সাপের খোলস বদলাবার মতো নিজের মত বদলাতেন এই মানুষটি!
“পীর মোহসনিউদ্দিন দুদু মিয়া বলেন, মুওদুদী সাহেব নিজে কোন সনদপ্রাপ্ত মাওলানা নন। হায়দারাবাদ নিজামের দরবারে তদান্তিন সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের তুষ্ট করার জন্য তিনি কাজ করতেন। সেই প্রভুদের কাছ থেকেই তিনি মাওলানা খেতাব পান।”
(দৈনিক পাকিস্তান, ২০ অক্টোবর ১৯৬৯)
বড় ভাই আবুল খায়ের মওদুদীর সুপারিশে আবুল আলা (সর্বোচ্চ পিতা) মওদুদী সাহেব হায়দারাবাদের দারুত তরজমা থেকে দর্শনের একটি গ্রন্থ তরজমা করে পারিশ্রমিক পান ৫০০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে তিনি প্রকাশনা শুরু করেন, মাসিক তরজমানুল কোরআন।
তিনি সালজুক বংশ, হায়দারাবাদের ইতিহাস, হায়দারাবাদের নিজামমুলক আসিফ জাহর জীবন চরিত রচনা করে হায়দারাবাদের নিজাম শাসন পদ্ধতি তথা রাজতন্ত্রের বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে শাসক গোষ্ঠীর অনুগ্রহদৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
পরে তিনি কংগ্রেসে যোগদান করে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ও তার দল ‘হেজবুল্লা’ এবং মিশরের শেথ হাসান বানা ও তার দল ‘ইসলামী ভ্রাতৃসংঘ’ এর প্রতি আকৃষ্ট হন। পরে এদের ভাবাদর্শে একটি দল ‘জামাতে ইসলামী, হিন্দ’ গঠন করেন।
মওদুদীর মধ্যে বিভিন্ন যুগের ইসলামী চিন্তাবিদদের চিন্তাধারা ও মতামতকে নিজের করে, নিজের ভাষায় প্রকাশ করার প্রবণতা লক্ষণীয়! এবং নিজ স্বার্থে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা।
হায়দারাবাদ জীবনে তিনি 'মুসলমান' শব্দের নিম্নরুপ ব্যাখ্যা দেন: “ইসলাম জাতীয়তার যে জীবন বৃত্ত এঁকেছে, তা ঘিরে রয়েছে একটি কলেমা, লা ইলাহা ইল্লাল্লা...। এই কলেমার উপরেই বন্ধুতা এবং শত্রুতা। এটা স্বীকার করলে বন্ধু, অস্বীকার করলেই শত্রু । ”
(মওদুদীর চিন্তাধারা/ মাওলানা আবদুল আওয়াল, প্রকাশ ১৯৬৯)
কংগ্রেস ও ভারতের স্বাধীনতা সম্বন্ধে বলেন: “মুসলমানদের পক্ষে দেশের এরুপ স্বাধীনতা সংগ্রাম করা হারাম, যার পরিণামে ইউরোপিয়ান অমুসলমানদের হাত থেকে ভারতীয় অমুসলিমদের নিকট হস্তান্তর হবে।”
(মওদুদীর চিন্তাধারা/ মাওলানা আবদুল আওয়াল, প্রকাশ ১৯৬৯)
“তিনি পাকিস্তান আন্দোলনকে হারাম আন্দোলন এবং পাকিস্তানের জন্য যারা জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের হারাম মউত হয়েছে বলে ফতোয়া দেন।”
(দৈনিক পাকিস্তান, ২১ অক্টোবর ১৯৬৯)
কিন্তু ভারত বিভক্ত হলে তিনি পাকিস্তানে চলে আসেন। এ সময় তার দলের সংখ্যা ছিল ৫৩৩ জন।
“জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য- মুসলমান হিসাবে আমি এ নীতির সমর্থক নই।”
(মুওদুদীর চিন্তাধারা/ মাওলানা আবদুল আওয়াল, প্রকাশ ১৯৬৯)
“...মওদুদী তার প্রচারিত আদর্শে এ কথাই বারবার প্রকাশ করেছেন, যে, তলোয়ারের জোরেই ইসলাম দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, দাওয়াতে নয়...।”
(ড. মোহাম্মদ হাননান/ বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, ৪র্থ খন্ড)
মওদুদী বিভিন্ন সময় প্রয়োজন অনুসারে কোরানের ভুল ব্যাখ্যা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। তাঁর স্বকপোলকল্পিত ফতোয়ার জন্য, 'আহমেদি' মতবাদের প্রতি ভয়ংকরসব ফতোয়া-বানীর কারণে বিনষ্ট হয়েছে হাজার-হাজার প্রাণ! তাঁর স্বোপার্জিত এই সম্পদ পরবর্তীতে ব্যবহার করেছে জামাত-ই-ইসলাম।
নিজের জীবন-ভিক্ষা করে ফাঁসির রশি এড়াতে পেরেছিলেন। রাওয়ারপিন্ডি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা গোলামউল্লাহ খান এক বিবৃতিতে বলেন: “কোরআনের অপ-ব্যাখ্যা করা বইগুলো মওদুদী সাহেব প্রত্যাহার করে নেবেন বলে ওয়াদা করেছিলেন। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি।"
যে কোরানকে হাতিয়ার বানিয়ে তিনি ফেৎনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করেছিলেন আমি সেই কোরান থেকেই ধার করে বলি:
”...ফিৎনা হত্যার চেয়েও মারাত্মক।”
(২ সুরা বাকারা: ১৯১)
”আল্লা তো ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে ভালোবাসেন না।”
(৫ সুরা মায়িদা: ৬৪)
”তাদেরকে যখন বলা হয়, ’পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না’, তখন তারা বলে, আমরাই তো শান্তি বজায় রাখি। সাবধান! এরাই ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে, কিন্তু এরা তা বুঝতে পারে না।”
(২ সুরা বাকারা: ১১-১২)
*ছবিঋণ: গুগল
5 comments:
এই মওদুদী হারামী ছিলো সিআইএ এজেন্ট। তাই তার প্রভুরা তাকে রক্ষা করেছে। রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় শেষ পর্যন্ত প্রভুদের দেশ আমেরিকাতেই তার মৃত্যু হয়। সামহোয়্যারে তার সিআইএ'র সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমান নিয়ে একজন পোস্ট দিয়েছিলেন। লিঙ্ক:
http://www.somewhereinblog.net/blog/TUSHARZIA/29000812
ধন্যবাদ আপনার লিংকের জন্য। পড়লাম। তথ্যবহুল।
সিআইএর এজেন্ট ঠিকাছে। কিন্তু এই মানুষটা কী বিপুল ক্ষতি যে করেছে মানবতার!
একটা হত্যার জন্য ফাসিঁ হয় কিন্তু ধর্মের আফিম খাইয়ে পরোক্ষ মদদে হাজার-হাজার হত্যার জন্য কোন শাস্তি হয় না! বিচিত্র এ পৃথিবীর আইন!
@মুকুল এর বাচ্চা, তুই নিজে নামাজ পড়িস না ৩/৪ বছর, তুই মাওলনা মউদুদীর সমলোচনা করিস? জীবনে তার বই পড়ছিস? আন্দাজে এমন জ্ঞানী মানুষ সম্পর্কে বাজে কথা বলিস।
একবার একটা বই ভাল করে পড়ে দেখ, তার পর কথা বলবি।
@আলী মাহমেদ তার বই আগে পড়েন, তার পর কথা বলবেন, সারা বিশ্বে তো মুসলমানদের সন্ত্রাসী বলে, আপনি কি সন্ত্রাসী? আপনি কি মনে করেন মুসলমান মানেই সন্ত্রাসী? তাই লোকে কি বল্ল সেইটা না বলে, আপনি নিজে পড়ে, কি ভুল পেয়েছেন তাই বলবেন। কোন বইয়ে, কত পৃষ্টায় ভুল আছে, সঠিক টা কি তা কোরআন হাদীস দিয়ে প্রমান করবেন অত:পর তার ভুল ধরবেন।
সচরাচর Anonymous কারও প্রশ্নের উত্তর দিতে আগ্রহ বোধ করি না। কারণ মুখোশের পেছনের মানুষটাকে আমি দেখতে পাই না, এমন একজনের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাওয়া ফিজুল।
তেমনি আমি অন্ধকারেও হাসতে ইচ্ছা বোধ করি না কারণ এটাও অথর্হীন!
হা হা হা। মওদুদীর ছেলেপুলেদের প্রতিক্রিয়ায় মজা পেলাম। ;-)
আল্লাহ আমাদের জালিমদের হাত থেকে রক্ষা করুন। আমিন। :-)
Post a Comment