অসাধারণ ব্যক্তিগণ কিছু চালু কথা চালু করে গেছেন। 'দা থেকে আছাড় বড়ো', 'বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বিচী', 'দারোগার নৌকার মাঝির শালা' ইত্যাদি।
আমরা সাধারণ যারা তারা বসে থাকব বুঝি? তাই 'এক কাপ চায়ে দু-কাপ চিনি'। উপায় কী, কখনও কখনও এর বড্ডো প্রয়োজন দেখা দেয়!
কোটি-কোটি বাচ্চা প্রসব হয়, এটা কোন খবর না কিন্তু বিমানে কোন বাচ্চা প্রসব হলে তা অবশ্যই খবর। এবারের বইমেলায় হাজার-হাজার বই বেরিয়েছে, মোড়ক উম্মোচন হয়েছে কিন্তু এইসব আলোচনায় আসে না।
পত্রিকার খবর, রাজধানীর একটা হোটেলে এম আসফউদ্দৌলার প্রবন্ধ 'অব পেইনস অ্যান্ড প্যানিকস' ('প্যানিকস' শব্দটা পড়ার সময় সতর্কতা আবশ্যক। তাড়াহুড়োয় সর্বনাশ হয়ে যাবে, বেইজ্জতির একশেষ)। বইটির মোড়ক উম্মোচন করা হয়।
রাজধানীর এই হোটেলটির নাম এখানে দেয়া হয়নি এমন কি ইলেকট্রনিক মিডিয়াতেও বলা হয়নি কিন্তু এই হোটেলটির কার্পেটের নকশা দেখে নিশ্চিত হয়েছি এটা ফাইভ স্টার হোটেল সোনারগাঁ।
দেশের বাঘা বাঘা সুশীলগণ এখানে তশরীফ এনেছিলেন। ভদ্রতার খাতিয়ে এঁদের জন্য নানাপ্রকার চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয় এবং মুত্রত্যাগ এই সবের সুব্যবস্থা ছিল বলেই অনুমান করি।
যেখানে প্রকাশকবৃন্দ লেখকদের বাদামের খোসাও ধরিয়ে দিতে চান না সেখানে অখ্যাত এই প্রকাশনী এই লেখক বই প্রসব করামাত্র পাঁচ তারকা হোটেলে মোড়ক উম্মোচনের নামে যে মাস্তির আয়োজন করেছিলেন এ লা-জবাব। আমি এমন লেখকের জরায়ুকে সেলাম জানাই।
আমি খসড়া একটা হিসাব করে দেখেছি, বইটার অন্তত ১ লক্ষ কপি বিক্রি হলে প্রকাশক সাহেবের এই উদ্যোগ নেয়াটা স্বাভাবিক মনে হতো। আমার জানামতে, বাংলাদেশে এখনও কোন একটা বই ১ লক্ষ কপি বিক্রি হয়নি, তাও আবার প্রবন্ধ! এই বইটা কিনতে গিয়ে মারামারি করতে গিয়ে মেলায় দু-চার জন বিচি, নিদেনপক্ষে দাঁত হারিয়েছেন এমনটাও এখনও শুনিনি। জাস্ট কৌতুহলের কারণে এই প্রকাশনীর স্টলে কয়েক দফা সময় নস্ট করেছি কিন্তু কাউকে তখন বইটা কিনতে দেখিনি। অনুমান করি, আমি ওখান থেকে সরে আসা-মাত্র হাজার-হাজার বইক্রেতা পঙ্গপালের মত বই কেনার জন্য স্টলটাতে ঝাপিয়ে পড়েছেন। আফসোস, এই দৃশ্য চাক্ষুষ করতে পারলুম না।
তাই হবে! এরাই লেখক বাকীসব তক্ষক।
No comments:
Post a Comment