'ন্যানো ক্রেডিট' [১] নিয়ে যখন আমি কাজ শুরু করেছিলাম তখন অনেকে ঠোঁট গোল করে বলেছিলেন, ফুঃ!
তাদের এই ভঙ্গির কোডটা শব্দে রূপান্তর করলে যেটা দাঁড়ায় সেটা হচ্ছে, 'এই উদ্যোগ ভেস্তে যাবে'। আরে শ্লা, কি হাতি-ঘোড়া নিয়ে ভেগে যাবে?
এই আমাদের একটা ঢং হয়েছে, পশ্চাদদেশ উত্তোলন না-করেই আমরা কী অবলীলায়ই না বকে যাই, বকবক-বকবক-বকবক, চিঁ হিঁ হিঁ- হর্স মাউথ!
রাস্তায় কলার খোসাটা কেন সরকার এসে সরিয়ে দিচ্ছে না এই নিয়ে কাছা মেরে অনলবর্ষন না করলে আমাদের চলে-ই না।
ক্ষুদ্র ব্যবসা করার জন্য ন্যানো ক্রেডিটের নামে যে টাকা দেয়া হয় তা চাইলেই দিয়ে দেয়া হয় এমনটা না। যথেষ্ঠ খোঁজ-খবর নিয়েই দেয়া হয়। পূর্বেও উল্লেখ করেছিলাম, আমার পায়ের নীচে সর্ষে। মাইলের পর মাইল লম্বা-লম্বা পা ফেলে হেঁটে যেতে আমার কোন ক্লান্তি নাই!
টাকা নেয়ার জন্য একজন এসেছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেল এর কাজ হচ্ছে গাঁজা খাওয়া, কেউ কখনও একে কোন কাজ করতে দেখেনি। পরে আমি একে বলেছিলাম, কিসের ব্যবসার জন্য টাকা চাচ্ছেন, গাঁজা? এরপর থেকে মানুষটার চেহারা মোবারক আর দেখিনি।
মন মিয়া হচ্ছেন ন্যানো ক্রেডিটের সুবিধা নেয়া প্রথম ব্যক্তি- ব্যবসার জন্য তাঁকে ১০০০ টাকা দেয়া হয়েছিল। প্রতিদিন দশ-বিশ টাকা করে নিয়ম করে জমা দিয়েছেন, কখনও ব্যতিক্রম হয়নি। আজ তাঁর ১০০০ টাকা শোধ হলো।
ইতিমধ্যে তিনি কিছু পুঁজিও জমিয়ে ফেলেছেন। ব্যবসা আরও বাড়াবেন বিধায় আজই তাঁকে ২০০০ টাকা হয়েছে। এখন প্রতিদিন তাঁর কথামতে, ২০/ ৩০ টাকা করে জমা দেবেন।
প্রথম হিসাবে এই মানুষটা একটা পুরষ্কারও পাওনা হোন। ভাবছি, কি দিলে মানুষটা খুশি হবেন? আমি লক্ষ করেছি, চকচকে শার্টের সঙ্গে ইনি যে লুঙিটা পড়েন এটা বেমানান, মলিন। একটা লুঙি দিলে মন্দ হয় না...।
মন মিয়া নামের এই মানুষটা কেবল একজন বিজেতাই নন, তিনি আমাকে তাঁর পেছনে দাঁড়াবার জন্য খানিকটা জায়গাও করে দিয়েছেন। একজন বিজেতার বিজয় কাতারের পেছনে আমিও একজন এটা ভাবলেই মনটা অন্য রকম হয়। একজন বিজেতার সঙ্গে দাঁড়াবার যে সুখ তা স... ব্যতীত অন্যত্র কোথায়!
সহায়ক লিংক:
১. ন্যানো ক্রেডিট: http://tinyurl.com/39dkbhh
২. মন মিয়া: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_4248.html
2 comments:
মন মিয়াকে প্রাণঢালা অভিনন্দন ... একবার শোধ করার পর আবার বেশী করে লোন দিয়ে উৎসাহিত করার ব্যাপারটা চমৎকার আইডিয়া ... ন্যানোক্রেডিট প্রকল্পের প্রতি শুভকামনা থাকলো
:) @muquit
Post a Comment