ছবি ঋণ: প্রথম আলো |
প্রথম আলো পড়ে আমরা জানতে পেরেছি, "...তিনি (ইউসুফ আলী) জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত"। [১]
সোজা কথা, শিবির। বাঁকা কথা, শিবির নামের কোনও মানুষের এই দশা হলে এতো বিচলিত হওয়ার কিছু নাই!
প্রথম আলো অনেক তকলিফ করে এই তথ্য 'খোঁজ দ্য সার্চ' মেশিনের মাধ্যমে খুঁজে বের করে আমাদেরকে জানিয়েছে! এই ...গিরির জন্য প্রথম আলো 'সাবাসি' পেতে পারে।
বিষাদের সঙ্গে বলি, এই কেউ-এর মধ্যে আমি নিজেকে জড়াতে চাই না। আমার সাফ কথা, এই সংবাদের প্রেক্ষিতে এই ফাজিলদের কাছে কে জানতে চেয়েছে, যে এই মানুষটা 'বদলে যাও, বদলে দাও' নামের দল করেন নাকি জামায়াতের রাজনীতি করেন?
আমাদের দেশে আমরা দলবাজ ব্যতীত কোন মানুষকে মানুষ বলে স্বীকার করতে চাই না। [২]
ইউসূফ নামের মানুষটাকে ভ্রাম্যমান আদালত এক বছরের সাজা দিয়েছেন। ভ্রাম্যমান আদালত প্রায়শ যেটা করছেন সেটা আইনসম্মত না এ নিয়ে অন্যত্র আলোচনা করেছি বিস্তারিত আর বলি না। "...অভিযুক্ত ব্যক্তি গঠিত অভিযোগ স্বীকার করেন কি না, তাহা জানিতে চাহিবেন। অস্বীকার করিলে তিনি কেন স্বীকার করেন না উহার বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানিতে চাহিবেন।" [৩] এই মানুষটাকে সাজা দেয়ার কি আইনসম্মত অধিকার আছে ভ্রাম্যমান আদালতের? [*]
তিনি কি তাঁর অভিযোগ স্বীকার করেছিলেন? তিনি গড়গড় করে বলে দিয়েছেন তিনি জামায়াতের রাজনীতির করেন? এই দল বা বিএনপির পক্ষে মিছিল করতে এসেছিলেন? নাকি অস্বীকার করার পর তার ব্যাখ্যা শোনা হয়েছিল? আমরা জানি, ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব ঘটনাস্থলে ছিলেন না। ইউসূফ নামের এই মানুষটা ধরা হয়েছে একটা ব্যাংকের ভেতর! তাহলে...?
সবাই যেখানে কেডস পরে মিছিলে আসে সেখানে তিনি অফিসের জুতো লাগিয়ে এসেছিলেন মিছিলে! মানুষটা হালকা সবুজ রঙের মোজা পরেছেন কীসের সঙ্গে মিলিয়ে কে জানে!
এই ছবিটায় আরেকটা বিশেষত্ব আছে। পেছনে আরেকজন মানুষ গলায় টাই ঝুলিয়ে কোমরে হাত দিয়ে তামাশাটা দেখছেন। তিনি কী পুলিশের লোক? আমার জানা ছিল না পুলিশ মহোদয় টাই ঝুলিয়ে হরতাল দমন করতে ঝাপিয়ে পড়েন!
আমাদের সরকারের চৌকশ লোকজনের বক্তব্য, "...এ ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে তা সরকারের জন্য বিব্রতকর। তবে এর সত্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। অনেকেই মনে করেন, এটা কারসাজিমূলক অথবা পরিকল্পিত..."। প্রথম আলো, ২৪.০৯.১১
এরপর আর কথা চলে না। কিন্তু...। আমাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ট্যাক্সের টাকায় দেশের বিভিন্ন সংস্থার লোকজনরা সব কি কুহতুর পর্বতে জিকিরে গেছেন? কারসাজিমূলক হয়ে থাকলে এর পেছনে কারা আছে এটা বের করতে সমস্যা কোথায়? সমস্যা না-থাকলে এমনতরো কথার অর্থ কী! অর্থ...?
অশ্লীলতার সংজ্ঞা নিয়ে অনেক কস্তাকস্তি হয়।
এই যুগেও (২০০৩ সালে) বছরের-পর-বছর ধরে লাইবেরিয়ার গৃহযুদ্ধে ব্লাহিল নামের একজন যুদ্ধনেতা ন্যাংটো হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এই নিয়ে ওদের তেমন মাথাব্যথা ছিল না। ওই দেশের লোকজনের কাছে এটা অশ্লীল মনে হয়নি।
দেশ-স্থান-সময় ভেদে অনেক আচরণের অর্থ পাল্টে যায়। [৪] কেবল আমাদের দেশে শ্লীল-অশ্লীল গুলিয়ে যায়।
সব একপাশে সরিয়ে আজ মাথায় যেটা ঘুরপাক খায়, এই দেশ আমার না। অথচ সজল চোখে এই আমিই অন্যের দেশকে নিজের দেশ বলে দাবী করি...
সহায়ক সুত্র:
*মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯: http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_all_sections.php?id=1025
১. প্রথম আলো: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2011-09-24#
২. দলবাজ: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_19.html
৩. গাঞ্জে ফেরেশতে: http://www.ali-mahmed.com/2011/06/blog-post_23.html
৪. অশ্লীলতা সংজ্ঞা: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_22.html
5 comments:
হালকা সবুজ মোজা এর পর ব্যপারটা ধরতে পারছিলাম না টিউবলাইট বৈলা।যখন বুঝতে পারলাম তখন হাহাপগে
তামাশা যে দেখছে সে গার্ড। প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানিগুলোর লোকদের ড্রেস এখন অনেক আপ টু ডেট।
:। @শিহাব
"তামাশা যে দেখছে সে গার্ড।..."
সর্বনাশ, বলেন কী!
কাঁধে ঝোলানো পুলিশ-টুলিশের পদমর্যাদার নাট-বল্টু আমি তেমন বুঝি না। কিন্তু এই গার্ড সাহেবকে দেখে আমি পুলিশের অতি উচু পদের কর্মকর্তা মনে করেছিলাম :o @Adnan
Humayun Ahmed ke 10 taka dite chan keno?
ভাইরে, অনুকরণস্পৃহা! প্রধানমন্ত্রীকে অনুকরণ করছি।
বেচারা হুমায়ূন আহমেদের টাকার বড় টানাটানি চলছে। এ সত্য, প্রধানমন্ত্রী ধনী মানুষ তাই তাঁর টাকার অংকটা বড়। আমি এও বুঝতে পারছি, ১০ টাকা কিছুই না। আচ্ছা, টাকাটা বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করে দিচ্ছি। @Anonymous
Post a Comment