এই প্রতিবেদনের এক অংশে বলা হচ্ছে, "...আর এবারই প্রথম এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়েছিল বাংলা ব্লগ। প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে—‘বাংলাদেশ বাঁচলেই বিশ্ব বাঁচবে’..."[১]।
আমার সাইটে এই নিয়ে কয়েকজন জানতে চেয়েছেন এবং আলাদা আলাদা করে আমাকে মেইলও করেছেন। বারবার একই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার সমস্যা হচ্ছে বিধায় বিস্তারিত এখানে দিয়ে দিচ্ছি।
প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন এই তথ্য প্রথম আলো কোথায় পেয়েছে এটা এরাই ভাল বলতে পারবেন। আমার অন্তত জানা নেই। বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি এই নিয়ে আমার সাইট প্রতিযোগিতায় কখনও ছিল না। লজ্জার মাথা খেয়ে এও স্বীকার যাই, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ভাল জ্ঞান আমার নাই!
ডয়চে ভেলে (১৫ এপ্রিল, ২০১০) প্রথম যে ঘোষণা দেয়, তাদের সাইটে জানাচ্ছে, "...আর আলী মাহমেদ-এর ব্লগ উঠে এলো শ্রেষ্ঠ বাংলা ব্লগ হিসেবে...বিশ্বের ইতিহাসে তিনিই প্রথম বাঙালি ব্লগার, যিনি ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হলেন৷... "[২]।
ডয়চে ভেলে (২২ জুন, ২০১০) পুরস্কার প্রদানের পরও [৩] যে প্রতিবেদন ছাপে সেখানেও বলা হয়েছে, "ডয়চে ভেলের সেরা বাংলা ব্লগ পুরস্কার জিতেছেন আলী মাহমেদ শুভ৷ এটা কোন নতুন খবর নয়, কিন্তু সেই পুরস্কারটি মঙ্গলবার তিনি গ্রহণ করলেন গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম থেকে৷...মঙ্গলবার গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে শুভসহ ১১টি ভাষার এবং আরো কয়েকটি ক্যাটেগরির বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়৷ এসময় আরো অনেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মসুদ মান্নান, প্রতিযোগিতার বাংলা অংশের জুরি সৈয়দা গুলশান ফেরদৌস জানা এবং ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান আব্দুল্লাহ আল-ফারূক..."৷
এবং পাঠকের অবগতির জন্য বলি, এই প্রতিযোগিতাটা ছিল বাংলা ভাষার উপর, কেবল বাংলাদেশকেই ধরা হয়নি, ভারতসহ। গ্লোবাল ভয়েসেস [৪] এর মতে, "Deutsche Welle's 2010 The Best Of Blogs (BOBs) international award has a significance for the Bangla (Bengali) bloggers in Bangladesh, India and the Bengali diaspora around the world. In its 6th round of blogging competition Bangla language blogs have been included in the BOBs [bn] for the first time. With approximately 230 million speakers, Bangla is one of the most spoken languages in the world. This award is significant in a sense that we have not seen any successful nationwide best of Bangla blogs competition in Bangladesh or in India till-to-date. ...।"
মোদ্দা কথা, জলবায়ু বিষয়ক প্রতিযোগিতাটা ছিল অন্য ক্যাটাগরীতে। এটার সঙ্গে বেস্ট ওয়েবলগ বাংলার সঙ্গে কোন সম্পর্ক নাই।
অন্য ক্যাটাগরিতে The BOBs আয়োজিত "Special Topic Award Climate Change" এই বিভাগে "Bangladesh Banchlei Bishwa Bachbe" এই সাইটটি প্রতিযোগিতা করেছিল [৫]।
এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনার এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশেরই আরেকজন ব্লগার মোঃ মোস্তফা কামাল, এই অন্য ক্যাটাগরিতে হেরে যান অতি অল্পের জন্য। আমার নিজেকে বড়ো ছোট মনে হয় যখন এটা ভেবে বুকের ভেতর থেকে হাহাকার বেরিয়ে আসে, আমরা খানিকটা চেষ্টা করলেই জলবায়ু বিষয়ক পুরস্কারটাও আমাদের দেশেই থাকত!
মজার বিষয় হচ্ছে, এই প্রথম আলোতেই [৬] ছাপা হয়েছিল, "...সম্প্রতি জার্মান বেতারকেন্দ্র ডয়েচে ভেলের বিচারক এবং পাঠকদের ভোটে সেরা বাংলা ব্লগ নির্বাচিত হয়েছে ব্লগার আলী মাহমেদের ব্লগসাইট..."।
*এওয়ার্ডটা স্বচ্ছ কাঁচের। লেখাগুলো আবার সাদা! আল্লা জানে কার মাথা থেকে এই আইডিয়া বেরিয়েছে! ব্যাকগ্রাউন্ডে কালো কিছু না রেখে ছবি উঠাবার কোন উপায় ছিল না। এই কারণে দুঃখ প্রকাশ করি!
সহায়ক লিংক
১. প্রথম আলো, ৯ জুলাই, ২০১০: http://prothom-alo.com/detail/date/2010-07-09/news/77162
২. ডয়চে ভেলে, ১৫ এপ্রিল, ২০১০: http://www.dw-world.de/dw/article/0,,5473377,00.html
৩. ডয়চে ভেলে, ২২ জুন, ২০১০: http://ht.ly/21Z7s
৪. গ্লোবাল ভয়েসেস: http://globalvoicesonline.org/2010/04/11/bangladesh-bangla-blogs-at-the-bobs-meet-ali-mahmed/
৫. বাংলাদেশ বাঁচলে বিশ্ব বাঁচবে: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_18.html
৬. প্রথম আলো, ২৪ এপ্রিল, ২০১০: http://prothom-alo.com/detail/date/2010-04-24/news/58454
6 comments:
Atogula link porar time ader ache naki
দাঁড়ান, হেসে নিই। বেচারা রিপোর্টার! এদিকে যে তাকে নিয়ে তুলকালাম হচ্ছে, জানতেও পারছে না। বান্দার ইমেইল অ্যাড্রেস জানা থাকলে ব্লগের লিঙ্কটা মেইল করে দিতাম।
খটকা এখানে; তিনি যদি আখাউড়ারই প্রতিনিধি হন, একটু কষ্ট করে আপনার বাড়িতে পদধূলি দিলেই তথ্যবিভ্রাট ঘটে না। কেন জানি মনে হচ্ছে, আদতে এই নামে কেউ নেই, রিপোর্টটা প্রথম আলোর ঢাকা অফিসের এসি রুমে বসে তৈরি করা, জোড়াতালি দিয়ে। আমি একসময় এক পত্রিকায় (নামটা উহ্য থাক) ছিলাম। পত্রিকাগুলোতে দু'-চারটে ভুতুড়ে লেখক থাকে, আমার জানা। আমাদের সেই পত্রিকায় একজন ছিলেন, যিনি স্বনামে তো বটেই, একইসঙ্গে একটা হিন্দু নাম, একটা খ্রিস্টান নাম, এমন কি একটা ফিমেল নামেও লিখতেন...হাহাহা।
করুণা হয় এদের প্রতি, তবু কৃতজ্ঞতা।
আমি তো আর হোজ্জা সাহেব না যে লিখে আবার গিয়ে পড়েও দিয়ে আসব। :)@Nahid
ঘটনাটা কি ঘটেছে আমি জানি না!
তবে আমি যেটা নোটিশ করেছি অধিকাংশ পত্রিকা অফিসের যে সমস্যটা- সেটা হচ্ছে, নিজেদের অর্জিত জ্ঞান নিয়ে অগাধ আস্থার অহংকার।
পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের প্রতি সীমাহীন তাচ্ছিল্য।
একটা পত্রিকা আমার সম্বন্ধে ছাপাল, 'আমি নাকি আঞ্চলিক পত্রিকার সঙ্গে জড়িত'।
খোদা জানে, এরা কোত্থেকে এই তথ্য পেল!
অথচ এরা আঞ্চলিক প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করলেই এটা অনায়াসে জেনে যেতে পারত। কিন্তু এটা এরা করবে না কারণ ব্রাক্ষ্ণণ শুদ্রের খেলা। আঞ্চলিক প্রতিনিধিরা হচ্ছেন শূদ্রের দলে।
আরেকটা সাপ্তাহিক ছাপাল, 'আমার নাকি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল দেশ-বিদেশে আমার বিপুল পাঠক থাকবে', ইত্যাদি ইত্যাদি।
শোনো কথা,আমি কি রাজনিতীবিদ যে ছোটবেলা থেকে দেশ স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখব!
এই কথাটা আমি তো দূরের কথা, আমার মরহুম পিতাও বলেছেন এমনটা শুনিনি! তবে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দেয়া চলে না। তিনি শেষনিঃশ্বাষ ত্যাগ করার পূর্বে যদি এই সাংবাদিক মহোদয়কে বলে গিয়ে থাকেন, হয়তো তখন আমি ওষুধ কেনার জন্য নীচে গিয়েছিলাম।
এরাই আমাদের বিবেক! আমরা তো আবার ছাপার অক্ষরে যা পড়ি তাই বিশ্বাস করি। বেদবাক্য আর কী! @সুব্রত
আমাদের সাংবাদিক ও পত্রিকাগুলো সত্যিই অসাধারণ। অযোগ্য, দায়িত্বহীন আর অল্পশিক্ষিত লোকের সমাহার। কবে যে আমরা সুদিনের মুখ দেখব !!!
কেবল এদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এটা এখন আমাদের কালচার হয়ে গেছে, কত অল্প পরিশ্রমে কাজ সেরে ফেলা যায়। সেটা অর্থ উপার্জন হোক বা তথ্য বিক্রি...। @Anonymous
Post a Comment