ব্রিটেন নামের এক কালের মহাদেশ (?) যাদের সূর্য নাকি উদয়ও হতো না অস্তও যেত না, নিজেদের সীমানা বৃদ্ধির পাশাপাশি তথাকথিত নিজেদের নীল রক্তের গাঢ়ত্ব বৃদ্ধিতেও অতি সচেতন ছিল। তথাকথিত অতি সভ্য জাতি! এরা সভ্যতা ধরে রাখার জন্য এহেন কোন অন্যায় নাই যা করেনি। মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ- সচরাচর এপিঠের সভ্যতার মানেই হচ্ছে ওপিঠের অসভ্যতা।
ব্রিটেন গত শতাব্দীতে তাদের ওই সময়কার উপনিবেশগুলোর মধ্যে অষ্ট্রেলিয়া, কানাডায় কয়েক হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে চমৎকার ভবিষ্যতের কথা বলে জোর করে পাঠায়। আনুমানিক ৪০ বছর পূর্বে বিট্রেন এই অমানবিক কাজটা করে। এইসব শিশুকে ওখানকার গির্জা-এতিমখানা টাইপের প্রতিষ্ঠানে রাখা হতো।
বাঘ থেকে বাঁচার জন্য কোথাও না কোথাও একটা গাছ থাকবে, থাকতে বাধ্য, থাকবেই। তেমনি কোথাও না কোথাও একটা ইরেজার থাকে, থাকতে বাধ্য, থাকবেই। ইরেজার হয়তো সমস্ত দাগ মুছে ফেলতে পারে না কিন্তু কুৎসিত দাগগুলো অনেকখানি মুছে ফেলে। ইরেজার অন্তত ভুলভালগুলো শুধরানোর একটা সুযোগ সৃষ্টি করে।
নভেম্বর, ২০০৯ সালে অষ্টেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড ১৯৩০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত অষ্ট্রেলিয়ায় পাঠানো এইসব অভাগা মানুষদের সম্বন্ধে বলেন, "আমরা দুঃখিত,শিশু অবস্থায় যাদেরকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাদের এখানে পাঠানো হয়েছিল, আপনজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন সেইসব মানুষদের অমানুষিক দুর্দশার জন্য জাতির পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি।
রাড আরও বলেন, এইসব অভিবাসী শিশু এবং তাদের অভিভাবককেরা অতীতে বিভিন্ন ঘটনায় যে দুর্দশার শিকার হয়েছেন তার জন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত।"
প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড যখন পার্লামেন্ট হাউজে আবেগপ্রবণ ভাষায় ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন পার্লামেন্ট হাউজে জড়ো হওয়া সেইসব অভাগা মানুষেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
ইতিমধ্যে কত পানি গড়িয়ে গেছে- সেই শিশুরা আজ আর শিশু নাই! অনেকে রে রে করে তেড়ে আসবেন, কেউ-বা ঠোঁট বাঁকাবেন, ওইসব অভাগা মানুষদের প্রতি এখন এই সমবেদনা দেখালে কি, না দেখালেই কি?
এর আসলে কোন উত্তর হয় না! দাগ তো দাগই, মুছে ফেলতে হবে, ব্যস। নইলে সভ্যতা এগুবে কি করে? সভ্যতা হচ্ছে সরলরেখা, ইরেজার দিয়ে দাগ মুছে মুছে কেবল এগিয়ে যাওয়া নইলে বৃত্তে কেবল ঘুরপাক খেতে হবে। আজও নীল রক্তের অসভ্য ব্রিটিশদের সভ্যতা নিয়ে আমাদের বসে থাকতে হতো।
1 comment:
বস! দাগ কখনো মুছে যায় না, হালকা একটা চিহ্ন রেখে যায়...........
Post a Comment