'ইকুয়েটি এন্ড জাস্টিস গ্রুপ' আয়োজিত এক সেমিনারে জানানো হয়, বর্তমানে মাথা-পিছু ঋণের পরিমাণ ১৪৫ ইউ, এস ডলার। টাকার অংকে প্রায় ১০ হাজার। দেশের লোকসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি ধরলে জাতীয় ঋণ কত দাঁড়ায়? সেলফোনের ক্যালকুলেটরে হিসাবটা করার চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিলাম। হাল আসলে আমি ছাড়িনি, ছেড়েছে যন্ত্র: বারবার একই বক্তব্য দিচ্ছে, ওভার ফ্লো!
যাগ গে, জাতীয় ঋণের পরিমাণটা কত এ দিয়ে আমার কাজ কী! এ নিয়ে মাথা ঘামাবার জন্য আমাদের দেশের বড়-বড় মানুষ আছেন। আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের এই বিপুল আঁক কষে লাভ নাই। আমি মাথা-পিছু ঋণ সেই ১০ হাজারেই থাকি, এটাই মঙ্গল।
আমার স্পষ্ট বক্তব্য, এই ঋণ-আবর্জনা কেন আমি ঘোর অনিচ্ছায় আমৃত্যু বয়ে বেড়াব? আমার কী দায় পড়েছে? আমি তীব্র অনীহা প্রকাশ করি। এ থেকে মুক্তির উপায় খুঁজি, এই ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দিতে চাই। উঁহু, এমনি এমনি না। ১০ হাজার টাকা তো আর গাছে ধরে না। সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার পর আমাকে লিখিত আকারে কাগজ দিতে হবে, "যে বা যাহার জন্য প্রযোজ্য, এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাইতেছে যে, অমুক জাতীয় ঋণমুক্ত"...ইত্যাদি। লজ্জার মাথা খেয়ে এও বলি, এখন পর্যন্ত কেউ এমন ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে শুনিনি বিধায় জাতীয় ঋণ মুক্তর সঙ্গে প্রথম লাগালে...। আচ্ছা থাক, না-লাগালে নাই।
আমি নিশ্চিত, কেউ কেউ আছেন যারা আমার বর্তমান 'খাস্তাহাল' অবস্থা সম্বন্ধে সম্যক ওয়াকিবহাল। এদের কারও কারও অট্টহাস্যে মনিটর মায় টেবিলসহ কেঁপে উঠছে। মিয়া ছলিমুল্লা, তোমার নিজের পরনে নাই 'চাড্ডি' আর তুমি কিনা দিবা মাথা-পিছু ঋণ। হা হা হা, হি হি হি, হো হো হো...। এদের কথা সত্য।
বাহে, ইচ্ছা থাকলে উপায় একটা না একটা বেরুবেই। কেন রে বাপু, 'রক্ত যখন দিয়েছি আরও রক্ত দোব' আমাদের দেশের পাল্টিশিয়ান(!) মহোদয়গণ কি রক্ত দিতেই থাকবেন? এ কেমন বিচার! আমার দেহ কী দেহ না, আমার মত সামান্য মানুষের শরীরে কী কোন রক্ত নাই?
আহা, কাজটা সিম্পল- কোন এক ব্লাডব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলব, ভাইজান ১০ হাজার টাকা দেন। এবি পজেটিভ রক্তের প্রয়োজন হলে স্রেফ আমাকে খবর দেবেন, চাহিবা মাত্র দিতে বাধ্য থাকিব। সমুদয় টাকা পরিশোধ না-হওয়া পর্যন্ত আপনাদের রক্ত দিয়ে যাব।
হয় না এমন? বেশ হয়।
No comments:
Post a Comment