"...এ তো ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি [তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে] জবাই করার জন্য দিলাম এক মহান জন্তু...।"
-সুরা সাফফাত: ১০৬-১০৮
"আমি তোমাকে কাউসার [ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ] দান করেছি। সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের জন্য নামাজ পড় ও কোরবানি দাও।"
-১০৮ সুরা কাউসার: ১-২
"এ সব [কোরবানির] পশুর মধ্যে এক নির্দিষ্টকালের জন্য তোমাদের জন্য নানা উপকার আছে; তারপর এদের [কোরবানির] জায়গা প্রাচীন ঘরের [কাবার] কাছে। আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য [কোরবানির] নিয়ম করে দিয়েছি...।"
-২২ সুরা হজ: ৩৩-৩৪
কোরবানির নামে পশু উৎসর্গের নির্দেশনা কেবল কোরানেই আছে এমন না। অনেক আগে থেকেই এটা চলে আসছিল। যার ছাপ আমরা দেখতে পাই তৌরাতেও। আমরা তো এটা সবাই জানি, তৌরাত কোরান থেকে আরও প্রাচীন। অবশ্য তারচেয়েও প্রাচীন ঋগ্বেদ।
যাই হোক, তৌরাতে পশু উৎসর্গ- কোরবানির উল্লেখ এমন:
"...সেই সময় গ্রাহ্য হবার জন্যই কোরবানি করো। সেই দিনে তা ভোজন করতে হবে; তোমরা সকাল পর্যন্ত তার কিছু অবশিষ্ট রেখো না; আমি মাবুদ।"
-তৌরাত শরীফ: তৃতীয় খন্ড: লেবীয় কিতাব, ২১:২৯-৩০
"...এবং প্রথম দিনের সন্ধ্যাবেলা তুমি যে কোরবানি কর, তার গোশত কিছুই, সমস্ত রাত্রি সকাল পর্যন্ত অবশিষ্ট না থাকুক।"
-তৌরাত শরীফ: পঞ্চম খন্ড: দ্বিতীয় বিবরণ, ১৫:৪
"সেখানে তোমরা মঙ্গল-কোরবানি দেবে, আর সেই স্থানে ভোজন করবে এবং তোমার আল্লাহ মাবুদের সম্মুখে আনন্দ করবে।"
-তৌরাত শরীফ: পঞ্চম খন্ড: দ্বিতীয় বিবরণ, ২৭:৭
তৌরাতে কোরবানির বিস্তারিতও দেয়া আছে:
"আর মাবুদ মূসা ও হারুণকে বললেন, ঈদুল ফেসাখের কোরবানির নিয়ম এই রকম; বিদেশি কোনো লোক তা ভোজন করবে না।"
-তৌরাত শরীফ: ২য় খন্ড হিজরত, ১২: ৪৩
বা এটা। পশুটা খুঁতযুক্ত হতে পারবে না:
"...যদি কোন পশুর অন্ডকোষ মর্দিত কিংবা পিষ্ট কিংবা ভগ্ন কিংবা ছিন্ন হয় তবে সেগুলোকে মাবুদের উদ্দেশ্যে কোরবানি করো না...।"
-তৌরাত শরীফ: তৃতীয় খন্ড: লেবীয় কিতাব, ২১:২৪
পশুবলির অজস্র উদাহরণ। যেমন রামায়নে আমরা অশ্বমেধ যজ্ঞের কথা জানতে পাই:
"...দশরথের কোনও সন্তান ছিল না। মনের দুঃখে একদা মন্ত্রীদের বলিলেন, 'আমি দেবতাগণকে তুষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করিব'। যজ্ঞের আয়োজন সম্পন্ন করা হইল। ...প্রথমে করা হইল 'অশ্বমেধ যজ্ঞ।"
-রামায়ন, আদিকান্ড
(ঘোড়ার মাংস দিয়ে এই যজ্ঞ করা হত। জটিল এক প্রক্রিয়া, প্রথমে ঘোড়াটা ছেড়ে দেয়া হত। এই ঘোড়া এক বছর যেখানে খুশী সেখানে ঘুরে বেড়াত তারপর এটাকে ফিরিয়ে আনা হত। এবং বধ করা হত)
তেমনি আমরা মহাভারতেও দেখতে পাই।
"ব্যাসদেব বলিলেন, 'নিজেকে যদি পাপি মনে করো তাহা হইলে তপস্যা ও যজ্ঞ করিয়া মনকে শান্ত করো। তুমি অশ্বমেধ যজ্ঞ করিয়া পাপমুক্ত হও।"
-মহাভারত, অশ্বমেধিক পর্ব, কৃষ্ণ ও ব্যাসের উপদেশ
এখানেও আছে নিঁখুত পশুর উদাহরণ:
"তোমার রাজ্যের শ্রেষ্ঠ অশ্ব বিশেষজ্ঞ দ্বারা বাছিয়া সবচাইতে সুলক্ষণ যুক্ত ঘোড়াটিকে যজ্ঞের অশ্ব রূপে বাছিয়া নাও। তাহার পর সেই অশ্ব মুক্ত হইয়া সমস্ত পৃথিবীতে ঘুরিয়া বেড়াইবে...। মহাবীর অর্জুন সেই ঘোড়াটিকে রক্ষা করিয়া চলিবেন। এক বৎসর পর অর্জুন সমস্ত পৃথিবী ঘুরিয়া যজ্ঞের অশ্ব নিয়ে ফিরিয়া আসিলে যজ্ঞের অনুষ্ঠান শুরু হইবে...। ...সমস্ত পশুকে আগুনে উৎসর্গ করিয়া যজ্ঞের পর, যজ্ঞের ঘোড়াটিকে ব্রাক্ষণেরা বধ করিলেন...।"
-মহাভারত, যজ্ঞের অশ্ব নিয়া অর্জুনের যাত্রা, অশ্বমেধ যজ্ঞ
আরও পূর্বে, সেই আদিম যুগেও আকাশলোকের বাসিন্দার জন্য পশু উৎসর্গের নামে বলি দেয়া হত। ঘটা করে সবাই মিলে পশু জবাই করত, কখনও আকাশলোকের বাসিন্দার নামে পশু উৎসর্গ করা হতো, কখনও-বা নিজের জন্য।
*এখন হয়ে গেছে বিরাট ত্যাগবাজি...[১]
সহায়ক সূত্র:
১. ত্যাগবাজি: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_25.html
-সুরা সাফফাত: ১০৬-১০৮
"আমি তোমাকে কাউসার [ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ] দান করেছি। সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের জন্য নামাজ পড় ও কোরবানি দাও।"
-১০৮ সুরা কাউসার: ১-২
"এ সব [কোরবানির] পশুর মধ্যে এক নির্দিষ্টকালের জন্য তোমাদের জন্য নানা উপকার আছে; তারপর এদের [কোরবানির] জায়গা প্রাচীন ঘরের [কাবার] কাছে। আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য [কোরবানির] নিয়ম করে দিয়েছি...।"
-২২ সুরা হজ: ৩৩-৩৪
কোরবানির নামে পশু উৎসর্গের নির্দেশনা কেবল কোরানেই আছে এমন না। অনেক আগে থেকেই এটা চলে আসছিল। যার ছাপ আমরা দেখতে পাই তৌরাতেও। আমরা তো এটা সবাই জানি, তৌরাত কোরান থেকে আরও প্রাচীন। অবশ্য তারচেয়েও প্রাচীন ঋগ্বেদ।
যাই হোক, তৌরাতে পশু উৎসর্গ- কোরবানির উল্লেখ এমন:
"...সেই সময় গ্রাহ্য হবার জন্যই কোরবানি করো। সেই দিনে তা ভোজন করতে হবে; তোমরা সকাল পর্যন্ত তার কিছু অবশিষ্ট রেখো না; আমি মাবুদ।"
-তৌরাত শরীফ: তৃতীয় খন্ড: লেবীয় কিতাব, ২১:২৯-৩০
"...এবং প্রথম দিনের সন্ধ্যাবেলা তুমি যে কোরবানি কর, তার গোশত কিছুই, সমস্ত রাত্রি সকাল পর্যন্ত অবশিষ্ট না থাকুক।"
-তৌরাত শরীফ: পঞ্চম খন্ড: দ্বিতীয় বিবরণ, ১৫:৪
"সেখানে তোমরা মঙ্গল-কোরবানি দেবে, আর সেই স্থানে ভোজন করবে এবং তোমার আল্লাহ মাবুদের সম্মুখে আনন্দ করবে।"
-তৌরাত শরীফ: পঞ্চম খন্ড: দ্বিতীয় বিবরণ, ২৭:৭
তৌরাতে কোরবানির বিস্তারিতও দেয়া আছে:
"আর মাবুদ মূসা ও হারুণকে বললেন, ঈদুল ফেসাখের কোরবানির নিয়ম এই রকম; বিদেশি কোনো লোক তা ভোজন করবে না।"
-তৌরাত শরীফ: ২য় খন্ড হিজরত, ১২: ৪৩
বা এটা। পশুটা খুঁতযুক্ত হতে পারবে না:
"...যদি কোন পশুর অন্ডকোষ মর্দিত কিংবা পিষ্ট কিংবা ভগ্ন কিংবা ছিন্ন হয় তবে সেগুলোকে মাবুদের উদ্দেশ্যে কোরবানি করো না...।"
-তৌরাত শরীফ: তৃতীয় খন্ড: লেবীয় কিতাব, ২১:২৪
পশুবলির অজস্র উদাহরণ। যেমন রামায়নে আমরা অশ্বমেধ যজ্ঞের কথা জানতে পাই:
"...দশরথের কোনও সন্তান ছিল না। মনের দুঃখে একদা মন্ত্রীদের বলিলেন, 'আমি দেবতাগণকে তুষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করিব'। যজ্ঞের আয়োজন সম্পন্ন করা হইল। ...প্রথমে করা হইল 'অশ্বমেধ যজ্ঞ।"
-রামায়ন, আদিকান্ড
(ঘোড়ার মাংস দিয়ে এই যজ্ঞ করা হত। জটিল এক প্রক্রিয়া, প্রথমে ঘোড়াটা ছেড়ে দেয়া হত। এই ঘোড়া এক বছর যেখানে খুশী সেখানে ঘুরে বেড়াত তারপর এটাকে ফিরিয়ে আনা হত। এবং বধ করা হত)
তেমনি আমরা মহাভারতেও দেখতে পাই।
"ব্যাসদেব বলিলেন, 'নিজেকে যদি পাপি মনে করো তাহা হইলে তপস্যা ও যজ্ঞ করিয়া মনকে শান্ত করো। তুমি অশ্বমেধ যজ্ঞ করিয়া পাপমুক্ত হও।"
-মহাভারত, অশ্বমেধিক পর্ব, কৃষ্ণ ও ব্যাসের উপদেশ
এখানেও আছে নিঁখুত পশুর উদাহরণ:
"তোমার রাজ্যের শ্রেষ্ঠ অশ্ব বিশেষজ্ঞ দ্বারা বাছিয়া সবচাইতে সুলক্ষণ যুক্ত ঘোড়াটিকে যজ্ঞের অশ্ব রূপে বাছিয়া নাও। তাহার পর সেই অশ্ব মুক্ত হইয়া সমস্ত পৃথিবীতে ঘুরিয়া বেড়াইবে...। মহাবীর অর্জুন সেই ঘোড়াটিকে রক্ষা করিয়া চলিবেন। এক বৎসর পর অর্জুন সমস্ত পৃথিবী ঘুরিয়া যজ্ঞের অশ্ব নিয়ে ফিরিয়া আসিলে যজ্ঞের অনুষ্ঠান শুরু হইবে...। ...সমস্ত পশুকে আগুনে উৎসর্গ করিয়া যজ্ঞের পর, যজ্ঞের ঘোড়াটিকে ব্রাক্ষণেরা বধ করিলেন...।"
-মহাভারত, যজ্ঞের অশ্ব নিয়া অর্জুনের যাত্রা, অশ্বমেধ যজ্ঞ
আরও পূর্বে, সেই আদিম যুগেও আকাশলোকের বাসিন্দার জন্য পশু উৎসর্গের নামে বলি দেয়া হত। ঘটা করে সবাই মিলে পশু জবাই করত, কখনও আকাশলোকের বাসিন্দার নামে পশু উৎসর্গ করা হতো, কখনও-বা নিজের জন্য।
*এখন হয়ে গেছে বিরাট ত্যাগবাজি...[১]
সহায়ক সূত্র:
১. ত্যাগবাজি: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_25.html
No comments:
Post a Comment