Search

Wednesday, July 27, 2011

বাঁশে ভিউ-মিরর!

(এই লেখাটা পূর্বে পোস্ট করেছি কিনা মনে পড়ছে না। আজ বিশেষ একটা কারণে এই লেখাটা খুঁজছিলাম কিন্তু পাচ্ছিলাম না। পূর্বে কেউ লেখাটা পড়ে থাকলে দয়া করে শিরোনামটা দেখেই লম্বা দেবেন।)

এ দেশে কেমন কেমন করে একটা ধারণা জন্মে গেছে, যারা লেখালেখি করেন তারা কেবল বায়ু সেবনই পছন্দ করেন, একেকজন চলমান বায়ুভুক আর কী! অবশ্য ভাগ্যবান কেউ কেউ বুদ্ধিজীবী হয়ে যান, অন্যরা বায়ুজীবী।

আমি বায়ুসেবন করে আরাম পাই না এটা বলতে চাই না কারণ তাহলে আমাকে এমন এক জায়গায় চলে যেতে হবে যেখান থেকে আর ফেরা যায় না; ওখানে লেখালেখি করার অনুমতি আছে কিনা এমনটাও আমার জানা নাই!

আমার অমত অন্যখানে। বাহে, বায়ুসেবন করে তো আর দিনপাত করা চলে না। বায়ু সেবন ব্যতীত অন্য কিছু সেবনের অভিপ্রায়ে বিভিন্ন বানিজ্য করার বুদ্ধি করি। এর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ধান্ধাবাজি করার সবিরাম চেষ্টা।

একবার মাটি বেচার [১] বুদ্ধি আঁটলাম। শুরু করার পূর্বে ভয়ে ভয়ে ছিলাম। এমনিতে রাজনীতিবিদরা নাকি গোটা দেশটাই বেচে দেন এতে কোনও সমস্যা নাই কিন্তু আমাদের মত ছা-পোষারা দেশের কয়েক মুঠো মাটি বেচতে গিয়ে না আবার কোন ফ্যাসাদে পড়ি! গোয়েন্দা বিভাগ পেছনে লাগার আর সুযোগ হয়নি- সে ঝুটঝামেলা হওয়ার আর সুযোগ হলো কই! এর পূর্বেই এই ব্যবসাটাই মাটি হয়েছিল, ভেস্তে গিয়েছিল! দেশের মাটি বেচতে পারলাম কই! কপালের ফের, যারা আমার ক্রেতা হবেন বলে ভেবেছিলাম, বৈদেশিগণ; এরা নাকি দেশ ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে মুঠে-মুঠো দেশের মাটি নিয়ে গিয়েছিলেন। 

পরে বাতাস বিক্রির [২] ব্যবসাতেও মার খেলাম। এই আইডিয়া নিয়েও...এখন প্রবাসে যারা আছেন তাঁরা নাকি দেশের কথা শুনলেই আঁতকে উঠেন। নিজেরা খুন হয়ে প্রেসিডেন্ট সাহেবকে ক্ষমাপ্রদর্শন করার সুযোগ দিতে আগ্রহ করতে ইচ্ছুক নন। দেশের বাতাসে দমবন্ধ হয়ে আসে। শ্লা, আমার কপাল আর কী!
ছ্যাহ, বোতল ব্যবসাও ফ্লপ [৩]। এখন ভাবছি অন্য একটা ব্যবসায় হাত দেব। এটার পেটেন্টটা করিয়ে ফেলব কিনা ভাবছি।

বাঁশ-মিররের একটা ব্যবসা করব। এমনিতে বাঁশ তো সবাই চেনে, বাঙ্গালকে আমি বাঁশ চেনাবার দুঃসাহস করি না। কিন্তু আপনারা কি দেখেছেন, খুব বড়ো এবং ভারী বরাক বাঁশ কাউকে নিয়ে যেতে? আপাততদৃষ্টিতে খুব সহজ মনে হয়, না?
সত্যি বলছি, এক সময় এমন একটা বাঁশ বহন করাটা আমার কাছে খুব কঠিন কোন কাজ মনে হতো না। ওহো, একবার চেষ্টা করতে গিয়ে হাতেনাতে ফল পেয়েছিলাম। প্রায় মাসখানেক বিছানায় শয্যাশায়ী থেকে একেবারে লম্বা হয়ে গিয়েছিলাম। আর কিছুকাল বিছানায় শুয়ে থাকলে পুরো ছয় ফিট হয়ে যেতাম।

তো, যিনি এটা বহন করেন তার ডানে-বাঁয়ে, পেছনে তাকাবার কোন সুযোগ থাকে না, সে চেষ্টা করা দুরাশা!  খোদা-না-খাস্তা সে চেষ্টা কেউ করলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিশ্চিত। রেললাইনের উপর দিয়ে গেলে আরও সর্বনাশ, পেছন থেকে ট্রেন আসলে দেখার উপায় কি?

আমার আইডিয়াটা ছিল এমন, বাঁশের আগায় টেম্পরারি ভিউ মিরর লাগালে যিনি বহন করছেন তিনি পেছনটা দেখতে পারবেন, প্রয়োজন হলে বাঁশে একটা রিকশার ঘন্টাও লাগানো গেল। ঠুনঠুন করে বাজবে। একবার এমন একজন বাঁশ বহনকারীর সঙ্গে আমার এই আইডিয়া শেয়ার করেছিলাম। যার সঙ্গে এই আইডিয়াটা শেয়ার করছিলাম, প্রথমে তিনি বড়ই বিরক্ত হলেন। অনেক অনুরোধ করায় অবশেষে শুনতে রাজি হলেন। আহা, ইনি তো আর এই সাইটের হৃদয়বান পাঠক না যে সহনশীলতার চুড়ান্ত দেখিয়ে অবলীলায় আমার প্রলাপ শোনার ভান করবেন। অবশ্য তিনি বিস্তারিত শুনে অনেকক্ষণ ঝিম মেরে রইলেন।

আমি ভারী উৎফুল্ল। ইয়া মাবুদ, গিলছে ব্যাটা, টোপটা গিলছে! আমি বিজ্ঞানী হালুম বটি (টাইপিং মিস্টেক, পড়বেন: বিজ্ঞানী হলাম বটে)! অবশেষে ওই মানুষটা মুখ খুললেন। না-খুললেই ভাল করতেন। সারমর্ম হচ্ছে, তিনি সানন্দে আমাকে এই বাঁশটাই দিতে চান।
আমার আনন্দিত হওয়ার কথা কিন্তু তার বাঁশ দেয়ার বিশদ বর্ণনা শুনে আমার মনটা বিষাদে ছেয়ে গেল! বাঁশটা তিনি আমাকে দিতে চান বিশেষ ব্যবস্থায়, বিশেষ ভঙ্গিতে... :(

সহায়ক সূত্র:
১. মাটি বিক্রি: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_15.html
২. বাতাসের ব্যবসা: http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post.html
৩. বোতল ব্যবসা: http://www.ali-mahmed.com/2011/02/blog-post_15.html

2 comments:

মোর্শেদ আকরাম said...

আপনাকে আসলেই বাঁশ দেয়া দরকার। :D মজা করলাম আর কি।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

:), :D @মোর্শেদ আকরাম