দাউদ হায়দারকে নিয়ে কিছু লেখা লিখেছিলাম [১, ২, ৩]। তখন আমার সঙ্গে তাঁর কোনো পরিচয়ই নেই কিন্তু আমি ওই লেখাগুলোর লিখেছিলাম কেবল এই কারণে যে কেবল আমার মনে হচ্ছিল, ওই মানুষটার জায়গায় আমি নিজে। আমি আমার দেশের মাটি স্পর্শ করতে পারব না এটা ভাবলেই অসম্ভব অস্থির লাগত- মাথা এলোমেলো হয়ে যেত!
এটা আমি কখনই ভুলব না, আমার মত অতি সামান্য একজন মানুষের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি বার্লিন থেকে বন-এ চলে আসলেন! তাঁর এই মমতার কথা বিস্মৃত হই কেমন করে! অথচ বন-এ আমার পরিচিত কিছু মানুষ থাকার পরও তখন এরা আমার কোনো খোঁজই নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি!
তাঁর সঙ্গে যখন দেখা হলো, কথা কী শেষ হয়, ছাই! তিনি আমাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য রাতে থেকে গেলেন। কথায় কথায় রাত গভীর হয়- কতশত কথা!
আমাকে আবার ফ্লাইট ধরার জন্য সকাল-সকাল ছুটতে হবে। বড়ো অনিচ্ছা নিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। দাউদ ভাই লেখালেখির কাজ করছিলেন- কখন ঘুমাতে গিয়েছিলেন আমি জানি না। কিন্তু রাতে যখন মাঝে-মাঝে আমার ঘুম ভেঙ্গেছে আমি শুনছিলাম, ঘুমের মধ্যে মানুষটা কেমন যেন একটা 'হু-হু' করে বিচিত্র শব্দ করেন। শব্দটা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। শুনলেই মনের গভীর থেকে অজানা এক বেদনা পাক খেয়ে উঠে। তিনি কী দুঃস্বপ্ন দেখছিলেন- প্রতি রাতেই কী তিনি এমন দুঃস্বপ্ন দেখেন? দোহারপাড়ায় তাঁর শৈশবের নদী কী তাঁকে আয়-আয় করে ডাকে? জানা হয় না এটা।
সকালে আমি যখন বের হবো তখনও মানুষটা গভীর ঘুমে! লেখালেখির কারণে মানুষটা ঘুমিয়েছেন অনেক রাতে তাই আমি আর ঘুম ভাঙ্গাই না। লেখার খসড়া কাগজে উপর তাঁর বইটা চাপা দেওয়া। সেই বইয়ের উপর আলাদা কাগজে ছোট্ট একটা নোট লিখে রেখে এসেছিলাম, 'দাউদ ভাই, যাচ্ছি। ভাল থাকবেন। আপনার সঙ্গে দেখা হবে, দেশে'।
এই শেষ লাইনটা কেন লিখেছিলাম আমি জানি না! তবে লিখেছিলাম তীব্র বিশ্বাস থেকে। কিন্তু এটা তো আমার অজানা থাকার কথা না যে এটা কী অসম্ভব এক চাওয়া! কেন আমি তাঁকে এই মিথ্যা আশ্বাসের কথা লিখলাম? আজও নিজেকে বড়ো অপরাধী মনে হয়। কেন, এই মিথ্যা আশ্বাসের কথা লেখা, কেন-কেন...?
যাই হোক, একজন 'দাউদ হায়দার' [*] লেখাটা লেখার পর মনে হলো এরপর তো আর মানুষটার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। এ অন্যায়-এ অন্যায়! আমি ফোনে কথা বলি মানুষটার সঙ্গে। কথা বলে আমি হতভম্ব-হতবাক! আমি জানতাম, মানুষটা প্রবাসে অন্তত ভাল আছেন। তিনি ডয়চে ভেলে (Deutsche Welle)-এর বার্লিন প্রতিনিধি ছিলেন। এখন তাঁর কাছে শুনলাম, ডয়চে ভেলের ওই চাকরিটা নাকি নেই! আরে, তিনি এই সব কী বলছেন! তাঁর কাছ থেকেই এটা জানা হয়, প্রায় ২৩ বছর তিনি ডয়চে ভেলেতে কাজ করেছেন। প্রায় দুই যুগের উপর! ডয়চে ভেলে নাকি আর্থিক মন্দার কারণ দেখিয়ে তাঁকে ছাঁটাই করেছে!
চাকরি যাওয়ার পর তিনি ডয়চে ভেলের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। মামলার রায় তাঁর পক্ষে যাওয়ার কথা কিন্তু অতি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মামলা করে সাধারণ মানুষ পারে কেমন করে? ফল যা হওয়া তাই হয়। খরচ চালাতে না-পেরে এক সময় তিনি মামলার হাল ছেড়ে দেন।
ওখানে সাগর সরওয়ার, আবদুল হাইকে আরও ক-জনকে দেখে এসেছিলাম, সবার নাম মনে পড়ছে না। আমার দুর্বল স্মৃতিশক্তি প্রতারিত করে না-থাকলে তখন সম্ভবত ওখানে ১০ জনের মতো বাংলাদেশি কর্মরত ছিলেন। এদেরকেও নাকি একে-একে আর্থিক মন্দার দোহাই দিয়ে ছাঁটাই করা হয়েছিল।
সাগর সরওয়ারের সঙ্গে মৃত্যুর পূর্বে এই নিয়ে আমার সঙ্গে কথাও হয়েছিল, তিনি দেশে ফেরার পর। তিনিও তখন আমাকে জানিয়েছিলেন, তাঁর ছাঁটাইয়ের পেছনেও এরা কারণ দেখিয়েছিল আর্থিক মন্দা!
অনেকগুলো 'যদি' এসে ভিড় করে। 'যদি' সাগর সরওয়ারের চাকরি না যেত তিনি দেশে ফিরতেন না- 'যদি' তিনি দেশে না-ফিরতেন তাহলে তাঁর এমন নিষ্ঠুর মৃত্যু হতো না। এই গ্রহের অল্প অভাগা মানুষ একজন তিনি, যার সন্তান, পরিবারের লোকজন এখনও জানেই না তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী কে?
এরা একে অপরকে খুন করেছেন এটা বলা ব্যতীত আর কোনো যুক্তিই আমার মাথায় কাজ করে না...!
ডয়চে ভেলেকে নিয়ে এখানে কিছু প্রশ্ন মনে আসছে আমার। আমি জানি না এ পর্যন্ত কতজনের চাকরি গেছে? তার মধ্যে কতজন বাংলাদেশি? আর কতজন ভারতীয়?
গ্লোবাল ভয়েস-এর মতে, ২৩ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন তার মধ্যে প্রায় ১৬ কোটি বাংলাদেশে। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, ১ কোটি বাংলাদেশি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। তবুও তো ১৫ কোটি! বাংলা বিভাগে তো ওই অনুপাতে লোকজন থাকার কথা। দাউদ ভাইয়ের কাছ থেকে যেটা জানলাম একে-একে বাংলাদেশিদেরই চাকরি গেছে। এটা সাগর সরওয়ারও আমাকে বলে ছিলেন।
এতে যে ভারতীয় দাদাদের দাদাগিরি, কলকাঠি নাড়ানাড়ি আছে এ আর বলার অপেক্ষা রাখে না!
এখানে আমার যে প্রশ্ন:
১. বাংলা বিভাগে ভারতীয়দের এতো আধিক্য কেন? বাংলা অনুষ্ঠান কী কেবল ভারতের লোকজনেরাই শোনে?
২. আমি যতটুকু জানি, ডয়চে ভেলে ৩০টি ভাষায় ব্রডকাস্ট করে থাকে। সব ভাষার বিভাগেই কি এমন ছাঁটাই চলছে? নাকি আর্থিক মন্দা কেবল বাংলা বিভাগে? ওহো, তাহলে আমি বড়ো দুঃখিত হই যে!
তা, বাংলা বিভাগের মালিকানা কী আলাদা নাকি? এমনটা হয়ে থাকলে বাংলা বিভাগ এভাবে আর কদ্দিন চালাবেন? ডিয়ার ডয়চে ভেলে, বাংলা বিভাগটা আপনাদের কি বিক্রি করে দেয়ার মতলব আছে? থাকলে, ঝেড়ে কাশেন- এতে লজ্জার কিছু নাই। এমনটা হলে আমরা কিনে নেব। আরে, না-না, আমি না, আমি এতো টাকা পাব কোথায়, বাপু! বাংলাদেশে কারো কাছে গছানো যায় কিনা চেষ্টা করে দেখলুম আর কি। এই বেচা-কেনায় কিছু কমিশন পাওয়া গেলে মন্দ কি...।
*একজন দাউদ হায়দার: https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10151521056367335&set=a.10151298132117335.465193.723002334&type=1
**ফারজানা কবির খান স্নিগ্ধা, ডয়চে ভেলেতে চাকুরি করার সুবাদে একটি লেখা লিখেছেন: http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=27f48a1f868ca2b9f4ee1d2cf9e2e509&nttl=17072013211133
তথ্যবহুল একটা লেখা। সেখান থেকে খানিকটা তুলে দেই এখানে:
"...জার্মান সরকার, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জয়ের পরে তখনকার বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর অনুরোধে যে বাংলা ডিপার্টমেন্টটি উপহার স্বরূপ বাংলাদেশকে দেওয়া হয়োছিলো; তার বর্তমান বিভাগীয় প্রধান একজন ভারতীয় বাঙ্গালী। তার পাসপোর্ট ভারতীয় হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেয় বর্তমান বিভাগীয় প্রধান। এর কারন হলো, ডয়েচে ভেলের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি বিভাগের প্রধান হতে হবে সেই দেশের একজন নাগরিককে।...
"...আমাদের সাহিত্যিকরা তাদের (ভারতীয়) কাছে কোন সাহিত্যিকই নয়, এমনকি ছ্যা.. ছ্যা.. শব্দ উচ্চারণ করে তারা বাংলাদেশের বাংলাকে অপমান করে থাকে।..."
*এখানে মামলা করতে ৬০০ ইউরো করে লাগে প্রতিটি ডেটে। এটা শুধু উকিলের একদিনের কাজের খরচ। তারমানে যতবার কোর্টে ডাকবে ততবার ৬০০ ইউরো করে দিতে হবে। আর কোর্টের খরচ তে আছেই।
সহায়ক সূত্র:
১. দাউদ হায়দার, শুভ জন্মদিন বলি কোন মুখে?: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_21.html
২. দাউদ হায়দার, তোমার কাছে খোলা চিঠি: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_7633.html
৩. দাউদ হায়দার, তোমাকে, আবারো...: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_20.html
এটা আমি কখনই ভুলব না, আমার মত অতি সামান্য একজন মানুষের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি বার্লিন থেকে বন-এ চলে আসলেন! তাঁর এই মমতার কথা বিস্মৃত হই কেমন করে! অথচ বন-এ আমার পরিচিত কিছু মানুষ থাকার পরও তখন এরা আমার কোনো খোঁজই নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি!
তাঁর সঙ্গে যখন দেখা হলো, কথা কী শেষ হয়, ছাই! তিনি আমাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য রাতে থেকে গেলেন। কথায় কথায় রাত গভীর হয়- কতশত কথা!
আমাকে আবার ফ্লাইট ধরার জন্য সকাল-সকাল ছুটতে হবে। বড়ো অনিচ্ছা নিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। দাউদ ভাই লেখালেখির কাজ করছিলেন- কখন ঘুমাতে গিয়েছিলেন আমি জানি না। কিন্তু রাতে যখন মাঝে-মাঝে আমার ঘুম ভেঙ্গেছে আমি শুনছিলাম, ঘুমের মধ্যে মানুষটা কেমন যেন একটা 'হু-হু' করে বিচিত্র শব্দ করেন। শব্দটা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। শুনলেই মনের গভীর থেকে অজানা এক বেদনা পাক খেয়ে উঠে। তিনি কী দুঃস্বপ্ন দেখছিলেন- প্রতি রাতেই কী তিনি এমন দুঃস্বপ্ন দেখেন? দোহারপাড়ায় তাঁর শৈশবের নদী কী তাঁকে আয়-আয় করে ডাকে? জানা হয় না এটা।
সকালে আমি যখন বের হবো তখনও মানুষটা গভীর ঘুমে! লেখালেখির কারণে মানুষটা ঘুমিয়েছেন অনেক রাতে তাই আমি আর ঘুম ভাঙ্গাই না। লেখার খসড়া কাগজে উপর তাঁর বইটা চাপা দেওয়া। সেই বইয়ের উপর আলাদা কাগজে ছোট্ট একটা নোট লিখে রেখে এসেছিলাম, 'দাউদ ভাই, যাচ্ছি। ভাল থাকবেন। আপনার সঙ্গে দেখা হবে, দেশে'।
এই শেষ লাইনটা কেন লিখেছিলাম আমি জানি না! তবে লিখেছিলাম তীব্র বিশ্বাস থেকে। কিন্তু এটা তো আমার অজানা থাকার কথা না যে এটা কী অসম্ভব এক চাওয়া! কেন আমি তাঁকে এই মিথ্যা আশ্বাসের কথা লিখলাম? আজও নিজেকে বড়ো অপরাধী মনে হয়। কেন, এই মিথ্যা আশ্বাসের কথা লেখা, কেন-কেন...?
যাই হোক, একজন 'দাউদ হায়দার' [*] লেখাটা লেখার পর মনে হলো এরপর তো আর মানুষটার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। এ অন্যায়-এ অন্যায়! আমি ফোনে কথা বলি মানুষটার সঙ্গে। কথা বলে আমি হতভম্ব-হতবাক! আমি জানতাম, মানুষটা প্রবাসে অন্তত ভাল আছেন। তিনি ডয়চে ভেলে (Deutsche Welle)-এর বার্লিন প্রতিনিধি ছিলেন। এখন তাঁর কাছে শুনলাম, ডয়চে ভেলের ওই চাকরিটা নাকি নেই! আরে, তিনি এই সব কী বলছেন! তাঁর কাছ থেকেই এটা জানা হয়, প্রায় ২৩ বছর তিনি ডয়চে ভেলেতে কাজ করেছেন। প্রায় দুই যুগের উপর! ডয়চে ভেলে নাকি আর্থিক মন্দার কারণ দেখিয়ে তাঁকে ছাঁটাই করেছে!
চাকরি যাওয়ার পর তিনি ডয়চে ভেলের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। মামলার রায় তাঁর পক্ষে যাওয়ার কথা কিন্তু অতি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মামলা করে সাধারণ মানুষ পারে কেমন করে? ফল যা হওয়া তাই হয়। খরচ চালাতে না-পেরে এক সময় তিনি মামলার হাল ছেড়ে দেন।
ওখানে সাগর সরওয়ার, আবদুল হাইকে আরও ক-জনকে দেখে এসেছিলাম, সবার নাম মনে পড়ছে না। আমার দুর্বল স্মৃতিশক্তি প্রতারিত করে না-থাকলে তখন সম্ভবত ওখানে ১০ জনের মতো বাংলাদেশি কর্মরত ছিলেন। এদেরকেও নাকি একে-একে আর্থিক মন্দার দোহাই দিয়ে ছাঁটাই করা হয়েছিল।
সাগর সরওয়ারের সঙ্গে মৃত্যুর পূর্বে এই নিয়ে আমার সঙ্গে কথাও হয়েছিল, তিনি দেশে ফেরার পর। তিনিও তখন আমাকে জানিয়েছিলেন, তাঁর ছাঁটাইয়ের পেছনেও এরা কারণ দেখিয়েছিল আর্থিক মন্দা!
অনেকগুলো 'যদি' এসে ভিড় করে। 'যদি' সাগর সরওয়ারের চাকরি না যেত তিনি দেশে ফিরতেন না- 'যদি' তিনি দেশে না-ফিরতেন তাহলে তাঁর এমন নিষ্ঠুর মৃত্যু হতো না। এই গ্রহের অল্প অভাগা মানুষ একজন তিনি, যার সন্তান, পরিবারের লোকজন এখনও জানেই না তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী কে?
এরা একে অপরকে খুন করেছেন এটা বলা ব্যতীত আর কোনো যুক্তিই আমার মাথায় কাজ করে না...!
ডয়চে ভেলেকে নিয়ে এখানে কিছু প্রশ্ন মনে আসছে আমার। আমি জানি না এ পর্যন্ত কতজনের চাকরি গেছে? তার মধ্যে কতজন বাংলাদেশি? আর কতজন ভারতীয়?
গ্লোবাল ভয়েস-এর মতে, ২৩ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন তার মধ্যে প্রায় ১৬ কোটি বাংলাদেশে। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, ১ কোটি বাংলাদেশি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। তবুও তো ১৫ কোটি! বাংলা বিভাগে তো ওই অনুপাতে লোকজন থাকার কথা। দাউদ ভাইয়ের কাছ থেকে যেটা জানলাম একে-একে বাংলাদেশিদেরই চাকরি গেছে। এটা সাগর সরওয়ারও আমাকে বলে ছিলেন।
এতে যে ভারতীয় দাদাদের দাদাগিরি, কলকাঠি নাড়ানাড়ি আছে এ আর বলার অপেক্ষা রাখে না!
এখানে আমার যে প্রশ্ন:
১. বাংলা বিভাগে ভারতীয়দের এতো আধিক্য কেন? বাংলা অনুষ্ঠান কী কেবল ভারতের লোকজনেরাই শোনে?
২. আমি যতটুকু জানি, ডয়চে ভেলে ৩০টি ভাষায় ব্রডকাস্ট করে থাকে। সব ভাষার বিভাগেই কি এমন ছাঁটাই চলছে? নাকি আর্থিক মন্দা কেবল বাংলা বিভাগে? ওহো, তাহলে আমি বড়ো দুঃখিত হই যে!
তা, বাংলা বিভাগের মালিকানা কী আলাদা নাকি? এমনটা হয়ে থাকলে বাংলা বিভাগ এভাবে আর কদ্দিন চালাবেন? ডিয়ার ডয়চে ভেলে, বাংলা বিভাগটা আপনাদের কি বিক্রি করে দেয়ার মতলব আছে? থাকলে, ঝেড়ে কাশেন- এতে লজ্জার কিছু নাই। এমনটা হলে আমরা কিনে নেব। আরে, না-না, আমি না, আমি এতো টাকা পাব কোথায়, বাপু! বাংলাদেশে কারো কাছে গছানো যায় কিনা চেষ্টা করে দেখলুম আর কি। এই বেচা-কেনায় কিছু কমিশন পাওয়া গেলে মন্দ কি...।
*একজন দাউদ হায়দার: https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10151521056367335&set=a.10151298132117335.465193.723002334&type=1
**ফারজানা কবির খান স্নিগ্ধা, ডয়চে ভেলেতে চাকুরি করার সুবাদে একটি লেখা লিখেছেন: http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=27f48a1f868ca2b9f4ee1d2cf9e2e509&nttl=17072013211133
তথ্যবহুল একটা লেখা। সেখান থেকে খানিকটা তুলে দেই এখানে:
"...জার্মান সরকার, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জয়ের পরে তখনকার বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর অনুরোধে যে বাংলা ডিপার্টমেন্টটি উপহার স্বরূপ বাংলাদেশকে দেওয়া হয়োছিলো; তার বর্তমান বিভাগীয় প্রধান একজন ভারতীয় বাঙ্গালী। তার পাসপোর্ট ভারতীয় হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেয় বর্তমান বিভাগীয় প্রধান। এর কারন হলো, ডয়েচে ভেলের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি বিভাগের প্রধান হতে হবে সেই দেশের একজন নাগরিককে।...
"...আমাদের সাহিত্যিকরা তাদের (ভারতীয়) কাছে কোন সাহিত্যিকই নয়, এমনকি ছ্যা.. ছ্যা.. শব্দ উচ্চারণ করে তারা বাংলাদেশের বাংলাকে অপমান করে থাকে।..."
*এখানে মামলা করতে ৬০০ ইউরো করে লাগে প্রতিটি ডেটে। এটা শুধু উকিলের একদিনের কাজের খরচ। তারমানে যতবার কোর্টে ডাকবে ততবার ৬০০ ইউরো করে দিতে হবে। আর কোর্টের খরচ তে আছেই।
সহায়ক সূত্র:
১. দাউদ হায়দার, শুভ জন্মদিন বলি কোন মুখে?: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_21.html
২. দাউদ হায়দার, তোমার কাছে খোলা চিঠি: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_7633.html
৩. দাউদ হায়দার, তোমাকে, আবারো...: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_20.html
1 comment:
https://www.facebook.com/ali.mahmed1971/posts/10151535207267335?notif_t=like
Post a Comment