এবারের স্বাধীনতা দিবসে স্কুল [০] নিয়ে অনুষ্ঠান করার আমার ইচ্ছা ছিল না এটা বলব না কিন্তু অন্য রকম জটিলতা ছিল। আর্থিক! এই কার্যক্রমগুলোর জন্য যে পড়শী ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যেত সেটার উৎস বন্ধ! এর দায় আমার উপরই বর্তায় কারণ আমার নিজস্ব ভাবনার কারণে আমি নিজেই এদের কাছ থেকে বিযুক্ত হয়ে গেছি- যুক্ত থাকতে চাইনি।
কিন্তু এবারের স্বাধীনতা দিবসে দুজন ডাক্তার যখন বিনে পয়সায় চিকিৎসাসেবা দেয়ার তীব্র ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন তখন মনে হলো কোন অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া করা চলে না। দুজন ডাক্তারের মধ্যে একজনের আবার অহেতুক কিছু শর্ত ছিল যেমন তিনি কোন ক্লিনিক, প্যাথলজিতে বসে রোগী দেখবেন না। এখন বাইরে কোথায় রোগি দেখার ব্যবস্থা করি? বাধ্য হয়ে স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে অনুষ্ঠানটার আয়োজন করতেই হলো। আর্থিক সহায়তার জন্য অন্যত্র হাত বাড়াতে হলো। 'রূপালী মেডিকেল' নামের একটি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলো। অবশ্য আগেই এদেরকে এটা বলে নেয়া হয়েছিল এদের সহায়তা নেয়ার কারণে কোন ধরনের বাড়তি সুবিধা দেয়া যাবে না বরং মুক্তিযোদ্ধা এবং অসহায় রোগীর প্রয়োজন হলে এঁরা বিনে পয়সায় টেস্ট করে দেবেন। তাতে এঁরা আপত্তি করেননি। এদেঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা।
কাজে নেমে সে এক হ্যাপা! বাচ্চারা যেখানে বসে ছবি আঁকবে সেখানে ওইসময়ে গনগনে রোদ থাকার কথা। তো, লাগাও সামিয়ানা। বাচ্চাদের পরিবারের লোকজনরা আসবেন এদের জন্য বসার চেয়ার ডেকোরেটর থেকে নিতে হবে। বাড়ছে খরচ। আমার মুখ ক্রমশ অন্ধকার হচ্ছিল। একে তো ফান্ড নেই তার উপর একের-পর-এক খরচ বাড়ছিল।
এবার আবার বাচ্চাদের ছবি আঁকার সঙ্গে যোগ হয়েছিল 'বর্ণ লিখন'। এই আইডিয়াটা আমি পেয়েছিলাম 'কারক নাট্য সম্প্রদায়'[১]-এর কাছ থেকে। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
এবারের অতিথিদের মধ্যে নৌ-কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়া [২]-এর সঙ্গে রাখা হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা মুখলেছুর রহমান [৩]। যিনি বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এই মানুষটাকে নিয়ে ডয়চে ভেলে থেকেও প্রতিবেদন এবং রেডিও সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছিল। অবশ্য অসুস্থতার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। মন খারাপ হয়েছিল। আহারে, বাচ্চারা তাঁর মুখ থেকে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা জানা থেকে বঞ্চিত হলো।
কোত্থেকে খবর পেয়ে জাতীয় দৈনিকগুলোর কয়েকজন স্থানীয় সংবাদদাতারাও চলে এসেছিলেন। এঁদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি কিন্তু ...আমি এঁদের দেখে হাসি গোপন করলাম। আমার হাসির অর্থ আর বলিনি তাহলে সত্য কথাটাই বলতে হতো। আপনারা যে এসেছেন, ভালো কিন্তু আপনাদের পাঠানো নিউজ তো পত্রিকায় ছাপা হবে না- কারণ এই সমস্ত খবর ছাপাবার সময় পত্রিকাওয়ালাদের কোথায়! আপনাদের আবেগ দেখে আগাম হেসে ফেলেছি, এজন্য দুঃখ প্রকাশ করি।
সমস্ত যন্ত্রণার কথা বাদ দিলেও আমার আনন্দের শেষ নেই কারণ আমাকে বলা হয়েছিল এরকম ফ্রি চিকিৎসাসেবায় লোকজনরা তেমন আসেন না। কিন্তু আমার খানিকটা আস্থা ছিল এই জন্য অন্তত স্কুলের বাচ্চাদের পরিবার-পরিজনদের চিকিৎসা করলেও তো একটা কাজের কাজ হয়ে যায়। বাস্তবে তাই হয়েছিল, ডাক্তাররা ৬১জন রোগি দেখেছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে খাটো করি না...।
সহায়ক সূত্র:
০. স্কুল...: http://tinyurl.com/39egrtn
১. কারক নাট্য সম্প্রদায়: http://www.ali-mahmed.com/2011/03/blog-post_4936.html
২. নৌ-কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়া: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_22.html
৩. মুখলেছুর রহমান: http://www.ali-mahmed.com/2011/03/blog-post_843.html
৪. মুখলেছুর রহমান, ডয়চে ভেলে, প্রতিবেদন: http://www.dw-world.de/dw/article/0,,14898022,00.html
৫. মুখলেছুর রহমান, ডয়চে ভেলে, রেডিও সাক্ষাৎকার: http://bit.ly/fNl6UR
কিন্তু এবারের স্বাধীনতা দিবসে দুজন ডাক্তার যখন বিনে পয়সায় চিকিৎসাসেবা দেয়ার তীব্র ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন তখন মনে হলো কোন অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া করা চলে না। দুজন ডাক্তারের মধ্যে একজনের আবার অহেতুক কিছু শর্ত ছিল যেমন তিনি কোন ক্লিনিক, প্যাথলজিতে বসে রোগী দেখবেন না। এখন বাইরে কোথায় রোগি দেখার ব্যবস্থা করি? বাধ্য হয়ে স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে অনুষ্ঠানটার আয়োজন করতেই হলো। আর্থিক সহায়তার জন্য অন্যত্র হাত বাড়াতে হলো। 'রূপালী মেডিকেল' নামের একটি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলো। অবশ্য আগেই এদেরকে এটা বলে নেয়া হয়েছিল এদের সহায়তা নেয়ার কারণে কোন ধরনের বাড়তি সুবিধা দেয়া যাবে না বরং মুক্তিযোদ্ধা এবং অসহায় রোগীর প্রয়োজন হলে এঁরা বিনে পয়সায় টেস্ট করে দেবেন। তাতে এঁরা আপত্তি করেননি। এদেঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা।
কাজে নেমে সে এক হ্যাপা! বাচ্চারা যেখানে বসে ছবি আঁকবে সেখানে ওইসময়ে গনগনে রোদ থাকার কথা। তো, লাগাও সামিয়ানা। বাচ্চাদের পরিবারের লোকজনরা আসবেন এদের জন্য বসার চেয়ার ডেকোরেটর থেকে নিতে হবে। বাড়ছে খরচ। আমার মুখ ক্রমশ অন্ধকার হচ্ছিল। একে তো ফান্ড নেই তার উপর একের-পর-এক খরচ বাড়ছিল।
এবার আবার বাচ্চাদের ছবি আঁকার সঙ্গে যোগ হয়েছিল 'বর্ণ লিখন'। এই আইডিয়াটা আমি পেয়েছিলাম 'কারক নাট্য সম্প্রদায়'[১]-এর কাছ থেকে। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
এবারের অতিথিদের মধ্যে নৌ-কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়া [২]-এর সঙ্গে রাখা হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা মুখলেছুর রহমান [৩]। যিনি বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এই মানুষটাকে নিয়ে ডয়চে ভেলে থেকেও প্রতিবেদন এবং রেডিও সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছিল। অবশ্য অসুস্থতার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। মন খারাপ হয়েছিল। আহারে, বাচ্চারা তাঁর মুখ থেকে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা জানা থেকে বঞ্চিত হলো।
ছবি ঋণ: বাবু, মিশু, বাবলু |
কোত্থেকে খবর পেয়ে জাতীয় দৈনিকগুলোর কয়েকজন স্থানীয় সংবাদদাতারাও চলে এসেছিলেন। এঁদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি কিন্তু ...আমি এঁদের দেখে হাসি গোপন করলাম। আমার হাসির অর্থ আর বলিনি তাহলে সত্য কথাটাই বলতে হতো। আপনারা যে এসেছেন, ভালো কিন্তু আপনাদের পাঠানো নিউজ তো পত্রিকায় ছাপা হবে না- কারণ এই সমস্ত খবর ছাপাবার সময় পত্রিকাওয়ালাদের কোথায়! আপনাদের আবেগ দেখে আগাম হেসে ফেলেছি, এজন্য দুঃখ প্রকাশ করি।
সমস্ত যন্ত্রণার কথা বাদ দিলেও আমার আনন্দের শেষ নেই কারণ আমাকে বলা হয়েছিল এরকম ফ্রি চিকিৎসাসেবায় লোকজনরা তেমন আসেন না। কিন্তু আমার খানিকটা আস্থা ছিল এই জন্য অন্তত স্কুলের বাচ্চাদের পরিবার-পরিজনদের চিকিৎসা করলেও তো একটা কাজের কাজ হয়ে যায়। বাস্তবে তাই হয়েছিল, ডাক্তাররা ৬১জন রোগি দেখেছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে খাটো করি না...।
সহায়ক সূত্র:
০. স্কুল...: http://tinyurl.com/39egrtn
১. কারক নাট্য সম্প্রদায়: http://www.ali-mahmed.com/2011/03/blog-post_4936.html
২. নৌ-কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়া: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_22.html
৩. মুখলেছুর রহমান: http://www.ali-mahmed.com/2011/03/blog-post_843.html
৪. মুখলেছুর রহমান, ডয়চে ভেলে, প্রতিবেদন: http://www.dw-world.de/dw/article/0,,14898022,00.html
৫. মুখলেছুর রহমান, ডয়চে ভেলে, রেডিও সাক্ষাৎকার: http://bit.ly/fNl6UR
2 comments:
Ali bhai,
My cordial love for your school children. I hope they will grow up with love and respect for their country. My heartiest congratulations for your hard and sincere work for them.
:) @Dr. Rumi
Post a Comment