এটা জাঁক করে বলতে পারলে আমার চেয়ে কেউ সুখি হতো না, এই দেশের মত সোনার দেশ এই গ্রহে আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নাই! আফসোস, বাস্তবতা ভিন্ন। কেবল কিছু রঙিন চশমাপরা সাদা গোঁফের লেখক টাইপের লোকজনরা বড়ো আশাবাদী- এই দেশের লোকজনরাই দেখিয়ে দেবে ইত্যাদি। আশাবাদী হতো দোষ নেই কিন্তু দিনকে রাত মনে করে বালিতে মুখ গুঁজে থাকা কাজের কাজ না!
আমাদের এই অভাগা দেশটার কী করূণ দশা এটা
সম্ভবত আমরা পুরোপুরি কল্পনা করতে পারছি না। এটা এখন শবসম- ফরমালিনে চুবিয়ে রাখা, যেকোনও মুহূর্তে পচে গন্ধ ছড়াবে। আমার কেন যেন মনে হচ্ছে আমরা একেকটা রোবট হয়ে বেড়ে উঠছি! আমাদের শিক্ষায় কোথায় যেন বড়ো ধরনের একটা গলদ আছে- সেটা পুঁথিগত, ধর্মীয় শিক্ষা হোক বা পারিবারিক, সামাজিক শিক্ষা...।
এটা আপাতত দৃষ্টিতে অতি সাধারণ একটা ইটের টুকরো। কিন্তু কী অসাধারণ! এই একটা ইটের টুকরো উম্মোচিত করে, অনেকাংশে- একটা দেশ, একটা জাতিকে। আমাদের মতো লম্বা-লম্বা বাতচিত করা লোকজনের স্বরূপকেও!
ব্যস্ত এই রাস্তায় পড়ে ছিল ইটের এই টুকরোটা। ওই গাছটার মত [১] কী এও অপেক্ষায় ছিল কেউ সাথে করে না-নিয়ে যাক অন্তত সরিয়ে রাখবে?
ছাগলের কাছে কারও খুব একটা চাওয়ার কিছু ছিল না।
হয়তো এরও কাছে চাওয়ার কিছু নাই, অল্পবয়সি ছোকরা যে!
আমাদের এই প্রজন্ম! কেমন উন্নত মস্তকে এ হেঁটে চলে যায়! বল বীর, উন্নত মম...।
জানু ছাড়িয়ে যাওয়া পাঞ্জাবিও হেঁটে যান সদর্পে!
শিশুর পিতা? এর মনেও এই ভাবনা আসেনি, আহারে, কার বাচ্চা যে আবার এতে হোঁচট খায়!
নারী! মমতাময়ী মা, তাঁরও একটিবারের জন্যও মনে হয়নি!
ধর্মভীরু এই মানুষটাও হেঁটে হেঁটে চলে যান! পেছনে পড়ে থাকে ইটের টুকরো...।
এই মানুষটার মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে গেছে কিন্তু এঁর মধ্যে এখনও এই বোধ কাজ করেনি এই ইটের টুকরোটা একপাশে সরিয়ে রাখা প্রয়োজন। ইনি আর কবে শিখবেন? নাকি শেখার কোন শেষ নাই, শেখার জন্য বয়সটা আসলে মূখ্য না! নাকি কবরে এক পা দিয়ে অন্য পা নাচিয়ে দিব্যি গান গাওয়া যায়, 'বারান্দায় রোদ্দুর আমি আরাম কেদারায় বসে দু-পা নাচাই রে, এ-এ-এ'।
সময় গড়ায়। শত-শত মানুষ হেঁটে গেলেন। ইটের টুকরোটায় কেউ হোঁচট খেলেন, কেউ পাশ কাটিয়ে গেলেন, কেউবা টপকালেন অথচ কেউ এটাকে সরিয়ে ফেলতে হবে এই ভাবাভাবিতে গেলেন না! কেন গেলেন না? খুব জটিল কোন কাজ ছিল না এটা, অন্তত লাথি মেরেও এটাকে একপাশে সরিয়ে ফেলা যেত। অথচ এই মানুষগুলোই দেশ নিয়ে ভাবতে ভাবতে রাত ভোর করে দেন। জটিল-জটিল কথা বলার জন্য মুখ হাঁ করে রাখেন। নেকি-সোয়াব এই সব নিয়ে বলে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন।
এখানেই শেষ হয় একটি ইটের টুকরোর আত্মকাহিনী এবং শুরু হয় একটি দেশের আত্মকাহিনী। প্রত্যেকটা কাহিনীর একটা উপসংহার থাকে। কেউ-কেউ এখানে এই লেখায় এই লাইনটা খোঁজার চেষ্টা করবেন, "অবশেষে ইটের টুকরোটা আমি (তিন টাকা দামের কলমবাজ) সরিয়ে দিলুম। ইহার পর সবাই সুখে-শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল"।
পাগল, বৃথা সেই চেষ্টা- আমার কাছে এমন আশা করাটা বাতুলতা মাত্র! আমিও যে এই দেশেরই একজন, এই সিস্টেমে, ভুল শিক্ষায় গড়ে উঠা একজন মানুষ...।
সহায়ক সূত্র:
১. গাছটার কেবলই কান্না পায়: http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post_1608.html
10 comments:
Desh tar jonno kaboli kanna pae
আমারও :( @Anonymous
শুভদা', হার্টবিট মিস হয়ে গেল একটা!
etokhon dhairjo nie ai dhrishow goli dekhar jonno apnake dhannobadh
আপনার ব্লগের আশি পারসেন্ট পোস্ট আমি পড়ে ফেলেছি। এতোদিন ব্লগারে একাউন্ট ছিল না বলে কমেন্ট করতে পারিনি।আপনার পোস্ট গুলো আমাকে কখনো হাসিয়েছে কখনো কাঁদিয়েছে আবার কখনো বা তীব্র ক্ষোভের অস্বস্তিতে ফেলেছে...
আমার খুব ইচ্ছে আপনাকে দেখার, আপনার কর্মকান্ড গুলো দেখা, আপনার ইশকুল গুলোর যে কোন একটাতে অন্তত একঘন্টা মুগ্ধ হয়ে বসে থাকা...
প্রথমদিনেই ব্যাপক বকবকিয়ে ফেললাম, ছরি!
জেনে ভাল লাগছে এই দেশে এখনও কিছু লোকজন আছেন যাদের হার্ট আছে এবং দুয়েকটা বিটও মিস হয় :) © ডিউক জন
:D @Ujjal
"আপনার ব্লগের আশি পারসেন্ট পোস্ট আমি পড়ে ফেলেছি।"
কী সর্বনাশ, বলেন কী!
অতি সাধারণ একজনের জন্য আপনার এই অনুভূতি জানিয়ে বিপদে ফেললেন। কেমন লজ্জা-লজ্জা লাগছে...।
তবে এও সত্য, আমার জাগতিক সমস্যায় কাল মনটা ভার বিষণ্ণ। যখন আপনার এই মন্তব্য পড়ছি তখন আমার বিষণ্নতা কোথায় উবে গেল টেরটিও পেলাম না!
মাঝে-মাঝে লেখা-টেখা ছেড়েছুঁড়ে দিতে ইচ্ছা করে, কী হয় এই সব লিখে-টিখে? কিন্তু আজকের মত এটাও মনে হয়, নাহ, লিখতে হবে :)।
আপনার যখন ইচ্ছা করবে আমাকে একটু জানিয়ে চলে আসবেন, কোন সমস্যা নেই।
ali.mahmed1971@gmail.com
যোগাযোগের জন্য মেইলটা থাকল @আশরাফুল আলম
আইজ্জা বান্দর আপনের এই পোস্ট নিয়া লেখা দিছে, দেখছেন? এই হালা বান্দরের লেখার আমি ফ্যান আছিলাম কিন্তুক এহন হালার মাথা পুরা আউলা। এই হালার অখন পেট ভরা হিংসা আপনের এই পোস্ট নিয়া ক্যারিকেচারটা দেইখা বুঝলাম
http://www.amarblog.com/doctor/posts/132916 একটি আইজুদ্দিনের বাল ছাল এনালাইসিস
সো পাঠক কি বুঝলেন। দেশ এবং জাতি এ ইটের টুকরোর হাতে ছিল বন্দি। শুধু মাত্র আলি মাহমেদের সুশীল এবং বুদ্ধিজীবি ছিল বলে দেশ এবং জাতি এ ইটের টুকরোর হাত থেকে মুক্তি পাইসে। এড়ার সবাই ইটের টুকরোর সামনে দিয়া হাইটা গেছে মাগার ইটের টুকরো সরায় নাই সরাইসে আমগো আলী মাহমেদ। জিন্দাবাদ আলী মাহমেদ। তবে মামদো ভূত ইট সরানির আগে ঘন্টা দুয়েক বা এক বইসা বইসা তামসা দেখসেন। ১৫০,০০০ পয়সার কেমেরায় ছবি তুলসেন ছাগুলে ইট সরায় নাকি, বাচ্চায় সরায় নাকি, বুড়ায় সরায় নাকি? তারপর যখন একখান লেখার মেটেরিয়াল কালেকট হইলো আমগো বুবস জয়ী আলী আহমেদ ইটের টুকরা সরাইসে তার আগে বইসা বইসা তামশার ছবি লইসেন। তারপর একসময় যখন দেশ এবং জাতির সেবা করনের ইচ্ছা হইসে ইটের টুকরা সরাইয়া নিজের ব্লগ সাইটে বিশাল লেকা দিসেন। কইসেন দেকেন ভাই দেশ এবং জাতি কি অসহায়? কি তন্চক? কি দুর্বল? কি রকম ৪২০? একটা ইটের টুকরা সরায় নাই- আমি আলী মাহমেদ বুবস বিজয়ী হতে পারি কিন্তু মাটিতে নাইমা আসছি তারপর ইটের টুকরা সরাইসি। তিন টাকা দামের কলমবাজ আলী মাহমেদ দেশ এবং জাতি নিয়া শুধু শুকনা কথা বলিনা, রাত ভোর করে দিনা। আমি আলী মাহমেদ ইটের টুকরোতে ভীত না।
অবস্য আমগো ভুদ্বজীবিরা ভিন্ন রকমের মানুষ। যখন রোম পড়ে তকন তারা বাশী বাজান। যখন একখান সমস্যা আসে তকন বুদ্ধিজীবিরা আলুছনায় বেস্ত থাকেন তারপর একসময় তাদের তামশা দেকন শেষ হয় তারপর তিনারা আমগো জনগনকে ইট তুন মুক্তি দেন। আমরা আহলাদিতে হই সে মুক্তিতে। তারপর বুদ্ধিজীবিরা সাত খন্ড রামায়ন নেকেন- তারা বলেন বুদ্ধিজীবিরাই রাম আর বাকী সব রাবন। আমরা বাল ছালরা পইড়া বলি সীতা কার বাফ? আমি দেশ নিয়ে মুকে ফেনা তুলিনা- আমি ইটের টুকরো তুলি তবে ইটের টুকরো তুলার আগে ২-৩ ঘন্টা বসে বসে ছবি নেই- যাতে আলী মাহমেদের অসামান্যতা প্রমান হয়।
আলী মাহমেদ অসামান্য। তিনি ইটের টুকরো সরাইসেন এবং সরানো আগে ছবি তুলসেন। তাই জিন্দাবাদ আলি মাহমেদ।
Post a Comment