“...মহান নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী গতকাল শুক্রবার ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মরণপণ সংগ্রামের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা করিয়াছেন।
এই জনসভায় ভাষণ দানকালে তিনি জনগণকে সকল ভীরুতা-জড়তা ত্যাগ করে উক্ত সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
মাওলানা ভাসানী বলেন, ‘সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তানের এই দাবী আইনসঙ্গত- এই সংগ্রামও আইনসঙ্গত। এটি নিছক হুমকির বা চাপ সৃষ্টির আন্দোলন নয়; স্বাধীন সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তানের এই সংগ্রামের প্রতি এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার শান্তিকামী ও মুক্তিকামী জনগণের পূর্ণ নৈতিক সমর্থন থাকবে।’
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম জীবন-মরণের সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানের ১৪ লক্ষ মানুষ সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ দিয়েছে। আমাদের সংগ্রামের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করা হলে আরও ১৫/২০ লাখ লোক জীবন দিয়ে হয় অভীষ্ট সিদ্ধ করবে, না হয় মৃত্যু বরণ করবো।’
মওলানা বলেন, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বন্ধ করার জন্য কোন সৈন্য দেওয়া হয় নাই। স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান বললে যদি সৈন্য নিয়োগ করা হয়, তাহলে বিরাট ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।’
ইতিহাসের নজীরবিহীন প্রাকৃতিক ধ্বংসলীলায় বিধ্বস্ত পূর্ব বাংলায় লক্ষ লক্ষ মৃতদেহের উপরে দাঁড়িয়ে যারা নির্বচনী প্রচারণার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে চলেছে তাদের সম্পর্ক-এ মওলানা ভাসানী বলেন, ‘তাঁদের ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে চাই না, তারা নিজেরোই বলুন যে তারা জনতার শত্রু না মিত্র।’
‘পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামে’ শরিক হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নব্বই বছরের বৃদ্ধ জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, ‘মুজিব, তুমি স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান সংগ্রামে যোগ দাও। যদি আমেরিকা ও ইয়াহিয়ার স্বার্থ-এ কাজ কর তাহলে আওয়ামী লীগের কবর ’৭০ সালে অনিবার্য। ...।'
এই প্রসঙ্গে মওলানা ভাসানী আরও বলেন, ‘যারা বলে নির্বাচনে শতকরা একশটি আসনে জয়ী হয়ে প্রমাণ করবে জনতা তাদের পেছনে রয়েছে তাদের সঙ্গে আমাদের মতের মিল নেই। দক্ষিণ ভিয়েতনামে দেশপ্রেমিক গেরিলারা যখন লড়াই করেছে তখনও সংগ্রামের মুখে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু তার দ্বারা একথা প্রমাণ হয়নি যে নির্বাচনে বিজয়ীরা জনগণের বন্ধু। বরং তারা সাম্রাজ্যবাদ ও স্বৈরাচারের তল্পীবাহক।’
মওলানা ভাসানী বলেন, ‘শুধু শ্লোগানে সংগ্রাম হয় না। হয় মরে যাব, নয়তো সার্বভৌমত্ব পাব এই কি আপনারা চান? বিবেকের কাছে জিজ্ঞেস করুন। যদি কোরবানী দিতে প্রস্তুত থাকেন তবে হাত তুলুন।’
জনতা মুহুমূহু শ্লোগানের সাথে হাত তোলেন। মওলানা ভাসানী তখন নিজেই শ্লোগান দেন, নারায়ে 'তকবীর-আল্লাহু আকবর’ ‘স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান-জিন্দাবাদ’।
সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ লক্ষ কণ্ঠ থেকে তাদের প্রিয় নেতার শ্লোগান প্রতিধ্বনি ভেসে আসে।...’।"
*আমাদেরকে এটা প্রতি পদে পদে শেখানো হয়, দেশের সেরা সন্তানদেরদের কত প্রকারে নিচু-অসম্মান করা যায়। অতি উঁচু শ্রেণীর (এদের দাবী মোতাবেক) প্রিন্ট মিডিয়া মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীর খবরটা ছাপিয়েছে বিজ্ঞপ্তি আকারে। এই লজ্জা লুকাই কেমন করে আসলে কাপড় পরলেই মানুষ হটেনড জাতি থেকে সভ্য জাতি হয়ে যায় না!
সহায়ক সূত্র
১. প্রথম আলো: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_17.html
**হুবহু-অবিকল, প্রতিটা অক্ষর আবু জুবায়ের নামের একজন, একটা ওয়েবসাইটে কপি-পেস্ট করে দিয়েছেন।
যেখানে প্রথম আলোর মত পত্রিকা ওয়েবসাইট থেকে একটা লেখা নিয়ে 'ওয়েবসাইট অবলম্বনে' লিখে দায় সারে সেখানে এই মানুষটাকে কী আর বলব! তবে সোর্স উল্লেখ করলে আকাশ ভেঙ্গে পড়ত বলে আমার মনে হয় না। এ অন্যায়!
গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, গরীব মানুষ নামের নিক, ব্লগারের প্রতি যিনি এই বিষয়টা উল্লেখ করায় আমারও জানা হলো।
এই জনসভায় ভাষণ দানকালে তিনি জনগণকে সকল ভীরুতা-জড়তা ত্যাগ করে উক্ত সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
মাওলানা ভাসানী বলেন, ‘সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তানের এই দাবী আইনসঙ্গত- এই সংগ্রামও আইনসঙ্গত। এটি নিছক হুমকির বা চাপ সৃষ্টির আন্দোলন নয়; স্বাধীন সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তানের এই সংগ্রামের প্রতি এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার শান্তিকামী ও মুক্তিকামী জনগণের পূর্ণ নৈতিক সমর্থন থাকবে।’
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম জীবন-মরণের সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানের ১৪ লক্ষ মানুষ সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ দিয়েছে। আমাদের সংগ্রামের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করা হলে আরও ১৫/২০ লাখ লোক জীবন দিয়ে হয় অভীষ্ট সিদ্ধ করবে, না হয় মৃত্যু বরণ করবো।’
মওলানা বলেন, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বন্ধ করার জন্য কোন সৈন্য দেওয়া হয় নাই। স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান বললে যদি সৈন্য নিয়োগ করা হয়, তাহলে বিরাট ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।’
ইতিহাসের নজীরবিহীন প্রাকৃতিক ধ্বংসলীলায় বিধ্বস্ত পূর্ব বাংলায় লক্ষ লক্ষ মৃতদেহের উপরে দাঁড়িয়ে যারা নির্বচনী প্রচারণার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে চলেছে তাদের সম্পর্ক-এ মওলানা ভাসানী বলেন, ‘তাঁদের ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে চাই না, তারা নিজেরোই বলুন যে তারা জনতার শত্রু না মিত্র।’
‘পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামে’ শরিক হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নব্বই বছরের বৃদ্ধ জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, ‘মুজিব, তুমি স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান সংগ্রামে যোগ দাও। যদি আমেরিকা ও ইয়াহিয়ার স্বার্থ-এ কাজ কর তাহলে আওয়ামী লীগের কবর ’৭০ সালে অনিবার্য। ...।'
এই প্রসঙ্গে মওলানা ভাসানী আরও বলেন, ‘যারা বলে নির্বাচনে শতকরা একশটি আসনে জয়ী হয়ে প্রমাণ করবে জনতা তাদের পেছনে রয়েছে তাদের সঙ্গে আমাদের মতের মিল নেই। দক্ষিণ ভিয়েতনামে দেশপ্রেমিক গেরিলারা যখন লড়াই করেছে তখনও সংগ্রামের মুখে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু তার দ্বারা একথা প্রমাণ হয়নি যে নির্বাচনে বিজয়ীরা জনগণের বন্ধু। বরং তারা সাম্রাজ্যবাদ ও স্বৈরাচারের তল্পীবাহক।’
মওলানা ভাসানী বলেন, ‘শুধু শ্লোগানে সংগ্রাম হয় না। হয় মরে যাব, নয়তো সার্বভৌমত্ব পাব এই কি আপনারা চান? বিবেকের কাছে জিজ্ঞেস করুন। যদি কোরবানী দিতে প্রস্তুত থাকেন তবে হাত তুলুন।’
জনতা মুহুমূহু শ্লোগানের সাথে হাত তোলেন। মওলানা ভাসানী তখন নিজেই শ্লোগান দেন, নারায়ে 'তকবীর-আল্লাহু আকবর’ ‘স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান-জিন্দাবাদ’।
সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ লক্ষ কণ্ঠ থেকে তাদের প্রিয় নেতার শ্লোগান প্রতিধ্বনি ভেসে আসে।...’।"
(সূত্র: বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র দ্বিতীয় খন্ড)
*আমাদেরকে এটা প্রতি পদে পদে শেখানো হয়, দেশের সেরা সন্তানদেরদের কত প্রকারে নিচু-অসম্মান করা যায়। অতি উঁচু শ্রেণীর (এদের দাবী মোতাবেক) প্রিন্ট মিডিয়া মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীর খবরটা ছাপিয়েছে বিজ্ঞপ্তি আকারে। এই লজ্জা লুকাই কেমন করে আসলে কাপড় পরলেই মানুষ হটেনড জাতি থেকে সভ্য জাতি হয়ে যায় না!
সহায়ক সূত্র
১. প্রথম আলো: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_17.html
**হুবহু-অবিকল, প্রতিটা অক্ষর আবু জুবায়ের নামের একজন, একটা ওয়েবসাইটে কপি-পেস্ট করে দিয়েছেন।
যেখানে প্রথম আলোর মত পত্রিকা ওয়েবসাইট থেকে একটা লেখা নিয়ে 'ওয়েবসাইট অবলম্বনে' লিখে দায় সারে সেখানে এই মানুষটাকে কী আর বলব! তবে সোর্স উল্লেখ করলে আকাশ ভেঙ্গে পড়ত বলে আমার মনে হয় না। এ অন্যায়!
গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, গরীব মানুষ নামের নিক, ব্লগারের প্রতি যিনি এই বিষয়টা উল্লেখ করায় আমারও জানা হলো।
4 comments:
আমি আসলে রেফেরেন্স হিসাবে আপনার এই অংশটুকু কে ব্যবহার করেছি।আমি দুঃখিত আমি অমনোযোগে আপনার গবেষনার এই অংশটুকু দিয়েছি।ভবিষতে আরো সচেতন হবো।এটা আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভুল হিসাবে দেখবেন।আপনি ভালো থাকুন।
আবু জুবায়ের
আমাদের দেশে ভুল করে ভুল স্বীকার করার চল নাই! কেউ কেউ ব্যতিক্রম- আপনি আপনার ভুল বুঝতে পেরেছেন জেনে ভাল লাগছে।
আপনিও ভাল থাকুন, আবু জুবায়ের।
ধন্যবাদ আলী মাহমেদ ভাই সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য । আপনার ব্লগটা বুকমার্ক করে রাখলাম সবগুলো লেখাই পড়ব ।
জামশেদ
আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগছে @নিঃসঙ্গ গাঙচিল
Post a Comment