সরকারের কিছু কিছু বিষয় আমরা দেখেও না দেখার ভান করি। বিড়বিড় করে বলি, যাক, আচ্ছা যাক...। তেমনি একটা ঘটনা ছিল ভ্রাম্যমান আদালত। যিনি হরতালে, নাশকতা চালাবার সময় সন্ত্রাসীকে হাতে-নাতে ধরবেন, তৎক্ষণাৎ আইনের আওতায় শাস্তি দেবেন।
একজন হরতাল বলামাত্র গোটা দেশটার চাকা
চারকোনা হয়ে যাবে, কেউ গান-পাউডার দিয়ে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেবে, চড়চড় করে চামড়া পুড়তে থাকবে, চোখের সামনে শেষ হয়ে যাবে জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে কেনা বাস, এটা তো দিনের-পর-দিন চলতে পারে না! এই সব দানবদের, 'বিদ্যুজ্জিহ্ব'-রাক্ষসদের আটকাতে হবে। আমি বুঝি না, হরতাল ঠেকাবার নাটক করার আদৌ প্রয়োজন কি কারণ হরতাল বন্ধ করার জন্য কারও কোন আগ্রহ নেই। না সরকারী দলের, না বিরোধীদলের!
মির্জা ফখরুল বলেছেন, 'বিএনপি প্রয়োজনে সাত দিনের হরতাল দেবে' । কীসব ডায়লগ! এঁদের কথাবার্তা শুনে মনে হয় দেশটার এঁদের তালুক!
আজ শেখ হাসিনা হরতাল নিয়ে যে কাতরতা দেখাচ্ছেন, কেন এই হরতাল- কেন এই হরতাল, ওগো কেন এই হরতাল, তা অর্থহীন কারণ এই শেখ হাসিনাই হরতাল ডেকে বিদেশ চলে গেছেন। আওয়ামিলীগ গভীর রাতেও হরতাল ঘোষণা করেছে। পরদিন যথারীতি বাচ্চারা স্কুলে গিয়েছিল। অভিভাবকেরা যখন ক্রমশ হরতালের বিষয়ে অবগত হয়েছেন তখন সীমাহীন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। এই যে শুক্র-শনি, দুদিন ছুটির পরই হরতাল দেয়ার বুদ্ধিটা, এটা বিএনপি শিখেছে আওয়ামীলীগের কাছ থেকে। কী একেকজন দেশদরদী রে! একজন আবার অন্যজনকে দোষারোপ করে- এখানে ওই প্রবাদ মনে পড়ে, 'এক বুড়ি আরেক বুড়ি রে কয় নানীশাশুড়ি'!
আইন করে হরতাল নিষিদ্ধ এঁরা করবেন না কারণ এরা ভাল করেই জানেন ক্ষমতায় না-থাকলে এই আমাদেরকে জবাই করার জন্য এই ভোঁতা অস্ত্রটা এঁদের লাগবে। এতো ধড়পাকড়ের নাটক না করে যিনি হরতাল ডাকবেন তাকে গ্রেফতার করলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়।
যাক গে, জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেটকে যে আইন এই কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা দিয়েছে, ওই আইনে বলা হচ্ছে,
"মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিবার সময় কোনো ব্যাক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে গৃহীত হইবার পরই মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সংক্ষিপ্ত অভিযোগ লিখিতভাবে গঠন করিয়া তা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠ বা ব্যাখ্যা করিয়া শুনাইবেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি গঠিত অভিযোগ স্বীকার করেন কি না, তাহা জানিতে চাহিবেন। অস্বীকার করিলে তিনি কেন স্বীকার করেন না উহার বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানিতে চাহিবেন।"
একজন হরতাল বলামাত্র গোটা দেশটার চাকা
চারকোনা হয়ে যাবে, কেউ গান-পাউডার দিয়ে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেবে, চড়চড় করে চামড়া পুড়তে থাকবে, চোখের সামনে শেষ হয়ে যাবে জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে কেনা বাস, এটা তো দিনের-পর-দিন চলতে পারে না! এই সব দানবদের, 'বিদ্যুজ্জিহ্ব'-রাক্ষসদের আটকাতে হবে। আমি বুঝি না, হরতাল ঠেকাবার নাটক করার আদৌ প্রয়োজন কি কারণ হরতাল বন্ধ করার জন্য কারও কোন আগ্রহ নেই। না সরকারী দলের, না বিরোধীদলের!
মির্জা ফখরুল বলেছেন, 'বিএনপি প্রয়োজনে সাত দিনের হরতাল দেবে' । কীসব ডায়লগ! এঁদের কথাবার্তা শুনে মনে হয় দেশটার এঁদের তালুক!
আজ শেখ হাসিনা হরতাল নিয়ে যে কাতরতা দেখাচ্ছেন, কেন এই হরতাল- কেন এই হরতাল, ওগো কেন এই হরতাল, তা অর্থহীন কারণ এই শেখ হাসিনাই হরতাল ডেকে বিদেশ চলে গেছেন। আওয়ামিলীগ গভীর রাতেও হরতাল ঘোষণা করেছে। পরদিন যথারীতি বাচ্চারা স্কুলে গিয়েছিল। অভিভাবকেরা যখন ক্রমশ হরতালের বিষয়ে অবগত হয়েছেন তখন সীমাহীন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। এই যে শুক্র-শনি, দুদিন ছুটির পরই হরতাল দেয়ার বুদ্ধিটা, এটা বিএনপি শিখেছে আওয়ামীলীগের কাছ থেকে। কী একেকজন দেশদরদী রে! একজন আবার অন্যজনকে দোষারোপ করে- এখানে ওই প্রবাদ মনে পড়ে, 'এক বুড়ি আরেক বুড়ি রে কয় নানীশাশুড়ি'!
আইন করে হরতাল নিষিদ্ধ এঁরা করবেন না কারণ এরা ভাল করেই জানেন ক্ষমতায় না-থাকলে এই আমাদেরকে জবাই করার জন্য এই ভোঁতা অস্ত্রটা এঁদের লাগবে। এতো ধড়পাকড়ের নাটক না করে যিনি হরতাল ডাকবেন তাকে গ্রেফতার করলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়।
যাক গে, জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেটকে যে আইন এই কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা দিয়েছে, ওই আইনে বলা হচ্ছে,
"মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিবার সময় কোনো ব্যাক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে গৃহীত হইবার পরই মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সংক্ষিপ্ত অভিযোগ লিখিতভাবে গঠন করিয়া তা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠ বা ব্যাখ্যা করিয়া শুনাইবেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি গঠিত অভিযোগ স্বীকার করেন কি না, তাহা জানিতে চাহিবেন। অস্বীকার করিলে তিনি কেন স্বীকার করেন না উহার বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানিতে চাহিবেন।"
কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, পুলিশ রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে থানায় যাচ্ছে। ওখানে বা গাড়ীতে ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব বিচারকার্য সমাপ্ত করছেন।
আমাদের ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবরা থানায় বসে বিচার করছেন! থানায়? সাক্ষী কে? পুলিশ! আমাদের পুলিশ।
পুলিশ প্রকৃত অপরাধীকে ধরে। আসলে কি ঘটে এ নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে! আমরা এমনটাও জানি, ঢাকার বাইরে থেকে নিরীহ লোকজন ঢাকায় ভোরে গিয়ে নামার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশের খপ্পরে পড়েছেন। পুলিশ হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। কারণ হরতালকে রোখার জন্য প্রতি থানায় যে টার্গেট দেয়া হয় তা থেকে এই বেচারা পুলিশের থানা পিছিয়ে ছিল।
এদের মধ্যে ওয়াকি-টকিতে আবার কথা চালাচালিও হয়, 'ভাইজানের শইডা ভালা। রানিং শর্ট, বুইজলেন নি। ১০টা দিতে ফারবাইন'?
১০টা মানে ১০জন মানুষ। এক থানা থেকে অন্য থানায় লোক চালাচালিও হয়।
ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব শব্দটা শুনলেই আমরা সাধারণ মানুষ হাঁ হয়ে যাই। এঁদের কেমন আকাশলোকের বাসিন্দা-বাসিন্দা মনে হয়। বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব তো আর ফেরেশেতা না। বিসিএস নামের একটা জিনিস আছে। গড়াগড়ি করে এটা উদরস্থ করতে পারলেই, ব্যস, আর পায় কে! গাদা-গাদা প্রশ্ন মুখস্ত করতে পারলে আর এদের নাগাল পাওয়া দুস্কর! বিড়বিড় করে প্রশ্ন মুখস্ত করতে থাকতে হয়,
দেশের প্রথম ঔষধ শিল্প পার্ক স্থাপিত হচ্ছে কোথায়? মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায়।
ব্রাক উদ্ভাবিত হাইব্রীড ভুট্টার নাম কি? উত্তরণ।
খালিদ বিন ওয়ালিদ কি? বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিক যুদ্ধজাহাজ।
এই সব বকে বকে এডমিন ক্যাডারে ঢুকে গেলেই হয়, ব্যস কেল্লাফতে! বাকী জীবনটা পায়ের উপর পা তুলে কাটিয়ে দিলেই হয়। ঘুষ-ঘাসের তো আর অভাব নাই! একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কেবল জামিন করাবার জন্য লাখখানেক টাকা নিতেন। মজার বিষয়টা হচ্ছে তিনি নিজে নিতেন না, টাকাটা নিতেন ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের বেগমসাহেবা!
বিসিএসের বিষয়টা উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে, কিছু ম্যাজিষ্ট্রেট পদমর্যাদার সাহেব-সুবোদের সঙ্গে কখনো-সখনো আমার কথা হয়, ইনি বিসিএস দিয়ে সরকারী চাকুরীতে ঢোকার পর আর একটা বইও পড়েননি। মোদ্দা কথা, জ্ঞান অর্জনের কাজ শেষ! এঁদের কারও কারও কথা শুনে মনে হয়, কোন যুগে বাস এঁদের!
আমাদের দেশের শিক্ষিত (!) মানুষদের বই পড়ার তেমন অভ্যাস নাই। বই পড়াকে এরা শূদ্র টাইপ কাজ মনে করেন। তবুও অন্য পেশার লোকজন নিজ পেশাসংক্রান্ত বইপত্র নাড়াচাড়া করেন। আমার ধারণা, অধিকাংশ সরকারী আমলারা বিসিএস দেয়ার পরই পড়ার পাটটা চুকিয়ে দেন।
ছবি ঋণ: কালের কন্ঠ, ১৯ জুন, ২০১১ |
এটা একজন ইউএনও সাহেবের ভিজিটিং কার্ড। জীবনে অনেক ভিজিটিং কার্ড দেখেছি কিন্তু এমন জিনিস দেখিনি, আমার লেখালেখির কসম! একজন ইউএনও সাহেবের যদি এমন একটা ভিজিটিং কার্ডের প্রয়োজন হয় তাহলে কয়েক মাস আইনের 'কেলাশ' করার সুবাদে আমার মত ছাতাফাতা লোকজন এটা লাগালে দোষ হবে না, "আলী মাহমেদ, আইন উপদেষ্টা, এলএলবি (Self-withdrawn after one year)".
সাধারণ আমরা আকাশলোকের বাসিন্দাদের অনুসরণ করব, না তো কাকে করব?
*'গাঞ্জে ফেরেশতে' নামটি নেয়া হয়েছে, সাদত হাসান মান্টোর বইয়ের নাম থেকে।
5 comments:
Rab ki tamasha dekhe!
সেরাম বটে, বি সি এস দেন নাই তো আপনি বুঝবেন না
সেরামই বটে, আপনি বি সি এস দেন নাই তাই বুঝবেন না
এতো বুঝে কাজ নেই! একজন বিসিএস ক্যাডারের গল্প বলি, শোনেন:
বাথরুমে গেছেন স্যার। কিন্তু স্যারের জিনিস গ্রহনে বাথরুমের ঘোর অনীহা।
পরে বাথরুম-মাস্টার, মেথরকে আনা হলো। মেথর মহাশয়ের চোখ কপালে। ঢেলা দিয়ে পাইপ বন্ধ।
এই ক্যাডার স্যার কুলুপ করার পর ঢেলা ফেলে ফেলে পাইপ বন্ধ করে ফেলেছেন!
কী আর করা, স্যার টয়লেট পেপার মুখ মোছার কাছে লাগান সম্ভবত...@Anonymous
ছবি সুত্রে আপনার পুরানো পোষ্ট দেখে গেলাম। আমার মনে হয় আমরা এখনো সামান্যও সামনে এগুতে পারি নাই!
কবে যে আমরা...।।
Post a Comment