আজকের অতিথি লেখক, আবারও Adil Abir (https://www.facebook.com/adil.abir.3)। এবার তিনি লিখছেন চিঠি:
"লিমন,
জি পি এ ৪ পাওয়ার জন্যে তোমাকে অভিনন্দন। পরিস্থিতি সাপেক্ষে তোমার রেজাল্ট ভাল, তবে যথেষ্ট ভাল নয়। এই ফলাফল নিয়ে তুমি খুব ভালো কোনো জায়গায় ভর্তি হতে পারবে না। অবশ্য এ সত্য, তুমি এখন কোটি মানুষের চেনামুখ, অজস্র মানুষের স্নেহ, সহানুভুতি আর ভালবাসায় সিক্ত হয়ে আছ। পরিচিতির দিক দিয়ে তুমি সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের লোক, ভালো কোথাও ভর্তি হওয়া বা ভাল বেতনের একটা চাকুরি তোমার জন্যে কঠিন কোনো সমস্যা না।
তবে আমি তোমার সমস্যা দেখছি অন্য জায়গায়, এবং সেইটা গুরুতর আকার ধারণ করতে কতক্ষণ আর? ইতোমধ্যে মানবাধিকার সংস্থার মহামান্য অতিমানব আবেগের জলকামান নিয়া থরো থরো কম্পমান
প্যান্টালুন মিজান একদফা তোমার দরদাম নিয়ে আলাপ সেরে ফেলেছেন। তার দরাদরিতে না, গাজিপুরের লোকজনই তোমাকে মামলা থেকে অব্যহতির ব্যবস্থা করছে।
তুমি হয়তো এরই মধ্যে অনেক শিক্ষিত, ওজনদার , সুশীল মানুষের বিক্রি হয়ে যাওয়া দেখে ফেলছ। তুমি সংবাদ শিরোনামে ছিলে দিনের পর দিন- যাদের কল্যাণে ছিলে সেই "সাংঘাতিক" লোকদের অনেকের সঙ্গে হয়তো তোমার ব্যক্তিগত যোগাযোগও স্থাপিত হয়ে গেছে। তুমি আরও দেখেছো পলিটিক্যাল সিস্টেমের মাঠ-পর্যায়ের বিক্রয়-কর্মীরা
তোমাকে অনেক অনুনয় বিনয় করে মামলা-টামলা প্রত্যাহার করতে বলছে, তুমি আবার রাজী না-হওয়ায় সেই অতি বিনীত মাঠ-কর্মীরা কেমন দ্রুত দক্ষতায় হুমকি-ধামকী সহ হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। আর আমাদের রাজনীতির কুশীলবরা সময়ে অসময়ে স্বান্তনার কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন পূর্বক পিঠে ভরসার হাত বুলিয়েছে। মনে রাখবে ওগুলো হাত ছিল না, ওগুলো আসলে থাবা। হয়তো তারা কেউ-কেউ এখনও 'থাবাফোনে' তোমাকে কাছে রাখার, কাছে থাকার নিমন্ত্রণ আমন্ত্রণও জানায়।
ও হ্যাঁ, তোমাকে বলাই হয় নাই সেইসব বিদেশী ব্যাগওয়ালা করপোরেট সুশীলদের কথা। যারা কথায় কথায় হয়তো তোমাকে পাকি টিনেজ সেন্সানশন উলালা-মালালার কাহিনী বিস্তর শুনিয়ে শুনিয়ে যাওয়ার সময় মাটির সানকিতে পান্তাভাত পেয়াজ-মরিচ মেখে চেটেপুটে খেয়ে গেছে। সেই উলালা সুশীলরা ভাঁজ না-ভাঙা সার্ট পরে, মাথার মাঝখানে সিঁথি করে। তবে মনে রাখবে তারা যতবার মালালারে নিয়ে আলাপ করে ততক্ষণ উহ, আহ, চুক-চুক শব্দ করে, সেই শব্দগুলোর আওয়াজ রাতের নিস্তব্ধতায় ভিন্ন রকম লাগে, আর শব্দগুলার মানেও বদলে যায়।
কোনো-কোনো আলুর ব্যাপারিরা, যারা কথায় কথায় তহবিল গঠন করে, তোমার মা-বাবা মরলেও দেখবা পূর্বনির্ধারিত গ্যাংনাম জারী রাখবে- আর এই বিষয়ে প্রস্ন করলে তোমার কান গরম করা সঙ্গমতত্ত্ব জাহির করবে, শেষে তোমাকে 'ক্যামেরার সামনের ছেলেটি' টাইপ ট্যাগ লাগিয়ে দেবে।
এই বার আসল কোথায় আসি, তোমার বয়স কম, লাইট ক্যামেরা এ্যাকশন এই সব তোমাকে বিমোহিত করবেই, সমাজের সব স্তরের ভারী ভারী লোকজনের সান্নিধ্য তোমাকে সম্মোহিত করবেই। সব লালাঝরা সুশীল, সাংঘাতিক, রাজনিতিক, অধিকারপল্লীর অধিপতিতারা, এন জি ও দালালরা তোমার মাথা খারাপ করে দেয়ার মত মন্ত্রণা দেবে, লোভ দেখাবে, অবান্তর অবাস্তব স্বপ্ন একেবারে প্যাকেট করে তোমার হাতে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে। বিনিময়ে তোমাকে এই অল্প কিছু কাজ করে দিতে হবে।
হয়তো নিজেকে হিরো হিরো মনে হবে, হতেই পারে। কিন্তু আসলেই কি তুমি হিরো ? এক ঠ্যাং অন্যায় ভাবে কাটা পড়লেই হিরো? আর যারা কাটা ঠ্যাং দিয়া শৃঙ্খলা বাহিনীকে আক্রমণ করতে গিয়া ক্রুশবিদ্ধ হয়ে পটল তুলছে তারা তো তাহলে সুপার হিরো!
এইসব অবাস্তব হাইপে গলে গেছো তো মরছো। তুমি কোন হিরো টিরো না! তুমি একটা গরীব ঘরের সন্তান- ভাগ্যবান আবার দুর্ভাগা। ঠ্যাং হারিয়েছ তাই দুর্ভাগা আর তোমার বন্ধুরা তোমাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে ছিনাইয়া নিতে যায় নাই, তাই ভাগ্যবান। কেউ কেউ তোমার মধ্যে কোনো ব্যক্তি গোষ্ঠীর প্রতি প্রতিশোধ পরায়ণতা জাগিয়ে রাখার মন্ত্রণা দেবে কিন্তু মনে রাখবে সমস্যাটা ব্যাক্তির না, সমস্যাটা সিস্টেমের। আগে নিজেকে ভাল করে চিনতে শিখ।
তুমি এখন বিশাল এক বানিজ্য সম্ভাবনাময় পণ্য হয়ে গেছ। রাজনীতির আন্দোলন, পাঁচ-তারা হোটেল, এন জি ও-র অনুদান, পত্রিকার কাটতি এই সব ব্যবসার জন্যে তোমার মত পণ্যরা খুব উপকারি, এই যেমন ধর মালালা, রেশমা, ফেলানী, শবমেহের, হেনা আরও অসংখ্য চরিত্র। যারা তোমার পাশে ছায়ার মত লেগে আছে তারা কেউ লিমনদের
ভালবেসে আসে না। তারা ঘটনাচক্রে তোমার কাছে, ব্যবসায়িক প্রয়োজন ফুরালে কেউ পাশে থাকবে না।
পাশে থাকবে কেবল বাবা মা, পরিবার আর কাছের বন্ধুরা। তোমার কুঁড়ে ঘরেই তোমার সুখ ওয়েস্টিনের নরম স্যুটে না।
আত্মমর্যাদা নিয়ে বড় হও, সাফল্য তোমার পিছনেই ছুটবে। বাবা মাকে ছালাম দিও।
ইতি,
তোমার একান্ত, এক শুভাকাঙ্ক্ষী।" Adil Abir (https://www.facebook.com/adil.abir.3)
"লিমন,
জি পি এ ৪ পাওয়ার জন্যে তোমাকে অভিনন্দন। পরিস্থিতি সাপেক্ষে তোমার রেজাল্ট ভাল, তবে যথেষ্ট ভাল নয়। এই ফলাফল নিয়ে তুমি খুব ভালো কোনো জায়গায় ভর্তি হতে পারবে না। অবশ্য এ সত্য, তুমি এখন কোটি মানুষের চেনামুখ, অজস্র মানুষের স্নেহ, সহানুভুতি আর ভালবাসায় সিক্ত হয়ে আছ। পরিচিতির দিক দিয়ে তুমি সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের লোক, ভালো কোথাও ভর্তি হওয়া বা ভাল বেতনের একটা চাকুরি তোমার জন্যে কঠিন কোনো সমস্যা না।
তবে আমি তোমার সমস্যা দেখছি অন্য জায়গায়, এবং সেইটা গুরুতর আকার ধারণ করতে কতক্ষণ আর? ইতোমধ্যে মানবাধিকার সংস্থার মহামান্য অতিমানব আবেগের জলকামান নিয়া থরো থরো কম্পমান
প্যান্টালুন মিজান একদফা তোমার দরদাম নিয়ে আলাপ সেরে ফেলেছেন। তার দরাদরিতে না, গাজিপুরের লোকজনই তোমাকে মামলা থেকে অব্যহতির ব্যবস্থা করছে।
তুমি হয়তো এরই মধ্যে অনেক শিক্ষিত, ওজনদার , সুশীল মানুষের বিক্রি হয়ে যাওয়া দেখে ফেলছ। তুমি সংবাদ শিরোনামে ছিলে দিনের পর দিন- যাদের কল্যাণে ছিলে সেই "সাংঘাতিক" লোকদের অনেকের সঙ্গে হয়তো তোমার ব্যক্তিগত যোগাযোগও স্থাপিত হয়ে গেছে। তুমি আরও দেখেছো পলিটিক্যাল সিস্টেমের মাঠ-পর্যায়ের বিক্রয়-কর্মীরা
তোমাকে অনেক অনুনয় বিনয় করে মামলা-টামলা প্রত্যাহার করতে বলছে, তুমি আবার রাজী না-হওয়ায় সেই অতি বিনীত মাঠ-কর্মীরা কেমন দ্রুত দক্ষতায় হুমকি-ধামকী সহ হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। আর আমাদের রাজনীতির কুশীলবরা সময়ে অসময়ে স্বান্তনার কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন পূর্বক পিঠে ভরসার হাত বুলিয়েছে। মনে রাখবে ওগুলো হাত ছিল না, ওগুলো আসলে থাবা। হয়তো তারা কেউ-কেউ এখনও 'থাবাফোনে' তোমাকে কাছে রাখার, কাছে থাকার নিমন্ত্রণ আমন্ত্রণও জানায়।
ও হ্যাঁ, তোমাকে বলাই হয় নাই সেইসব বিদেশী ব্যাগওয়ালা করপোরেট সুশীলদের কথা। যারা কথায় কথায় হয়তো তোমাকে পাকি টিনেজ সেন্সানশন উলালা-মালালার কাহিনী বিস্তর শুনিয়ে শুনিয়ে যাওয়ার সময় মাটির সানকিতে পান্তাভাত পেয়াজ-মরিচ মেখে চেটেপুটে খেয়ে গেছে। সেই উলালা সুশীলরা ভাঁজ না-ভাঙা সার্ট পরে, মাথার মাঝখানে সিঁথি করে। তবে মনে রাখবে তারা যতবার মালালারে নিয়ে আলাপ করে ততক্ষণ উহ, আহ, চুক-চুক শব্দ করে, সেই শব্দগুলোর আওয়াজ রাতের নিস্তব্ধতায় ভিন্ন রকম লাগে, আর শব্দগুলার মানেও বদলে যায়।
কোনো-কোনো আলুর ব্যাপারিরা, যারা কথায় কথায় তহবিল গঠন করে, তোমার মা-বাবা মরলেও দেখবা পূর্বনির্ধারিত গ্যাংনাম জারী রাখবে- আর এই বিষয়ে প্রস্ন করলে তোমার কান গরম করা সঙ্গমতত্ত্ব জাহির করবে, শেষে তোমাকে 'ক্যামেরার সামনের ছেলেটি' টাইপ ট্যাগ লাগিয়ে দেবে।
এই বার আসল কোথায় আসি, তোমার বয়স কম, লাইট ক্যামেরা এ্যাকশন এই সব তোমাকে বিমোহিত করবেই, সমাজের সব স্তরের ভারী ভারী লোকজনের সান্নিধ্য তোমাকে সম্মোহিত করবেই। সব লালাঝরা সুশীল, সাংঘাতিক, রাজনিতিক, অধিকারপল্লীর অধিপতিতারা, এন জি ও দালালরা তোমার মাথা খারাপ করে দেয়ার মত মন্ত্রণা দেবে, লোভ দেখাবে, অবান্তর অবাস্তব স্বপ্ন একেবারে প্যাকেট করে তোমার হাতে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে। বিনিময়ে তোমাকে এই অল্প কিছু কাজ করে দিতে হবে।
হয়তো নিজেকে হিরো হিরো মনে হবে, হতেই পারে। কিন্তু আসলেই কি তুমি হিরো ? এক ঠ্যাং অন্যায় ভাবে কাটা পড়লেই হিরো? আর যারা কাটা ঠ্যাং দিয়া শৃঙ্খলা বাহিনীকে আক্রমণ করতে গিয়া ক্রুশবিদ্ধ হয়ে পটল তুলছে তারা তো তাহলে সুপার হিরো!
এইসব অবাস্তব হাইপে গলে গেছো তো মরছো। তুমি কোন হিরো টিরো না! তুমি একটা গরীব ঘরের সন্তান- ভাগ্যবান আবার দুর্ভাগা। ঠ্যাং হারিয়েছ তাই দুর্ভাগা আর তোমার বন্ধুরা তোমাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে ছিনাইয়া নিতে যায় নাই, তাই ভাগ্যবান। কেউ কেউ তোমার মধ্যে কোনো ব্যক্তি গোষ্ঠীর প্রতি প্রতিশোধ পরায়ণতা জাগিয়ে রাখার মন্ত্রণা দেবে কিন্তু মনে রাখবে সমস্যাটা ব্যাক্তির না, সমস্যাটা সিস্টেমের। আগে নিজেকে ভাল করে চিনতে শিখ।
তুমি এখন বিশাল এক বানিজ্য সম্ভাবনাময় পণ্য হয়ে গেছ। রাজনীতির আন্দোলন, পাঁচ-তারা হোটেল, এন জি ও-র অনুদান, পত্রিকার কাটতি এই সব ব্যবসার জন্যে তোমার মত পণ্যরা খুব উপকারি, এই যেমন ধর মালালা, রেশমা, ফেলানী, শবমেহের, হেনা আরও অসংখ্য চরিত্র। যারা তোমার পাশে ছায়ার মত লেগে আছে তারা কেউ লিমনদের
ভালবেসে আসে না। তারা ঘটনাচক্রে তোমার কাছে, ব্যবসায়িক প্রয়োজন ফুরালে কেউ পাশে থাকবে না।
পাশে থাকবে কেবল বাবা মা, পরিবার আর কাছের বন্ধুরা। তোমার কুঁড়ে ঘরেই তোমার সুখ ওয়েস্টিনের নরম স্যুটে না।
আত্মমর্যাদা নিয়ে বড় হও, সাফল্য তোমার পিছনেই ছুটবে। বাবা মাকে ছালাম দিও।
ইতি,
তোমার একান্ত, এক শুভাকাঙ্ক্ষী।" Adil Abir (https://www.facebook.com/adil.abir.3)
2 comments:
এই মিজান মুছুয়ার বিষয়টা বুঝলাম না
chithi Valo hoyache
Post a Comment