এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Monday, February 22, 2010
আমারব্লগ, মলাটবন্দি: স্বপ্ন এবং বাস্তব
গতকাল ২১ ফ্রেব্রুয়ারি আবারও বইমেলায় যাওয়া হলো। ঠিক ২১ তারিখে যাওয়ার একটা বিশেষ কারণ ছিল। সেটার বিস্তারিত অন্যত্র, অন্য পোস্টে বলব।
সালটা ২০০৭। তখন আমি একটা ওয়েব সাইটে শুভ নিকে ব্লগিং-এর নামে লেখালেখি করি। ওখানকার পোস্টগুলো নিয়ে "শুভ'র ব্লগিং" নামে একটা বই বের হলো। বাংলায় ব্লগিং-এর উপর প্রথম বই, আমার আনন্দিত হওয়ার কথা কিন্তু ওই সময় অনেকখানি বিষাদগ্রস্ত ছিলাম। কারণটা এখন বললে অনেকের কাছে হয়তো বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে না। না হোক, তাতে আমার আবেগের কী আসে যায়, ঘন্টা!
আমি যাদের সঙ্গে ওখানে দিনের পর দিন লেখালেখি করেছি, মন্তব্য চালাচালি করেছি। যাদের লেখার ক্ষমতা আমাকে হতভম্ব করেছে, পারলে এঁদের হাতগুলো সোনা দিয়ে বাঁধাই করে দেই! এঁদের বিচিত্র ভাবনা, লেখার ক্ষমতা দেখে আমি হিংসায় মরে যাই।
অথচ আমার আস্ত একটা বই বের হলো- আমার নিজেকে কেমন অপরাধি অপরাধি লাগছিল। আমি এটা মেনে নিতে পারছিলাম না, কেন এঁদের অন্তত একটা করে লেখা নিয়ে বই বের হবে না?
তখন চেষ্টা করেছিলাম ওখানকার অন্তত ১০০জন ব্লগারের লেখা নিয়ে একটা বই বের করতে। কিন্তু পারিনি, ব্যর্থ হয়েছিলাম। আমি এই বেদনাটা আজও ভুলিনি! তখন এইসব নিয়ে অসম্ভব মন খারাপ করে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম: একজন দুর্বল মানুষের দুর্বল মস্তিষ্ক।
মেলায় এবার আমার থাকার জায়গাটা ছিল লিটল ম্যাগ চত্ত্বরে। অনেক কারণের একটা হচ্ছে জায়গাটা তুলনামূলক ফাঁকা। অন্তত শ্বাস ফেলা যায়, পরিচিত লোকজনের সঙ্গে দু-চারটে কথা বলা যায়। প্রায় সবাই নিজ নিজ দলের সঙ্গে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ান, আমি দলছুট টাইপের মানুষ- না ঘার কা, না ঘাট কা। আমি পারতপক্ষে এখান থেকে নড়ি না কারণ বইমেলা নামের এই ব্যবসায়িক বাজারে (মতান্তরে ঠাঠারি বাজার) হারিয়ে যাব।
এখানে আবার আমার ব্লগের স্টল। আজ 'মলাটবন্দি আমারব্লগ' বইটা কিনলাম। আক্ষরিক অর্থেই মুগ্ধ। সবচেয়ে বেশি টেনেছে নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে ব্লগারদের নাম দিয়ে লেখা সাজানো- কারও ট্যাঁ ফো করাও যো নাই। আমার ব্লগের এই প্রকাশনীটা প্রায় নিখুঁত একটা কাজ হয়েছে। এখনও পড়া শুরু করিনি। এখানকার অল্প ব্লগারই আমার পরিচিত, তাতে কী! বরং এও ভাল নতুনদের ছড়াছড়ি। একজন নতুন লিখিয়ের কাছে একটা লেখা প্রকাশ হওয়ার যে কী আনন্দ এটা আমি খানিকটা বুঝি। এক সময় পত্রিকার পাতায় চিঠিপত্র কলামে আমার কয়েক লাইনের লেখা ছাপা হতো। ওই আনন্দের সঙ্গে কিসের তুলনা হয়, আজ আর সেই আনন্দ কোথায়!
আমি খানিকটা আঁচ করতে পারি এটা বার করাটা চাট্টিখানি কথা না। এর পেছনে আছে এক ঝাঁক হার-না-মানা, অদম্য তরুণ। সেইসব তরুণ যারা ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুরে গান গাইতে গাইতে হাঁটতে জানে! কেবল এরাই পারে সব কিছু বদলে দিতে। কাল আমার ব্লগের স্টলে আমি যখন 'মলাটবন্দি আমারব্লগ' বইটা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলাম, তাঁদের এই উচ্ছ্বাস তেমন স্পর্শ করতে পারেনি, এ আমি বিলক্ষণ জানি। কারণ এরা জানেন না, আমি যে কাজটা করতে পারিনি এঁরা তা করে দেখিয়ে দিয়েছেন। হার-মানা আমার কাছে এরচে আনন্দের আর কি হতে পারে।
*ছবি ঋণ: http://dewdropsreturn.amarblog.com/posts/99566
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
2 comments:
Onek onek valo thakben, shuvo bhai
ভাল থাকুন,আপনিও।
Post a Comment