আমাকে একজন
বলেছিলেন, ক্লাস সিক্সে
একটা ছেলে
পড়ে- যার
স্কুলে যেতে
এক ঘন্টা
লাগে! মা
ধরে-ধরে
স্কুলে দিয়ে
আসেন। হুমড়ি
খেয়ে পড়ে
যাওয়ার যে
বর্ণনা দিয়েছিলেন
তা আমার
কাছে অতিশয়োক্তি
মনে হয়েছিল। তাছাড়া
যে দূরত্ব
আমার তো
৫ মিনিটের
বেশি লাগার
কথা না। তাহলে?
হৃদয়ের বাড়িতে
গিয়ে কথা
হয় হৃদয়ের
মার সঙ্গে। হৃদয়ের
সমস্যা জন্মের
পর থেকেই। হৃদয়দের
বাড়ির সামনের
ফাঁকা সামান্য
জায়গাটুকুও দেখলাম
ও একা-একা
হাঁটতে পারে
না, ওল্টে পড়ে
যায়- কিছু
একটা ধরে
ধরে অতি
কষ্টে তাকে
হাঁটতে হয়। অধিকাংশ
সময় ওর
মা-ই
হৃদয়কে স্কুলে
নিয়ে যান। কারণ
হৃদয়ের বাবা
বাড়িতে থাকেন
না। যোগালির
কাজ করেন। এদের
নিজেদের ভিটেমাটি
ছিল। কিন্তু
হৃদয়ের চিকিৎসা
করাতে গিয়ে
ওই বাড়ি
বিক্রি করে
এরা এখন
অন্যের দয়ায়
মাটির একটা
ঘর তুলে
থাকেন।
আমি বড়ো
বিভ্রান্ত ছিলাম
এটা শুনে
যে হৃদয়
নিয়মিত স্কুলে
যায়। ওর
সুতীব্র ইচ্ছা, পড়ালেখা
করে একটা
চাকরি করবে।
আমি খানিকটা
অনুমান করতে
পারছিলাম হৃদয়ের
পায়ের চিকিৎসা
করাটা এই
পরিবারের জন্য
অসাধ্য, অসম্ভব একটা
ব্যাপার। কিন্তু ওর
স্কুল যাওয়াটা
নিয়ে কি
করা যায়
এটাই ছিল
আমার মূল
চিন্তা।
হৃদয়ের স্কুলে
যাওয়ার রাস্তাটা
আমি হেঁটে
আসি। সম্ভব, এই
রাস্তা দিয়ে
হুইল-চেয়ার
নিয়ে যাওয়া
সম্ভব। কিন্তু, স্কুলের সিঁড়ি? স্কুলের
হেড টিচারের
সঙ্গে কথা
বললাম, আমরা যদি
ওর জন্য
একটা হুইল
চেয়ারের ব্যবস্থা
করে দেই
তাহলে তিনি
কি সিঁড়ির
একটা অংশকে
র্যাম্প বানিয়ে
দিতে পারবেন?
এখানে আশার
কথা শুনি। হৃদয়
এখন ক্লাশ
সিক্সে- এখন
ওর বার্ষিক
পরীক্ষা চলছে। ক-দিন
পরই ও
যখন ক্লাশ
সেভেনে উঠবে
তখন স্কুল
নতুন ভবনে
স্থানান্তরিত হবে। ওই
আধুনিক ভবনটা
আমি ঘুরে
দেখেছি। এই ভবনে
চমৎকার একটা
র্যাম্প করে
রাখা হয়েছে। হৃদয়
হুইল-চেয়ার
নিয়ে সোজা
ক্লাশে চলে
যেতে পারবে। ওটায়
বসেই তার
পক্ষে ক্লাশ
করা সম্ভব। হৃদয়ের
একটা হুইল
চেয়ারের প্রয়োজন, বড়ো
প্রয়োজন...।
ওহ, হৃদয়, তোমার
সামনে দাঁড়িয়ে
আমার নিজের
পা দুটো
আমাকে বড়ো
অপরাধি করে
দেয়...।
ছবি ১:
নিজের বাড়ির
মাটির দেয়াল
ধরে হাঁটার
চেষ্টা
ছবি ২:
হৃদয়ের মা
তাকে ধরে
ধরে হাঁটাবার
চেষ্টা করছেন।
ছবি ৩:
স্কুলে হৃদয়
পরীক্ষা দিচ্ছে।
ছবি ৪:
স্কুলের নতুন
ভবনের র্যাম্প।
No comments:
Post a Comment