আজকের অতিথি লেখক, Rukhsana Tajin :
"দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনিয়ম নিয়ে অনেক ঘটনা, অভিজ্ঞতা শুনি। সব সমানভাবে নাড়া দেয় না যেভাবে ‘এমা’ নামের এই ব্রিটিশ ভদ্রমহিলার ব্লগপোস্টটি আমাকে বেদনাক্লিষ্ট করছে। ওঁর লেখার মূল অংশের ভাবানুবাদ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে যদি আমার বেদনার কিছুটা উপশম হয় আর এই মহিলার আইনি লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সামান্যতম কোনো উপকার হয় এই আশায়...।
মূল পোস্টের লিঙ্ক: http://theonlywayisdhaka.wordpress.com/2014/01/15/giving-birth-in-bangladesh-appalling-apollo-hospital-dhaka/
বাংলাদেশে প্রসবের
অভিজ্ঞতা- ভয়ংকর এক হাসপাতাল, ‘এপোলো’, ঢাকা
আমাদের মিষ্টি মেয়ে ‘নিনা এমিলি ফৌজিয়া চৌধুরী’ ঢাকার 'এপোলো' হাসপাতালে ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে জম্ম নেয়। যদিও আমাদের ছোট্ট পরিবারটি এখন খুব ভালো আছে এবং পরিবারের এই নতুন অতিথিকে
নিয়ে আমরা অসম্ভব সুখি তবুও ঢাকায় প্রসবের অভিজ্ঞতাটি মোটেও সুখকর
কিছু ছিলো না। আমি ইচ্ছে করেই এই অভিজ্ঞতার বিস্তারিত নিয়ে
ব্লগিং করা থেকে বিরত ছিলাম, যাতে আমার সন্তান সুস্থভাবে বেড়ে উঠার পরে আমি
আরো সূক্ষভাবে পুরো অভিজ্ঞতাটি তুলে ধরতে পারি।মায়ের গর্ভে ‘নিনা’:
যতদূর মনে পড়ে আমার প্রসবের প্রথম অধ্যায়টি শুরু হয় ১ সেপ্টেম্বর রাতে যখন আমি বাচ্চার স্বাভবিক নড়াচড়া আর টের পাচ্ছিলাম না। পরের দিন সকালে আমরা বিষয়টি চেকআপের সিদ্ধান্ত নেই। তাই আমাদের পরামর্শক ডাঃ মৃণালের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে দেখা করি। উনি তখনই একটা ‘আল্ট্রাসাউন্ড’ করালেন। তখন আমাদের বাবুর হৃদস্পন্দন জোরালো এবং পরিষ্কার ছিলো কিন্তু ডাক্তারসাহেব খুব গম্ভীর মুখ করে আমাদের বললেন: আমি যেন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাই যাতে করে বাচ্চা এখনো বেঁচে আছে কিনা এটা তিনি বুঝতে পারেন।
আমার স্বামী এবং আমি তখন খুবই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে গেলাম কারণ আমরা এইমাত্র বাবুটার খুব স্বাভাবিক হৃদস্পন্দন শুনতে পেয়েছি। কিন্তু ওই মুহূর্তে আমাদের মন বলছিলো ডাক্তার যা বলেন তাই মেনে নেয়া উচিত কারণ আমরা তীব্র ভয় পাচ্ছিলাম আমাদের বাবুর আসন্ন বিপদ নিয়ে। আমাকে যখন প্রসূতি বিভাগে নেয়া হলো গর্ভের অবস্থা নিরীক্ষণের জন্য, ঠিক তখনই আমার স্বামীকে বিলিং কাউন্টারে নেয়া হলো আমার হাসপাতালে ভর্তির ডিপোজিট পরিশোধের জন্য।
প্রথম ৪০ মিনিট পরীক্ষায় আমার বাবুর হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক আসল কিন্তু আমি তখনও ওর নড়াচড়া ঠিকমত পাচ্ছিলাম না। আমাকে তখন সামগ্রিক আল্ট্রাসাউন্ডের জন্য নেয়া হলো। পরীক্ষারত ডাক্তার আমাদের প্রাথমিকভাবে জানালেন যে, বাবু নড়ছে এবং সব ঠিক আছে। উনি অনুমান করলেন, আমাদের বাবুর ওজন প্রায় ২.৩ কেজি হবে এবং এও জানালেন আরো কিছুদিন সে অনায়াসে গর্ভে থাকতে পারে এবং প্রসবের আগে ওজন আরো বাড়তে পারে।
তখন আমরা জানালাম যে, আমাদেরকে সামগ্রিক আল্ট্রাসাউন্ডের জন্য পাঠানো হয়েছে কারণ আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মনে করছেন বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়াতে জরুরি ভিত্তিতে আমার ‘সিজারিয়ান’ করাতে হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গেই এই পরীক্ষাকারী ডাক্তার পুরো উলটে গেলেন এবং তার নিজের মতামত থেকে সরে দাঁড়ালেন। বললেন. তিনি আবার বাবুর ওজন মাপতে চান এবং জানালেন ওজন আসলে প্রায় ৩.৩ কেজি!
ওই মহিলা আমাকে এই বলে আশ্বস্ত করলেন যে, আমার বাচ্চা আসলে জন্ম নেয়ার জন্য এখনই প্রস্তুত আছে (যা ছিল, উনার দেয়া প্রাথমিক ফলাফলের সম্পূর্ণ বিপরীত) এবং নিশ্চিত করলেন যে, ‘নিনা’ সঠিক ওজনের এবং সম্পূর্ণ সুস্থই হবে। আমি আর আমার স্বামী একদমই বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে কোনটা বিশ্বাস করবো? এবং আমরা এই শঙ্কা অনুভব করছিলাম এই ভেবে যে নিনার [জন্মের পূর্ণমেয়াদের] এখনও যে আরও চার সপ্তাহ বাকি আছে!
আমাকে তখন ওয়ার্ডে আমার নিজের কক্ষে পাঠানো হলো। সকালের শেষের দিকে নার্সদের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হলো যে পরের দিন আমার সিজারিয়ান করার জন্য ডাঃ মৃণাল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ডাঃ মৃণাল নিজে আমাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা-পরামর্শ কিছুই না-করে সম্পূর্ণ একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্তে নিলেন এবং নার্সদের বললেন, অপারেশন থিয়েটার বুক করার জন্য। আমরা আবারো বিভ্রান্তিতে পড়ে গেলাম। নার্সরা আমাদেরকে কেবল এই তথ্য দিতেই পারল যে, গর্ভে বাচ্চার অবস্থা খুবই ভালো আছে কিন্তু তবুও পরদিন ডেলিভারি করতে হবে।
আমি এবং আমার স্বামী একটা দ্বিতীয় মত নেয়া বা হাসপাতাল পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ করলাম কিন্তু যুক্তি দিয়ে ভেবে দেখলাম যে এই ডাক্তার আমাদের অবস্থা সবচেয়ে ভালো জানেন এবং শেষ মুহূর্তে অন্য কারো অধীনে যাওয়া উত্তম সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে। ওই সময়ে আমরা খুবই নাজুক-বিভ্রান্তকর অবস্থায় ছিলাম এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য খুব বেশি সময়ও হাতে ছিলো না।
পরদিন ২ সেপ্টেম্বর দুপুরে আমি বাচ্চার স্বাভাবিক নড়াচড়া টের পেলাম। আমার স্বামী এবং আমি ডাঃ মৃণালের সঙ্গে তার ওয়ার্ড রাউন্ডের সময় এবং মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম, পুরো দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। শুধু এটা আলোচনা করার জন্য যে এখনই ডেলিভারির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা যায় কি না? কিন্তু আমাকে এটা বারবারই বলা হলো যে আমার বাচ্চা এখন ৩৬ সপ্তাহে জন্মগ্রহণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। মেডিক্যাল টিমের মধ্যে খুব কঠিন স্তরভেদ আছে যেখানে জুনিয়র ডাক্তার আর নার্সরা আক্ষরিক অর্থেই বিশেষজ্ঞ পরামর্শকের ভয়ে কাবু।
একটা অপরিণত প্রসব নিয়ে আমাদের শঙ্কার ব্যাপারে আলোচনা বা উপশম করতে তারা একেবারেই ব্যর্থ ছিলেন এবং শুধু এটাই বারববার বলছিলেন যে, আমাদের বাচ্চা পূর্ণমেয়াদেই জন্ম নিচ্ছে। আমাদের জন্য এটা বড়োই বেদনার ছিল যে কর্তব্যরত ডাক্তাররা আমাদের বক্তব্য বোঝা বা শোনার ইচ্ছা পোষণ করছিলেন না।
আমি এবং আমার স্বামী যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে খুবই শঙ্কার মধ্যে ছিলাম এবং আমাদের মনে হচ্ছিল, এ প্রক্রিয়ার মধ্যে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে অনেকটা জোরপূর্বক বাধ্য করা হচ্ছে। বলাবাহুল্য, অপারেশনে যাওয়ার পূর্বে আমি অনেক কাঁদলাম। এখন বুঝতে পারি, আমাদের একটা দ্বিতীয় মত নেয়া উচিত ছিলো অবশ্য ওই সময়ে আমরা খুবই ভীত এবং নাজুক অবস্থায় ছিলাম, যেহেতু বাচ্চা হারানোর ভয়টা আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
৩ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টায় আমার মেয়ের জন্ম হলো। ওর ওজন ছিলো ২.৫ কেজি। অপরিণত জন্মের কারণে ‘নিওনাটাল’ [সদ্যোজাত] কেয়ার ইউনিটে আমাদের মেয়ের তাৎক্ষণিক বিশেষ সেবার প্রয়োজন দেখা দিল। আমাদের বাবুটার জন্য জরুরিভাবে প্রাণ সঞ্চালনের ব্যবস্থা করতে হলো কারণ তার শ্বাসজনিত অনেক জটিলতা দেখা দিয়েছিল। তাকে ১৮ ঘন্টা অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয়েছিল।
আমার বাবুকে ২০ ঘন্টা পর্যন্ত 'গ্যাস্ট্রিক ফিডিং' এর উপর রাখতে হলো এবং আমি ওর দু'দিন বয়সে ব্রেস্টফিড করানোর সুযোগ পেলাম। আমাদের না-জানিয়ে এবং কোনো আলাপ বা অনুমতির তোয়াক্কা না-করেই আমাদের মেয়েকে ‘ক্যানোলা’ দিয়ে এন্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছিল সেপটিক স্ক্রিনিং এর জন্য।
শিশুবিভাগ থেকে জানানো হলো, আমাদের বাচ্চাটা আসলে পাঁচ সপ্তাহের প্রি-ম্যাচিওর এবং নিনা আসলে মাত্র ৩৫ সপ্তাহ বয়সী ছিলো। আরো বলা হলো, এত আগে বাচ্চা জন্ম নিলে এধরণের জটিলতা দেখা দেয়াটা স্বাভাবিক।
তখন এটা দিবালোকের মত স্পষ্ট হলো যে আসলে নিনা জন্মের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। ডেলিভারি হওয়ার পরপরই চালাকি করে ডাঃ মৃণাল আমাদের বাচ্চা বা ওর অবস্থার প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখালেন না যেহেতু ওনার দায়িত্ব তখন শুধু আমার সিজার পরবর্তী অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা(!)। উনি নিনার অপরিণত অবস্থা, 'বিশেষ সেবা' বিভাগে তার অবস্থান, কিংবা এরকম যে হবে এই ব্যাপারে আমাদের শঙ্কা, এসব কোনো কিছু নিয়েই আলাপ করতে প্রস্তুত ছিলেন না।
আমরা খুব দ্রুত বুঝতে পারলাম যে, এপোলো হাসপাতালের প্রসূতি এবং গাইনি বিভাগ সম্পূর্ণভাবে শিশুবিভাগ (নিনা যেখানে ছিলো) থেকে আলাদা। চিকিৎসার ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে এই বিভাগগুলো একসঙ্গে কাজ করে না এবং নিশ্চিতভাবেই একটি অপরিণত শিশুর জন্মদানের ঝুঁকি পরিমাপ করার জন্য সেখানে কোনো আন্তঃবিভাগ সমন্বয়ই ছিলো না। বরং এপোলোর শিশুবিভাগ আমাদের মেয়ের অপরিণত জন্মকে দু'হাতে স্বাগত জানিয়েছে যেহেতু ওর বিশেষ সেবার জন্য আমাদের হাসপাতাল বিল অনেক বেড়ে যাচ্ছিল।
এর পরে অন্য অনেক প্রসূতি ও গাইনি পরামর্শক আমাদের বলেছেন যে, এপোলো-তে যে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে তা অপ্রয়োজনীয়, অনুপযুক্ত এবং অনৈতিক ছিলো। বরং একটি সুষ্ঠু এবং বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত হতো যদি গর্ভে নিনার অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা নেয়া হতো। যদি আসলেই নিনার অবস্থা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকতো, তাহলে ডেলিভারি করতে ৩০ ঘন্টা সময় নেয়া হতো না।
আমার বাচ্চাকে 'স্পেশাল কেয়ার ইউনিটে' দেখার অভিজ্ঞতা আমার জন্য খুবই ‘ট্রোমাটাইজিং’ ছিলো এবং আমি মনে করি, আমরা কখনোই এই অভিজ্ঞতার কথা ভুলতে পারবো না। আমরা এপোলোকে বিশ্বাস করেছিলাম প্রথমসারির চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এপোলো একটা ছোট্ট সদ্যোজাত শিশু এবং তার বাবা-মার ভোগান্তির বিনিময়ে শুধুমাত্র হাসাপাতালের বিল বাড়ানোর মত জঘন্য একটা অনৈতিক কাজেই উৎসাহী ছিলো। আমরা প্রায়শ শুনি যে, এমনকি বাংলাদেশের সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা, (যেখানে এইসব বেসরকারি, বিদেশী হাসপাতালের চেয়ে চাকচিক্য অনেক কম) অনেকক্ষেত্রেই ভালো চিকিৎসা দিচ্ছে। বাংলাদেশ শিশুমৃত্যু ও প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যু রোধে অনেক ভালো করছে, সেখানে আসলে এইসব নামীদামী হাসপাতালের কোনো ভূমিকা নেই।
ব্রেস্টফিডিং:
আমার বাচ্চার কিছু শারীরিক সমস্যা থাকার কারণে ব্রেস্টফিডিং করানোটা আমার জন্য খুবই কঠিন হয়ে পড়েছিল। হাসপাতাল থেকে এ ব্যাপারে আমাকে কোনরকম সাপোর্ট দেয়া হয়নি। নিনার জন্মকালীন স্বল্প ওজন এবং মায়ের দুধ নেয়াতে সমস্যার কথা বিবেচনা করে কৃত্রিম দুধ দেয়ার ব্যাপারে আমার শিশুবিশেষজ্ঞ ডাঃ ইশতিয়াক কোনো আলাপেই যেতে চাইলেন না। জন্মের ছয়দিন পর আমার মেয়ের ওজন কমে ২.৩ কেজি হয়ে গেলো এবং তখনো ডাক্তাররা কৃত্রিম দুধ দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানালেন। আমরা এ পর্যায়ে খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে গেলাম।
অন্যান্য সমস্যা:
আমরা হাসাপাতালে থাকাকালীন খুব দয়ার্দ্র কিছু নার্সের সংস্পর্শে এলেও অনেকেই ভালো ইংরেজি বলতে পারতেন না। ভাগ্যক্রমে আমার স্বামীর মাতৃভাষা বাংলা, তাই সে অনুবাদ করে দিতো। যারা ইংরেজি বলতে পারতেন তারাও প্রায়শই বাংলায় উত্তর দিতেন। এই সমস্ত কারণে আমি এই পুরো প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করতাম।
আমরা দেখলাম যে UK এর মত এখানে কোন পরামর্শ ব্যবস্থা নেই- এখানে ডাক্তাররাই তাদের মতামত দেন অনেকটা এমন, ‘হয় তুমি এটা মেনে নাও নয়তো অন্য কোথাও যাও’।
এখানে বলে রাখি, এপোলো আপনাকে আপনার সন্তানের মেডিক্যাল/ খাদ্যগ্রহণ বিষয়ক কোনো রেকর্ড দেখার অনুমতি দেবে না এবং যখন আমাদের বাচ্চা 'স্পেশাল কেয়ার'-এ ছিলো, তখন আমরা বাচ্চার ওয়ার্ডে যাওয়ারও অনুমতি পাইনি।
নিওনাটাল (সদ্যোজাত) ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে পুরো মেডিক্যাল টিম আমার সঙ্গে খুব উদ্ভট আচরণ করেছে। আমার দিকে প্রায়ই বিচিত্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা হতো- হয়তো আমি দেখতে আলাদা বলে এবং সম্ভবত ভাষার দূরত্ব তাদের বিব্রত করতো হয়তো। এক পর্যায়ে আমার জন্য এটা খুবই কষ্টের হয়ে পড়ল অথচ তখন আমার মানসিক সমর্থন এবং সাহায্যের খুব প্রয়োজন ছিলো। অথচ এই ব্যাপারটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিলো যেখানে অনেক বিদেশীই প্রয়োজনে এখানে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।
আশার কথা যে এপোলোতে আমার অভিজ্ঞতা এখন দূরতম অতীত স্মৃতি যেহেতু নিনা এখন চার মাসের একটা হাসিখুশি সুস্থ শিশু।
আমার স্বামী এবং আমি আমাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা অভিযোগ উত্থাপন করেছি এবং যা হয়েছে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করার জন্য আমরা সক্রিয়ভাবে লড়ে যাচ্ছি।
ভবিষ্যতে যদি আবারো বাবা-মা হবার সৌভাগ্য হয় তবে আমি গর্ভকালীন সময় এবং সন্তান প্রসবের জন্য অবশ্যই UK-তে ফিরে যাবো। এবং অবশ্যই আমি আর কখনই এপোলোতে আসবো না। আমি মনে করি, প্রসবের অভিজ্ঞতা ছাড়াও আমি আরো বড় পরিসরের সাপোর্ট নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত হয়েছি যেটা UK-তে পেতাম, যেমন ‘মিডওয়াইফদের হোম ভিজিট’ বা ‘কমিউনিটি কেয়ার’।
আমার মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশে সন্তান জন্মদান একটা হাসপাতাল-ভিত্তিক ব্যবস্থা যদিও আমার অভিজ্ঞতা বলে এখানে (লেখিকা সম্ভবত UK এর কথা বলেছেন) পরিবারভিত্তিক আন্তঃযোগাযোগ এর মাধ্যমে পেশাদারী স্বাস্থ্যকর্মী থেকেও বেশি সেবা দেয়া হয়।“ Rukhsana Tajin
5 comments:
শুভ ভাই,বিষয়টা গুরুতর অন্যায়। আমি জানি না ভিকটিম কি আইনী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে এদের উচিৎ হবে সমস্ত প্রমাণ নিয়ে কোর্টে মামলা করা।
-কাশেম, আইনজীবী, সুপ্রীম কোর্ট
লেখিকাকে অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ। দাতে দাত চেপে আওড়াচ্ছি,
এ তে এপোলো,বি তে বুচার,সি তে সোয়াইন,ডি তে ডগ।
ই-তে ইডিয়ট :D
F for #Fuck u Dr Mrinal#
'ই' ফর ইরোটিক মৃণাল।
Post a Comment