ওয়াল্লা, আমি ব্যতীত এই দেশের সবাই দেখি শপথ করে বসে আছেন! আমি বাদ থাকি কেন?
তাঁদের দেখাদেখি আমিও শপথ করিলাম, "আজ হইতে প্রথম আলোর বিপক্ষে আর লিখিব না। লিখিলে...।"
জনাব আনিসুজ্জামান শপথ করেছেন, তিনি তার বাসার কাজের ছেলেকে (বুদ্ধিজীবীরা আবার খানিকটা অন্য রকম করে বলেন, কাজে সাহায্যকারী, বা আমার নাতির সঙ্গে খেলাধুলা করে দিন কাটে ইত্যাদি) নেকাপড়া(!) শেখাবেন।
এই নিয়ে প্রথম আলো বাকবাকুম করে করে এই রিপোর্টটা ছাপিয়েছে কারণ জনাব আনিসুজ্জামান তাদের শপথ কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই কান্ডটা করছেন। আনিসুজ্জামানের হঠাৎ মনে পড়ল তিনি একজন শিক্ষাবিদ, তাঁর কাজ হচ্ছে শিক্ষার আলো ছড়ানো! ভাগ্যিস, প্রথম আলোর শপথের কারণে মনে পড়ল নইলে ইহকালে আনিসুজ্জামানের এটা মনে পড়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না।
প্রথম আলো লিখেছে, "...এমনই এক সময়ে শুরু হয় প্রথম আলোর শপথের কার্যক্রম। সমাজের বিশিষ্টজনেরা ভিন্ন ভিন্ন ধরনের শপথ গ্রহন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানও শপথ নেন যে তাঁর বাড়ির কাজের ছেলেটিকে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন..."।
আমার দৃষ্টিতে প্রথম আলোর রিপোর্টটার সঙ্গে এই ছবিটা একটা অসাধারণ ছবি! কেন বলছি। কারণ এমন একটা ছবি উঠানো চাট্টিখানি কথা না। যথারীতি প্রথম আলো এই ছবিটায়ও ফটো-সাংবাদিকের নাম দেয়ার ক্লেশ স্বীকার করেনি।
ফটো সাংবাদিকের নাম নাই বিধায় বুঝে উঠতে পারছি না ছবিটা কে উঠিয়েছেন? এটা কি এই রিপোর্টের প্রতিবেদক তৌহিদা শিরোপা তুলেছেন, নাকি মতিউর রহমান নিজেই! মতিউর রহমান নিজে ছবিটা উঠিয়ে থাকলে তার প্রতি গভীর ভালবাসা ব্যক্ত করি। কেন, বলছি।
ছবিটার কী টাইমিং, কী ফ্রেমিং! স্কুলের ব্যাগ কাঁধে এই শিশুটি যখন আনিসুজ্জামানের কাছ থেকে পড়া বুঝে নিচ্ছিল। ঠিক তখনই জানালার পর্দা বাতাসে সরে গিয়েছিল, ফাঁক দিয়ে এটা মতিউর রহমানের চোখে পড়ে, মতিউর রহমান ফট করে এই ছবিটি তুলে ফেলেন, ধাম করে পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন!
আর এটা পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে পাঠকআমি শপথ করলুম!
আপনারা বলবেন, কাকতালীয়। বলতে পারেন কিন্তু এমন কাকতালীয় আমাদের বেলায় ঘটে না কেন? কেন-কেন-কেন? এটা একটা গবেষণার বিষয়!
এটাও কি কাকতালীয় না? এই ছেলেটির কথা প্রথম আলো লিখেছে, "...গণিত বেশি ভালো লাগে। গত পরীক্ষায় গণিতে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছি।"
কী টাইমিং, প্রথম আলো শপথ অনুষ্ঠান চালু করল। এরিমধ্যে আনিসুজ্জান প্রথম আলোর শপথের সঙ্গে সুর বা গলা মিলিয়ে শপথ নিলেন। তারপর তাঁর কাজের ছেলেকে গুলশানের অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে ( অটো প্রমোশন!) ভর্তিও করালেন। সে আবার পরীক্ষাও দিল। গণিতে বেশি নম্বরও পেল। নিয়মিত আনিসুজ্জামানের কাছ থেকে পড়াও বুঝে নিতে থাকল।
আর বাতাসে জানালার পর্দাও উড়ল। আনিসুজ্জান স্যারের বাসার সামনেই মতিউর রহমান সাহেবের গাড়ির টায়ার পাংচার হলো। জানালা দিয়ে মতিউর রহমান দেখেও ফেললেন (তিনি তখন জেনারেলদের সঙ্গে মিটিং-এ সেনানিবাসে যাচ্ছিলেন)? জেনারেলদের সঙ্গে মিটিং বাতিল করে ক্যামেরা বার করলেন...।
এত্তো এত্তো কাকতালীয় যে কোথায় রাখি!
আর ছবিটা দেখে আপনারা ভাবছেন বুঝি খুব সোজা! আরে না, সামনে গেলুম আর দুম করে উঠিয়ে ফেললুম, এতো সোজা না। আনিসুজ্জামান এবং তাঁর কাজের ছেলে দু-জনের একজনও টের পায়নি, পেলে কী আর এরা উঠাতে দিত? ছবিটায় পেছনের জানালাটা দেখছেন না? অনুমান করি, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই জানালায় উঠে এই দুর্দান্ত ছবিটা উঠানো হয়েছে। অবশ্য চিন্তায় আছি, আনিসুজ্জামানের বাসাটা এক তলা হলে সমস্যা নাই কিন্তু বহুতল হলে তো সর্বনাশ! প্রাণ হাতে নিয়ে পানির পাইপ বেয়ে উঠতে মতিউর রহমানকে কি কষ্টই না করতে হয়েছে, ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে। রাখে আল্লা মারে কে- আল্লা বাঁচিয়েছেন!
যাক, তবুও ভাল আনিসুজ্জামান এই শপথের কল্যাণে বিস্মৃত হওয়া তাঁর শিক্ষক পেশার কথা আবারও মনে করতে পেরেছেন। শপথ বলে কথা!
এদের শপথের ডাকে হাতি পর্যন্ত ছুটে এসেছিল, আনিসুজ্জামান কোন ছার!
শুনিতে পাই, হাতি নাকি শপথ করিয়াছে, সে আর কলাগাছ খাইবে না, বাঘ মানুষ মারিবে না। ইহারা টিপসহির স্থলে 'পা-ছহি' দিয়াছে, শপথ ভঙ্গ করিলে পশু আইনের দন্ন্ডিত হইবে।
ভাল কিন্তু এই যে হাতি এবং বাঘের শপথের কারণে যে কলাগাছ এবং মানুষ উদ্বৃত্ত হবে এদের গতি কি? প্রকৃতিক ভারসাম্য এলোমেলো হয়ে গেলে এর দায় কার উপর বর্তাবে?
এই প্রশ্নটা মতিউর রহমানের কাছে করার উপায় কি? এদের মেইল করলে এর উত্তর পাওয়া নিয়ে অনেকখানি জটিলতা আছে। প্রায় বছর ছুঁই ছুঁই, এদের একটা ভুল ধরিয়ে দিয়ে একটা মেইল করে এখনও এর উত্তরের অপেক্ষায় আছি। আমার ধারণা, এরা মেইলে প্রাচীন পদ্ধতি ব্যবহার করে। কবুতরের পায়ে বেঁধে পাঠায়, কবুতরমেইল। হয়তো রাস্তায় কেউ ওই কবুতরটা ধরে খেয়ে ফেলেছে। এ জন্য অবশ্যই মতিউর রহমানকে দায়ি করা চলে না। কবুতরটার জন্য আমি চোখের জল ফেলি, বেচারা!
আফসোস, সংগ্রামের মত পত্রিকাগুলো আল মাহমুদের কলম কিনে নেয়, প্রথম আলোর মত পত্রিকা আনিসুজ্জামানকে। ভঙ্গিটা খানিকটা অন্য রকম, চতুর এই যা তফাৎ!
*পাদটীকা: একজন আমার এই সাইটে এসে দুম করে একটা মন্তব্য করেছিলেন, ভাইজান, আপনি কি সুশীল? আমি এর উত্তরে বলেছিলাম, নারে ভাই, আমি সুশীল না, শীল, (অভিধানে শীলের অর্থ খুঁজে লাভ নাই এটা আঞ্চলিক শব্দ। ভদ্রস্থ ভাষায় ক্ষৌরিক ওরফে নাপিত) নিম্নবর্ণের শীল সম্প্রদায়ের মানুষ। একজন শীল টাইপের মানুষের কাছে বেশি আশা করাটা দুরাশা। তাই আমি শপথ ভঙ্গ করিলে ইহাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই। আনিসুজ্জামানের মত সুশীলরা শপথ নিয়া কস্তাকস্তি করুন আমার কি!
**ছবি-সূত্র: প্রথম আলো
তাঁদের দেখাদেখি আমিও শপথ করিলাম, "আজ হইতে প্রথম আলোর বিপক্ষে আর লিখিব না। লিখিলে...।"
জনাব আনিসুজ্জামান শপথ করেছেন, তিনি তার বাসার কাজের ছেলেকে (বুদ্ধিজীবীরা আবার খানিকটা অন্য রকম করে বলেন, কাজে সাহায্যকারী, বা আমার নাতির সঙ্গে খেলাধুলা করে দিন কাটে ইত্যাদি) নেকাপড়া(!) শেখাবেন।
এই নিয়ে প্রথম আলো বাকবাকুম করে করে এই রিপোর্টটা ছাপিয়েছে কারণ জনাব আনিসুজ্জামান তাদের শপথ কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই কান্ডটা করছেন। আনিসুজ্জামানের হঠাৎ মনে পড়ল তিনি একজন শিক্ষাবিদ, তাঁর কাজ হচ্ছে শিক্ষার আলো ছড়ানো! ভাগ্যিস, প্রথম আলোর শপথের কারণে মনে পড়ল নইলে ইহকালে আনিসুজ্জামানের এটা মনে পড়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না।
প্রথম আলো লিখেছে, "...এমনই এক সময়ে শুরু হয় প্রথম আলোর শপথের কার্যক্রম। সমাজের বিশিষ্টজনেরা ভিন্ন ভিন্ন ধরনের শপথ গ্রহন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানও শপথ নেন যে তাঁর বাড়ির কাজের ছেলেটিকে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন..."।
আমার দৃষ্টিতে প্রথম আলোর রিপোর্টটার সঙ্গে এই ছবিটা একটা অসাধারণ ছবি! কেন বলছি। কারণ এমন একটা ছবি উঠানো চাট্টিখানি কথা না। যথারীতি প্রথম আলো এই ছবিটায়ও ফটো-সাংবাদিকের নাম দেয়ার ক্লেশ স্বীকার করেনি।
ফটো সাংবাদিকের নাম নাই বিধায় বুঝে উঠতে পারছি না ছবিটা কে উঠিয়েছেন? এটা কি এই রিপোর্টের প্রতিবেদক তৌহিদা শিরোপা তুলেছেন, নাকি মতিউর রহমান নিজেই! মতিউর রহমান নিজে ছবিটা উঠিয়ে থাকলে তার প্রতি গভীর ভালবাসা ব্যক্ত করি। কেন, বলছি।
ছবিটার কী টাইমিং, কী ফ্রেমিং! স্কুলের ব্যাগ কাঁধে এই শিশুটি যখন আনিসুজ্জামানের কাছ থেকে পড়া বুঝে নিচ্ছিল। ঠিক তখনই জানালার পর্দা বাতাসে সরে গিয়েছিল, ফাঁক দিয়ে এটা মতিউর রহমানের চোখে পড়ে, মতিউর রহমান ফট করে এই ছবিটি তুলে ফেলেন, ধাম করে পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন!
আর এটা পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে পাঠকআমি শপথ করলুম!
আপনারা বলবেন, কাকতালীয়। বলতে পারেন কিন্তু এমন কাকতালীয় আমাদের বেলায় ঘটে না কেন? কেন-কেন-কেন? এটা একটা গবেষণার বিষয়!
এটাও কি কাকতালীয় না? এই ছেলেটির কথা প্রথম আলো লিখেছে, "...গণিত বেশি ভালো লাগে। গত পরীক্ষায় গণিতে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছি।"
কী টাইমিং, প্রথম আলো শপথ অনুষ্ঠান চালু করল। এরিমধ্যে আনিসুজ্জান প্রথম আলোর শপথের সঙ্গে সুর বা গলা মিলিয়ে শপথ নিলেন। তারপর তাঁর কাজের ছেলেকে গুলশানের অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে ( অটো প্রমোশন!) ভর্তিও করালেন। সে আবার পরীক্ষাও দিল। গণিতে বেশি নম্বরও পেল। নিয়মিত আনিসুজ্জামানের কাছ থেকে পড়াও বুঝে নিতে থাকল।
আর বাতাসে জানালার পর্দাও উড়ল। আনিসুজ্জান স্যারের বাসার সামনেই মতিউর রহমান সাহেবের গাড়ির টায়ার পাংচার হলো। জানালা দিয়ে মতিউর রহমান দেখেও ফেললেন (তিনি তখন জেনারেলদের সঙ্গে মিটিং-এ সেনানিবাসে যাচ্ছিলেন)? জেনারেলদের সঙ্গে মিটিং বাতিল করে ক্যামেরা বার করলেন...।
এত্তো এত্তো কাকতালীয় যে কোথায় রাখি!
আর ছবিটা দেখে আপনারা ভাবছেন বুঝি খুব সোজা! আরে না, সামনে গেলুম আর দুম করে উঠিয়ে ফেললুম, এতো সোজা না। আনিসুজ্জামান এবং তাঁর কাজের ছেলে দু-জনের একজনও টের পায়নি, পেলে কী আর এরা উঠাতে দিত? ছবিটায় পেছনের জানালাটা দেখছেন না? অনুমান করি, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই জানালায় উঠে এই দুর্দান্ত ছবিটা উঠানো হয়েছে। অবশ্য চিন্তায় আছি, আনিসুজ্জামানের বাসাটা এক তলা হলে সমস্যা নাই কিন্তু বহুতল হলে তো সর্বনাশ! প্রাণ হাতে নিয়ে পানির পাইপ বেয়ে উঠতে মতিউর রহমানকে কি কষ্টই না করতে হয়েছে, ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে। রাখে আল্লা মারে কে- আল্লা বাঁচিয়েছেন!
যাক, তবুও ভাল আনিসুজ্জামান এই শপথের কল্যাণে বিস্মৃত হওয়া তাঁর শিক্ষক পেশার কথা আবারও মনে করতে পেরেছেন। শপথ বলে কথা!
এদের শপথের ডাকে হাতি পর্যন্ত ছুটে এসেছিল, আনিসুজ্জামান কোন ছার!
শুনিতে পাই, হাতি নাকি শপথ করিয়াছে, সে আর কলাগাছ খাইবে না, বাঘ মানুষ মারিবে না। ইহারা টিপসহির স্থলে 'পা-ছহি' দিয়াছে, শপথ ভঙ্গ করিলে পশু আইনের দন্ন্ডিত হইবে।
ভাল কিন্তু এই যে হাতি এবং বাঘের শপথের কারণে যে কলাগাছ এবং মানুষ উদ্বৃত্ত হবে এদের গতি কি? প্রকৃতিক ভারসাম্য এলোমেলো হয়ে গেলে এর দায় কার উপর বর্তাবে?
এই প্রশ্নটা মতিউর রহমানের কাছে করার উপায় কি? এদের মেইল করলে এর উত্তর পাওয়া নিয়ে অনেকখানি জটিলতা আছে। প্রায় বছর ছুঁই ছুঁই, এদের একটা ভুল ধরিয়ে দিয়ে একটা মেইল করে এখনও এর উত্তরের অপেক্ষায় আছি। আমার ধারণা, এরা মেইলে প্রাচীন পদ্ধতি ব্যবহার করে। কবুতরের পায়ে বেঁধে পাঠায়, কবুতরমেইল। হয়তো রাস্তায় কেউ ওই কবুতরটা ধরে খেয়ে ফেলেছে। এ জন্য অবশ্যই মতিউর রহমানকে দায়ি করা চলে না। কবুতরটার জন্য আমি চোখের জল ফেলি, বেচারা!
আফসোস, সংগ্রামের মত পত্রিকাগুলো আল মাহমুদের কলম কিনে নেয়, প্রথম আলোর মত পত্রিকা আনিসুজ্জামানকে। ভঙ্গিটা খানিকটা অন্য রকম, চতুর এই যা তফাৎ!
*পাদটীকা: একজন আমার এই সাইটে এসে দুম করে একটা মন্তব্য করেছিলেন, ভাইজান, আপনি কি সুশীল? আমি এর উত্তরে বলেছিলাম, নারে ভাই, আমি সুশীল না, শীল, (অভিধানে শীলের অর্থ খুঁজে লাভ নাই এটা আঞ্চলিক শব্দ। ভদ্রস্থ ভাষায় ক্ষৌরিক ওরফে নাপিত) নিম্নবর্ণের শীল সম্প্রদায়ের মানুষ। একজন শীল টাইপের মানুষের কাছে বেশি আশা করাটা দুরাশা। তাই আমি শপথ ভঙ্গ করিলে ইহাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই। আনিসুজ্জামানের মত সুশীলরা শপথ নিয়া কস্তাকস্তি করুন আমার কি!
**ছবি-সূত্র: প্রথম আলো
9 comments:
লেখাটা পড়লাম।প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে লেখা হয়েছে বলে মনে হল।প্রথম আলোর শপথ কার্যক্রম থেকে উদবুদ্ধ হয়ে আনিসুজ্জামান শপথ নিয়ে কাজের ছেলেকে পড়ানো শুরু করলেন,এটা যদি প্রথম আলো তাদের সাফল্য মনে করে এবং সেটা প্রমোট করার জন্য একটা ছবি ছাপে তা নিয়ে হই-চই করার কি আছে? পত্রিকায় যে সব ছবি ছাপে তার ৯০ ভাগ ই তো সাজানো-মানে Arrange করা ছবি। তাতে দোষটা কোথায়?এই ছবিটা দেখে আরো কয়জন যদি তাদের কাজের ছেলেকে লেখাপড়া শেখায়,তাহলে ত ভালই।
হাতির খবর ছেপে প্রথম আলো মজা করতে চেয়েছে বলেই মনে হয়,এটাকে এত বিস্লেশন করার কি প্রয়োজন আছে?
কোন কাজ থেকে আপনি যদি খুত ধরতে চান,তাহলে তাই পাবেন,আর যদি ভাল উদ্দেশ্য মনে করেন,তাহলে কিন্তু ভাল দিকটাই ধরা পরবে।
আপনার আরো কতগুলো লেখা পরলাম।অনেকগুলোই প্রথম আলো আর মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে লেখা।এত চমৎকার লেখনী কেন নষট করছেন?এই প্রথম আলোই কিন্তু আপনার পুরষ্কার পাওয়ার কথা লিখেছে,এবং আপনার ব্লগ ঠিকানাও দিয়েছে।
আপনার লেখার হাত খুবই ভাল।প্রাঞ্জল,পরতে ভাল লাগে,কিন্তু অহেতুক মতিউর রহমানকে গালাগালি খারাপ লাগলো।তাই না লিখে পারলাম না। খারাপ ভাবে না নিয়ে আমার মন্তব্যটাকে গঠন্মুলক ভাবে নিলে কৃতার্থ হই।
বাংলায় অনলাইনে প্রথম লিখছি,ভুল ক্ষমা করবেন।
"...এই প্রথম আলোই কিন্তু আপনার পুরষ্কার পাওয়ার কথা লিখেছে,এবং আপনার ব্লগ ঠিকানাও দিয়েছে...।"
ভাইরে, এটা আপনি যেভাবে দেখছেন আমি কিন্তু অন্য রকম করে দেখছি। কোন মিডিয়া যদি মনে করে কোন তথ্য পাঠকের জন্য ছাপানো প্রয়োজন, এঁরা ছাপাবে। এতে আলাদা করে আপ্লুত হওয়ার কোন কারণ আমি দেখি না।
"হাতির খবর ছেপে প্রথম আলো মজা করতে চেয়েছে বলেই মনে হয়,এটাকে এত বিস্লেশন করার কি প্রয়োজন আছে?"
আমিও তো মজাই করেছি রে ভাই।
"এই ছবিটা দেখে আরো কয়জন যদি তাদের কাজের ছেলেকে লেখাপড়া শেখায়,তাহলে ত ভালই। পত্রিকায় যে সব ছবি ছাপে তার ৯০ ভাগ ই তো সাজানো-মানে Arrange করা ছবি।"
এই ছবিটা চোখে খুব লাগে। পুরো বিষয়টায় একটা কর্পোরেট-কর্পোরেট গন্ধ ছড়ায়। এখানেই আমার ঘোর আপত্তি। পত্রিকায় সাজানো ছবি ছাপালেই সেটা সহীহ হবে এমনটা আমি মনে করি না। সেটা প্রথম আলো হোক বা অন্য কোন পত্রিকা।
আর আমার মূল বক্তব্য ছিল এটাই, মতিউর রহমান গোটা দেশকে শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছেন অথচ নিজেদের ভুলগুলো শোধরাবার ন্যূনতম চেষ্টাও করছেন না। যা এক ধরনের ফাজলামো!
"আপনার আরো কতগুলো লেখা পরলাম। অনেকগুলোই প্রথম আলো আর মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে লেখা। এত চমৎকার লেখনী কেন নষট করছেন?"
সবিনয়ে আপনার সঙ্গে অমত পোষণ করি। আপনি আলাদা করে কোন পোষ্টটায় আপনার আপত্তি আছে এটা বললে আমার ভুল শোধরাতে সুবিধে হতো। ভুল স্বীকার করতে আমার কোন লাজ নাই বরং কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে তাঁর প্রতি আছে আমার কৃতজ্ঞতা।
প্রথম আলো দাবী করে এরা প্রথম শ্রেণীর পত্রিকা। তাহলে এদের কাছে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক।
আমি চাইব না, কোন নেত্রী কোন কালারের শাড়ী পরে এসেছেন, কোন নেত্রীর শাড়ীর পাড় কেমন এটা প্রথম পাতায় ফলাও করে লিখে ভরানো হোক।
আমি কখনই চাইব না এই পত্রিকায় এই দেশের সেরা সন্তানদের নিয়ে তাচ্ছিল্য করা হোক। আজ আমি বাংলায় লিখতে পারি, কথা বলতে পারি, হাহাকার করে কাঁদতে পারি, কাদের অবদানের জন্য?
আমি কক্ষণও চাইব না, ভাষাসৈনিক গাজীউল হকের মৃত্যুর খবরটা পেছনের পাতায় সিঙ্গেল কলামে হেলাফেলা করে ছাপানো হোক:
http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post_18.html
যেমনটা আমি চাইব না, এই দেশের অগ্নিপুরুষ বীর প্রতীক শহিদুল ইসলাম লালুর মৃত্যুর খবরটা বিজ্ঞপ্তি আকারে ছাপা হোক। যেখানে টাকা দিলে পেটকাটা রমজান, মুরগি মিলনও বিজ্ঞপ্তি আকারে ছাপাতে পারে!
http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_28.html
এই ভুল ধরিয়ে দেয়াটা কি অন্যায়? http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_02.html
আর আমি সমস্ত তথ্য-উপাত্ত জড়ো করে প্রথম আলোকে মেইল করব এবং এরা সেই মেইলের উত্তর বছরের পর বছর দেবে না, এটা কোন ধরনের ভব্যতা?
"অহেতুক মতিউর রহমানকে গালাগালি খারাপ লাগলো।"
অহেতুক?
বিনয়ের সঙ্গে বলি, আপনি কি জানেন, মিডিয়ার শক্তি কি? আমরা ছাপার অক্ষরে যা দেখি তাই বিশ্বাস করি। এখান থেকেই আমরা শিখি।
একজন লেখক হওয়ার পরও আনিসুল হক যখন আমাদেরকে চৌর্যবৃত্তি শেখান তখন কী অনর্থ হয় এটা আমরা এখন টের পাব না। যখন পাব তখন আর কিছুই করার থাকবে না।
http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_27.html
সবটা লিখতে গেলে একটা বই হয়ে যাবে। যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন- দেশের সোঁদা মাটির গন্ধে মাখামাখি হয়ে...।
আরেকটা কথা, আমি যে কেবল প্রথম আলোর অসঙ্গতি নিয়েই লিখেছি এমনটা কিন্তু না। অন্য পত্রিকাকে নিয়েও লিখেছি, আপনার সম্ভবত চোখে পড়েনি!
আর প্রথম আলোর অসঙ্গতি নিয়ে লিখলে সমস্ত লেখালেখি বাদ নিয়ে কেবল এদের নিয়েই লিখতে হবে। খুঁটিয়ে পত্রিকাটি পড়া হয়নি কিন্তু আজকের প্রথম আলোর অসঙ্গতি নিয়ে অন্তত দুইটা লেখা উচিৎ। @দীপ
বৃহস্পতিবারেই বিজ্ঞাপন ছাপা হযেছিল যে, পরদিন আপনার ওপর প্রথম আলোয় ফিচার থাকছে। আমি অনেক আশা নিয়ে বসে ছিলাম আপনার বক্তব্য পড়ার জন্যে, কিন্তু আপনার মুখ দিয়ে যে একলাইন ছাপিয়েছে, তা আবার আপনার ব্লগ থেকেই কপিপেস্ট করা। তাও ভাল যে, এদ্দিন পর হলেও পত্রিকাতে খবরটা এসেছে।
আচ্ছা, প্রথম আলোর আখাউড়া প্রতিনিধি কি সত্যিই আপনার কাছে এসেছিলেন?
"বৃহস্পতিবারেই বিজ্ঞাপন ছাপা হযেছিল যে, পরদিন আপনার ওপর প্রথম আলোয় ফিচার থাকছে।"
এটা কোথায় পেলেন? লিংক দেবেন, প্লিজ। আমার তো চোখে পড়েনি!
"তাও ভাল যে, এদ্দিন পর হলেও পত্রিকাতে খবরটা এসেছে।"
হা হা হা। এটা হয়তো এদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি তাই। এতে অবাক হওয়ার কি আছে! এই তথ্যটায় সম্ভবত তেমন আবেদন নাই। যে আবেদনটা থাকে রিলিফের এক প্যাকেট বিস্কিটের জন্য শত-শত হাত বাড়ানো ওই ছবিতে, খবরে।
ওই ছবি দেখে অন্য দেশের লোকজনরা খুবই মুগ্ধ হয়- বাংলাদেশ নিয়ে এঁদের ধারণা এতোটাই উঁচু হয় যেটা কহতব্য না...।
"...কিন্তু আপনার মুখ দিয়ে যে একলাইন ছাপিয়েছে, তা আবার আপনার ব্লগ থেকেই কপিপেস্ট করা।"
আপনার প্রশ্নের উত্তর তো এখানেই আছে। @সুব্রত
বিজ্ঞাপনটা গেছে বৃহস্পতিবারের পত্রিকার দ্বিতীয় পাতার প্রথম কলামে।
http://eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=2&date=2010-07-08
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার বর্ণনা মতে অন-লাইনে আর যেতে হয়নি, পত্রিকাতেই পেলাম। কী অবাক কান্ড, কখনও খেয়াল করা হয়নি!
আবারও ধন্যবাদ আপনাকে।
ল্যাপটপ নিয়ে যে চার কন্যার ঢাউস ছবি ছাপা হয়েছে এটা নিয়ে খুব মজা পাচ্ছি। হা হা হা। তিন কন্য এক সঙ্গে, এক কন্যা অন্য পাশে; ঘটনা আঁচ করে খুব মজা পাচ্ছি...। এরা পারেও!
ভুল ধরিয়ে দেয়া অন্যায় নয়,কিন্তু আপনার লেখা পড়ে এটা কিন্তু পরিষ্কার যে আপনার ব্যক্তিগত বিদ্দেষ আছে।আমি সেটার কথাই বলতে চেয়েছি।
যাই হোক,তার পিছনে নিসচই কোন কারন আছে।কিছু লেখা থেকে কিছু কারনও আচ করতে পারছি। তাই আর এটা নিয়ে কথা বাড়াবোনা।
সময় নিয়ে আমার "অভিযোগের" জবাব দিয়েছেন,আমি তাতেই খুশি। ঃ)
আপনিও ভাল থাকবেন।
ভাল কথা, চার কন্যার কুইজের উত্তর কি? খুবই জানতে ইচ্ছা করছে।
"...কিন্তু আপনার লেখা পড়ে এটা কিন্তু পরিষ্কার যে আপনার ব্যক্তিগত বিদ্দেষ আছে...।"
উঁহু, আবারও বলি, বিষয়টা কেবল ব্যক্তিগত না। এদের যে বিষয়টা আমাকে ক্রুদ্ধ করে সেটা হচ্ছে, এদের প্রচন্ড অহংকার! এরা ভুলে যায় এই গ্রহে ডায়নোসর নাই, রাশিয়া নাই, আদমজী জুট মিল নাই।
আপনি কেবল প্রথম আলোর লেখাগুলোই কেন দেখলেন! দেখুন, কালের কন্ঠকে নিয়েও অনেক লেখা আছে:
http://tinyurl.com/38qlfcf
এখানে এমন কিছু পোস্টও পাবেন যেটায় দেখবেন কালের কন্ঠের সম্পাদক আবেদ সাহেবকে নিয়ে লেখা। 'কেউ কথা রাখেনি' এই কবিতাটা নিয়ে আবেদ খান যা বলেছেন তাতে আমার কাছে মানুষটাকে স্রেফ একটা নির্বোধ মনে হয়েছে।
এবং আমি স্পষ্ট করে এও বলেছি, নীতিগত কারণে কালের কন্ঠের মালিক এবং সম্পাদককে আমি পছন্দ করি না।
অন্য পত্রিকারও এমন অজস্র উদাহরণ আমি দিতে পারি।
"...চার কন্যার কুইজের উত্তর কি...?"
হা হা হা। যাক না আর দুয়েক দিন। তবে এখানেও কিন্তু প্রথম আলোর ফাজলামি আছে... @দীপ
Post a Comment