এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Tuesday, March 16, 2010
নিশিগন্ধা
লুসীর কল্পনাতেও এটা ছিল না তাকে এভাবে পরিবারের অমতে বিয়ে করতে হবে। স্কুটার এগুচ্ছে। লুসী নরম হাতে শক্ত করে তুষারকে ধরে আছে।
তুষারের খুব অবাক লাগছে, কী থেকে কী হয়ে গেল। পণ করে গিয়েছিল লুসীর সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলবে। বিয়ে ব্যাপারটা তাহলে এতই সহজ! এখন থেকে এই মেয়েটি সারা জীবন তার সঙ্গে থাকবে! ক্ষীণ আলোয় তুষার লুসীর দিকে তাকাল। কী পরম নির্ভাবনায় ওর হাত ধরে আছে। তুষারের কেবল মনে হচ্ছে মেয়েটি বড় ভুল করেছে। তুষার বিড়বিড় করে বলল, ‘লুসী, তুমি বড় ভুল করেছ।’
তন্নী দরজা খুললে তুষার হাসিমুখে বলল, ‘তন্নী, তুই আমার চায়ে চিনি বেশি দিস, তাই তোর ভাবিকে নিয়ে এলাম।’
লুসী সহজভাবে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, ‘তুমি তাহলে আমাকে চা বানাতে নিয়ে এসেছ? আমি কিন্তু চা বানাতে পারি না। তন্নী আমাকে তোমার একটা কাপড় ধার দেবে, গোসল করব।’
তন্নী চোখ বড় বড় করে লুসীর দিকে তাকিয়ে রইল।
লুসী গলায় মুগ্ধতা নিয়ে বলল, ‘আরে তন্নী, তোমার চোখ দারুণ তো! এই রে, ছোট করে ফেললে।’
তন্নী লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে নিল। চোখ তুলে বলল, ‘ধ্যাৎ ভা-ভাব-ভাবি, তুমি বানিয়ে বলছ। ভাইয়া যে বলে আমার চোখ হাঁসের ডিমের মতো!’
লুসী বিরক্ত হয়ে বলল, ‘তোমার ভাইয়া তো একটা অপদার্থ। ভালো কিছু দেখার মতো ওর চোখ আছে নাকি!’
তুষার এবার ভয় ভয় গলায় বলল, ‘তন্নী, মা কোথায় রে?’
তন্নী ঠোঁট ভেঙে হাসল, ‘মা গেছেন পাশের বাড়িতে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ ‘বিশেষ অজ্ঞ’ মারুফা খালার ওখানে। ভোয়া শুনবেন। এর পর তারা বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করবেন।’
তুষার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘মা কি যুদ্ধের খবর শোনেন?’
তন্নী লুসীর হাত ধরল, ‘আসুন ভাবি, আপনার গোসলের ব্যবস্থা করি।’
তুষারের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। এই হয়েছে এক জ্বালা। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে এখন শুধু যুদ্ধের খবর। এসব আলোচনায় শুঁটকি ব্যাপারী, গরু ব্যাপারী কেউ বাদ থাকে না। এদের কথাবার্তা শুনে মন হয়, সাদ্দাম-বুশের সাথে হটলাইনে মিনিটে মিনিটে যোগাযোগ আছে।
দু-দিন আগে তুষার রিকশায় করে মগবাজারের দিকে যাচ্ছিল। রিকশা চালাতে চালাতে লোকটা হঠাৎ জিজ্ঞেস করল, আইচ্ছ্যা, কইনছেন-গণ্ডগোলডার হবর কী।
তুষার একটু অন্যমনস্ক ছিল। চমকে জিজ্ঞেস করল, কিসের গণ্ডগোল?
ও ভেবেছিল রাস্তার কোনো ঝামেলার কথা জিজ্ঞেস করছে। লোকটা ঝড়ের গতিতে রিকশা চালাতে চালাতে মুখ ঘুরিয়ে বলল, ইরাকের গণ্ডগোলডার কথা জিগাইতাছি। সাদ্দাইম্যা অইল গিয়া বাপের বেডা।
তুষার তিতিবিরক্ত হয়ে অস্ফুট স্বরে বলল, ধুস শালা। পরক্ষণেই জমে গেল। একটা ট্রাক গায়ের উপর ওঠে এসেছিল প্রায়। তুষারের মনে হচ্ছিল ওই মুহ�র্তে তার হৃৎপিণ্ড বুঝি থেমে ছিল। একটু ধাতস্থ হয়ে লোকটাকে বলেছিল, যুদ্ধের কোনো খবর আমি জানি না। সামনে দেখে রিকশা চালাও। আর একটা কথা বললে একটা চটকনা দিব।
লোকটা মুখ ঘুরিয়ে তুষারের দিকে তাকাল। অল্পক্ষণ আগের এত বড় ভয়ঙ্কর ব্যাপারটা তাকে বিন্দুমাত্র বিচলিত করেনি। তার চেয়ে এত বড় পাজি ছেলেটা যুদ্ধের খবর জানে না এটা তাকে আহত করেছে।
কাল সকালে দোকানে চা খাচ্ছিল, সেখানেও তুমুল বচসা। দুপক্ষের মধ্যে খুব কথা কাটাকাটি হচ্ছে। সাদ্দামপন্থীরা সংখ্যায় বেশি। এদের মধ্যে একজন নিবিষ্টচিত্তে দু-পক্ষের আলোচনা শুনছিলেন আর দাঁত খোঁচাচ্ছিলেন। তিনি কাজটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন! গভীর আগ্রহ নিয়ে তুষার লক্ষ করছিল। অল্পক্ষণেই মুগ্ধ হয়ে গেল, খোঁচাখুঁচির কাজ এতভাবে করা যায়? অল্পক্ষণেই তার গা গুলিয়ে উঠল। খুঁচিয়ে জিনিসটা শেষ পর্যন্ত ভদ্রলোক বের করে আনলেন। নাকের কাছে নিয়ে শুঁকলেন। ...। তুষার চোখ ফিরিয়ে নিল।
ভদ্রলোক চিবুতে চিবুতে বললেন, আরে মিয়া রাহেন, আমেরিকা যে এত্তোগুলা বুমা ফালাইছে, ইরাকের কী কিছু অইছে? বুড়ো আঙুল ডানে-বাঁয়ে করে বললেন, কিসস্যু অয় নাই, একটা বুমাও ফাডে নাই। বড় পীরছাবের মাজার-মারাত্মক জাগা রে ভাই!
এবার বুশপন্থী একজন দাঁতমুখ খিঁচিয়ে বললেন, আচ্ছা, তাই নাকি! তাহলে তো ইরাকের সব মিসাইল সৌদির ওপর দিয়ে যাবে। এটা তো আরো মারাত্মক জায়গা।
ইরাকপন্থী আরেকজন টেবিলে চাপড় মেরে গ্লাস উল্টে ফেললেন, আজাইরা কথা রাহেন। আপনারা আসল খবরাই জানেন না, ইরাকের সবটা মাটির নিচে। বাড়িঘর যেগুলো আছে সব ফলস। দোতলা বাড়িকে বানিয়েছে বিশতলা। মিসাইল সব ওপরে লাগবে, নিচে কিছুই হবে না।
অন্য একজন এক ঢোকে চা গিলতে গিয়ে মুখ পুড়িয়ে ফেললেন, ইরাকিরা হইল গিয়া বাঘের জাত। ইরাকের পাঁচ হাজার পাইলটের সবাই যুদ্ধে শহীদ হইতে চায়। সাদ্দাম বলল, রাখো, এভাবে না, লটারি হবে।
দোকানের বয় এতক্ষণ ধরে চুপচাপ এদের কথাবার্তা শুনছিল। ন্যাকড়া দিয়ে টেবিল পরিষ্কার করতে করতে বলল, আপনেরা একটা খবর হুনছেননি, চিটাগাং-সিলেট মাজরের সব কাছিম আর কবুতর বোলে ইরাক গেছে গা!
জরুরি কাজ ছিল বলে তুষার বেরিয়ে এসেছিল। থাকতে পারলে অবশ্য বেশ হতো। অদ্ভুত অদ্ভুত সব খবর জানা যেত।
লুসীকে বাথরুম দেখিয়ে তন্নী বলল, ‘ভাবি, তুমি কি টিকটিকিকে ভয় পাও?’
লুসী চুলের ক্লিপগুলো খুলতে খুলতে বলল, ‘না, কেন?’
‘আমাদের বাথরুমে একটা টিকটিকি আছে।’
লুসী হেসে ফেলল, ‘টিকটিকি তো আর ভয়ানক কিছু না।’
‘ওসব না, ভাবি। এই টিকটিকিটা গৃহপালিত। প্লিজ, তুমি একে মারবে না।’
‘তাই! তা আমি এটাকে মারব কেন?’
‘ওটা বড় ফাজিল। গোসল করার সময় ড্যাবড্যাব করে চেয়ে থাকে।’ বলেই তন্নী মাথা নিচু করল।
‘তন্নী, তুমি পাগল নাকি! এসব কী সৃষ্টিছাড়া কথা!’
তন্নী মন খারাপ করে ফেলল ফেলল। কথা ঘুরাবার জন্য লুসীর হাত থেকে ক্লিপগুলো নিয়ে বলল, ‘জানো ভাবি, ভাইয়া না ছ-সাত দিনে একবার গোসল করে। ও একটা বনখাটাশ। এ জন্যই তো ওর শরীরে বোটকা গন্ধ।’
‘আমার কাছে তো ভালোই লাগে।’ বলেই লুসীর মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল।
তন্নী চোখ বড় বড় করে বলল, ‘অরি আল্লাহ, বলো কী!’
‘তোমার যখন এমন কেউ হবে, দেখবে তোমার কাছেও ভালো লাগবে।’
‘যাও, ভালো হবে না বলছি। ভাবি, সত্যিই তুমি এক কাপড়ে বাড়ি ছেড়ে এসেছ?’
‘হুঁ।’
তন্নী কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, ‘আচ্ছা সব ছেড়ে আসতে তোমার খারাপ লাগেনি?’
লুসী বিষণ্ন হয়ে বলল, ‘তোমার ভাইয়াকে আমি খুব পছন্দ করি। এ ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না।’
‘সরি ভাবি, তোমার মন খারাপ করে দিলাম।’ তন্নী সিরিয়াস মুখ করে জিজ্ঞেস করল, ‘ভাইয়ার মাঝে তুমি এমন কী দেখলে একেবারে ফট করে বিয়ে করে ফেললে!’
লুসী তন্নীর চুল টেনে বাথরুমে ঢুকল।
কল বেলের শব্দে তন্নী ছুটে গেল, ‘মা এসেছে সম্ভবত।’
লুসী সহজ ভঙ্গিতে রাহেলা বেগমকে পা ছুঁয়ে সালাম করল। তুষার হড়বড় করে বলল, ‘মা, এর নাম লুসী। তোমার বউ।’
রাহেলা বেগম স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে রইলেন। থেকে থেকে শ্বাস ফেলতে লাগলেন। নিস্তেজ গলায় লুসীকে বললেন, ‘আজ তোমার বিয়ের প্রথম রাত, তাই এখন তোমাকে কিছু বলতে চাই না। তোমার সাথে কাল কথা বলব।’
লুসী সহজভাবে বলল, ‘মা, আপনি যেসব কঠিন কঠিন কথা বলবেন, এখনই বলতে পারেন।’
রাহেলা বেগম চুপ করে রইলেন।
লুসী কোমল গলায় বলল, ‘আসুন মা, খেয়ে নিন। আপনি না খেলে আমরা খাব না।’
রাহেলা বেগম কিছু না বলে খেতে বসলেন। তন্নীকে লবণ এগিয়ে দিতে বললেন। সে ফিক করে হেসে ফেলল, ‘আমার চেয়ে তো ভাবি কাছে, তাকে বলো না!’
রাহেলা বেগম কঠিন দৃষ্টিতে তন্নীর দিকে তাকালেন।
তন্নী হাসতে হাসতে বলল, ‘রাগ করছ কেন মা। ভাবির সব কথা শুনলে তোমার রাগ থাকবে না। ভাবি সব ছেড়ে...।’
‘চুপ কর, তন্নী।’
তন্নী ক্ষেপে গেল, ‘না, চুপ করব না। আমার সব কথা তোমায় শুনতে হবে মা।’
তন্নী আবার প্রথম থেকে বলতে লাগল।
রাহেলা বেগম চুপচাপ খেতে লাগলেন। তুষারের মনে হলো মায়ের দৃষ্টি যেন ধীরে ধীরে কোমল হয়ে আসছে। হাত ধুয়ে সহজভাবে লুসীকে বললেন, ‘তোমার জন্য দুঃখ হয়। গাধাটার মধ্যে যে কী দেখলে! তোমার হাত-গা দেখি একদম খালি। আমার ঘরে একটু আসো তো।’
লুসী ক্ষীণ গলায় বলল, ‘মা, আপনি আমাকে বৌমা না বললে আমি কিন্তু যাব না!’
রাহেলা বেগম হেসে বললেন, ‘আসো।’
লুসী আর কথা না বাড়িয়ে গুটি গুটি পায়ে পিছু নিল।
তুষার এতক্ষণে স্বস্তি�র নিঃশ্বাস ফেলল। তুষারের রুমটা তন্নী অল্প সময়ে গুছিয়ে দিয়েছে। ঢুকেই লুসী নাক সিটকাল, ‘একি অবস্থা! এভাবে কোনো মানুষ থাকে? একটা জিনিসও দেখি জায়গায় নেই!’
‘এটা তো আর তোমাদের বাড়ি না যে।’
‘দুঃখী দুঃখী ভাব নিয়ে ঠাণ্ডা শ্বাস ফেলছ কেন? বাজে কথা বলবে না। আধ খাওয়া চায়ের কাপকে বানিয়েছ অ্যাশট্রে, ফুলদানিতে ছাই ঝেড়েছ। এই সব কী!’
তুষার কিছু না বলে চুপচাপ সিগারেট টানতে লাগল।
‘একের পর এক সিগারেট ধরিয়ে রুমটা দেখি একেবারে অন্ধকার করে ফেলেছ!’
‘আমি এমনিতে বেশি সিগারেট টানি না। টেনশন হলে বেশি হয়ে যায়।’
‘এখন তোমার আবার কিসের টেনশন!’
তুষার মাথা নিচু করে হাসল।
ঘরের বাতি কমিয়ে লুসী সহজ ভঙ্গিতে বিছানায় শুয়ে পড়ল। অনেকক্ষণ পর তুষার আমতা আমতা করে বলল, ‘ইয়ে, আমি ঘুমুব কোথায়?’
‘তুমি মেঝেতে শোও।’
তুষার বুঝতে চেষ্টা করছে, লুসী কি ওর সঙ্গে ঠাট্টা করল! তুষার উঠে গভীর ভালোবাসায় লুসীর গায়ে হাত রাখল।
‘আহ্, গায়ে হাত দিচ্ছ কেন?’
লুসী তুষারের হাত সরিয়ে দিল না। তুষার একটু ইতস্ত�ত করল, হাত সরাল না।
অনেক রাত। কয়টা বাজে তুষার জানে না। পাশে লুসী ঘুমিয়ে কাদা। কোথায় যেন নিশিগন্ধা ফুটেছে। জানালার বাইরে ফকফকা জ্যোৎস্নার অজানা রহস্য, পাশে রহস্যময়ী এক নারী। সম্ভবত পৃথিবীতে রহস্য বলতে কিছু নেই। এ জ্যোৎস্না, এ নারী এক সময় তুষারের কাছে রহস্য মনে হবে না।
*তাহারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল এটা বলতে পারলে আমার চেয়ে সুখী কেউ হতো না কিন্তু...।
তুষার, লুসীর ভালবাসা-বাসির সন্তান, গদ্য। গদ্য নামের কিশোরটি ছাদে একা। বিষণ্ন-কুৎসিত এক বিকেল। এমন একটা বিকেলে অযথাই ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার তীব্র আকা�ঙ্খা জাগে। কিশোরটি অবশ্য এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। মাথায় কেবল ক্রমাগত ঘুরপাক খাচ্ছে বাবা-মা একসঙ্গে থাকলে কি হয়!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
5 comments:
এতোদিনে একটা কাজ হলো! "নিশিগন্ধা" পড়া আছে, তারপরও আবার জাবর কাটতে ভালো লাগছে!!!
প্রকাশিত বইগুলোর প্রচ্ছদ জুড়ে দিয়ে ভালো করেছেন।
'এই নিয়েই'; 'শুভ'র ব্লগিং', এবং সদ্য প্রকাশিত 'জীবনটাই যখন নিলামে' ছাড়া বাকিগুলো আছে আমার কাছে। "এই নিয়েই" কি উপন্যাস, নাকি গল্পসংকলন?
"..."এই নিয়েই" কি উপন্যাস, নাকি গল্পসংকলন?"
না, 'এসব নিয়েই'এটা গল্পসংকলন না। উপন্যাস বলা চলে। বলা চলে এই কারণে বললাম, কোন লেখার আকার-প্রকার নিয়ে তর্ক-কুতর্ক হরদম চালু থাকে! আমি এটাকে উপন্যাস বলব, অন্য একজন লম্বা-লম্বা প্রমাণ হাজির করে বলবেন, উপন্যাস কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি এই সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞানই আমার নাই!
এও সত্য, আমার মতে, 'এসব নিয়েই' একটা দুর্বল রচনা! যখন লেখা হয়েছিল তখন লেখকের বয়স কত, বিশ-একুশ! কেমন করে লেখতে হয় তাই তো জানি না, এখনও কি লিখতে জানি, ছাই! অবশ্য ছাপা হয়েছিল অনেক পরে। তখন অনেকটা সময় ক্যারিয়ারের বারোটা বাজিয়ে টিফিন-ক্যারিয়ারে করে লেখা ফেরি করি, লেখা লাগবে লেখা...। সরষে তেলের গন্ধে মাখামাখি হয়ে থাকা মফস্বলের এক অখ্যাত মানুষের লেখা কেনার কার দায় পড়েছে?
কিন্তু জানি না কেন লেখাটা ওই সময়ের অল্প বয়সের পাঠক খানিকটা পছন্দ করেছিলেন।
কিন্তু 'এসব নিয়েই' উপন্যাসটা নিয়ে মজার একটা কান্ড ঘটেছিল এর সমালোচনায়। 'রহস্য পত্রিকায়' এটার কঠিন একটা সমালোচনা ছাপা হয়েছিল। একজন লেখকের জন্য বিষয়টা বেদনার হলেও তারচেয়ে হতভম্ব হয়েছিলাম 'উপমা ডাইজেস্ট'-এর সমালোচনা পড়ে। এটা কি আমার বইয়ের সমালোচনা? জীবনেও এতোটা অবাক হইনি। লিংকটা দেখতে পারেন:
http://www.ali-mahmed.com/2009/10/blog-post_18.html
একটা কাজের কাজ হৈছে। প্রকাশিত বইয়ের তালিকাটা ভালো লাগতেছে। এই বইটা পড়ারও আগ্রহ পাচ্ছি। :-)
গল্পটি ভাল লেগেছে।এই গল্পগ্রন্থের অন্য গল্পগুলি কি ব্লগে আছে ?
সুহৃদ ধুষর,
এটা আসলে গল্পগ্রন্থ না। "নিশিগন্ধা" নামের আমার একটা উপন্যাসের অংশবিশেষ।
দুঃখিত, কেবল এই অংশটু্কুই পোস্ট করা হয়েছিল।
ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ।
Post a Comment