Search

Tuesday, November 23, 2010

হরতাল মানি, তবে...

যা বলেছিলাম, হরতাল নামের পশুটা এগিয়ে আসছে গুটিগুটি পায়ে [১]। এটা টের পাওয়ার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হতে হয় না, পশুটার গায়ের গন্ধই বিলক্ষণ বলে দেয়!
তবলার ঠুকঠাক শেষ হয়েছে, যথারীতি ৩০ নভেম্বর হরতাল ডাকা হয়েছে। না দিয়ে উপায় কি, জনগণ নাকি চাচ্ছে! জনগণ নাকি স্বইচ্ছায় হরতাল কামনা করেন, নিজেরাই নিজেদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন, মহা আনন্দে সাধের গাড়িটা গুড়িয়ে দেন।
কালে কালে এই হরতাল দেয়া হবে বৃহস্পতিবারে কারণ শুক্র-শনি এমনিতেই সরকারী ছুটি। হরতালের লম্বা ছুটিতে অনেকে যেন চুটিয়ে দেদারসে বাচ্চা পয়দা করে দেশ উদ্ধার করতে পারেন এই জন্যে। দেশের জন্য কী ভাবনা আমাদের ন্যাতাদের!

তদুপরি আমি নির্বোধ পূর্বের লেখায় লিখেছিলাম, হরতাল আমি মানি না। এই কারণে গণতন্ত্রের কি বেহাল দশা হলো এই নিয়ে নতুন করে আলোচনায় যেতেও চাচ্ছি না।
আমি এও লিখেছিলাম, হরতাল এই দেশের সমস্ত মানুষ মেনে নিলেও এই ভয়াবহ অন্যায়, ন্যায় হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি না।
এই দেশের সুশীলদের স্বর এই একটা জায়গায় এসে এমন নিম্নে ধাবিত হয় যে তাদের হর্স-মাউথ চিঁ-হিহি রব থেকে ইঁদুরের চিঁচি রব হয়ে যায়। সম্ভবত এদের মস্তিষ্কও নিম্নে ধাবিত হয়- নিম্নে না পেছনে সেই আলোচনায় গিয়ে মূল প্রসঙ্গ থেকে এখন আর সরে যাই না।
তো, এই দেশের সাদা গোঁফঅলা সুশীলরা সবাই মেনে গেলে আমার মত কুশীল না মানলে কী আসে যায়! স্রোতের প্রতিকূলে গিয়ে তো লাভ নাই তাছাড়া এই সব সুশীলরা আমাদের ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করেন আমাদেরকে ভাবান। তিন টাকা দামের কলমবাজ, আমারও না ভেবে উপায় কি?

আইন করে হরতাল বন্ধ করা হবে না কারণ বর্তমান সরকার এই অস্ত্রটা রেখে দেবে। বর্তমান সরকার যখন বিরোধী দলে থাকবেন তখন তাঁদেরও এই হরতাল নামের ক্রাচের প্রয়োজন হবে। আমাদের রাজনীতিবিদদের পা বড়ো দুর্বল-বিকলাঙ্গ, ক্রাচ ব্যতীত হাঁটার কথা ভাবাই যায় না।
এখন নিরুপায় আমিও ভাবছি, হরতাল মেনে নেব। তবে ছোট্ট একটা শর্ত আছে, খুব ছোট্ট...।
ছবি ঋণ: প্রথম আলো
এই ছবিটা প্রথম আলোয় ছাপা হয়েছিল। ছবিটা উঠিয়েছেন সম্ভবত মতি ভাইয়া নিজেই। মানুষটা লাজুক, নিজের নাম ছাপার অক্ষরে দেখতে চান না বিধায় আলোকচিত্রির জায়গায় ছাপা হয়েছে কেবল প্রথম আলো। এরা নিজেরা বদলাবে না। এই নিয়ে বিস্তর লিখেছি [২] আর শব্দের অপচয় করার কোন মানে হয় না। এই অহংকারী মিডিয়া ভুলে যায় এই গ্রহে ডায়নোসর নাই, রাশিয়া নাই...।

মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। গত হরতালের পরের ছবি এটা। এই ছবিটায় যে ভদ্রমহিলা ছাদে উঠার চেষ্টা করছেন তা খুব সহজই তো মনে হচ্ছে। আমার ছোট্ট আবদার হচ্ছে, যারা হরতাল দেবেন তাঁরা এভাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনে ভ্রমণ করবেন, এরপর ফিরে এসে হরতাল ঘোষণা করবেন। খালেদা জিয়ার পায়ে সমস্যা আছে এই দোহাই দিয়ে হয়তো তিনি ছাদে উঠা থেকে পার পেয়ে যাবেন কিন্তু দেলোয়ার সাহেব? তাকে তো খানিকটা কষ্ট করে এভাবে ট্রেনের ছাদে উঠে দেখাতে হবে। এই বয়স্ক ভদ্রমহিলা পারলে তিনি পারবেন না কেন? দেলোয়ার সাহেব পারবেন বলেই আমার প্রবল আশা।
আর না পারলে আমি আগের কথাতেই অটল, হরতাল আমি মানি না। হরতালে আমি ঘুরে বেড়াব, পারলে ঠেকান।

সহায়ক লিংক:
১. হরতাল নামের পশুটা: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_20.html
২. প-তে পাকস্থলী, প-তে প্রথম আলো: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_07.html

2 comments:

Omio Ujjal said...

আলী ভাই আপনি না হয় ঘুরে বেড়াবেন , দু পায়ে ভর করে।কিন্তু ঢাকার একজন সি এন জি অলা কি করে ঘুরে বেরাবেন? রাস্তা ঘাটে মানুষ নেই বলে বিক্রি হবে না পেপার,পানি্‌,ফুল কিংবা পপকরন। কি হবে ওদের ?

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

"...আলী ভাই আপনি না হয় ঘুরে বেড়াবেন, দু পায়ে ভর করে।..."
দু পা...! সবেধন নীলমনি দুই পা, হরতালে দু-পা কেউ ভেঙ্গে দিলে আটকাচ্ছে কে!

"...কিন্তু ঢাকার একজন সি এন জি অলা কি করে ঘুরে বেরাবেন? ...বিক্রি হবে না পেপার,পানি্‌,ফুল কিংবা পপকরন। কি হবে ওদের ?
আমি সামান্য একজন মানুষ, সীমিত আমার ক্ষমতা, তারচেয়েও সীমিত আমার ভাবনা।
আপনার এই প্রশ্নের ভাল উত্তর দিতে পারবেন আমাদের দেশের সুশীল নামের সাদা গোঁফঅলা লোকজনরা, যারা আমাদের ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করেন, দেশ নিয়ে ভাবনায় এদের ক্লান্তি নেই। দেশের জন্য ভাবতে ভাবতে এদের নিজের অন্তর্বাস ভিজে প্রায়শ ঠান্ডা লেগে থাকে এদের, বেচারাদের বুড়ো হাড়ে এ বড়ো অত্যাচার...। @Omio Ujjal