শামসুর রাহমানের
একটা কবিতা
আছে:
"যেদিন
মরব আমি, সেদিন
কী বার
হবে
বলা মুশকিল।
শুক্রবার? বুধবার? শনিবার? নাকি
রবিবার?
যে বারই
হোক,
সেদিন বর্ষায়
যেন না
ভেজে শহর, যেন
ঘিনঘিনে কাদা
না জমে
গলির মোড়ে। সেদিন
ভাসলে পথ-ঘাট,
পূণ্যবান শবানুগামীরা
বড়ো বিরক্ত
হবেন।"
(শামসুর
রাহমান/ নিজ
বাসভূমে)
Gulzar
Hossain Ujjal (https://www.facebook.com/gulzar.h.ujjal?hc_location=timeline)
তার স্ট্যাটাসে
লিখেছেন, “...তবে আগুনে
পুড়ে মরতে
চাই না। অনেক
সমস্যা আছে। আমি
আগুনে পুড়ে
মরলে ঝামেলায়
পড়বে শবদেহের
সৎকারকারীরা। পোড়া মাংসের
গন্ধে তাদের
অস্সস্তি হবে। বমিও
আসতে পারে। আমাকে
জড়িয়ে ধরে
কাঁদতে ভাল
লাগবে না
প্রিয়জনদের...।”
আর আজ
শামসুর রাহমার
বেঁচে থাকলে
এই কবিতাটাই
লিখতেন এমন
করে:
“কীভাবে
মরব আমি, আগুনে
পুড়ে
নাকি ট্রেন
উল্টে...
...পূণ্যবান
শবানুগামীরা বড়ো
বিরক্ত হবেন।
মাংস-পোড়া
গন্ধে...”
আমি এই
লেখার সঙ্গে
আগুনেপোড়া মানুষের
ছবি দিতে
চাই না...।
আর এটা
আমাদের দেশেই
সম্ভব একপাল
মিডিয়া এবং
রাজনৈতিক নেতাদের
লোকজন গরুর
পালের মত
বার্ন-ইউনিটে
ঢুকে রোগীর
মাঝে ইনফেকশনের
ছড়িয়ে রোগিকে
দ্রুত মরার
সুযোগ করে
দেয়া। তারচেয়ে
বিষাক্ত বড়ি
খাইয়ে মেরে
ফেললে হয়
না?
আজকাল পত্রিকা
পড়তে ইচ্ছা
করে না, খবর
দেখতেও। কী লাভ? কেবল
কষ্টের মাঝে
ডুবে যাওয়া!
অক্ষম ক্ষোভে
নিজেকে হিজড়া
ভাবা। কারণ
আমি এখন
এটা বিলক্ষণ
জানি, আমাদের কিছুই
করার নেই। এই-ই
নিয়তি আমাদের।
আমি পূর্বের
এক লেখায়
লিখেছিলাম, শত-শত
টন নিউজপ্রিন্ট
ছাপা হলে
বা হাজার-হাজার
ঘন্টা টক-শো
হলে অথবা
ওয়েবে লিখে
ওয়েবের তার
ঝুলে পড়লেও
কোনো লাভ
নাই। এই
দেশে তাই
হবে যা
এই দুজন
ভদ্রমহিলা চাইবেন।
শিরোনামটা
এমনটা দিয়েছি
এই কারণেই। কেউ-কউ
প্রশ্ন করতে
পারেন, দু-দল
না বলে
আমি কেন
কেবল দু-জন
বললাম? দল কী
আবার! কোনো
দলে কি
এমন কেউ
আছেন যিনি
তার তার
নেত্রীর চোখে
চোখ রেখে
এটা বলার
সাহস রাখেন
যে, আপনি ভুল
করছেন। মানুষটা ব্যারিস্টার
নাকি ডক্টর, না
সাবেক সেনাপ্রধান
তাতে কী। শিরদাঁড়ার
পাশাপাশি তাদের
নীচের অংশটা
দুর্বল হয়ে
যায় যে।
অবশ্য সোহেল
তাজের ঘটনাটা
একটা উদাহরণ
বটে!
আমার জানায়
ভুল না-হয়ে
থাকলে বড়ো
গাড়িতে আগুন
দিলে পাওয়া
যায় পাঁচ
হাজার টাকা। কেউ
গুরুতর অগ্নিদগ্ধ
হলে অন্তত
বিশ হাজার
টাকা। এটা
এখন চালু
লাভজনক একটা
ব্যবসা। এই বেসুমার
টাকা কে
দিচ্ছে? কেউ-না-কেউ
তো অবশ্যই। কেন
দিচ্ছে? কারণ এর
সঙ্গে বিরাট
স্বার্থ জড়িত
যে।
আহা, আর
কেনই-বা
দেবে না?
আমাদের গণতন্ত্রের
লাড্ডু, যখন হরতাল-অবরোধ
ডাকা হয়
তখন সেটাকে
সফল করার
আবশ্যকতাও দেখা
দেয়। নইলে
চুতিয়া মিডিয়া
যে ঘটা
করে লিখবে, ‘ঢিলেঢালা
হরতাল’। কী
লজ্জা-কী
লজ্জা! যারা
হরতাল ডাকবেন
তাদের মুখ
দেখাবার যো
আছে? সহিংসতা না-হয়ে
উপায় কী!
সম্প্রতি নাশকতার
কারণে চট্টগ্রাম
লাইনে একটা
ট্রেন উল্টে
পড়েছিল- আহত
প্রচুর কিন্তু
নিহত নাই। ছি-ছি-ছি, এটা
একটা কথা
হলো। ওখানে
কেউ মারা
যায়নি তাই
সবাই আগ্রহ
হারিয়ে
ফেলছিল, মিডিয়াও। কিন্তু
একজন যাত্রীর
শিরদাঁড়া ভেঙে
গিয়েছিল তার
কথা জানার
আগ্রহ আমাদের
নাই!
তো, এখন
যোগ হয়েছে
ট্রেনের ফিসপ্লেট
খুলে ফেলা। এক
দুই ফুট
না, শত-শত
ফুট। রেললাইন
যেন পাটখড়ি
আর-কী, টান
দিলেই খুলে
আসে! অনুমান
করি, এর সঙ্গে
রেলের লোকজনরা
জড়িত যারা
রেললাইন মেরামত
করে থাকেন। কারণ
এদের কাছেই
এই যন্ত্রপাতি, বুদ্ধি
থাকার কথা। চাকরির
মায়া কাটিয়ে
রেলের নিম্ন
পর্যায়ের কর্মচারিরা
এই কাজের
সঙ্গে জড়িত
হয়ে থাকলে
অবশ্যই এর
সঙ্গেও বিশাল
অংকের টাকার
লেনদেন থাকবে। আবারও
সেই প্রশ্ন, কারা
দেন এই
বিপুল টাকা?
এখানে এই
কুতর্কে আমি
কারো সঙ্গে
যাব না। প্রায়
একই ভঙ্গি
আমরা দেখেছি
বর্তমান ক্ষমতাশীন
দল যখন
বিরোধিদলে ছিল, তখনও। নেত্রী
এয়ারপোর্ট থেকে
হরতাল ডেকে
বিদেশ চলে
গেছেন। রাত বারোটায়ও
হরতাল ঘোষণা
এসেছে। দেশের অধিকাংশ
মানুষ তখন
ঘুমে। ভোরে-সকালে
বাচ্চারা স্কুলে
চলে গেছে। বেলা
বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে যখন
জানা গেল
আজ হরতাল
তখন ওই
সমস্ত বাচ্চাদের
বাবা-মাদের
কী অবস্থা
হয়েছিল এটা
এখানে লেখাটা
জরুরি না!
আমি পুর্বে
অনেক বার
লিখে এটা, গত
টার্মে আওয়ামিলীগ
১৭৩ (সংখ্যাটা
কমবেশি হতে
পারে) দিন
হরতাল করেছিল-
বিএনপি কী
এক সেকেন্ড
আগেও ক্ষমতা
ছেড়েছিল? এবার বিএনপি
শতের কাছাকাছি
হরতাল করেছে
আওয়ামীলীগ কী
এক মিনিট
আগেও ক্ষমতা
ছাড়বে? তাহলে এই
সমস্ত হরতাল
দিয়ে কী
ইয়েটা হয়েছে?
ওহো, ভুলে
গেছি, আমাদের দেশের
সব পেকে
যাওয়া বুদ্ধিজীবীরা
আবার ‘মাইন্ট’ করে
বসবেন যে
অমায়িক একটা
গণতান্ত্রিক অধিকার
নিয়ে সমালোচনা
করা হচ্ছে।
আমি বলি
কি, আমাদের নানা, হানা
কি বললেন
এটা শোনেন। ইইউর
পক্ষে উইলিয়াম
হানা বলেছেন, ‘একতরফা
নির্বাচনে আসবেন
না পর্যবেক্ষকরা...’। লাশ
গুণে লাভ
নাই প্রভুদের
আচরণের প্রতি
লক্ষ রাখেন।
আচ্ছা, বাসে
গানপাডার-পেট্রল
ছিটায় কারা
এটা আমরা
জানি, একদল ব্যবসায়ি
(অবশ্য এদের
কাউকে আমাদের
চৌকশ গোয়েন্দা
বাহিনী ধরতে
পারেন না)। এদের
টাকা দেয়
কারা এটাও
আমরা অনুমান
করতে পারি। কিন্তু
জ্বলন্ত ম্যাচের
কাঠিটা ছুঁড়ে
দেন কারা?
ওই যে
বললাম, সব পেকে
যাওয়া বুদ্ধিজীবীরা। কেউ-কেউ
আবার একধাপ
এগিয়ে থাকেন, তারা
রঙিন চশমা
লাগিয়ে বলেন, শিক্ষাবিভাগকে
হরতালের আওতামুক্ত
রাখা হোক। খুবই
অমায়িক কথা, তিনি
প্রকারান্তরে কেবল
হরতালকে বৈধতাই
দিলেন না, গানপাডার-পেট্রলে
জ্বলন্ত ম্যাচের
কাঠিটা ছুঁড়ে
দিলেন...।
No comments:
Post a Comment