গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় ইটিভিতে আমি যে স্কুলের সঙ্গে যুক্ত, 'আমাদের ইশকুল' [০, ১,২,৩], যেখানে সুবিধাবন্চিত শিশুরা বিনে-পয়সায় পড়তে পারে। সে স্কুলটা নিয়ে একটা প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে- দেখে আমি হাঁ! আজ আবার সাড়ে ১১টায় এটা পুণঃপ্রচার হওয়ার কথা ছিল। অতি উত্তম!
এই প্রতিবেদন দেখে আমরা অনেক কিছুই জানলাম কিন্তু কেবল জানা হলো না এই 'আমাদের ইশকুলটা' চলছে কেমন করে, কারা চালায় নাকি এটা চাকা লাগিয়ে নিজে-নিজে চলে! এরা কেবল দয়া করে জানালেন, ব্যক্তি উদ্যেগে স্কুলটা চলছে। এই 'ব্যক্তিউদ্যোগ' জিনিসটা কী, আলকাতরা টাইপের কিছু?
ইটিভি নামের এই চু...(সংযমের মাস বলে চুতিয়া শব্দটা বলতে চাচ্ছি না)। একটা স্কুল চালাতে মাস্টারের বেতন দিতে হয়, স্কুল ঘরের ভাড়া দিতে হয়, শিক্ষার উপকরণ কেনা লাগে- এটার কোনো চাকা নেই যে আপনাআপনি গড়াতে থাকবে!
ইটিভির প্রতিবেদন দেখে মনে হয়েছে, এই স্কুলটা আগে নদীগর্ভে তলিয়ে ছিল, পানি সরে যাওয়ার পর চর জেগে উঠার মত এটাও গজিয়েছে। বা ইটিভি যারা চালান তারা বালকবেলায় এক সকালে আবিষ্কার করলেন তাদের ইয়েতে হালকা গোঁফ গজিয়েছে, এই টাইপ আর কী!
খানিক পূর্বে একজন আবার আমাকে নসিহত করলেন: আরে মিয়া, টিভিতে দেখাইছে এইটাই তো বেশি।
মানুষটা খুব একটা ভুল বলেননি আমাদের দেশে টিভি ক্যামেরা দেখলে পারলে লোকজনেরা প্যান্টও খুলে দেন।
মিডিয়া বলে কথা!
আমাদের দেশের মিডিয়া নিয়ে আমার স্মৃতি সুখকর না কারণ এরা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। এক পত্রিকার একটা সাক্ষাৎকারের কথা খানিকটা বলি, আমি যা বলেছি তার অনেকটাই এরা ফেলে দিল। সে নাহয় মেনে নেওয়া গেল কিন্তু নতুন কিছু বাতচিত লাগিয়ে দিল- যা আমি বলিনি! যেমন ছোটবেলা থেকে আমার নাকি স্বপ্ন ছিল দেশ-বিদেশে আমার অনেক পাঠক থাকবে। শ্লা, আমি কী রাজনীতিবিদ নাকি যে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখে-দেখে ইয়ে বাঁধিয়ে বসব?
যদি এমনটা হতো আমাকে না-জানিয়ে ইটিভি এই প্রতিবেদনটা তৈরী করেছে তাহলে আমার বলার কিছু ছিল না। যেমনটা হয়েছিল 'দিগন্ত টিভি'র বেলায়। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর আমি সাফ না করে দিয়েছিলাম কারণ 'দিগন্ত টিভি' নিয়ে আমার নীতিগত সমস্যা আছে। এখন এরা যদি আমাকে না-জানিয়ে এই স্কুলের উপর প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকে তাহলে আমার তো করার কিছু নাই। কী দেখালো, না দেখালো- কী বলল, না বলল তাতে আমার কী!
কিন্তু এবার ইটিভির এই অনুরোধের ছোট ঢেঁকি ওরফে 'বুম' গিলতে হয়েছিল।
পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে প্রথমে গররাজি হলেও অনেক কথা চালাচালির পর ইটিভির কথায় আমি রাজী হয়েছিলাম। এরা যেটা আমাকে বোঝাবার চেষ্টা করছিলেন এটা দেখালে নাকি লোকজনেরা উদ্বুদ্ধ হবে, হেনতেন...।
আমি মনে মনে বলেছিলাম, আরে, রাখো মিয়া, লোকজনের আর 'খায়া-দায়া' কাজ নাই। লোকজনের কাজ হচ্ছে, ঘটা করে জানতে চাওয়া স্কুল চলছে কিনা, ব্যস দায়িত্ব শেষ!
তো, ইটিভি কয়েক দিন লাগিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরী করল। যে শিক্ষক এই স্কুলে পড়ায় তাকে বলা দেওয়া হয়েছিল এদেরকে সব ধরনের সহযোগীতা করার জন্য। প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য এদেরকে দেওয়া হয়েছে, বারবার। এই গোটা প্রক্রিয়া আমার যথেষ্ঠ বিরক্তি উদ্রেক করেছে কারণ ওই সময় জরুরি একটা বিষয় নিয়ে আমি খুব ঝামেলায় ছিলাম।
যাই হোক, এই স্কুলটার স্বপ্নদ্রষ্টাদের একজন 'সাদিক আলম'-ও। আমরা আসলে চেয়েছিলাম একটা বৃদ্ধাশ্রম করার জন্য যেখানে বয়স্ক লোকজন এবং নিরাশ্রয় শিশুরাও থাকবে। কিন্তু টাকার জন্য এটা করা সম্ভব হচ্ছিল না তখন আমরা ঠিক করলাম স্কুল করব। সে প্রায় বছর-চারেক আগের কথা।
এটা আমার জন্য অনেকখানি বিব্রতকর, কষ্টের; পূর্বে মিডিয়ার লোকজনেরা বিচিত্র কারণে কেবল আমার নামটাই দিয়েই দায় সেরেছে। এবার এটা আমি এদেরকে পইপই করে বলে দিয়েছিলাম, আমার নামটা বাদ যাক তবুও যেন এবার এই ভুলটা যেন না-হয়!
কিন্তু সব উধাও, প্রতিবেদনে কিসসু নাই। চরে একটা স্কুল গজিয়েছে, চাকায় ভর দিয়ে নিজে নিজে চলে এই টাইপ...।
তা, এরা এমনটা কেন করল? আসলে এটা এক ধরনের কুৎসিত ফাজলামি! লোকজনের প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞা- ক্ষমতার দম্ভ! এরা এটা বিলক্ষণ জানে, এদের বিরুদ্ধে কেউ টুঁশব্দও করবে না। আর অনুষ্ঠান অন-এয়ার হয়েছে এতেই তো লোকজন পশ্চাদদেশে তিন চাপড় মেরে উল্লাস করবে, ক্ষোভ প্রকাশ করার আর ইচ্ছা কোথায়...।
তো, যে প্রতিবেদক এই প্রতিবেদনের জন্য এসেছিলেন তাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই ফাজলামির মানে কীঁ! তিনি আমাকে জানালেন, তিনি ঠিকই সব গুছিয়ে পাঠিয়েছেন কিন্তু ইটিভির অফিস থেকে কী হয়েছে এটা তার জানা নাই। তিনি নিজেও এই বিষয়ে বিভ্রান্ত! তার সীমিত ক্ষমতা এটা আমি বুঝি তাই আমি বললাম, অফিসে আপনি এটা জানিয়ে দেবেন ইটিভির অপদার্থ কর্মকান্ড নিয়ে আমি বিরক্ত, ক্রদ্ধ। আমার বিরক্তির কারণে ইটিভির মত একটা অতি ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠান গুরুত্ব দেবে না কিন্তু পরবর্তী অন্তত আপনি নিরাপদ থাকবেন...।
সহায়ক সূত্র:
০. আমাদের ইশকুল: http://tinyurl.com/39egrtn
১. আমাদের ইশকুল, এক: http://tinyurl.com/3xpuov5
২. আমাদের ইশকুল, দুই: http://tinyurl.com/2fs9j4p
৩. আমাদের ইশকুল, তিন: http://tinyurl.com/327aky3
এই প্রতিবেদন দেখে আমরা অনেক কিছুই জানলাম কিন্তু কেবল জানা হলো না এই 'আমাদের ইশকুলটা' চলছে কেমন করে, কারা চালায় নাকি এটা চাকা লাগিয়ে নিজে-নিজে চলে! এরা কেবল দয়া করে জানালেন, ব্যক্তি উদ্যেগে স্কুলটা চলছে। এই 'ব্যক্তিউদ্যোগ' জিনিসটা কী, আলকাতরা টাইপের কিছু?
ইটিভি নামের এই চু...(সংযমের মাস বলে চুতিয়া শব্দটা বলতে চাচ্ছি না)। একটা স্কুল চালাতে মাস্টারের বেতন দিতে হয়, স্কুল ঘরের ভাড়া দিতে হয়, শিক্ষার উপকরণ কেনা লাগে- এটার কোনো চাকা নেই যে আপনাআপনি গড়াতে থাকবে!
ইটিভির প্রতিবেদন দেখে মনে হয়েছে, এই স্কুলটা আগে নদীগর্ভে তলিয়ে ছিল, পানি সরে যাওয়ার পর চর জেগে উঠার মত এটাও গজিয়েছে। বা ইটিভি যারা চালান তারা বালকবেলায় এক সকালে আবিষ্কার করলেন তাদের ইয়েতে হালকা গোঁফ গজিয়েছে, এই টাইপ আর কী!
খানিক পূর্বে একজন আবার আমাকে নসিহত করলেন: আরে মিয়া, টিভিতে দেখাইছে এইটাই তো বেশি।
মানুষটা খুব একটা ভুল বলেননি আমাদের দেশে টিভি ক্যামেরা দেখলে পারলে লোকজনেরা প্যান্টও খুলে দেন।
মিডিয়া বলে কথা!
আমাদের দেশের মিডিয়া নিয়ে আমার স্মৃতি সুখকর না কারণ এরা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। এক পত্রিকার একটা সাক্ষাৎকারের কথা খানিকটা বলি, আমি যা বলেছি তার অনেকটাই এরা ফেলে দিল। সে নাহয় মেনে নেওয়া গেল কিন্তু নতুন কিছু বাতচিত লাগিয়ে দিল- যা আমি বলিনি! যেমন ছোটবেলা থেকে আমার নাকি স্বপ্ন ছিল দেশ-বিদেশে আমার অনেক পাঠক থাকবে। শ্লা, আমি কী রাজনীতিবিদ নাকি যে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখে-দেখে ইয়ে বাঁধিয়ে বসব?
যদি এমনটা হতো আমাকে না-জানিয়ে ইটিভি এই প্রতিবেদনটা তৈরী করেছে তাহলে আমার বলার কিছু ছিল না। যেমনটা হয়েছিল 'দিগন্ত টিভি'র বেলায়। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর আমি সাফ না করে দিয়েছিলাম কারণ 'দিগন্ত টিভি' নিয়ে আমার নীতিগত সমস্যা আছে। এখন এরা যদি আমাকে না-জানিয়ে এই স্কুলের উপর প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকে তাহলে আমার তো করার কিছু নাই। কী দেখালো, না দেখালো- কী বলল, না বলল তাতে আমার কী!
কিন্তু এবার ইটিভির এই অনুরোধের ছোট ঢেঁকি ওরফে 'বুম' গিলতে হয়েছিল।
পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে প্রথমে গররাজি হলেও অনেক কথা চালাচালির পর ইটিভির কথায় আমি রাজী হয়েছিলাম। এরা যেটা আমাকে বোঝাবার চেষ্টা করছিলেন এটা দেখালে নাকি লোকজনেরা উদ্বুদ্ধ হবে, হেনতেন...।
আমি মনে মনে বলেছিলাম, আরে, রাখো মিয়া, লোকজনের আর 'খায়া-দায়া' কাজ নাই। লোকজনের কাজ হচ্ছে, ঘটা করে জানতে চাওয়া স্কুল চলছে কিনা, ব্যস দায়িত্ব শেষ!
তো, ইটিভি কয়েক দিন লাগিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরী করল। যে শিক্ষক এই স্কুলে পড়ায় তাকে বলা দেওয়া হয়েছিল এদেরকে সব ধরনের সহযোগীতা করার জন্য। প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য এদেরকে দেওয়া হয়েছে, বারবার। এই গোটা প্রক্রিয়া আমার যথেষ্ঠ বিরক্তি উদ্রেক করেছে কারণ ওই সময় জরুরি একটা বিষয় নিয়ে আমি খুব ঝামেলায় ছিলাম।
যাই হোক, এই স্কুলটার স্বপ্নদ্রষ্টাদের একজন 'সাদিক আলম'-ও। আমরা আসলে চেয়েছিলাম একটা বৃদ্ধাশ্রম করার জন্য যেখানে বয়স্ক লোকজন এবং নিরাশ্রয় শিশুরাও থাকবে। কিন্তু টাকার জন্য এটা করা সম্ভব হচ্ছিল না তখন আমরা ঠিক করলাম স্কুল করব। সে প্রায় বছর-চারেক আগের কথা।
এটা আমার জন্য অনেকখানি বিব্রতকর, কষ্টের; পূর্বে মিডিয়ার লোকজনেরা বিচিত্র কারণে কেবল আমার নামটাই দিয়েই দায় সেরেছে। এবার এটা আমি এদেরকে পইপই করে বলে দিয়েছিলাম, আমার নামটা বাদ যাক তবুও যেন এবার এই ভুলটা যেন না-হয়!
কিন্তু সব উধাও, প্রতিবেদনে কিসসু নাই। চরে একটা স্কুল গজিয়েছে, চাকায় ভর দিয়ে নিজে নিজে চলে এই টাইপ...।
তা, এরা এমনটা কেন করল? আসলে এটা এক ধরনের কুৎসিত ফাজলামি! লোকজনের প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞা- ক্ষমতার দম্ভ! এরা এটা বিলক্ষণ জানে, এদের বিরুদ্ধে কেউ টুঁশব্দও করবে না। আর অনুষ্ঠান অন-এয়ার হয়েছে এতেই তো লোকজন পশ্চাদদেশে তিন চাপড় মেরে উল্লাস করবে, ক্ষোভ প্রকাশ করার আর ইচ্ছা কোথায়...।
তো, যে প্রতিবেদক এই প্রতিবেদনের জন্য এসেছিলেন তাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই ফাজলামির মানে কীঁ! তিনি আমাকে জানালেন, তিনি ঠিকই সব গুছিয়ে পাঠিয়েছেন কিন্তু ইটিভির অফিস থেকে কী হয়েছে এটা তার জানা নাই। তিনি নিজেও এই বিষয়ে বিভ্রান্ত! তার সীমিত ক্ষমতা এটা আমি বুঝি তাই আমি বললাম, অফিসে আপনি এটা জানিয়ে দেবেন ইটিভির অপদার্থ কর্মকান্ড নিয়ে আমি বিরক্ত, ক্রদ্ধ। আমার বিরক্তির কারণে ইটিভির মত একটা অতি ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠান গুরুত্ব দেবে না কিন্তু পরবর্তী অন্তত আপনি নিরাপদ থাকবেন...।
০. আমাদের ইশকুল: http://tinyurl.com/39egrtn
১. আমাদের ইশকুল, এক: http://tinyurl.com/3xpuov5
২. আমাদের ইশকুল, দুই: http://tinyurl.com/2fs9j4p
৩. আমাদের ইশকুল, তিন: http://tinyurl.com/327aky3
No comments:
Post a Comment