আ-।
ক্ক-।
আহা-।
কথাটা-।
আরে কী মুশকিল, আমাকে আমার কথাটা বলতে দেবে, নাকি! প্লিজ, কথাটা শেষ করি।
আমি তোমার বেদনাটা বুঝি না এমন না, বুঝি। তোমার তীব্র অভিমান হওয়ারই কথা। তোমার জায়গায় আমি হলে স্রেফ খুন করে ফেলতাম। খুন করার নিয়ম না থাকলে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলতাম। আহা, মোটা একটা ডাল ফেলে দিলে আটকাচ্ছে কে!
তোমাকে যখন নিয়ে আসি, কতটুকু হবে তুমি? উমম, এক হাত লম্বা। কালে কালে তুমি আমার মাথা ছাড়িয়ে গেলে, ছাড়িয়ে গেলে আশেপাশের সবকিছু! তোমার পাশে দাঁড়ালে কী হাস্যকরই না লাগত আমাকে!
তুমি কিন্তু আমার কষ্টটা কখনই স্পর্শ করতে পারবে না। তোমার কী- তোমার তো আর চুল কাটাতে হয় না, বাচ্চার জন্য দুধ কিনতে হয় না। এসবের জন্য ময়লা কাগজগুলোর মূল্য তুমি কি বুঝবে। যেটা বোঝ না সেটা নিয়ে কথা বলতে এসো না। জীবনটা সিনেমা না, বুঝলে? এখানে রিটেকের কোন অপশন নাই।
এমনিতে তুমি কী দিয়েছ এটা বলে কি শেষ করা যাবে! কয়টা বলব? গোটা ছাদ জুড়ে থাকত তোমার কোমল ছায়া। সূর্যের তীব্র আলো ছুতে পারত না । চাদিফাটা গরমে টেরটিও পেতাম না। ভয়ংকর ঝড়ে সবাই যখন ভয়ে কাবু, তুমি বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে, ভয় পালিয়ে যেতে দিশা পেত না। তোমার হাজার-হাজার শুকনো পাতা কুড়িয়ে কত মানুষের রাবনের চুলো জ্বলেছে বছর ধরে।
তুমি আমার সন্তানসম, সন্তান তো না। তোমার জন্য আমি তো আমার সন্তানদের প্রতি অন্যায় করতে পারি না। পারি বাডি? আমার বুঝি ইচ্ছা করে না আমার সন্তানদের ভালো-মন্দ কিনে দিতে?
বাহ বেশ তো, কেবল আমার নিষ্ঠুরতাই দেখলে, নিজে কী? কেন তোমার মনে নাই, তোমার সাইজের আরেকজনকে একই দিনে তোমার পাশে লাগিয়েছিলাম। অথচ ও এখনও কত লিকলিকে! তুমি তাকে বাড়তে দাওনি। বুকে হাত দিয়ে বলো তো, এটা কী অন্যায় না?
জানো, মায়া বড়ো অদ্ভুত জিনিস। কাঠের একটা টেবিলে দিনের পর দির বসে কাজ করলে টেবিলটার প্রতি মায়া পড়ে যায়। আর তুমি সন্তান না হলেও সন্তানসম তো বটে। মন খারাপ করে নারে ব্যাটা।
বনভয়েজ-বিদায়!
তুমি মরে গেছ, আমি বেঁচে আছি। একদিন আমিও মরে যাব। তুমি তো জানো, এ ভুবনে কিছুই ধ্বংস হয়ে যায় না। কোন না কোন ভাবে পার্টিকেলগুলো থেকেই যায়। আমিও যখন তোমার মত মরে যাবো, কে জানে, হয়তোবা কোথাও না কোথাও আমাদের দেখা হবে, আবারও। অন্য কোথাও, অন্য কোন ভুবনে। জানি না, জানি না আমি...।
No comments:
Post a Comment