বিষয়টা পুরনো কিন্তু আবারও নতুন করে সামনে চলে এসেছে, ফেসবুকের একটি নোটের সূত্র ধরে। অনুবাদের একটা বিষয় নিয়ে সালাহ উদ্দিন শুভ্র, ফারুক ওয়াসিফের বিরুদ্ধে কঠিন এক অভিযোগ এনেছেন [১]। ফারুক ওয়াসিফও পাল্টা এক নোট লিখে এর উত্তর দিয়েছেন [২]। কে ঠিক কে বেঠিক এটা আমার আলোচনার বিষয় না। এটা প্রমাণের দায় এঁদের উপরই বর্তায়। তাঁরা নোট চালাচালি করতে থাকুন...
।
এটা স্বীকার করে নিলেই আমাদের সবার জন্যই মঙ্গল এখন আর সেই দিন নাই [৩] যে কেউ সামান্যতম ভুল-অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে। ভুল করলে দোষ স্বীকার না-করে বা কারও প্রাপ্য চুকিয়ে না-দিয়ে কেউ ভুঁড়ি ভাসিয়ে ফ্যানের হাওয়া খাবে, গাছের ডালে দোল খাবে সে আর হচ্ছে কই! আমি যেটা বলে থাকি, একজনকে দাঁড়াতে হয় পাঠকের কাঠগড়ায়- ইন্টারনেটের বদৌলতে আক্ষরিক অর্থেই এখন কাঠগড়ায় দাঁড়ানো থেকে নিস্তার নেই। তা সে যত বড় রথী-মহা রথীই হোন না কেন।
বালকবেলায় পড়া এক জাপানি গল্প যা জসিমউদদীনের 'আয়না' গল্পটার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। তখন ইন্টারনেট থাকলে জাপানি ভদ্রলোককে কষে পাকড়াও করা যেত :)
এমনিতে আমি তো লেখার সময় ভয়ে কাঠ হয়ে থাকি- এই রে, কোন পাঠক দিল বুঝি কোপ। এই কোপে কল্লা আলাদা হয় না এ সত্য কিন্তু লজ্জায় ছ-ফুট থেকে তিন ফুটে কল্লা থাকা না-থাকা প্রায় সমান।
ইন্টারনেটের শক্তির কথা হচ্ছিল। ফারুক ওয়াসিফ এবং সালাহ উদ্দিন শুভ্র এরা কেউই ফেসবুকে আমার বন্ধু নন কিন্তু তাতে কী! ফেসবুকে তাঁদের লেখা অমি রহমান পিয়ালের শেয়ার করার কল্যাণে ঠিকই আমার নাগালে এসে গেছে।
আমার এই লেখার সূত্রপাত যেখান থেকে। ফারুক ওয়াসিফের নোটে সালাহ উদ্দিন শুভ্র একটা মন্তব্য করেছেন:
সোজা বক্তব্য, সালাহ উদ্দিন শুভ্র নামটার মধ্যে শুভ্র শব্দটা প্রথম আলোর পছন্দ হয়নি, প্রথম আলো শুভ্র নামটা অবলীলায় ফেলে দিচ্ছিল। যে কারণে সালাউদ্দিন শুভ্র প্রথম আলো অফিসে আর পদাঘাত করতে আগ্রহ বোধ করেননি।
আমরা জানি প্রথম আলো আমাদেরকে অনেক কিছুই শেখাবার চেষ্টা করে। কালে কালে এরা যে বিকট এক মাতব্বর হয়ে গেছে! এই গ্রহ আমেরিকা নামের মাতব্বরের যন্ত্রণাতেই বাঁচে না- এরা হেন কোনো বিষয় নাই যা আমাদেরকে শেখাবার চেষ্টা করে না। কেমন করে একজন দম্পতি অন্তরঙ্গ সময় কাটাবে এটা থেকে শুরু করে মায় লোকজনের বাথরুমে বসার ভঙ্গিটাও। এই কাতারে কি এখন প্রথম আলোও যোগ দিচ্ছে? কারণ এরা বসে থাকবে বুঝি! এতে আর সন্দেহ কি এই দেশে এদের মাতব্বরি শেষ হলে এরা দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়বে।
আসলে প্রথম আলো, এরা বিকট ভুঁড়ির গা ঘিনঘিনে মাতব্বর যে কিনা নাম বিকৃতি করে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ লাভ করে। এরা সালাহ উদ্দিন শুভ্র লিখবে না, লিখবে সালাহ উদ্দিন অথবা সালাউদ্দিন। ভাগ্যিস, এদের কেবল নামের পেছনের অংশ নিয়েই কস্তাকস্তি নইলে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও বাটে পড়ে যেতেন। তখন মতি ভাইয়া এই আ আ ম স এটার পুরো অর্থ কি গবেষণা করে কোনো একটা শব্দ রদ্দি মালে ফেলে দিতেন। গবেষণার ক্লেশ নিজ স্কন্ধে না-নিতে চাইলে দশ-বিশ-ত্রিশ-চল্লিশ বিড়বিড় করে অথবা লটারি করে কোনো একটা শব্দকে বেছে নিতেন?
প্রথম আলোকে কে এই অধিকার দিয়েছে কে জানে নাম নিয়ে 'নর্দমাগিরি' করার জন্য- টলটলে পানিকে নর্দমা বানাবার জন্য? সালাহ উদ্দিন শুভ্রর কল্যাণে এটা যে আজই প্রথম জানা গেল এমন না এটা চলে আসছিল দিনের-পর-দিন, মাসের-পর-মাস, বছরের-পর-বছর ধরে। আমি অবাক হতাম কেউ এর জোরালো প্রতিবাদ করে না কেন? প্রথম আলোতে চাকুরিরত লোকজনের মেরুদন্ড কি মাখনের মত হয়ে যায়? কিন্তু প্রথম আলোর চাকুরে ব্যতীত অন্যদের নাম যখন বিকৃত করা হয় তখন ওদের মেরুদন্ড কি খানিক নীচে নেমে যেত নাকি?
কিন্তু আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি আজকের প্রথম আলোয় (১৩ মার্চ ২০১২, পৃ:১৭) ছাপা হয়েছে, সাদেক হোসেন খোকা, ফজলুল হক মিলন, জয়নুল আবদিন ফারুক, নুরুল ইসলাম বুলবুল, শফিকুল ইসলাম মাসুদ। সাধু-সাধু!
বিষয় কি, মতি ভাইয়া, এখানে নাম কাটাকাটি করলেন না যে? কোথায় গেল নতুন নাম দিয়ে আকিকা? আহা, আকিকা দেয়ার জন্য কি ছাগলের অভাব দেখা দিয়েছে বুঝি!
লঞ্চডুবিতে কেউ মারা গেলে ছাগল দেয়া হতো, সঙ্গে রশি ফ্রি; এটা এখনও চালু আছে কিনা কে জানে। চালু আছে সম্ভবত নইলে ছাগলের অভাব প্রকট হওয়ার তো কথা না...।
সহায়ক সূত্র:
১. সালাহ উদ্দিন শুভ্র: http://tinyurl.com/77aueom
২. ফারুক ওয়াসিফ: http://tinyurl.com/6pfvkwh
৩. সেই দিন আর নাই, শাহাদুজ্জামান: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_02.html
।
এটা স্বীকার করে নিলেই আমাদের সবার জন্যই মঙ্গল এখন আর সেই দিন নাই [৩] যে কেউ সামান্যতম ভুল-অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে। ভুল করলে দোষ স্বীকার না-করে বা কারও প্রাপ্য চুকিয়ে না-দিয়ে কেউ ভুঁড়ি ভাসিয়ে ফ্যানের হাওয়া খাবে, গাছের ডালে দোল খাবে সে আর হচ্ছে কই! আমি যেটা বলে থাকি, একজনকে দাঁড়াতে হয় পাঠকের কাঠগড়ায়- ইন্টারনেটের বদৌলতে আক্ষরিক অর্থেই এখন কাঠগড়ায় দাঁড়ানো থেকে নিস্তার নেই। তা সে যত বড় রথী-মহা রথীই হোন না কেন।
বালকবেলায় পড়া এক জাপানি গল্প যা জসিমউদদীনের 'আয়না' গল্পটার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। তখন ইন্টারনেট থাকলে জাপানি ভদ্রলোককে কষে পাকড়াও করা যেত :)
এমনিতে আমি তো লেখার সময় ভয়ে কাঠ হয়ে থাকি- এই রে, কোন পাঠক দিল বুঝি কোপ। এই কোপে কল্লা আলাদা হয় না এ সত্য কিন্তু লজ্জায় ছ-ফুট থেকে তিন ফুটে কল্লা থাকা না-থাকা প্রায় সমান।
ইন্টারনেটের শক্তির কথা হচ্ছিল। ফারুক ওয়াসিফ এবং সালাহ উদ্দিন শুভ্র এরা কেউই ফেসবুকে আমার বন্ধু নন কিন্তু তাতে কী! ফেসবুকে তাঁদের লেখা অমি রহমান পিয়ালের শেয়ার করার কল্যাণে ঠিকই আমার নাগালে এসে গেছে।
আমার এই লেখার সূত্রপাত যেখান থেকে। ফারুক ওয়াসিফের নোটে সালাহ উদ্দিন শুভ্র একটা মন্তব্য করেছেন:
"...আমি শুভ্র নাম কাইটা দেয় দেইখা প্রথম আলোতে লেখি না, অই অফিস ছাড়ার পিছনের কারণও এইটা একটা, এসব আলোচনা কইরা লাভ নাই..."?
সোজা বক্তব্য, সালাহ উদ্দিন শুভ্র নামটার মধ্যে শুভ্র শব্দটা প্রথম আলোর পছন্দ হয়নি, প্রথম আলো শুভ্র নামটা অবলীলায় ফেলে দিচ্ছিল। যে কারণে সালাউদ্দিন শুভ্র প্রথম আলো অফিসে আর পদাঘাত করতে আগ্রহ বোধ করেননি।
আমরা জানি প্রথম আলো আমাদেরকে অনেক কিছুই শেখাবার চেষ্টা করে। কালে কালে এরা যে বিকট এক মাতব্বর হয়ে গেছে! এই গ্রহ আমেরিকা নামের মাতব্বরের যন্ত্রণাতেই বাঁচে না- এরা হেন কোনো বিষয় নাই যা আমাদেরকে শেখাবার চেষ্টা করে না। কেমন করে একজন দম্পতি অন্তরঙ্গ সময় কাটাবে এটা থেকে শুরু করে মায় লোকজনের বাথরুমে বসার ভঙ্গিটাও। এই কাতারে কি এখন প্রথম আলোও যোগ দিচ্ছে? কারণ এরা বসে থাকবে বুঝি! এতে আর সন্দেহ কি এই দেশে এদের মাতব্বরি শেষ হলে এরা দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়বে।
আসলে প্রথম আলো, এরা বিকট ভুঁড়ির গা ঘিনঘিনে মাতব্বর যে কিনা নাম বিকৃতি করে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ লাভ করে। এরা সালাহ উদ্দিন শুভ্র লিখবে না, লিখবে সালাহ উদ্দিন অথবা সালাউদ্দিন। ভাগ্যিস, এদের কেবল নামের পেছনের অংশ নিয়েই কস্তাকস্তি নইলে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও বাটে পড়ে যেতেন। তখন মতি ভাইয়া এই আ আ ম স এটার পুরো অর্থ কি গবেষণা করে কোনো একটা শব্দ রদ্দি মালে ফেলে দিতেন। গবেষণার ক্লেশ নিজ স্কন্ধে না-নিতে চাইলে দশ-বিশ-ত্রিশ-চল্লিশ বিড়বিড় করে অথবা লটারি করে কোনো একটা শব্দকে বেছে নিতেন?
প্রথম আলোকে কে এই অধিকার দিয়েছে কে জানে নাম নিয়ে 'নর্দমাগিরি' করার জন্য- টলটলে পানিকে নর্দমা বানাবার জন্য? সালাহ উদ্দিন শুভ্রর কল্যাণে এটা যে আজই প্রথম জানা গেল এমন না এটা চলে আসছিল দিনের-পর-দিন, মাসের-পর-মাস, বছরের-পর-বছর ধরে। আমি অবাক হতাম কেউ এর জোরালো প্রতিবাদ করে না কেন? প্রথম আলোতে চাকুরিরত লোকজনের মেরুদন্ড কি মাখনের মত হয়ে যায়? কিন্তু প্রথম আলোর চাকুরে ব্যতীত অন্যদের নাম যখন বিকৃত করা হয় তখন ওদের মেরুদন্ড কি খানিক নীচে নেমে যেত নাকি?
কিন্তু আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি আজকের প্রথম আলোয় (১৩ মার্চ ২০১২, পৃ:১৭) ছাপা হয়েছে, সাদেক হোসেন খোকা, ফজলুল হক মিলন, জয়নুল আবদিন ফারুক, নুরুল ইসলাম বুলবুল, শফিকুল ইসলাম মাসুদ। সাধু-সাধু!
বিষয় কি, মতি ভাইয়া, এখানে নাম কাটাকাটি করলেন না যে? কোথায় গেল নতুন নাম দিয়ে আকিকা? আহা, আকিকা দেয়ার জন্য কি ছাগলের অভাব দেখা দিয়েছে বুঝি!
লঞ্চডুবিতে কেউ মারা গেলে ছাগল দেয়া হতো, সঙ্গে রশি ফ্রি; এটা এখনও চালু আছে কিনা কে জানে। চালু আছে সম্ভবত নইলে ছাগলের অভাব প্রকট হওয়ার তো কথা না...।
সহায়ক সূত্র:
১. সালাহ উদ্দিন শুভ্র: http://tinyurl.com/77aueom
২. ফারুক ওয়াসিফ: http://tinyurl.com/6pfvkwh
৩. সেই দিন আর নাই, শাহাদুজ্জামান: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_02.html
2 comments:
jokhon dead body recover hoche tokhon apnar eta neye jokes heartless mone hoyeche
আমার লেখালেখির শপথ, এটা স্রেফ কাকতালীয়! যখন আমি লেখাটা লিখছিলাম তখন পর্যন্ত জানতাম না মুন্সিগঞ্জে লঞ্চ ডুবেছে- লাশের পর লাশ উদ্ধার হচ্ছে। পরদিন পত্রিকা মারফতে জেনেছি...।
তবুও আপনার নরোম মনের মানবিক মন্তব্যে আমি নতজানু হই। আমার মনটা হয়তো আপনার মতো নরোম না কিন্তু এতোটা কঠিনও না যে এমন এক বিপর্যয়ে আমি রসিকতা করব।
আমি কেবল এই গ্রহের কুৎসিত এক রসিকতা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম, লঞ্চডুবিতে কেউ মারা গেলে ছাগল দেয়ার মত নির্বোধ সিদ্ধান্তের প্রতি...।
আর ভাইরে, এটাও কি এই গ্রহের আরেক কুৎসিত রসিকতা না যে রুস্তম-হামজা নামের দুই উদ্ধারকারী জাহাজ দিয়ে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত চালিয়ে দেয়া। যে জাহাজগুলোর, এদের উত্তোলন ক্ষমতা ১২০ মে. টন কিন্তু এখনকার বেশিরভাগ লঞ্চগুলোই হচ্ছে ৫০০ মে. টনের। আমরা ফ্রিগেট কিনি কিন্তু উদ্ধারকারী জাহাজ কিনি না। আপনি বুকে হাত দিয়ে বলেন এরচেয়ে বড়ো রসিকতা আর কী হয়? যেটা নিয়ে লেখা হয়েছিল:
http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_04.html
Post a Comment