সৈয়দ শামসুল হকের চিবিয়ে চিবিয়ে বলার ভঙ্গি রপ্ত করাটা চাট্টিখানি কথা না! তাই তাঁর এই বলার ভঙ্গির আমি ফিদা!
এ এক বিচিত্র! 'ভাষাকন্যা' উপাধিটা তাঁরই দেয়া। 'হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি' এই সব চর্বিতচর্বণ করেন তখন মানুষটার মোটেও ক্লান্তি লাগে না।
যাই হোক, ৯৩ সালে ভোরের কাগজে তিনি সিরিজ টাইপের কিছু কবিতা লিখেছিলেন।
এ এক বিচিত্র! 'ভাষাকন্যা' উপাধিটা তাঁরই দেয়া। 'হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি' এই সব চর্বিতচর্বণ করেন তখন মানুষটার মোটেও ক্লান্তি লাগে না।
যাই হোক, ৯৩ সালে ভোরের কাগজে তিনি সিরিজ টাইপের কিছু কবিতা লিখেছিলেন।
তাঁর ওই কবিতাগুলো আক্ষরিক অর্থেই আমাকে মুগ্ধ করেছিল। শার্টের হাতায় ডালের ছোপ লাগিয়ে ভাত-খাওয়া মানুষ আমি, আমরা তো আর এই জিনিস পূর্বে চোখে দেখিনি, চেখেও! আমার লেখালেখির শপথ, কবির এমন অন্য রকম ভাবনায় আলোড়িত না-হয়ে উপায় ছিল না আমার! সৈয়দ সাহেবের এই কবিতার পূর্বে কল্পনাও করতে পারিনি এমন করেও কবিতা লেখা সম্ভব! নমুনা:
ঋণ: ভোরের কাগজ, ০৮.০৭.৯৩ |
সম্প্রতি ফ্রান্সের Guillaume Apollinaire-এর ইংরাজিতে অনুবাদ করা এই কবিতাগুলো পড়ে খানিকটা ধন্ধে পড়ে গেলাম। যেমন ধরা যাক তাঁর it's rainning কবিতাটি:
এই সাহেব দেখি 'এক্কেবারে' সৈয়দ সাহেবের মত কবিতা লিখে ফেলেছেন। তিনি অবশ্য আরও বিচিত্র ভঙ্গিতেও কবিতা লিখেছেন:
ঋণ: আবদুল মান্নান সৈয়দ |
Guillaume Apollinaire, ক্যালিগ্রাম বা কবিতা-চিত্রের প্রবর্তক। জাঁ ককতো যখন তাঁর নাটক 'প্যারেড' নিয়ে দর্শকের স্নায়ুর উপর স্টিম-রোলার চালিয়ে দর্শককে ক্ষেপিয়ে দিয়েছেন ঠিক তখনই Guillaume নকশা-করা কবিতাকে শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন!
অবশ্য Guillaume Apollinaire-এর সেইসব কবিতা বই আকারে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯১৮ সালে! ১৯১৮ সাল? তখন সম্ভবত সৈয়দ সাহেব কবিতা লেখা শুরু করেননি! :)
সৈয়দ হক ভোরের কাগজের কোথাও Guillaume Apollinaire-এর ঋণ দূরের কথা ভুলেও একটি শব্দও ব্যয় করেননি।
তবলার ঠুকঠাক রেখে এবার গান ধরা যাক। সৈয়দ সাহেবের মত মানুষেরা জ্ঞানের ভান্ড নিয়ে হাঁটেন নাক বরাবর, মাথা ঝুকিয়ে কাউকে সম্মান দেখাতে-ঋণ স্বীকার করতে চান না। কারণ...। ওয়াল্লা, তাহলে জ্ঞানের ভান্ডটা আস্ত থাকবে বুঝি!
কিন্তু এই প্রজন্ম বিলক্ষণ জানে যে এটা ভাবনার জন্য, একটা ছবির জন্যও ঋণ স্বীকার করতে হয়, আর কেমন করে প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে হয়। কেবল মুগ্ধতা। নমুনা:
সৈয়দ হক ভোরের কাগজের কোথাও Guillaume Apollinaire-এর ঋণ দূরের কথা ভুলেও একটি শব্দও ব্যয় করেননি।
তবলার ঠুকঠাক রেখে এবার গান ধরা যাক। সৈয়দ সাহেবের মত মানুষেরা জ্ঞানের ভান্ড নিয়ে হাঁটেন নাক বরাবর, মাথা ঝুকিয়ে কাউকে সম্মান দেখাতে-ঋণ স্বীকার করতে চান না। কারণ...। ওয়াল্লা, তাহলে জ্ঞানের ভান্ডটা আস্ত থাকবে বুঝি!
কিন্তু এই প্রজন্ম বিলক্ষণ জানে যে এটা ভাবনার জন্য, একটা ছবির জন্যও ঋণ স্বীকার করতে হয়, আর কেমন করে প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে হয়। কেবল মুগ্ধতা। নমুনা:
ছবি সূত্র: রুবাইয়্যাত আহসান (http://www.nagorikblog.com/node/6012) |
ছবি সূত্র: রুবাইয়্যাত আহসান (http://www.nagorikblog.com/node/6012) |
*পরিশেষে আমি আমার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে গেলাম। Guillaume Apollinaire নামের ওই মানুষটার কালো হাত (প্রকৃতপক্ষে সাহেবদের হাত কালো থাকে না, সাদা থাকে) ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও কারণ তিনি সৈয়দ সাহেবের ভাবনা ধার করে কবিতা লিখেছেন কিন্তু ঋণ স্বীকার করেননি! এই ঘৃণ্য কর্মকান্ডের নিন্দা জানাবার ভাষা আমার নেই...।
4 comments:
হিঃ হিঃ হিঃ, হক স্যাররা এই জেনারেশনরে বোকাচোদা ভাবে।
এই জেনারেশনের মুখ এত খারাপ কেন! @Anonymous
কারও সঙ্গে কারও ভাবনা মিলে যেতে পারে যকে আমরা বলি, কাকতালীয়। কিন্তু কেউ জেনেশুনে কারও ভাবনা ধার করে ঋণ স্বীকার না-করলে সেটা অন্যায়। এবং তখন আমাদের শেখার কিছু থাকে না।
এখানে ঠিক কি ঘটেছে এটা সৈয়দ হকই ভাল বলতে পারবেন।
হা হা।বিস্ময়কর প্রতিভা!
জেনেশুনে এমন কাজ করে থাকলে এই সব মানুষকে করুণা করাই সমীচীন। বড়ো মাপের মানুষেরা যেচে কেন যে ছোট হন কে জানে! @মুরাদুল ইসলাম
Post a Comment