লোকবল কমে গেছে। কাজ-কাম চলাতে যারপর নাই অসুবিধা হচ্ছে। পৃথিবীর পিরবৃন্দগণ বেশিরভাগ জিন আটকে রেখেছেন। যখন তখন হুকুম করে এদের জীবনটা ভাজা ভাজা করে ফেলছেন। এটা একটা কথা হল, ক্ষমতা থাকলেই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে হয় বুঝি! এ কেমন কথা, জিনদের আটকে হুকুম চালানো- এ্যাহ, পর হয়েছেন বলে এঁরা মাথা কিনে নিয়েছেন।
এমনিতে, জিনের বাদশাকে এক কথায় বলা চলে, জেন্টালম্যান। মানুষের জন্য এঁর রয়েছে গভীর মমতা। মানুষেরর সুখ-দুঃখের খোঁজ-খবর রাখেন। যেসব জিন মজা করার জন্য মানুষদের ভয় দেখায় এদের ধরে ধরে চটকনা দেন। দ্বিতীয়বার একই অন্যায় করলে নীল-ডাউন করিয়ে রাখেন। সোজা কথায়, মানুষের সুখে উল্লাসিত হন, দুঃখে কাতর হন।
সাদামাটা জীবনযাপন করেন, উল্লেখযোগ্য কোন রকম বদ-অভ্যাস নেই। আগে সিগারেট টানতেন, বহু কষ্টে ছেড়েছেন। বদ অভ্যাসের মধ্যে আছে শুধু পান, তাও জর্দা ছাড়া। চার-পাঁচটা পান মুখে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বললেন: কি-অ, পৃথিবীর খবর-টবর তো পাচ্ছি না বহুদিন ধরে। আমাদের গুপ্তচররা করছেটা কী!
প্রধানমন্ত্রী একটু নড করে বললেন: 'মি. লর্ড, রাশিয়া পতনের পর গুপ্তচরদের আর কোনো কাজ নাই। গর্দভ নাকি কি যেন নাম গাড়টার... ধ্যাৎ মনে পড়ছে না, কঠিন নাম। যাই হোক, গ্লাসনস্ত, পেরোস্ত্রোইকার ট্যাবলেট খেয়ে এমন কাজটাই করেছে পৃথিবীর ভারসাম্য একদিকে হেলে পড়েছে। সারা পৃথিবীর মাথায় আমেরিকা এখন বনবন করে ছড়ি ঘুরাচ্ছে'। এতোগুলো কথা একসঙ্গে বলে প্রধানমন্ত্রী হাঁপিয়ে গেছেন।
'তাহলে মানুষের খোঁজ-খবর পাবো কি করে', নীচের ঠোঁট কামড়ে বললেন বাদশা।
'জ্বী, চিন্তার কিছু নেই, অবশ্য আমাদের জার্নালিস্টারা পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে। এবার তাদের একটা আ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে পাঠানো হয়েছে- সেটা হলো, কারা সবচে কষ্টে আছে? এখন পর্যন্ত কেবল বাংলাদেশ থেকে রিপোর্ট এসেছে। ওখানে আমাদের তুখোড় জার্নালিস্টকে পাঠিয়েছিলাম, কারণ লোকগুলো মারাত্মক, এরা নাকি সোজা আঙ্গুলেও ঘি ওঠাতে ওস্তাদ'।
বাদশা ভারী গলায় বললেন, 'আহ, ইনিয়ে-বিনিয়ে এতো কথা না বলে কাজের কথা বলো'।
'ওই দেশে নিরন্তর সমস্যা, ওইসব কথা না বলে ছাতাফাতা মসজিদের ইমাম, মেয়াজ্জিনদের নিয়ে রিপোর্ট করেছে। গাধা আর কী'!
বাদশা কাতর হলেন, 'আহা-আহা, ওরকম করে বলে না। ও আমাদের দুঁদে জার্নালিস্ট। শুনি না কি রিপোর্ট এনেছে'?
প্রধানমন্ত্রী দরবারের এক কোনে রাখা বিশাল ডেকসেটে সাক্ষাৎকারের ক্যাসেটটা চালালেন। নির্দিষ্ট লয়ে স্পুল ঘুরতে লাগল।
খিচাখিচ খিচ খিচ ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদ করে দেয়া হলো।
জিন জার্নালিস্ট(হড়বড় করে): যারা এ পৃথিবীতে আছেন বা পৃথিবীর বাইরে আছেন সবাইকে আমার শুভেচ্ছা। আমরা এ মুহূর্তে এখানকার জামে মসজিদের ইমাম সাহেবের সঙ্গে কথা বলবো, আস্লামুআলাইকুম হুজুর।
ইমাম সাহেব: ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু। কে ভাই আপনি, আমার কাছে কি বিষয়?
জিন জার্নালিস্ট (হাসি): মাফ করবেন হুজুর, আমি কে এটা বলতে পারছি না। আমি এসেছি আপনার একটা সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য।
ইমাম সাহেব: সাক্ষাৎকার, এটা কী জিনিস?
জিন জার্নালিস্ট: ইয়ে, মানে কি করে বোঝাই। পত্রিকায় দেখেন না ছাপা হয়...।
ইমাম সাহেব: ইয়ে, আমি তো পত্রিকা পড়ি না। মাদ্রাসায় পড়াকালিন পত্রিকা পড়া নিষেধ ছিল।
জিন জার্নালিস্ট: অ, আচ্ছা। আপনারা পত্রিকা পড়েন না। তাহলে দিনদুনিয়ার খবর জানবেন কেমন করে?
ইমাম সাহেব: ভাইরে, আমার কাজ খবর না কবর নিয়া। নতুন কোন খবর জেনে তো লাভ নাই। সব খবর আগেই লেখা হয়ে গেছে।
জিন জার্নালিস্ট: বেশ-বেশ। তাহলে কোন সমস্যা নাই। তা সাক্ষাৎকার হচ্ছে, ধরেন, মানুষদের সুখ-দুঃখ জানা, এই আর কী।
ইমাম সাহেব (ঠান্ডা শ্বাস): কি হবে এসব জেনে, আমরা তো আর মানুষ না।
জিন জার্নালিস্ট: আচ্ছা আপনি কতো টাকা বেতন পান?
ইমাম সাহেব (কুপিত হয়ে): আস্তাক ফিরুল্লাহ, লাহলঅলা কুআতে ইল্লা বিল্লা... এসব কী বলছেন! আল্লার নামে নামাজ পড়াই, যা পাই এটাকে বেতন বলছেন কেন!
জিন জার্নালিস্ট (লজ্জিত গলা): মাফ করবেন জনাব, ঠিক কি বলতে হবে আমার জানা নাই। আপনি যদি দয়া করে...।
ইমাম সাহেব: উ-উ, মূল্যের বদলে বলা হয় হাদিয়া আর বেতনের বদলে হবে... হবে...।
জিন জার্নালিস্ট: সম্মানী বললে কেমন হয়?
ইমাম সাহেব: তা মন্দ হয় না। যা জানতে চাইছিলেন সম্মানী এখন পাচ্ছি ১৮০০ করে। আগে ১২০০ ছিল। কিছুদিন হলো বেড়েছে, অনেক দেনদরবার করে।
জিন জার্নালিস্ট মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন, 'মাই জিনেরগড, বলেন কী! আমার জানামতে, বাংলাদেশের একজন মেথরও তো এই টাকায় সারা মাস কাজ করবে না! তা আপনার পরিবারের লোকসংখ্যা ক’জন?
ইমাম সাহেব (দীর্ঘ শ্বাস): এই ধরেন আমি, বাচ্চাদের মা, সাত বাচ্চা। আর আমার আম্মা। আব্বা বড়ো ভাইয়ের ভাগে পড়েছেন।
জিন জার্নালিস্ট (উঁচু স্বরে): জিনগড-জিনগড! চলে কি করে আপনার?
ইমাম সাহেব: চলে কই, চলে না। আর আমি তো চালাই না, আল্লাহপাক চালান।
জিন জার্নালিস্ট: তবু দয়া করে বলবেন, ১৮০০ টাকায় কিভাবে একমাস ম্যানেজ করেন?
ইমাম সাহেব (লজ্জিত গলা): আলাদা কিছু টাকা পাই। এই ধরেন কোথাও মিলাদ পড়ালাম, কোথাও পবিত্র কোরআন খতম হল, কেউ মারা গেল। ওদের জন্য দোয়া করি। ৫০/ ১০০ টাকা পাই । ও-হ্যাঁ, দাওয়াত থাকলে কোনোদিন ভালো খাবার-টাবার জোটে। ভাই, বলতে শরম লাগে, দাওয়াতে আমাদের খাওয়া দেখে লোকে হাসাহাসি করে। এরা কী জানে, পেট ভরে খেতে পাই না। আমার পরিবারে যে চাল লাগে এর অর্ধেক চাল কেনারও টাকা পাই না। আর শুধু চাল পানি দিয়ে তো চিবিয়ে খাওয়া যায় না।
জিন জার্নালিস্ট: আপনার সঙ্গে কথা বলে হুজুর আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। কি করব বলেন, দায়িত্ব তো। আচ্ছা, আপনার এতোগুলো সন্তান, জন্মনিয়ন্ত্রণ করেননি কেন?
ইমাম সাহেব: তওবা-তওবা! এদের পাঠিয়েছেন আল্লাহ, খাবার দেবার মালিকও উনিই। এমনিতে 'আযল' করি কিন্তু লাভ হয় না।
জিন জার্নালিস্ট: এবার আপনার ছেলে মেয়েদের সঙ্গে একটু কথা বলি।
ইমাম সাহেব: এরা কি আর এখানে থাকে নাকি! আমার একার পেটই চলে না। সকালে নিজের পয়সায় নাস্তা করি। দুপুরে এক বাড়ি থেকে ভাত আসে। অর্ধেক খাই, অর্ধেক পানি দিয়ে রাতের জন্যে রেখে দেই। মাস ছ’মাসে একবার বাড়ি যাই, যৎসামান্য যা পারি দেই।
জিন জার্নালিস্ট: আপনি এই কন্টকিফলের বিচি চিবাচ্ছেন কেন?
ইমাম সাহেব: কন্টকিফল কি?
জিন জার্নালিস্ট: ওহ, সরি। কন্টকিফল হচ্ছে কাঁঠাল।
ইমাম সাহেব: রাতের খাবারে গন্ধ হয়ে গেছিল। খেতে পারিনি। ক্ষিধা লেগেছে। কিছু কাঁঠালের বিচি পোড়ানো ছিল, ওইটাই খাইতেছি।
জিন জার্নালিস্ট: আচ্ছা শেষ একটা প্রশ্ন, এ জীবন আপনার কেমন লাগে?
ইমাম সাহেব (অন্যরকম গলা): বড়ো কষ্ট জনাব, বড়ো কষ্ট। সারা পৃথিবীর লোক যা খুশি তা করতে পারবে, আমাদের পান থেকে চুন খসার উপায় নেই। আমাদের হাত-পা বেঁধে দেয়া হয়েছে। আচ্ছা, পেট বাঁধেননি কোন আপনারা? একদিন রমজানে রাস্তায় মুড়ি বিক্রি করছিলাম। সবাই হাঁ হাঁ করে উঠল, হুজুর এ কাজ করে কি করে? সর্বনাশ! একটা ছেলেকে বাংলা পড়ালে আপনারা দিবেন কমসে কম পাঁচশ, হাজার আর আরবী পড়ালে ৫০ টাকা। একদিন তালি দেয়া পাঞ্জাবী পরে এলাম, লোকজন বলল ব্যাটা ভড়ং দেখায়। খেতে পাই না আর কাপড়। আপনাদের যেখানে দুই গজে সার্ট হয়ে যায় আমাদের পাঞ্জাবীতে লাগে চার গজ। তবু শোকর আল্লার কাছে। অন্যদের দেখে সবর করি, এ মসজিদে মোয়াজ্জিন পায় ১২০০ টাকা। তাকে দেখে সবর করি। শোকর-এ আলহামদুলিল্লাহ।
*আজ এই লেখাটি উৎসর্গ করি, মৌলভী আব্দুস সামাদকে- তিনি আমার আরবি শিক্ষক ছিলেন। মুলত লেখাটা তাঁর জীবনের ছায়া অবলম্বনে লেখা হয়েছিল। অসম্ভব সৎ একজন মানুষ ছিলেন। দেওবন্দ থেকে উঁচু ডিগ্রি নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর চেয়ে অনেক অনেক কম শিক্ষিত, অশিক্ষিত মৌলভীদের ওয়াজ মাহফিলে ডাক পড়ত, পড়ত না কেবল এই মানুষটার। কারণ ওয়াজ মাহফিলে ইনিয়ে-বিনিয়ে যেসব গরমাগরম ফুলকি বিচ্ছুরণ ঘটাতে হয় তা তিনি করতে চাইতেন না। মানুষটার ছিল জাতিধর্মনির্বিশেষে অসম্ভব মায়া। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে থাকার, খাওয়ার বড়ো কষ্ট- তিনি মারা গিয়েছিলেন বিনা চিকিৎসায়।
**এটা পুরনো লেখা। লেখাটা অনেক আগে একটা ওয়েবসাইটে দিয়েছিলাম। কিছু পাঠকের প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র! একজন বললেন, 'ইমাম সাহেবরা আপনাকে পেলে কেঁদে দিত, বুক মিলাইত, কুলাকুলি করত'। তিনি এ-ও-তা বলে মূল প্রসঙ্গ থেকে সরে গিয়েছিলেন।
আমি যদি ভদ্র ভাষায় বলি তাহলে বলব, আমার লেখার মূল বক্তব্যটা বোঝাতে পারিনি। আর অভদ্র ভাষায় বললে, তারা আমার লেখার ধাঁচ-মূল সুরটা ধরতে পারেননি। আমাদের জন্মের সময় এই মানুষগুলো কাছে থাকেন, মৃত্যুর পরও কাছাকাছি।
সচরাচর ঔর্ধ্বদেহিক-অন্ত্যর্ষ্টি সম্বন্ধীয় কর্মকান্ডে এঁদের ব্যতীত উপায় কী! অথচ এঁদের আমরা কোন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি। যে বেতনে একজন মেথরও কাজ করবে না সেই বেতন একজন ইমাম-ধর্মীয় নেতাকে দেয়ার ফলশ্রুতি অবশেষে কী দাঁড়াচ্ছে? কেন একজন মানুষকে অন্যায় করতে বাধ্য করা? আবার আবালের মতো আশা করে থাকি এঁরা আমাদের ধর্ম গুলে খাওয়াবেন। আমাদের এটা শেখানো হয়নি এদেরকে শিক্ষক বলার জন্য, ধর্মীয় শিক্ষক!
এরা মাদ্রাসা নামের যে কারখানা থেকে বের হন, ওইসব মাদ্রাসায় কী পড়ানো হয়-কী শেখানো হয়? সাইকেল চালানো যাবে না, কোনো ধরনের খেলাধুলা করা যাবে না, পত্রিকা পড়া যাবে না।
ভুল শিক্ষা, ধর্মীয় উস্কানি এবং অধিকাংশ হুজুর টাইপের মানুষরা থাকেন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। ফল যা হওয়ার তাই হয়। কোমলমতি শিশুদের উপর ঝাপিয়ে পড়েন। সাদা-শুভ্র হয়ে মানুষটা হয়ে যায় গ্রে- ক্রমশ 'গে'। একজন 'গে-মানুষ'। আর শিশুটির জগৎ এলোমেলো হয়ে যায়- রোপণ করা হয় একেকটা বিষবৃক্ষ। ঝাড়েবংশে কালে কালে বটবৃক্ষ হয়। চক্রাকারে এটা চলতেই থাকে। এ নিয়ে আমাদের দেশে কারও গা করার অবকাশ নাই।
মাদ্রাসায় ক-জন মেধাবি ছেলে ভর্তি হচ্ছে? একটা পরিবারের সবচে মেধাবি ছেলেটাকে সামর্থ্য থাকলে বৈদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয, নিদেনপক্ষে ঢাকায়। আর হাবাগোবা, ল্যাংড়া-লুলা সন্তানকে আল্লারওয়াস্তে মাদ্রাসায়। এ তো নিজেকেই সামলাতে পারে না, অন্যকে কী সামলাবে?
আমার প্রিয়মানুষ মারা গেলে চোখের পানি শুকিয়ে যায় কিন্তু হুজুরদের চোখের পানি দেখে মনে হয় ডিপ-টিউবওয়েল বসানো হয়েছে!
রাগের মাথায় কেউ তার বউকে তালাক বলে দিল- ব্যস, হুজুরদের এই তালাকের উসিলায় 'লাক' খুলে যায়। টাকার বিনিময়ে কোরান খতমের নামে একশ্বাসে এঁরা যা পড়েন তা কোন ভাষা, কটা অক্ষর সহীহ হয়? ধর্মের সর্বময়কর্তা, এরা নিজেরা তৈরি করে নেন নিজস্ব একরাশ ভুল ব্যাখ্যা। একটু আগে পেচ্ছাব করে মাটি ভিজিয়ে গেছেন একজন, ওখান থেকে মাটির ঢেলা উঠিয়ে কুলুপ করতে কোন সমস্যা নাই। একদা ফতোয়া আসবে যে যত বড় ঢেলা নিয়ে কুলুপ করবে সে তত বড় কাজের মানুষ। ভবিষ্যতে এটা দেখা বিচিত্র না ছোটখাটো টিবি নিয়ে লোকজন দৌড়াদৌড়ি করছে!
অবশ্য এখনকার হুজুরদের সেলফোন ব্যবহারে কোনো অনীহা নাই। যতটুকু জানি এটা মুরতাদরাই আবিষ্কার করেছে, কোন মুসলমান না।
ভাবলে গা কাঁপে, এইসব মানুষদের হাতে ধর্ম নামের ভয়ংকর অস্ত্র। ধর্মীয়-বক্তার যেমন যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না তেমনি ধর্ম নামের এই ভয়ংকর অস্ত্র চালাবার জন্য কোন ট্রেনিং-এর প্রযোজন হয় না। একেকজন চলমান কাশ্যপ- চলমান বিষের ভান্ডার! দিনের পর দিন, মাস, বছর আমরা এই বিষ সানন্দে পান করেই যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ, আমাদের সন্তানরাও পান করবে।
এমনিতে, জিনের বাদশাকে এক কথায় বলা চলে, জেন্টালম্যান। মানুষের জন্য এঁর রয়েছে গভীর মমতা। মানুষেরর সুখ-দুঃখের খোঁজ-খবর রাখেন। যেসব জিন মজা করার জন্য মানুষদের ভয় দেখায় এদের ধরে ধরে চটকনা দেন। দ্বিতীয়বার একই অন্যায় করলে নীল-ডাউন করিয়ে রাখেন। সোজা কথায়, মানুষের সুখে উল্লাসিত হন, দুঃখে কাতর হন।
সাদামাটা জীবনযাপন করেন, উল্লেখযোগ্য কোন রকম বদ-অভ্যাস নেই। আগে সিগারেট টানতেন, বহু কষ্টে ছেড়েছেন। বদ অভ্যাসের মধ্যে আছে শুধু পান, তাও জর্দা ছাড়া। চার-পাঁচটা পান মুখে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বললেন: কি-অ, পৃথিবীর খবর-টবর তো পাচ্ছি না বহুদিন ধরে। আমাদের গুপ্তচররা করছেটা কী!
প্রধানমন্ত্রী একটু নড করে বললেন: 'মি. লর্ড, রাশিয়া পতনের পর গুপ্তচরদের আর কোনো কাজ নাই। গর্দভ নাকি কি যেন নাম গাড়টার... ধ্যাৎ মনে পড়ছে না, কঠিন নাম। যাই হোক, গ্লাসনস্ত, পেরোস্ত্রোইকার ট্যাবলেট খেয়ে এমন কাজটাই করেছে পৃথিবীর ভারসাম্য একদিকে হেলে পড়েছে। সারা পৃথিবীর মাথায় আমেরিকা এখন বনবন করে ছড়ি ঘুরাচ্ছে'। এতোগুলো কথা একসঙ্গে বলে প্রধানমন্ত্রী হাঁপিয়ে গেছেন।
'তাহলে মানুষের খোঁজ-খবর পাবো কি করে', নীচের ঠোঁট কামড়ে বললেন বাদশা।
'জ্বী, চিন্তার কিছু নেই, অবশ্য আমাদের জার্নালিস্টারা পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে। এবার তাদের একটা আ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে পাঠানো হয়েছে- সেটা হলো, কারা সবচে কষ্টে আছে? এখন পর্যন্ত কেবল বাংলাদেশ থেকে রিপোর্ট এসেছে। ওখানে আমাদের তুখোড় জার্নালিস্টকে পাঠিয়েছিলাম, কারণ লোকগুলো মারাত্মক, এরা নাকি সোজা আঙ্গুলেও ঘি ওঠাতে ওস্তাদ'।
বাদশা ভারী গলায় বললেন, 'আহ, ইনিয়ে-বিনিয়ে এতো কথা না বলে কাজের কথা বলো'।
'ওই দেশে নিরন্তর সমস্যা, ওইসব কথা না বলে ছাতাফাতা মসজিদের ইমাম, মেয়াজ্জিনদের নিয়ে রিপোর্ট করেছে। গাধা আর কী'!
বাদশা কাতর হলেন, 'আহা-আহা, ওরকম করে বলে না। ও আমাদের দুঁদে জার্নালিস্ট। শুনি না কি রিপোর্ট এনেছে'?
প্রধানমন্ত্রী দরবারের এক কোনে রাখা বিশাল ডেকসেটে সাক্ষাৎকারের ক্যাসেটটা চালালেন। নির্দিষ্ট লয়ে স্পুল ঘুরতে লাগল।
খিচাখিচ খিচ খিচ ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদ করে দেয়া হলো।
জিন জার্নালিস্ট(হড়বড় করে): যারা এ পৃথিবীতে আছেন বা পৃথিবীর বাইরে আছেন সবাইকে আমার শুভেচ্ছা। আমরা এ মুহূর্তে এখানকার জামে মসজিদের ইমাম সাহেবের সঙ্গে কথা বলবো, আস্লামুআলাইকুম হুজুর।
ইমাম সাহেব: ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু। কে ভাই আপনি, আমার কাছে কি বিষয়?
জিন জার্নালিস্ট (হাসি): মাফ করবেন হুজুর, আমি কে এটা বলতে পারছি না। আমি এসেছি আপনার একটা সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য।
ইমাম সাহেব: সাক্ষাৎকার, এটা কী জিনিস?
জিন জার্নালিস্ট: ইয়ে, মানে কি করে বোঝাই। পত্রিকায় দেখেন না ছাপা হয়...।
ইমাম সাহেব: ইয়ে, আমি তো পত্রিকা পড়ি না। মাদ্রাসায় পড়াকালিন পত্রিকা পড়া নিষেধ ছিল।
জিন জার্নালিস্ট: অ, আচ্ছা। আপনারা পত্রিকা পড়েন না। তাহলে দিনদুনিয়ার খবর জানবেন কেমন করে?
ইমাম সাহেব: ভাইরে, আমার কাজ খবর না কবর নিয়া। নতুন কোন খবর জেনে তো লাভ নাই। সব খবর আগেই লেখা হয়ে গেছে।
জিন জার্নালিস্ট: বেশ-বেশ। তাহলে কোন সমস্যা নাই। তা সাক্ষাৎকার হচ্ছে, ধরেন, মানুষদের সুখ-দুঃখ জানা, এই আর কী।
ইমাম সাহেব (ঠান্ডা শ্বাস): কি হবে এসব জেনে, আমরা তো আর মানুষ না।
জিন জার্নালিস্ট: আচ্ছা আপনি কতো টাকা বেতন পান?
ইমাম সাহেব (কুপিত হয়ে): আস্তাক ফিরুল্লাহ, লাহলঅলা কুআতে ইল্লা বিল্লা... এসব কী বলছেন! আল্লার নামে নামাজ পড়াই, যা পাই এটাকে বেতন বলছেন কেন!
জিন জার্নালিস্ট (লজ্জিত গলা): মাফ করবেন জনাব, ঠিক কি বলতে হবে আমার জানা নাই। আপনি যদি দয়া করে...।
ইমাম সাহেব: উ-উ, মূল্যের বদলে বলা হয় হাদিয়া আর বেতনের বদলে হবে... হবে...।
জিন জার্নালিস্ট: সম্মানী বললে কেমন হয়?
ইমাম সাহেব: তা মন্দ হয় না। যা জানতে চাইছিলেন সম্মানী এখন পাচ্ছি ১৮০০ করে। আগে ১২০০ ছিল। কিছুদিন হলো বেড়েছে, অনেক দেনদরবার করে।
জিন জার্নালিস্ট মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন, 'মাই জিনেরগড, বলেন কী! আমার জানামতে, বাংলাদেশের একজন মেথরও তো এই টাকায় সারা মাস কাজ করবে না! তা আপনার পরিবারের লোকসংখ্যা ক’জন?
ইমাম সাহেব (দীর্ঘ শ্বাস): এই ধরেন আমি, বাচ্চাদের মা, সাত বাচ্চা। আর আমার আম্মা। আব্বা বড়ো ভাইয়ের ভাগে পড়েছেন।
জিন জার্নালিস্ট (উঁচু স্বরে): জিনগড-জিনগড! চলে কি করে আপনার?
ইমাম সাহেব: চলে কই, চলে না। আর আমি তো চালাই না, আল্লাহপাক চালান।
জিন জার্নালিস্ট: তবু দয়া করে বলবেন, ১৮০০ টাকায় কিভাবে একমাস ম্যানেজ করেন?
ইমাম সাহেব (লজ্জিত গলা): আলাদা কিছু টাকা পাই। এই ধরেন কোথাও মিলাদ পড়ালাম, কোথাও পবিত্র কোরআন খতম হল, কেউ মারা গেল। ওদের জন্য দোয়া করি। ৫০/ ১০০ টাকা পাই । ও-হ্যাঁ, দাওয়াত থাকলে কোনোদিন ভালো খাবার-টাবার জোটে। ভাই, বলতে শরম লাগে, দাওয়াতে আমাদের খাওয়া দেখে লোকে হাসাহাসি করে। এরা কী জানে, পেট ভরে খেতে পাই না। আমার পরিবারে যে চাল লাগে এর অর্ধেক চাল কেনারও টাকা পাই না। আর শুধু চাল পানি দিয়ে তো চিবিয়ে খাওয়া যায় না।
জিন জার্নালিস্ট: আপনার সঙ্গে কথা বলে হুজুর আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। কি করব বলেন, দায়িত্ব তো। আচ্ছা, আপনার এতোগুলো সন্তান, জন্মনিয়ন্ত্রণ করেননি কেন?
ইমাম সাহেব: তওবা-তওবা! এদের পাঠিয়েছেন আল্লাহ, খাবার দেবার মালিকও উনিই। এমনিতে 'আযল' করি কিন্তু লাভ হয় না।
জিন জার্নালিস্ট: এবার আপনার ছেলে মেয়েদের সঙ্গে একটু কথা বলি।
ইমাম সাহেব: এরা কি আর এখানে থাকে নাকি! আমার একার পেটই চলে না। সকালে নিজের পয়সায় নাস্তা করি। দুপুরে এক বাড়ি থেকে ভাত আসে। অর্ধেক খাই, অর্ধেক পানি দিয়ে রাতের জন্যে রেখে দেই। মাস ছ’মাসে একবার বাড়ি যাই, যৎসামান্য যা পারি দেই।
জিন জার্নালিস্ট: আপনি এই কন্টকিফলের বিচি চিবাচ্ছেন কেন?
ইমাম সাহেব: কন্টকিফল কি?
জিন জার্নালিস্ট: ওহ, সরি। কন্টকিফল হচ্ছে কাঁঠাল।
ইমাম সাহেব: রাতের খাবারে গন্ধ হয়ে গেছিল। খেতে পারিনি। ক্ষিধা লেগেছে। কিছু কাঁঠালের বিচি পোড়ানো ছিল, ওইটাই খাইতেছি।
জিন জার্নালিস্ট: আচ্ছা শেষ একটা প্রশ্ন, এ জীবন আপনার কেমন লাগে?
ইমাম সাহেব (অন্যরকম গলা): বড়ো কষ্ট জনাব, বড়ো কষ্ট। সারা পৃথিবীর লোক যা খুশি তা করতে পারবে, আমাদের পান থেকে চুন খসার উপায় নেই। আমাদের হাত-পা বেঁধে দেয়া হয়েছে। আচ্ছা, পেট বাঁধেননি কোন আপনারা? একদিন রমজানে রাস্তায় মুড়ি বিক্রি করছিলাম। সবাই হাঁ হাঁ করে উঠল, হুজুর এ কাজ করে কি করে? সর্বনাশ! একটা ছেলেকে বাংলা পড়ালে আপনারা দিবেন কমসে কম পাঁচশ, হাজার আর আরবী পড়ালে ৫০ টাকা। একদিন তালি দেয়া পাঞ্জাবী পরে এলাম, লোকজন বলল ব্যাটা ভড়ং দেখায়। খেতে পাই না আর কাপড়। আপনাদের যেখানে দুই গজে সার্ট হয়ে যায় আমাদের পাঞ্জাবীতে লাগে চার গজ। তবু শোকর আল্লার কাছে। অন্যদের দেখে সবর করি, এ মসজিদে মোয়াজ্জিন পায় ১২০০ টাকা। তাকে দেখে সবর করি। শোকর-এ আলহামদুলিল্লাহ।
*আজ এই লেখাটি উৎসর্গ করি, মৌলভী আব্দুস সামাদকে- তিনি আমার আরবি শিক্ষক ছিলেন। মুলত লেখাটা তাঁর জীবনের ছায়া অবলম্বনে লেখা হয়েছিল। অসম্ভব সৎ একজন মানুষ ছিলেন। দেওবন্দ থেকে উঁচু ডিগ্রি নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর চেয়ে অনেক অনেক কম শিক্ষিত, অশিক্ষিত মৌলভীদের ওয়াজ মাহফিলে ডাক পড়ত, পড়ত না কেবল এই মানুষটার। কারণ ওয়াজ মাহফিলে ইনিয়ে-বিনিয়ে যেসব গরমাগরম ফুলকি বিচ্ছুরণ ঘটাতে হয় তা তিনি করতে চাইতেন না। মানুষটার ছিল জাতিধর্মনির্বিশেষে অসম্ভব মায়া। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে থাকার, খাওয়ার বড়ো কষ্ট- তিনি মারা গিয়েছিলেন বিনা চিকিৎসায়।
**এটা পুরনো লেখা। লেখাটা অনেক আগে একটা ওয়েবসাইটে দিয়েছিলাম। কিছু পাঠকের প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র! একজন বললেন, 'ইমাম সাহেবরা আপনাকে পেলে কেঁদে দিত, বুক মিলাইত, কুলাকুলি করত'। তিনি এ-ও-তা বলে মূল প্রসঙ্গ থেকে সরে গিয়েছিলেন।
আমি যদি ভদ্র ভাষায় বলি তাহলে বলব, আমার লেখার মূল বক্তব্যটা বোঝাতে পারিনি। আর অভদ্র ভাষায় বললে, তারা আমার লেখার ধাঁচ-মূল সুরটা ধরতে পারেননি। আমাদের জন্মের সময় এই মানুষগুলো কাছে থাকেন, মৃত্যুর পরও কাছাকাছি।
সচরাচর ঔর্ধ্বদেহিক-অন্ত্যর্ষ্টি সম্বন্ধীয় কর্মকান্ডে এঁদের ব্যতীত উপায় কী! অথচ এঁদের আমরা কোন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি। যে বেতনে একজন মেথরও কাজ করবে না সেই বেতন একজন ইমাম-ধর্মীয় নেতাকে দেয়ার ফলশ্রুতি অবশেষে কী দাঁড়াচ্ছে? কেন একজন মানুষকে অন্যায় করতে বাধ্য করা? আবার আবালের মতো আশা করে থাকি এঁরা আমাদের ধর্ম গুলে খাওয়াবেন। আমাদের এটা শেখানো হয়নি এদেরকে শিক্ষক বলার জন্য, ধর্মীয় শিক্ষক!
এরা মাদ্রাসা নামের যে কারখানা থেকে বের হন, ওইসব মাদ্রাসায় কী পড়ানো হয়-কী শেখানো হয়? সাইকেল চালানো যাবে না, কোনো ধরনের খেলাধুলা করা যাবে না, পত্রিকা পড়া যাবে না।
ভুল শিক্ষা, ধর্মীয় উস্কানি এবং অধিকাংশ হুজুর টাইপের মানুষরা থাকেন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। ফল যা হওয়ার তাই হয়। কোমলমতি শিশুদের উপর ঝাপিয়ে পড়েন। সাদা-শুভ্র হয়ে মানুষটা হয়ে যায় গ্রে- ক্রমশ 'গে'। একজন 'গে-মানুষ'। আর শিশুটির জগৎ এলোমেলো হয়ে যায়- রোপণ করা হয় একেকটা বিষবৃক্ষ। ঝাড়েবংশে কালে কালে বটবৃক্ষ হয়। চক্রাকারে এটা চলতেই থাকে। এ নিয়ে আমাদের দেশে কারও গা করার অবকাশ নাই।
মাদ্রাসায় ক-জন মেধাবি ছেলে ভর্তি হচ্ছে? একটা পরিবারের সবচে মেধাবি ছেলেটাকে সামর্থ্য থাকলে বৈদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয, নিদেনপক্ষে ঢাকায়। আর হাবাগোবা, ল্যাংড়া-লুলা সন্তানকে আল্লারওয়াস্তে মাদ্রাসায়। এ তো নিজেকেই সামলাতে পারে না, অন্যকে কী সামলাবে?
আমার প্রিয়মানুষ মারা গেলে চোখের পানি শুকিয়ে যায় কিন্তু হুজুরদের চোখের পানি দেখে মনে হয় ডিপ-টিউবওয়েল বসানো হয়েছে!
রাগের মাথায় কেউ তার বউকে তালাক বলে দিল- ব্যস, হুজুরদের এই তালাকের উসিলায় 'লাক' খুলে যায়। টাকার বিনিময়ে কোরান খতমের নামে একশ্বাসে এঁরা যা পড়েন তা কোন ভাষা, কটা অক্ষর সহীহ হয়? ধর্মের সর্বময়কর্তা, এরা নিজেরা তৈরি করে নেন নিজস্ব একরাশ ভুল ব্যাখ্যা। একটু আগে পেচ্ছাব করে মাটি ভিজিয়ে গেছেন একজন, ওখান থেকে মাটির ঢেলা উঠিয়ে কুলুপ করতে কোন সমস্যা নাই। একদা ফতোয়া আসবে যে যত বড় ঢেলা নিয়ে কুলুপ করবে সে তত বড় কাজের মানুষ। ভবিষ্যতে এটা দেখা বিচিত্র না ছোটখাটো টিবি নিয়ে লোকজন দৌড়াদৌড়ি করছে!
অবশ্য এখনকার হুজুরদের সেলফোন ব্যবহারে কোনো অনীহা নাই। যতটুকু জানি এটা মুরতাদরাই আবিষ্কার করেছে, কোন মুসলমান না।
ভাবলে গা কাঁপে, এইসব মানুষদের হাতে ধর্ম নামের ভয়ংকর অস্ত্র। ধর্মীয়-বক্তার যেমন যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না তেমনি ধর্ম নামের এই ভয়ংকর অস্ত্র চালাবার জন্য কোন ট্রেনিং-এর প্রযোজন হয় না। একেকজন চলমান কাশ্যপ- চলমান বিষের ভান্ডার! দিনের পর দিন, মাস, বছর আমরা এই বিষ সানন্দে পান করেই যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ, আমাদের সন্তানরাও পান করবে।
2 comments:
সস্তা দর , নিকৃষ্ট , জঘন্য এবং ফালতু ... এদের নাকি আবার লেখক বলে ...
Tenders And Consulting Opportunities in
Bangladesh
আপনার মন্তব্য বুঝি নাই, একটু বুঝিয়ে বললে ভাল হয়... @Farid Ahammad
Post a Comment