নির্মলেন্দু গুণকে নিয়ে পূর্বের এক লেখায় লিখেছিলাম, (গীনসবার্গে সঙ্গে, নির্মলেন্দু গুণ):
"'...গ্রেগরী করসো যখন আমাদের বাংলাদেশের লক্ষ-লক্ষ মানুষের ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু নিয়ে নির্মলেন্দু গুণের কাছে জনসমক্ষে, প্রকাশ্যে আদি রসাত্মক অতি কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করে, অতি হৃদয়হীন মন্তব্য করেন, 'তোমাদের দেশ তো খুব ফারটাইল, প্রতিদিন হাজার হাজার মানবসন্তানের জন্ম দিচ্ছ তোমরা। ...ছাউ ফুটানোর কাজটা তোমরা ভালই পার'।
তখন গুণ দাদার গলা দিয়ে স্বর বের হয় না। চিঁ চিঁ করেন।" [১]
ওমা, কী কান্ড গো, আজই জানতে পারলুম গুণ দাদা 'ওকানে' চিঁ চিঁ না, বাঘ্রের ন্যায় হালুম হালুম করেছিলেন। সেই বাঘ্রগর্জন আমেরিকা ছাড়িয়ে আমাদের আনিসুল হকের কর্ণাঘাত করেছিল! আজ তিনি প্রথম আলোয় (১৬.১০.১২) কপাল ভিজিয়ে একটা লেখা লিখেছেন, 'মানুষ তো নয়, জেলে'। চমৎকার এক লেখা কিন্তু তিনি আগে নিজের পাঞ্জাবির খয়েরের ছোপ ছোপ দাগটা পরিষ্কার করলে ভাল করবেন। এর উত্তর তার নিজের কাছেই আছে।
জেলেদের (!) সংবাদ পরিবেশন করা নিয়ে তার পত্রিকার যে ভুমিকা তা স্রেফ একটা ভুঁইফোড় ব্যবসায়ির মত। এই পত্রিকা যারা চালায় তাদের এই নিউজ সেন্সই নাই কোনটা প্রথম পৃষ্ঠায় থাকবে কোনটা শেষ পৃষ্ঠায় আর কোনটাই-বা ভেতরের পাতায়! এই ঝড় হওয়ার পর থেকে পরপর এই পত্রিকার পাতাগুলোয় চোখ বুলালে এটা ষ্পষ্ট হবে।
ওই লেখার এক জায়গায় আমাদের আনিস মিয়া গুণ দাদার উদ্বৃতি দিয়ে লিখেছেন, "...'তোমাদের দেশ তো খুব ফার্টাইল। তারপর তিনি দুই আঙুল দিয়ে নারী-পুরুষের সঙ্গমের দৃশ্যটা ফুটিয়ে তুলে বললেন, তোমরা এই কাজ করবা আর হাজার হাজার মানুষের জন্ম দিবা'। নির্মলেন্দু গুণের গিন্সবার্গের সঙ্গে বইয়ে এই কাহিনি পাবেন। ...তবে সেই বিবরণে এই কথা নেই যে ক্ষুব্ধ নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে বললেন, 'তুমি নাকি চোর ছিলা। তুমি নাকি চুরি করে ধরা পড়ে জেল খেটেছ'।"
মোদ্দা কথা, আনিস মিয়া বলতে চাইছেন আমাদের গুণ দাদা 'ওকানে' গর্জে উঠে, করসোকে আচ্ছা করে বকে দিয়েছিলেন। হুঁ-হুঁ বাওয়া দেশ, দেশের মানুষ বলে কথা- ব্যাটা লাল্লু, আমাদের দেশকে অপমান করবে আর আমাদের গুণ দাদা চাহিয়া চাহিয়া দেখিবেন, 'কাভি নেহি, নাক্কো'।
বেশ-বেশ, কিন্তু যেটা গুণ বলেননি, "...ক্ষুব্ধ নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে বললেন, 'তুমি নাকি চোর ছিলা। তুমি নাকি চুরি করে ধরা পড়ে জেল খেটেছ'।"
তা এটা আমাদের আনিস মিয়া জানলেন কেমন করে? গুণ দাদা না-হয় তখন 'আম্রিকায়' ছিলেন, আমাদের আনিস মিয়া তখন কোথায় ছিলেন? তিনিও কি গুণ দাদার সঙ্গে ছিলেন, তথায় ১০১ লাইনের কবিতা পাঠ করছিলেন? নাকি অংপুরে বসে সেই বাঘ্রগর্জন শ্রবণ করিয়াছিলেন? কারণ (গীনসবার্গে সঙ্গে) বইটায় গুণ দাদা নিজেই বলছেন,
"...করসোর কথা শুনে অপমানিত বোধ করলাম। তবুও নিজেকে সংযত রেখে বললাম, 'তা তুমি ঠিকই বলেছ, We born in billions & die in millions'." (গীনসবার্গে সঙ্গে, নির্মলেন্দু গুণ,পৃ নং: ৫০)
আহা, এটা না-বলে গুণ দাদার বুঝি উপায় আছে! মার্কিন মুল্লুকে গুণ দাদা যে কত বড় কবি এই সার্টিফিকেটটা এদের কাছ থেকেই যে বাগাতে হবে। গ্রহবাবা, আম্রিকাই আমাদেরকে যাবতীয় সার্টিফিকেট বিলি করবেন, আবার মানবতাও শেখাবেন। পুরনো কথাটাই বলি, এ গ্রহের সাহিত্য মানে মার্কিন সাহিত্য...!
যাই হোক, যেটা গুণ দাদা বলেননি সেটা আনিস মিয়া ঘটা করে বলতে গেলেন কেন? আমার ধারণা, এটা তার একটা চালবাজি। বেশ, কিন্তু এই চালবাজি করে লাভ কী! আহা, এটা যে চলেই আসছে, গো। দেখা যাবে গুণ দাদা আবার কোথাও আনিস ভা (ভা মানে ভাইয়া)-কে নিয়ে লিখবেন। একজন অন্যজনের পিঠ চুলকে দেয়া। পিঠ চুলকানিতে যে আরাম তা অন্যত্র কোথায়!
ছাপার অক্ষরের ভুবন এবং অন্তর্জালের ভুবনের মধ্যে পার্থক্যটা কি দয়া করে কেউ কি আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন।
একটা মোটা দাগের পার্থক্য কিন্তু আছে। ছাপার অক্ষরের ভুবনে সব শেয়ালের এক রা- এঁরা একজন অন্যজনের সঙ্গে জড়াজড়ি করে থাকেন। যেন একটা মুক্তোর মালা। আর...।
অন্তর্জালে আমরা একজন অন্যজনকে সহ্যই করতে পারি না। এতো এতো মত যে স্বয়ং ঈশ্বরও ভাবনায় তলিয়ে যান। এখানে একজনের সঙ্গে অন্যজনের কোনো যোগ নাই। যেন বিক্ষিপ্ত একেকটা ইয়ের দানা...।
সহায়ক সূত্র:
১. গ্রেগরী করসো...: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_7854.html
"'...গ্রেগরী করসো যখন আমাদের বাংলাদেশের লক্ষ-লক্ষ মানুষের ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু নিয়ে নির্মলেন্দু গুণের কাছে জনসমক্ষে, প্রকাশ্যে আদি রসাত্মক অতি কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করে, অতি হৃদয়হীন মন্তব্য করেন, 'তোমাদের দেশ তো খুব ফারটাইল, প্রতিদিন হাজার হাজার মানবসন্তানের জন্ম দিচ্ছ তোমরা। ...ছাউ ফুটানোর কাজটা তোমরা ভালই পার'।
তখন গুণ দাদার গলা দিয়ে স্বর বের হয় না। চিঁ চিঁ করেন।" [১]
ওমা, কী কান্ড গো, আজই জানতে পারলুম গুণ দাদা 'ওকানে' চিঁ চিঁ না, বাঘ্রের ন্যায় হালুম হালুম করেছিলেন। সেই বাঘ্রগর্জন আমেরিকা ছাড়িয়ে আমাদের আনিসুল হকের কর্ণাঘাত করেছিল! আজ তিনি প্রথম আলোয় (১৬.১০.১২) কপাল ভিজিয়ে একটা লেখা লিখেছেন, 'মানুষ তো নয়, জেলে'। চমৎকার এক লেখা কিন্তু তিনি আগে নিজের পাঞ্জাবির খয়েরের ছোপ ছোপ দাগটা পরিষ্কার করলে ভাল করবেন। এর উত্তর তার নিজের কাছেই আছে।
জেলেদের (!) সংবাদ পরিবেশন করা নিয়ে তার পত্রিকার যে ভুমিকা তা স্রেফ একটা ভুঁইফোড় ব্যবসায়ির মত। এই পত্রিকা যারা চালায় তাদের এই নিউজ সেন্সই নাই কোনটা প্রথম পৃষ্ঠায় থাকবে কোনটা শেষ পৃষ্ঠায় আর কোনটাই-বা ভেতরের পাতায়! এই ঝড় হওয়ার পর থেকে পরপর এই পত্রিকার পাতাগুলোয় চোখ বুলালে এটা ষ্পষ্ট হবে।
ওই লেখার এক জায়গায় আমাদের আনিস মিয়া গুণ দাদার উদ্বৃতি দিয়ে লিখেছেন, "...'তোমাদের দেশ তো খুব ফার্টাইল। তারপর তিনি দুই আঙুল দিয়ে নারী-পুরুষের সঙ্গমের দৃশ্যটা ফুটিয়ে তুলে বললেন, তোমরা এই কাজ করবা আর হাজার হাজার মানুষের জন্ম দিবা'। নির্মলেন্দু গুণের গিন্সবার্গের সঙ্গে বইয়ে এই কাহিনি পাবেন। ...তবে সেই বিবরণে এই কথা নেই যে ক্ষুব্ধ নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে বললেন, 'তুমি নাকি চোর ছিলা। তুমি নাকি চুরি করে ধরা পড়ে জেল খেটেছ'।"
মোদ্দা কথা, আনিস মিয়া বলতে চাইছেন আমাদের গুণ দাদা 'ওকানে' গর্জে উঠে, করসোকে আচ্ছা করে বকে দিয়েছিলেন। হুঁ-হুঁ বাওয়া দেশ, দেশের মানুষ বলে কথা- ব্যাটা লাল্লু, আমাদের দেশকে অপমান করবে আর আমাদের গুণ দাদা চাহিয়া চাহিয়া দেখিবেন, 'কাভি নেহি, নাক্কো'।
বেশ-বেশ, কিন্তু যেটা গুণ বলেননি, "...ক্ষুব্ধ নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে বললেন, 'তুমি নাকি চোর ছিলা। তুমি নাকি চুরি করে ধরা পড়ে জেল খেটেছ'।"
তা এটা আমাদের আনিস মিয়া জানলেন কেমন করে? গুণ দাদা না-হয় তখন 'আম্রিকায়' ছিলেন, আমাদের আনিস মিয়া তখন কোথায় ছিলেন? তিনিও কি গুণ দাদার সঙ্গে ছিলেন, তথায় ১০১ লাইনের কবিতা পাঠ করছিলেন? নাকি অংপুরে বসে সেই বাঘ্রগর্জন শ্রবণ করিয়াছিলেন? কারণ (গীনসবার্গে সঙ্গে) বইটায় গুণ দাদা নিজেই বলছেন,
"...করসোর কথা শুনে অপমানিত বোধ করলাম। তবুও নিজেকে সংযত রেখে বললাম, 'তা তুমি ঠিকই বলেছ, We born in billions & die in millions'." (গীনসবার্গে সঙ্গে, নির্মলেন্দু গুণ,পৃ নং: ৫০)
আহা, এটা না-বলে গুণ দাদার বুঝি উপায় আছে! মার্কিন মুল্লুকে গুণ দাদা যে কত বড় কবি এই সার্টিফিকেটটা এদের কাছ থেকেই যে বাগাতে হবে। গ্রহবাবা, আম্রিকাই আমাদেরকে যাবতীয় সার্টিফিকেট বিলি করবেন, আবার মানবতাও শেখাবেন। পুরনো কথাটাই বলি, এ গ্রহের সাহিত্য মানে মার্কিন সাহিত্য...!
যাই হোক, যেটা গুণ দাদা বলেননি সেটা আনিস মিয়া ঘটা করে বলতে গেলেন কেন? আমার ধারণা, এটা তার একটা চালবাজি। বেশ, কিন্তু এই চালবাজি করে লাভ কী! আহা, এটা যে চলেই আসছে, গো। দেখা যাবে গুণ দাদা আবার কোথাও আনিস ভা (ভা মানে ভাইয়া)-কে নিয়ে লিখবেন। একজন অন্যজনের পিঠ চুলকে দেয়া। পিঠ চুলকানিতে যে আরাম তা অন্যত্র কোথায়!
ছাপার অক্ষরের ভুবন এবং অন্তর্জালের ভুবনের মধ্যে পার্থক্যটা কি দয়া করে কেউ কি আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন।
একটা মোটা দাগের পার্থক্য কিন্তু আছে। ছাপার অক্ষরের ভুবনে সব শেয়ালের এক রা- এঁরা একজন অন্যজনের সঙ্গে জড়াজড়ি করে থাকেন। যেন একটা মুক্তোর মালা। আর...।
অন্তর্জালে আমরা একজন অন্যজনকে সহ্যই করতে পারি না। এতো এতো মত যে স্বয়ং ঈশ্বরও ভাবনায় তলিয়ে যান। এখানে একজনের সঙ্গে অন্যজনের কোনো যোগ নাই। যেন বিক্ষিপ্ত একেকটা ইয়ের দানা...।
সহায়ক সূত্র:
১. গ্রেগরী করসো...: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_7854.html
6 comments:
হাহাপগে,,,,বিক্ষিপ্ত একেকটা ইয়ের দানা,,,,এইটা কি জিনিষ দাদা?
আনিসুল হক হয় তো তখন এমেরিকায় নির্মলেনদু গুনের সাথে ছিলেন এটাও তো হতে পারে?
:D @রাশেদ
জানা নাই :( @Anonymous
আলোচনায় যাবার মত জ্ঞান আমার নেই তবে শুধু এটুকু বলে যাচ্ছি, অসাধারন। আমি আনিসুল হককে দেখেছি কিন্তু তার কোথায় যেন একটা সমস্যা এখনো আছে। তিনি সব ছেড়ে উর্ধে উঠতে পারছেন না।
ধন্যবাদ।
হেঃ হেঃ হেঃ,আনিসুল হক কে নিয়ে দুর্দান্ত লেখাটা লিখেছে আমাদের অস্ট ডটু,রাসেলের ফেসবুক থেকে।
স্বীকৃতির জন্য মরীয়া একজন অবশেষে অন্তর্বাস খুলে পতাকা বানিয়ে বাংলা একাডেমীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছেন। ৩ বছরের নির্লজ্জ্ব প্রচেষ্টার পর অবশেষে আনিসুল হক এ বছর কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন।
২০০৯ সাল থেকে তিনি শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি এবং ধারাবাহিক ভাবে শেখ মুজিবর রহমানকে নিয়ে ৩টি উপন্যাস(যার মান খুব ভালো না, কিন্তু সেটা একদিক দিয়ে রাজনৈতিক কর্মীদের মনঃতুষ্টি করবে) লিখেছেন। এরপরও যদি তাকে বাংলা একাডেমী পুরস্কার না দেওয়া হতো তাহলে হয়তো তিনি ২০১৫ থেকে জিয়াউর রহমান পুতুল সিরিজ উপন্যাস লেখা শুরু করতেন। -Rasel Pervez
আপনাকেও ধন্যবাদ। @Shahadat Udraji
আরে, এই জিনিস পাইলেন কই! :) @Anonymous
Post a Comment