আজকের অতিথি Gulzar Hossain Ujjal, তিনি লিখেছেন ডাক্তারদের নিয়ে:
"খবরদার হাত দেবেন না। হাত সরান বলছি। হাত উপরে, উপরে। ভাল করে দেখতে দেন, নইলে চিকিৎসা নাই।
প্রায় পঞ্চাশ জন লোকের সামনে ভরা ওয়ার্ডে চলছে পঞ্চাশোর্ধ এক হার্নিয়ার রোগী দেখা। ডাক্তার সাহেব একজন সহকারী অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগের। অসহায় রোগীর সম্ভ্রম লুটিয়ে পড়ে মলিন লুঙ্গির সঙ্গে ওয়ার্ডের ততোধিক মলিন মেঝেতে।
হার্নিয়ার রোগীকে পরীক্ষা করার আগে রোগীর অনুমতি নেওয়া, রোগীর খানিকটা আড়ালের জন্য স্ক্রিন চাওয়ার সহবতটা কেবলি পরীক্ষা পাশের একটা টাস্ক মাত্র। এটা এখন বাস্তব জীবনে কাজে লাগানোর দরকার কি? তাই তাঁরা পরে এটা আর মনে রাখেন না।
আমাদের দেশের মেডিকেলের কারিকুলামটাই একটা বিরাট সমস্যা। আমি তো চরম হতাশ। এখানে মানবিক চিকিৎসক হয়ে ওঠার রসদ খুবই কম। তাই অনেকের কাছে চিকিৎসা বিজ্ঞান হয়ে ওঠে কেবলই একটি বৃত্তিমূলক শিক্ষা। সিস্টেমের সমস্যাও আছে। একধরনের নির্মম মানসিক অত্যাচারের ভেতর দিয়ে একজন চিকিৎসক তৈরী হন। অজান্তেই হয়তো তাদের ভেতরে তৈরী হয় একধরনের স্যাডিস্ট মানসিকতা। যার ফলেই হয়তো তারা এই পিতার বয়সি রোগীকে ধমকে কথা বলেন, হার্নিয়া পরীক্ষার সময় পঞ্চাশোর্ধ রোগীর লুঙ্গি ধরে টান দেওয়ার প্রেরণা পান।
আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও এখানে কিছু ভূমিকা রাখে বলে অনুমান করি। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর থেকেই একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট যেরকম প্রিভিলেজ পেতে শুরু করে তার পরিবার ও আশেপাশের মানুষের কাছে তাতে তার মানসিক বিকাশেও বাধার সৃষ্টি করে। এক ধরনের সুপার কমপ্লেক্সে ভূগতে থাকে এই সব হবু ডাক্তাররা। ডাক্তার হওয়ার পর তো আরও। ডাক্তার পরিচয়টি তার সামাজিক অবস্থানকে সুদৃঢ় করে। তাই হয়তো বিয়ের কার্ডেও নামের আগে ডাঃ লেখে অনেকে, লক্ষ্য করেছি।
অধিকাংশ ডাক্তার আসেন মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। শ্রেণী পরিবর্তনের স্বপ্ন আর বাবা মায়ের ব্যর্থতা পুষিয়ে নেওয়ার দায় কারো কারো জন্য ডাক্তার হওয়ার অনুপ্রেরণা যোগায়। তাই বরং রোগীকে দেওয়া ধমকটা তার শ্রেণীগত অবস্থানকে নিশ্চিত করে। শ্রেণী পীড়নের মর্ষকামী সুখটাও মেলে।
এদেশে ডাক্তার মানেই যেন ক্লিনিশিয়ান। মানে মেডিসিন, সার্জারী এইসব। জনস্বাস্থ্য, প্রিভেনটিভ মেডিসিন, মেডিকেল এডুকেশন বিশেষজ্ঞরা এদেশের চিকিৎসক সমাজের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। এরা যেন মূলস্রোতের বাইরের একেকজন হতাশার প্রতিমূর্তি। তাহলে এই শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করবে কারা?"
"খবরদার হাত দেবেন না। হাত সরান বলছি। হাত উপরে, উপরে। ভাল করে দেখতে দেন, নইলে চিকিৎসা নাই।
প্রায় পঞ্চাশ জন লোকের সামনে ভরা ওয়ার্ডে চলছে পঞ্চাশোর্ধ এক হার্নিয়ার রোগী দেখা। ডাক্তার সাহেব একজন সহকারী অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগের। অসহায় রোগীর সম্ভ্রম লুটিয়ে পড়ে মলিন লুঙ্গির সঙ্গে ওয়ার্ডের ততোধিক মলিন মেঝেতে।
হার্নিয়ার রোগীকে পরীক্ষা করার আগে রোগীর অনুমতি নেওয়া, রোগীর খানিকটা আড়ালের জন্য স্ক্রিন চাওয়ার সহবতটা কেবলি পরীক্ষা পাশের একটা টাস্ক মাত্র। এটা এখন বাস্তব জীবনে কাজে লাগানোর দরকার কি? তাই তাঁরা পরে এটা আর মনে রাখেন না।
আমাদের দেশের মেডিকেলের কারিকুলামটাই একটা বিরাট সমস্যা। আমি তো চরম হতাশ। এখানে মানবিক চিকিৎসক হয়ে ওঠার রসদ খুবই কম। তাই অনেকের কাছে চিকিৎসা বিজ্ঞান হয়ে ওঠে কেবলই একটি বৃত্তিমূলক শিক্ষা। সিস্টেমের সমস্যাও আছে। একধরনের নির্মম মানসিক অত্যাচারের ভেতর দিয়ে একজন চিকিৎসক তৈরী হন। অজান্তেই হয়তো তাদের ভেতরে তৈরী হয় একধরনের স্যাডিস্ট মানসিকতা। যার ফলেই হয়তো তারা এই পিতার বয়সি রোগীকে ধমকে কথা বলেন, হার্নিয়া পরীক্ষার সময় পঞ্চাশোর্ধ রোগীর লুঙ্গি ধরে টান দেওয়ার প্রেরণা পান।
আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও এখানে কিছু ভূমিকা রাখে বলে অনুমান করি। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর থেকেই একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট যেরকম প্রিভিলেজ পেতে শুরু করে তার পরিবার ও আশেপাশের মানুষের কাছে তাতে তার মানসিক বিকাশেও বাধার সৃষ্টি করে। এক ধরনের সুপার কমপ্লেক্সে ভূগতে থাকে এই সব হবু ডাক্তাররা। ডাক্তার হওয়ার পর তো আরও। ডাক্তার পরিচয়টি তার সামাজিক অবস্থানকে সুদৃঢ় করে। তাই হয়তো বিয়ের কার্ডেও নামের আগে ডাঃ লেখে অনেকে, লক্ষ্য করেছি।
অধিকাংশ ডাক্তার আসেন মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। শ্রেণী পরিবর্তনের স্বপ্ন আর বাবা মায়ের ব্যর্থতা পুষিয়ে নেওয়ার দায় কারো কারো জন্য ডাক্তার হওয়ার অনুপ্রেরণা যোগায়। তাই বরং রোগীকে দেওয়া ধমকটা তার শ্রেণীগত অবস্থানকে নিশ্চিত করে। শ্রেণী পীড়নের মর্ষকামী সুখটাও মেলে।
এদেশে ডাক্তার মানেই যেন ক্লিনিশিয়ান। মানে মেডিসিন, সার্জারী এইসব। জনস্বাস্থ্য, প্রিভেনটিভ মেডিসিন, মেডিকেল এডুকেশন বিশেষজ্ঞরা এদেশের চিকিৎসক সমাজের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। এরা যেন মূলস্রোতের বাইরের একেকজন হতাশার প্রতিমূর্তি। তাহলে এই শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করবে কারা?"
No comments:
Post a Comment