ছবি সূত্র: প্রথম আলো ০৭.০৭.২০১১ |
এটা দেখে কার কী ভাবনা উদয় হচ্ছে আমি জানি না কিন্তু আমার কেবল মনে হচ্ছে এখানে কেবল একজন মানুষ দৌড়ে পালাচ্ছেন না, পালাচ্ছে গণতন্ত্র! বেচারা গণতন্ত্র!
|
কারও ভঙ্গি আমরা দেখে ফেলি, কারওটা দেখিনা। গান-পাউডার দিয়ে যখন বাস পুড়িয়ে দেয়া হয় কে যায় তলিয়ে দেখতে?
যাই হোক, যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিয়ে এখানে কুতর্কে যাব না; মানুষটা একজন সংসদসদস্য, যে-কোন প্রকারে হোক সংসদসদস্য- চলমান আইনপ্রণেতা! তিনি আইনপ্রণয়ন করবেন, সেই আইনগুলো পুলিশ প্রতিষ্ঠা করবেন।
টক-শোতে অনেকে টকটক করে বলছেন, এ আর নতুন কী, অতীতেও এমনটা হয়েছে। এই ফাজিল টাইপের কথার মানে কী? অতীতে কোন অন্যায়ের সঙ্গে এখনকার অন্যায়ের তুলনা করার বাতুলতা মাত্র! এতে করে কী কোন অন্যায় হালকা হয়ে যায়?
এটা সত্য আমরা বিস্মৃত হইনি পূর্বেও সংসদসদস্যের মাথা ফাটিয়েছিল পুলিশ- ভূতপূর্ব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাছিমের মাথাও ফাটিয়ে ফেলা হয়েছিল।
দরদর করে রক্ত পড়েছে এই নিয়ে কুৎসিত কথাবার্তাও হয়েছে, আরে, এই রক্ত তো অমুকের না, পশুর রক্ত। অন্য পক্ষ আবার বলেছেন, অমুকের রক্ত এই পশুর হলে তমুকেরটা ওই পশুর।
আজ আওয়ামিলীগ বারবার বলছেন, কেন হরতাল-কেন হরতাল! এঁরা কী ভুলে গেছেন দিনের-পর-দিন হরতাল দিয়েছেন। ফল কী! বিএনপিকে এক মিনিটের জন্যও এরা হটাতে পারেননি! বিএনপি ঠিকই তার পুরো টার্ম শেষ করেছিল তাহলে দিনের-পর-দিন, বছরের-পর-বছর আওয়ামীলীগের ওইসব হরতাল কী ফল বয়ে এনেছিল। কোটি কোটি মানুষ অসহনীয় কষ্ট করেছিলেন, হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছিল, হারিয়ে গিয়েছিল শত-শত প্রাণ!
দেশ, দেশের লোকজন জাহান্নামে যাক কিন্তু গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে এর প্রয়োজন আছে। বেচারা গণতন্ত্র!
অজস্র উদাহরণ থেকে কেবল একটা উদাহরণ দেই:
ভোরের কাগজ, ০৭.০৩.৯৬ |
তখন জলিল সাহেবকে ঈশ্বর-ঈশ্বর মনে হতো। তিনি মুখটা হাঁ করলেই গোটা দেশ অচল হয়ে যেত!
আসলে এখানেও দায়ী জলিল সাহেব না।
দায়ী বেচারা গণতন্ত্র!
আমি নিশ্চিত, এখন দিনের-পর-দিন হরতাল দিয়ে আওয়ামীলীগকেও ক্ষমতা থেকে হঠানো যাবে না। কেবল হরতালের নামে আমাদেরকে আধজবাই পশুর মত ফেলে রাখা!
হরতাল আইন করে বন্ধ করার বিষয়ে কারও আগ্রহ নেই কারণ এরা জানেন এই ভোঁতা অস্ত্রটা আমাদেরকে জবাই করার জন্য লাগবে- আওয়ামীলীগও এটা জানে। এটাকে হাতছাড়া করা যাবে না। অথচ স্রেফ একটা আইন করলেই হয়- যিনি হরতাল ডাকবেন তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হবে। চুনোপুটি ধরপাকড়, গেন্জি, আন্ডারওয়্যার ধরে টানাটানি করার প্রয়োজন নাই। কিন্তু এর ধারেকাছে দিয়েও কেউ যাচ্ছেন না- এরা হরতালের লেজ ছাড়বেন না।
ওই যে বেচারা গণতন্ত্র!
হরতাল নিয়ে লিখে লিখে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি, নতুন করে লেখার আর কিছু নাই [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭] [৮] [৯]। আমার সাফ কথা, কোন ইস্যুতেই কেউ হরতাল করতে পরবেন না। হরতাল দিয়ে দেশ অচল করে দেয়া অন্যায়, মহা অন্যায়।
অন্যায় অন্যায়ই- আগে হয়েছে বলে এখন হবে আমি জটিলসব কথা বুঝি না, অল্প কথায় বুঝি, চোর চুরি করলেও চুরি, রাজা করলেও চুরি, প্রজা করলেও চুরি। চুরি চুরিই। অন্যায়টা কে করছেন, কখন করছেন সেটা আলোচ্য বিষয় না, অন্যায় অন্যায়ই, সেটা বদলে যায় না!
১৬ কোটি মানুষ হরতাল মেনে নিলেও আমি মানি না। অতএব হরতাল চলবে। তবুও আমরা অন্যায়গুলো করতে থাকব কেয়ামতের আগ পর্যন্ত, গণতন্ত্রের [১০] জন্যে।
আহা, বেচারা গণতন্ত্র...।
সহায়ক সূত্র:
১. হরতাল, এক: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_23.html
২. হরতাল, দুই: http://www.ali-mahmed.com/2007/06/blog-post_3914.html
৩. হরতাল, তিন: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_3036.html
৪. হরতাল, চার: http://www.ali-mahmed.com/2007/06/blog-post_9163.html
৫. হরতাল, পাঁচ: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_20.html
৬. হরতাল, ছয়: http://www.ali-mahmed.com/2009/09/blog-post_26.html
৭. হরতাল, সাত: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_30.html
৮. কয়েদী, চার: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_22.html
৯. কয়েদী...: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_23.html
১০. গণতন্ত্রের শেকলে নগ্ন একজন...: http://www.ali-mahmed.com/2009/09/blog-post_22.html
5 comments:
অন্যায় অন্যায়ই।
গ্যাস বিদেশের কাছে বেইচা দিব এখন আপনে কি কন চায়া চায়া দেখুম আমরা? হরতালই একমাত্র সমাধান
সহমত @মুরাদুল ইসলাম
মানববন্ধন করুন, শহীদ মিনারে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। প্রয়োজনের প্রত্যেকে শরীরের এক ব্যাগ করে রক্ত ঢেলে শহীদ মিনার ভাসিয়ে দিন, আটকাচ্ছে কে?
হরতালই কেন! @Anonymous
সাংসদের গায়ে পুলিশ হাত তুললে আমাদের খুব লাগে কিনতু জনগণকে যখন পুলিশ লাথি মারে তখন সমস্যা নেই? আমি বলতে চাই সাংসদরা শিখুক পুলিশের প্যাদানি কাকে বলে
Post a Comment